নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঝাপসা বালকের পক্ষ থেকে সংগ্রামী লাল সালাম

ঝাপসা বালক

আতাউর রহমান

ঝাপসা বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির যুক্তিকথা

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০১

একজন মুসলমানের সন্তান শিশুকাল থেকে শিখে ইসলাম হচ্ছে একটা সত্যধর্ম আর কোরানশরীফ হচ্ছে একমাত্র পবিত্র কিতাব যেখানে আল্লাহ তার মমিনদের কোন পথে চলতে হবে তার নিদেশনা দিয়েছেন । আর যারা তার দেখান পথে চলবে না তারাই কাফের । কিন্ত কোরান যদি সহি গ্রন্থ হয়ে থাকে আর মুসলমানরা যদি তা বিশ্বাস করেই থাকে তবে তার ব্যাখ্যা দুরকম কেন হবে ?
তাহলে এই প্রশ্নের উত্তর হতে পারে “ইসলাম সহি গ্রন্থ নয়” ।
সত্য কথা বলতে, অধিকাংশ মুসলমানরা কোরআন, হাদিস, সিরাত ও ইসলামের ইতিহাসের বিন্দুমাত্র পড়েনা বলেই ইসলামের সহিংস ইতিহাস ও বর্বর শিক্ষা সম্পর্কে এরা কিছুই জানেনা । বেশীরভাগ আমাদের ধর্মপালনের এই প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র পরিবারের গুরুজনদের মুখে শুনে, সামান্য কিছু আয়াত শোনে, বলে ও পড়ে, ফলে অধিকাংশ মুসলমানরা বঞ্চিত হয় কথিত ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে এবং নিজ নিজ জীবনাচারে প্রবল ভ্রান্তিতে বসবাস করে।

অন্যান্য সকল ধর্মের মতই ইসলামও একটি ভাববাদী দর্শনাশ্রয়ী ধারণা যার সাথে যোগ আছে উপলব্ধির এবং মেধা, প্রজ্ঞা ও নিজস্ব বিচারশক্তি দ্বারা উপলব্ধির পরিপূর্ণ । কিন্তু মুষ্টিমেয় মৌলবাদী সংস্কৃতির কারনে ধার্মিকদের জন্য আধ্যাত্মিক সে দর্শনের বিচার হয়ে উঠেছে গৌণ; অসহিষ্ণু ধর্ম-অহং এবং আজ্ঞাধীন প্রাত্যহিক আচার সেই স্থান দখল করে নিয়েছে ।
বিবেক বুদ্ধি লোপ পেয়ে অন্ধের মত রীতি নীতি আচার পালনের এই অনুশীলন ডেকে আনে হ্রদয় ও মস্তিস্কের অন্ধত্বে ফলে জেনে অথবা না জেনে মুসলমানেরা দোষ সম্পূর্ণ বক্তব্যেকে প্রতিনিয়ত ন্যায্যতা দিচ্ছে যা শক্তিশালী করে তুলেছে রাজনৈতিক ইসলামকে । মুষ্টিমেয় দল এটিকে মৌলবাদের ধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে চলেছে এবং ধর্মীয় গভীর উপলব্ধিটিকে বৃত্তাবদ্ধ করেছে হারাম-হালাল এর দ্বিমাত্রিক ধারায়।
আল্লাহ্র পথে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়াই হল রাজনৈতিক ইসলাম শিক্ষার একমাত্র মন্ত্র যেখানে সৃজনশীল পেশা হিসেবে নৃত্যশিল্প, চিত্রকর্ম, কারুশিল্প, কবিতা, ক্রীড়া এবং বিনোদন বিষয়ক পেশা হিসেবে সঙ্গীত, নাটক, সিনেমা হল নিষিদ্ধ। ভাবতে অবাক লাগে দাবার মত নির্দোষ খেলাও তাদের চোখে নিষিদ্ধ । অর্থাৎ যেসব কর্ম মানুষের চিন্তা শক্তির বিকাশ ঘটায় কিন্তু তাদের ব্যাখ্যায় তাহাই হল হারাম । এইসব শিক্ষা থেকে বঞ্ছিতদের মন এক পর্যায়ে হয়ে ওঠে পশুবৎ এবং হালাল হারামের এই আবদ্ধতা কেবল তাকে করে তোলে অসুস্থ যা লালন করতে শেখায় অন্যদের প্রতি ঘৃণা, তাকে করে তোলে সহিংস।
তবে আশার কথা হল রাজনৈতিক ইসলাম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েও যথাযথ কারনে ব্যর্থ হয়েছে এবং সারা বিশ্বের দিকে তাকালে এর অনিবার্য পতন প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে । যদিও উগ্রবাদীরা অধিকাংশই বিশ্বাস করে রাজনৈতিক ইসলাম মাধ্যমে বিদ্যমান অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমস্যাগুলোর সবাধান সম্ভব ।
রাজনৈতিক ইসলামের মূল লক্ষ্য একটিই সে হল সত্য ও মিথ্যা গুজবের ভিত্তিতে অলীক খিলাফতের মোহান্ধতা প্রচার আর তার নেতা-কর্মী-সমর্থকদের চিরকাল এই স্বপ্ন দেখিয়েই সে বেড়ে ওঠে যে, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও সরকারের কার্যের প্রথম ভিত্তি হল শরিয়াহ । নির্লজ্জভাবে তারা প্রচার করে যে, সেটাই আল্লাহ্র নির্দেশ এবং সে নির্দেশের বিরোধিতা করা মানেই আল্লাহ্র নির্দেশের বিরোধিতা করা ।
মূলত নিজ ধর্ম সঠিকভাবে না জানা, পরিপূর্ণ হাদিসের জ্ঞানহীনতা এবং যথাতথা মত ধর্মপালনে অভ্যস্ত মুসলমানদের পক্ষে রাজনৈতিক ইসলামের দেয়া যুক্তির মোকাবেলা অসম্ভব যারফলে প্রকারান্তরে তারা আত্মসমর্পণ করে মৌলবাদী শিক্ষার পক্ষেই, সকল অনিচ্ছা সত্ত্বেও; শৈশবে শেখা মতদিক্ষার দূষণেই।
পরিশেষে শুধু এতটুকু বলা, রাষ্ট্র ও ধর্মের পৃথক করা, ধর্মকে মৌলবাদিদের সঙ্কীর্ণ স্বার্থে ব্যবহার করবার পথটিকে স্থগিত না করে মৌলবাদের উত্থানকে রোখা অসম্ভব । এইভাবে অবসান করা সম্ভব হবে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.