![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পুলিশের আইজিপি বলেছেন,'পহেলা বৈশাখের দিন বিকেল ৫ টার পর উন্মুক্তস্থানে কোনো ধরণের অনুষ্ঠান করা যাবে না। যদি উন্মুক্তস্থানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তাহলে তার দায় পুলিশ নেবে না।' আরে ভাই, তারা তো বলেছেই বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত নিশছিদ্র নিরাপত্তা দিবে, পুলিশের তো আরও অন্য কাজকারবার কিংবা দায়িত্বও তো আছে । যেমন- তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন,'ব্লগার হত্যা হলেই গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যায় না। গণতন্ত্র কোনো কাঁচের জিনিস নয় যে এতেই ধ্বংস হয়ে যাবে।' গণতন্ত্র অনেক শক্ত জিনিস। গণতন্ত্র রক্ষা করা অনেক পরিশ্রমের কাজ। তাই পহেলা বৈশাখের দিন বিকেল ৫ টার পর পুলিশ গণতন্ত্র রক্ষার কাজে ব্যস্ত থাকবে।
ওদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন,'নিহত ব্লগারদের লেখা খতিয়ে দেখা হবে।'
প্রয়াত এবং জীবিত ব্লগারেরা কতো শতো শতো লেখা লিখেছেন। সবগুলো লেখা খতিয়ে দেখতে অনেক সময়ের প্রয়োজন আছে। দাড়ি-কমা, কোলন-সেমিকোলন সব খতিয়ে দেখা হবে। লেখা খতিয়ে দেখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং কষ্টসাধ্য কাজ।
পহেলা বৈশাখ বিকেল ৫ টার পর থেকে পুলিশ লেখা খতিয়ে দেখার কাজে হাত দেবে।
তাছাড়া নীরবে নিভৃতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের একটা ভয়ঙ্কর ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেছে। যা কোনো সেক্যুলার অনলাইন এক্টিভিস্টের ব্লগ, কবির কবিতা কিংবা কমরেডের পুঁজিবাদী ভারী গেয়ানগর্ভ লেখাতে উঠে আসে নি।
২০১৫ সালে সারা বছরে যতো সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে, গতো ১ মাসেই প্রায় তার সমপরিমাণ সংখযালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে এবং তার ৯৯%-ই করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। অনেক স্থানে সংখ্যালঘুদের ভিটেমাটি দখল করে সমূলে উৎপাটন করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তো এসব সংখ্যালঘু উচ্ছেদের কাজে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকেও সহায়তা করতে হবে। পহেলা বৈশাখের দিন বিকেল ৫ টার পর আওয়ামী লীগের প্রজেক্ট 'ভিশন-২০৩০, ১০০% মুসলমানের দেশ'-এর আওতায় সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং দেশ থেকে তাড়িয়ে ভারত পাঠিয়ে দেওয়ার মহতী উদ্যোগে আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথেসাথে পুলিশও যোগ দেবে।
এর বাইরেও পুলিশের আরও কতো কাজ রয়েছে। হেলিকপ্টার ম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফী নাস্তিকদের কচুকাটা করার জন্য আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। শফী ডাক দেওয়ার সাথে সাথেই তৌহিদী জনতা নাস্তিকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। তো এই আন্দোলনের পুলিশ কি অংশগ্রহণ করবে না? শফীকে কি প্রটেকশন দিতে হবে না?
হাজার হোক শেখ হাসিনার ক্ষমতার উৎস তো এখন শফীর দোয়া এবং ৯০% ধর্মান্ধ মুসলমানদের দেশে ধর্মের ধুম্রঝাল।
পহেলা বৈশাখের দিন বিকেল ৫ টার পর পুলিশ আল্লামা শফির নাস্তিক কতল আন্দোলনে যোগ দেবে।
এমন ব্যস্ত পুলিশ প্রশাসনকে কেউ দোষারোপ করবেন না প্লিজ! তাছাড়া শেখ হাসিনার ওলামা লীগ সরকারও এটা মেনে নিয়েছে যে পহেলা বৈশাখ হিন্দুদের উৎসব। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সবকিছু ছোট পরিসরে করা ভালো। যেমন একদিনের ঈদে ৪ দিন ছুটি থাকলেও চারদিনের দুর্গা পূজায় ১ দিন ছুটি থাকে!
এখন তো তা-ও পহেলা বৈশাখ বিকেল ৫ টা পর্যন্ত পালন করতে পারছেন। সামনে তো দেশে মোল্লারা ক্ষমতায় আসবেই। তখন পহেলা বৈশাখের লাল সাদা রং-এর আভা আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। হাত পাখা, রং বেরং-এর চুড়ি, বাঁশির শব্দ, নাগরদোলা হারিয়ে যাবে। বাংলাদেশ হয়তো নামটা নিয়ে শুধু দাঁড়িয়ে থাকবে, বাংলার সংস্কৃতিগুলোকেও গলা কেটে হত্যা করা হবে।
©somewhere in net ltd.