নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবি : নেট
১.
" ব্যস্ত শহরে ক্লান্ত পদচারণা,
তখনই হঠাৎ আলোর জোছনা !
সেই আবছা আলোয় সূর্যের মতো কিরণ ,
সেই নিস্তব্ধ নীরবতায় গেয়ে যাওয়া জীবনের বহু রঙ।
মানুষের ভীড়েও কভু নিসঙ্গতা ,
অলস সময়েও একাকিত্বের যাতনা।"
নীলা : ইস ! কি কঠিন কাব্য ! এমন কি হয় ?
অনিক : হয়, না হবার মত কিছুই তো নয় । কাব্য জীবন রচনা করো না বরং জীবন থেকেই কাব্যের আবির্ভাব।
নীলা : তবুও ,এত গভীরভাবে কে ভেবে দেখেছে !
অনিক : মানুষ , গভীরভাবে শুধু মানুষই ভেবে দেখতে পারে। কোন বোধহীন প্রাণী তো আর গভীরভাবে ভাববে না।
নীলা : সত্যি তো ! এভাবে তো ভেবে দেখিনি , সত্যি মানুষ বড় অদ্ভুত !
অনিক : উহু , মানুষ অদ্ভুত না মানুষ সরল। কিন্তু সেই সরলতাকে সে জটিল করে ফেলে এবং নিজের মন থেকে দূরে সরে যায়।
নীলা : বাপরে ! আবারো কঠিন কথা ! মানুষ যদি সরলই হয় তাহলে তোমার কথা বুঝতে আমার সময় লাগতো না।
অনিক : বুঝবি তখন যখন তুই আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবি। তখন বুঝতি আসলে আমিও অন্যদের মত সহজ সরল , জটিল না।
সত্যিই তো ! জটিলতা প্রকাশে নয় জটিলতা থাকে বোঝায়। এলোমেলো বা গোছানো করে হলেও প্রকাশটা যতটা সরল হয় তার অর্থটা শ্রোতার নিকট জটিল হয়েই দাঁড়ায়। কারণ বাস্তববাদী জটিল চিন্তা আমাদের মনের দৃষ্টিকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে যে এই দৃষ্টিতে না ধরা পড়ে সরলতা আর না কাটে জটিলতা। এ এক বিশাল গোলকধাঁধা, যা আমাদের প্রতিবার একই জায়গায় এনে দাঁড় করায়। আর সে গোলকধাঁধার নাম হল অবিশ্বাস। অনেক সহজ কিছুকেও আমরা বিশ্বাস করতে পারি না কারণ আমরা অবিশ্বাস নামক গোলকধাঁধায় আবদ্ধ।
ছবি : নেট
২.
চোখের সামনে বেড়ে ওঠা দুটি প্রাণবন্ত খেলার সঙ্গী অনিক আর নীলা। যদিও পরিচয়টা খেলার সূত্রে নয় প্রতিবেশী সূত্রে তবু দুজনে মিলে বেশ জুটি। অনিকের হাসি যেমন দুরন্ত ও প্রাণবন্ত , নীলার হাসিও তেমনি সরল আর প্রাণোচ্ছল। সামান্য পরিবর্তনও নীলার মাথায় ঢোকে না অথচ জ্ঞানের বিবেচনায় নীলা দুরন্ত । তবে পরিবর্তনহীন মনোভাব তার জ্ঞানকে অন্যের কাছে সহজে প্রকাশ হতে দেয় না।
খুনসুটি আর খেলায় এভাবেই চলছে জীবনের ছেলেবেলা। অনিক আর নীলা সমবয়সী হলেও সামান্য কিছু দিনের বড় হওয়ায় অনিক তার প্রভুত্ব ও হুকুম চালাতে পারে নীলার উপর। সরল ও ভীতু স্বভাবের নীলাও সেই হুকুম মেনে নিতে পারে। ভূতের ভয় আর তাড়া করে বেড়ানো অনিকের কাছে বিনোদন আর নীলার নিকট তা আতঙ্ক। এভাবেই কেটে যায় ছেলেবেলার সংক্ষিপ্ত সময়।
৩.
বন্ধুত্বের সেই দারুন খুনসুটি আজ অনেকটাই গম্ভীর। কেননা , আজ তারা সুবোধ। খুনসুটি চলে তবে সুবোধ ভাবে, ছেলেবেলার অবোধ ভাব আজ অনেকটাই কেটে গেছে। হঠাৎ প্রতিবেশী পরিচয়ে দেখা হলে বন্ধুত্বের সম্পর্কটা চোখে পড়ে ক্ষণিকের জন্য। সেই দুরন্ত ও প্রাণবন্ত অনিক আর সরল ও প্রাণোচ্ছল নীলা আজ অনেকটাই শান্ত। স্বভাবত গম্ভীর হলেও মুখোমুখি হলে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে দুজনেই। নীলার একরাশ গল্পের অধীর আগ্রহী শ্রোতা অনিক। নীলার হাসি-কান্না, অভিযোগ আর পরামর্শ সবকিছুই যেন অনিকের কাছেই। অজানায় এতটা নিকটস্থ হলেও দূরত্ব ছিল এদের মধ্যে অনেক। আলাদাভাবে আলাদা পৃথিবীতে বেড়ে উঠছিল এই দুটি মানুষ। এ দুটি মানুষের সম্পর্ক জানা-অজানার বাইরে থাকলেও কিছুটা স্পষ্ট হয়ে যায় অনিকের কাছে। তবুও নীলার নিকট তা ঘোলাটে। অসাধ্য কোন সাধনার ঘোলাটে হিসাবটাকে মেলাতে পারে না নীলা। তাই ভুলে থাকাটাই যেন অভ্যাস হয়ে গেছে তার। কেননা তাঁর ধারণা এই হিসাব মিলবে না, অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। কিন্তু প্রকৃতি হয়তো মানুষের অসম্ভব হিসাবটাকেই মিলিয়ে দেয় , এটাই যেন প্রকৃতির একমাত্র কাজ। মনের অগোচরে সকল হিসাব মিলে গেলেও অজানা ছিল নীলা।
৪.
এক দুপুরে অনিকের খোঁজে এসে হঠাৎ টেবিলে রাখা কবিতার ডায়েরিতে চোখ পড়ে গেল নীলার। কৌতুহল থেকেই সেই কবিতা পড়ে ফেলে নীলা। বুঝতে বাকি থাকে না মনের গভীরে যত্নে আছে কেউ। দ্বিধা ,সংশয় আর ভয় এক মুহূর্তেই আঁকড়ে ফেলে নীলাকে। তার মনের কৌতুহল আর ভয় আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। সংশয় আর ভয়ে নীলা যখন থমকে গেল তখনই কয়েক মুহূর্ত পর নিজেকে সামলে ফেলে নীলা। তড়িঘড়ি করে খালি রুম থেকে বেরিয়ে যাবার সময় দরজায় হঠাৎ অনিকের সাথে মুখোমুখি হয়ে যায় নীলা।
অনিক : কিরে ! কখন আসলি ?
মুহূর্তেই মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায় নীলার। নিজেকে মুহূর্তেই সামলে নিয়ে বললো :
- মাত্র এলাম , এসে দেখি তুমি নেই।
অনিক : কোন কাজে এসেছিলি নাকি?
নীলা : তেমন বিশেষ কিছুই নয় চাচীকে দেখতে এসে তোমারও খোঁজ নিতে এসেছিলাম। এসে দেখি তুমি নেই তাই ফিরে যাচ্ছিলাম।
অনিক : ভালই হল এসেছিস। তুই ড্রয়িং রুমে গিয়ে বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। বহুদিন তোর সাথে কথা হয় না আজ চা খেতে খেতে জমিয়ে আড্ডা হবে।
নীলা কিছুই না বলে নীরবে চলে গেল। অনিক ব্যস্তভাবে রুমে ঢুকতেই হঠাৎ টেবিলে রাখা সেই কবিতার ডায়েরিতে চোখ পড়ে গেল। অনিকেরও আর কিছু বুঝতে বাকি থাকলো না কিছুক্ষণ আগে কী ঘটে গেল। সাথে সাথে অনিক ড্রইং রুমে এসে দেখে নীলা সেখানে নেই বাড়ি চলে গেছে। অনুমান স্পষ্ট হয়ে যায় অনিকের কাছে , নীলা ভুল বুঝেই বাড়ি ফিরে গেল। মুহূর্তকাল থমকে দাঁড়ালো অনিক।
৫.
এভাবেই নীরবতায় কেটে গেল কয়েক মাস। হঠাৎ দেখা হলেও নীলাকে দেখে বোঝার উপায় নেই তার মনেও কোন ঝড় বইতে পারে।কারণ নীলার কাছে অনেক সর্বদাই এক অসম্ভব সাধনা। সুতরাং নীলাকে এমন কোন কিছুর তপস্যা করা মানায় না। নীলার মনের অবস্থা নীলার নিজের কাছে যেমন অজানা তেমনি তুচ্ছ। তার মনেও যে ঝড় বইছে এই সত্যটি নীলা স্বীকার করতে চায় না। অহেতুক কোন এক আবেগ ভেবে ঠেলে দিতে চাইছে নিজের মনকে। তার প্রাণোচ্ছল সেই হাসি যেন নীরবতায় হারালো। এভাবে কিছুদিন কেটে যাবার পর হঠাৎ একদিন সকালে অনিকের মায়ের অসুস্থতার কথা শুনেই ছুটে এল নীলা। ঘরে ঢুকতেই নীলা দেখতে পেল মায়ের পায়ের কাছে বসে অনিক, মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পারাচ্ছে একটি অপরিচিত মেয়ে আর পাশেই ডাক্তার বসে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রয়োজনীয় নির্দেশ আর ঔষুধপত্র মেয়েটিকে বুঝিয়ে দিয়েই ডাক্তার সাহেব প্রস্থানের উদ্যোগ করলেন। ডাক্তারকে এগিয়ে দিতে আসলেন এক ভদ্রলোক। ঘর থেকে বের হবার সময় ডাক্তার ও ভদ্রলোকের সঙ্গে চোখাচোখি হল নীলার। চাচির পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে অনিকের দিকে তাকাল নীলা। ঘনকালো মেঘ সরে কাঁচা সোনা রোদের দেখা পেলে যেমনটি হয় অনেকটা তেমনই ছিল অনিকের মুখের ভাব।
নীলা : হঠাৎ কি হয়েছিল চাচি মার ?
অনিক : রাতে হঠাৎ জ্বর বেড়ে এমন শ্বাসকষ্ট হয়েছিল যে আমি কিছুতেই কিছু বুঝতে পারছিলাম না। ভাগ্যিস ! কাকুকে ফোন করতেই ইরা আর কাকু এসেছিল না হলে কি হত কে জানে ?
হঠাৎ ইরার সাথে নীলার চোখাচোখি হল। এরা মুচকি হেসে বলল -
: আমি ইরা , অনিকের চাচাতো বোন।
হঠাৎ করেই অনিকের যেন হুশ আসলো। বলল-
অনিক : ওহ ! ইরার সাথে তো তোর পরিচয়ই করে দেইনি । ও আমার কাকুর মেয়ে আমরা প্রায় সমবয়সী তাই অনেকটাই বন্ধুর মতো।এত রাত্রে মায়ের এমন অবস্থা দেখে কাকুকে ফোন দেয়া মাত্রই ইরাও সঙ্গে চলে এলো। দেখছিস না এসেই কেমন করে মায়ের কি যত্ন করছে। এক রাত্রেই মাকে সুস্থ করে ফেলল। আমি যেন সত্যিই হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
ইরা : তোমার সব বাড়িয়ে বলা। এমন বিপদে ছুটে আসবো না ! ( ইরা জবাব দিল অনিককে )
ক্ষণিক নিরবে ভাবতে লাগল নীলা। বিপদে আপনজনই তো ছুটে আসে। তবে কি ইরাই সেই কাছের জন যাকে যত্ন করে রাখা হয়েছে অনিকের মনে ? ওদিকে ডাক্তারকে এগিয়ে দিয়ে ফিরলেন মিস্টার আসাদুজ্জামান। অনিকের কাকুকে দেখেই দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে পরিচিত হলো নীলা ।কিছুক্ষণ বসে কুশলাদি বিনিময়ের পর বাড়ি ফিরে এল নীলা।
৬.
পরদিন বিকেলে অনিকদের বাড়িতে আসলো নীলা। চাচিকে দেখে আজ পুরোপুরি সুস্থ মনে হচ্ছে। ইরা মেয়েটি বেশ চমৎকার। ইরা আসার পর থেকেই অনিকদের বাড়ির পুরো পরিবেশটাই বদলে গেছে। সাজানো , গোছানো ও পরিপাটি ঘরগুলো দেখলে মনে হয় যেন প্রতিটি স্পর্শেই আছে ইরার স্নেহমাখা যত্ন। কিছুক্ষণ বসে ইরা ও চাচির সাথে গল্প করল নীলা। অনিকের মা আজকাল ইরার প্রতি বেশ মুগ্ধ। তার সন্তুষ্টি মাখা চেহারা দেখলে তা সহজেই বুঝা যায়। নীলার প্রতিও অনিকের মায়ের এক অন্যরকম স্নেহ সেই ছোটবেলা থেকেই তবুও আজ নীলার মনে হলো সেই জায়গা জুড়ে অন্য কারো স্থান।
অনিকের মা : তুই এসেছিস নীলা ? ইরা তোর কথাই বলছিল যে , কাল সকালেই তুই আমায় দেখে গিয়েছিলি আর আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম।
নীলা : এখন তুমি কেমন আছো চাচীমা ?
অনিকের মা : খারাপ আর থাকি কি করে বল ইরার যা যত্ন !
নীলা : জি চাচিমা , তাইতো দেখছি এরা বেশ চমৎকার একটি মেয়ে।
ওদিকে চা নাস্তা নিয়ে ইরা ঘরে প্রবেশ করেই বললো -
ইরা : অনেক হয়েছে প্রশংসা , আসার পর থেকেই সবাই প্রশংসা করেই পর করে দিতে চাইছে।
নীলার দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে ইরা চা দিতে দিতে বলল -
ইরা : কাল তো চলে গিয়েছিলেন ঠিকমত কথাই হয়নি আজ কিন্তু সহজে ছারছি না।
মুচকি হাসলো নীলা , এমন সরল অনুরোধে ইরাকে যেন আরও অসাধারন মনে হল নীলার। শিশুর মতো কোমল , শান্ত ও বুদ্ধিমতি মেয়ে ইরা। সহজেই অন্যের মন জয় করে নিতে পারে তার সরলতা। খুব সাধারন তবুও যেন অসাধারণ একটি মেয়ে। বাড়ি ফিরে এসে একটা ভালো লাগা কাজ করছিল নীলার। ইরার কথা ভেবে মনটা বেশ হালকা লাগছিল তবুও কেন জানি একটা অজানা বেদনা কাজ করছিল নীলার মনে।
৭.
অনিকের সাথে যোগাযোগ অনেকটাই কমে এসেছিল নীলার। হঠাৎ দেখা হলেও কোথাও যেন পালিয়ে যেতে চাইত নীলা। অনিকও নীলার আচরণ লক্ষ্য করতো কিন্তু চাইলেও এই দূরত্বটাকে ভেঙে ফেলতে পারছিল না। এমনই যখন নিছক নীরবতার বিশাল দেয়াল তখনই হঠাৎ একদিন খবর পাওয়া গেল দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে নীলা। সপরিবারে কলকাতায় থাকেন নীলার ছোটমামা। মূলত ব্যারিস্টারি পড়াশোনা করতেই কলকাতা যান তিনি এবং সেখানে পড়ালেখা শেষ করে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে থেকে যান। বেশ কিছুদিন ধরেই নীলাকে কলকাতায় আনার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তিনি নিজেও একজন সফল ও দক্ষ ব্যারিস্টার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং আদরের একমাত্র ভাগ্নিকেও ব্যারিস্টারি পড়াশোনা করিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে আগ্রহী। তাই মামার প্রবল ইচ্ছা আর মায়ের অবিরাম অনুরোধে কলকাতায় যেতে শেষ পর্যন্ত রাজি হলো নীলা। অবশ্য আরেকটি বিশেষ কারণ ছিল। নিজেকে স্বাভাবিক করতে এবং অনিকের চোখের আড়াল হয়ে সব ভুলে যেতে চাইছিল নীলা।
ছোটবেলা থেকেই নীলাদের বাড়ীতে নির্বিঘ্নে যাতায়াত চলতো অনিকের। যদিও আজকাল নীলার নীরবতায় তার কোন পরিবর্তন হয়নি। নীলা অন্যমনস্ক হয়ে বসে কি যেন ভাবছিলো। এমন সময় অনিক তার ঘরে ঢুকে বলল ,
অনিক : শুনলাম তুই কলকাতা চলে যাবি ?
নীলা : হ্যাঁ , অনেকদিন থেকেই মা আর ছোট মামা বলছিলো ওখানে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়াটা শেষ করে ফেলি , ভাবলাম তাই হোক।
অনিক : যেতেই হবে !!
নীলা : কোন কিছুই ভালো লাগছে না। ওখানে গেলে হয়তো ভালোই লাগবে , নতুন জায়গা। আর পড়াশোনা করাটাও তো জরুরী।
কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল অনিক। মুহূর্তেই নিজেকে সামলে নিয়ে সহজভাবে বলল ,
অনিক : আচ্ছা আজ আসি।
বলেই নীরবে চলে গেল অনিক , নীলাও ক্ষণকাল অন্যমনস্ক হয়ে জানালায় তাকিয়ে রইল।
৮.
সপ্তাহ খানিক থেকেই অনিক ভীষণ অন্যমনস্ক অথচ তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই। এই কয়েকটা দিন নিজেকে ঘরে বন্দি করে রেখেছিল অনিক। কারো সাথেই তেমন কথা বলত না , মা এসে জিজ্ঞেস করলেই হাসিমুখে বলতো একটা কাজে ভীষন ব্যস্ত তাই তোমাদের সময় দিতে পারছি না। অথচ কাউকে বুঝতেই দিতনা মনের মধ্যে কি ঝড় বইছে। ওদিকে ছোট মামার ওখানে যাবার সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে নীলা।
আজ নীলা চলে যাচ্ছে। আজ সকাল থেকে অনিকের কোন দেখা নেই, কোথায় যেন নিরুদ্দেশ। কোথায় গেছে কেউ জানে না। না বলেই বাইরে চলে গেছে যদিও এমনটি সে কখনো করে না। এভাবে নিরুদ্দেশ হবার কারন অবশ্যই ছিল। এতোকাল ধরে মনের গভীরে যাকে স্থান দিয়েছিল আজ তো তাকে হারাবার দিন। কি করে সে দৃশ্য সহ্য হবে তার ?
সারাদিন নিরুদ্দেশ পথ চলে সন্ধ্যায় ক্লান্ত-অবনত মুখে বাড়ি ফিরে এল অনিক। নিজের ঘরে ঢুকার সময় দরজায় এসে থমকে দাঁড়ালো।মুহূর্তে হৃদস্পন্দন থেমে গিয়ে বিস্ময়ে হতচকিত স্তব্ধ হয়ে গেল। আগোছালো ঘরটি বেশ পরিপাটি করে সাজানো, তারই মধ্যে এলোমেলো টেবিলের বইপত্র গুলোকে একমনে সযত্নে গুছিয়ে রাখতে নীলা। কি বিস্ময় ! নিজের চোখকেই যেন বিশ্বাস হলো না অনিকের। ক্ষণকাল পরেই নিজেকে সামলে হাঁফ ছেড়ে নীলাকে বলল ,
অনিক : ফিরে এসেছিস তাহলে?
নীলা একমনে কাজ করছিল তাই অনিকের আগমন টের পায়নি। গলার স্বর শুনেই চমকে ফিরে তাকালো অনিকের দিকে। শান্তভাবে মুচকি হাসল নীলা। তারপর গম্ভীর হয়ে বলল ,
নীলা : ফিরে সে আসে যে হারিয়ে যায় , আমি তো হারাইনি।
অনিক হতবাক। নীলা পুনরায় বলল ,
নীলা : বুঝতে ভুল করেছিলাম, তোমাকে নয় নিজেকে। আর যখন বুঝলাম তখন মনে হলো অনেক দেরি করে ফেলেছি তাই ভাবলাম তোমার চোখের আড়াল হব কিন্তু এটাও ছিল আমার আরেকটি বোঝার ভুল।
একটু থেমে নীলা আবার বলল ,
নীলা : যখন চলে যাবো, শেষবারের মতো দেখা করতে এসে দেখি তুমি যে সন্ন্যাসী হতে চলেছ। তাইতো তোমার হাল ধরতে আসলাম।
বলেই নীলা হেসে ফেলল। অনিকের সকল ক্লান্তি অবসাদ যেন এক নিমিষেই কেটে গেল। আবার কিছুক্ষণ পুরো ঘরটা নিরব হয়ে রইলো। সেই নীরবতা কাটলো ইরার আগমনে। অনিকের পিছন থেকে হঠাৎ করেই ইরা এসে বলে উঠলো ,
ইরা : এবার তোমাদের বিয়েটা দিয়েই বাড়ি ফিরব, কি বল?
মুহূর্তেই তিনজনে চোখাচোখি হয়ে হাসিতে পুরো ঘরটা ভরে উঠলো।
ছবি : নেট
৯.
হঠাৎ করেই নীলার ভুল ভেঙে যায় নি। সৌভাগ্যবশত নীলার নিকট সব পরিষ্কার হয়ে যায়। চলে যাবার দিন শেষ বারের মত অনিকের মায়ের সাথে দেখা করতে এসেছিল নীলা। হঠাৎ করেই চলে যাবার খবরটা নীলার মুখে শুনতে পেয়ে যেমনি অপেক্ষায় চাচি তেমনি ইরা। অনেকদিনের স্নেহের মায়া কাটিয়ে চলে যাওয়াটা কঠিন হলেও সিদ্ধান্তে অটল নীলা।
ইরা যেমনি চমৎকার তেমনি বুদ্ধিমতি মেয়ে। নীলার হঠাৎ করে চলে যাওয়া এবং অনিকের হঠাৎ নিরুদ্দেশ হবার কারণটা পরিষ্কার হয়ে যায় তার কাছে। তাছাড়াও চাচাতো বোনের পাশাপাশি অনিকের অনেক ভালো বন্ধুও ছিল ইরা। তাই মুহূর্তেই সব বুঝে যায়। নীলাকে থামিয়ে দিয়ে বলল ,
ইরা : পালিয়ে যাচ্ছো ? নিজের থেকে পালাচ্ছো নাকি অনিকের ভালোবাসা থেকে পালাচ্ছো?
থমকে যায় নীলা। ইরা পুনরায় বলল ,
ইরা : যে মানুষটি সারাজীবন তোমাকে ভালোবাসলো আজ তাকেই অস্বীকার করে পালাচ্ছো ? এত বোকা তুমি ! একবার জানতেও চাইলে না ? কিছু বলার সুযোগটাও দিলে না?
মুহূর্তে মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায় নীলার। কিছুই বলতে পারছিল না নীলা কিন্তু সংশয়ের সকল দেয়াল ভেঙে চুরমার হয়ে গেল মুহূর্তেই। সকল হিসেব মিলে পরিষ্কার হল এবার। অনিকের মা প্রথমটা কিছুই বুঝতে পারছিল না কিন্তু ইরার কথাগুলো শুনে সব পরিষ্কার বুঝতে পারল।আলতো করে নীলার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
অনিকের মা : এ মায়ের স্নেহে কি কোন কমতি ছিল যে পালিয়ে যাচ্ছিস?
নিজেকে আর সামলে রাখতে পারলো না নীলা, চাচিকে জড়িয়ে ধরে কেদে ফেলল। থেমে গেল নীলার কলকাতা যাত্রা। ঘন-কালো মেঘ সরে বিশাল আকাশে রোদের দেখা মিললো।
১০.
দু'পরিবারের দীর্ঘদিনের প্রতিবেশীর সম্পর্কটা আত্মীয়তায় রূপান্তরিত হতে চলছে। এ যেন কল্পনা ! দ্বিধা আর সংশয়ের বিশাল দেয়াল ভেঙে দুটি পরিবারের এক হয়ে যাওয়াটা অনেকটা স্বপ্নের মতোই সুন্দর। এমনই স্বপ্নীল সময়ে সূর্যাস্তের এক গোধূলি বিকেলে পাশাপাশি বসে অনিক ও নিলা জীবনের সম্ভাবনাময় মুহূর্তগুলোর ভাবনায় বিভোর।
নীলা : হুট করেই সব কেমন পাল্টে গেল তাই না ? আমার তো এখনো সব স্বপ্নের মতোই লাগছে।
অনিক : স্বপ্ন হলেও এটাই যে সত্যি নীলা।
নীলা : হুম। এই সত্যিটা যেন স্বপ্নের মতোই সুন্দর হয়। আমাদের নতুন জীবন শুরু হচ্ছে ভাবতে আমি আনন্দে শিহরিত। এখন থেকে তোমার এই এলোমেলো জীবন যাপন পাল্টে ফেলতে হবে।আমি ভেবেছি আমাদের মেয়ের নাম হবে নীলাঞ্জনা ! কেমন হবে বল তো ?
অনিক : অসাধারণ !
ওদিকে দুই পরিবারেই বেশ আনন্দ-উৎসবে চলছে আনন্দ বিয়ের আয়োজন। আনন্দ-উল্লাসেই দিন কেটে যেতে লাগল। এমনই এক দিনে হঠাৎ বেঁজে উঠল ফোন। রিসিভার তুলে অনিক হ্যালো বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল নীলার মা। জরতা মাখা স্বরে বলল , " নীলা আর নেই।" সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় নীলা। আঁতকে উঠে অনিক। মুহূর্তেই থমকে যায় অনিকের জীবন, স্তব্ধ হয় চারপাশ। উৎসবের রোলগুলো কান্নার আর্তনাদে ভেঙে পড়ল। স্বপ্নের মতো সত্যিটা যত সুন্দর ছিল এই নির্মম বাস্তবতা ততটাই মর্মান্তিক হয়ে দাঁড়ালো। থমকে গেল অনিকের সাথে সকলের জীবন। নীলাকে হারিয়ে এলোমেলো হলো অনিক।
ছবি : নেট
১১.
নিস্তব্ধ ঘোর কাটতে চায় না,তিন বছর হল তবুও অনিকের জীবন যেন থমকেই আছে। মানুষ জীবনকে থামিয়ে দিতে চাইলেও জীবন থেমে থাকে না। সময় হারিয়ে যায় তবু হারায় না অনুভূতি। প্রকৃতির অবিরাম গতি জীবনকে গতিশীল করলেও থেকে যায় অতীত স্মৃতি।
নীলার মত প্রাণবন্ত মেয়েকে হারিয়ে নীলার বাবা-মা যেমনি ভেঙে পড়েছিলেন তেমনি ভেঙে পড়েছিলেন অনিকের মা। আর এই ব্যথিত হৃদয়ের নিঃস্বার্থ উপশম হয়ে দাঁড়ালো ইরা। অনিকের যন্ত্রণা ইরাকে আহত করে। নীলার প্রতি সবার ভালোবাসা ইরাকে এক অজানা মায়ায় জড়িয়ে ফেলে। তাই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা দিয়ে এ ব্যথিত হৃদয় গুলোকে বাঁচিয়ে রাখে ইরা। কঠিন সময় এমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পাওয়া সত্যি ভাগ্য। তাই সকলের ইচ্ছা আর অনুরোধেই অনিকের জীবনের নতুন মোড় এসে গেল।
ইরার সঙ্গে অনিকের বিয়ে। সময় লেগেছে তবু কঠিন ছিল না ইরার মত নিঃস্বার্থ বন্ধুকে গ্রহণ করা। যার অন্তঃস্থলে গভীরভাবে কারো অস্তিত্ব সেখানে অন্যকে গ্রহণ করা সময়ের ব্যাপার আর যে একমনে ভালোবেসেছে তাকে আপন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া সৌভাগ্য। কারন সে ভালোবাসার মর্ম বোঝে তাই ইরার জীবনে অনিক সেই সৌভাগ্য।
চলতে শুরু করলো অনিকের জীবন , তবে কোথায় যেন শূন্যতা। ইরার শ্রদ্ধা-ভালোবাসা গোছাতে শুরু করে অনিকের জীবন। জীবনের প্রতি, ইরার প্রতি কোন অবহেলা নেই অনিকের শুধু এক অজানা অপূর্ণতা কাজ করে। বিয়ের দুবছর পর আজ বাবা হলো অনিক। ছোট্ট ফুটফুটে কন্যাসন্তান। মেয়েকে বাবার হাতে তুলে দিয়ে ইরা বলল,
ইরা : বলতো , কার মতো দেখতে?
অনিক : ঠিক তোমার মতো, চমৎকার।
ইরা : চমৎকার কিন্তু আমার মত না , ঠিক নীলার মতো !
অবাক হয়ে তাকালো অনিক । শান্ত ভাবে হেসে আপন-মনে ইরা বললো ,
ইরা : নীলাকে দিয়েই তো তোমাকে পেয়েছি। নীলাকে এতটা ভালো না বাসলে হয়তো আমার মনে তোমাকে খুঁজে পেতাম না।ওর নাম হবে নীলাঞ্জনা , আমাদের নীলার নীলাঞ্জনা। আমাদের জীবনের ধ্রুবতারা !
আনন্দ আর তৃপ্তির অকৃত্রিম শান্তিতে ভরে গেল অনিকের মন। কতটা বিশাল হৃদয়ের হলে এতটা ভালোবাসা যায় এই ভেবে অপলক তাকিয়ে রইল ইরার দিকে। গভীরভাবে শান্ত মনে বলল,
অনিক : নীলাকে হারাইনি , নীলা নিজ হাতে তোমাকে দিয়ে গেছে। কারণ তোমার চেয়ে বেশি যত্ন করে অন্য কেউ নীলাকে আমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখতে পারত না নীলা জানতো নীলার ভালোবাসার মানুষ গুলোকে তুমি যত্নে আগলে রাখবে। নীলাকে ছাড়া যতটুকু অপূর্ণতা আমাদের জীবনে ছিল তোমাকে পেয়ে সেটা পূর্ণ হয়ে গেল।
" প্রকৃতির নির্মমতায় কিছু ভালোবাসা মানুষ হারিয়ে ফেলে আবার প্রকৃতির নিয়মেই পুনরায় ফিরে পায় সেই ভালোবাসা। যা জীবনের সকল শূন্যতা পূর্ণ করে দেয়। এটাই মহান সৃষ্টিকর্তার নিয়ামত। নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তা সর্বোত্তম কৌশলের অধিকারী। "
- দেয়ালিকা বিপাশা
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:০৯
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: লেখাটা আপনার ভালো লেগেছে জানতে পেরে খুব খুশি হলাম । ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি পড়ে প্রথমে মন্তব্য করার জন্য।
আপনার জন্যেও রইলো অনেক শুভকামনা
২| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ ভোর ৬:৫১
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: পরের লেখা কবে আসবে?
০৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৩৪
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: কবিতা কথ্য ,
আপাতত কিছু লেখা হয়নি। তবে ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই কিছু লিখে পোস্ট করব। আশা করি সাথেই থাকবেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।
শুভকামনায়,
- দেয়ালিকা বিপাশা
৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৫৭
খোলা জানালা। বলেছেন: দারুণ!
পোরওটা পড়ে মতামত দিচছি
০৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৩৮
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: খোলা জানালা,
আপনাকে আমার ব্লগে সুস্বাগতম।
অনেক অনেক ধন্যবাদ পুরোটা গল্প পড়ে মতামত জানানোর জন্য। নীলার নীলাঞ্জনা আমার লেখা প্রথম গল্প। খুব ভালো লাগলো জানতে পেরে গল্পটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে।
ইনশাল্লাহ আরও লেখা পোস্ট করব আশা করি সাথে থাকবেন।
শুভকামনা,
- দেয়ালিকা বিপাশা
৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৩৭
সোনালি কাবিন বলেছেন: কাহিনীর সিকোয়েন্স ভালো । তরতর করে এগিয়েছে গল্প ।
# নতুন লেখার কথা জানতে চাইছিলেন । আসলে ধৈর্য নেই । তাই পুরানো আইডির একটা লেখা আপলোড দিলাম । দেখা ও মন্তব্যের অনুরোধ রইল ।
০৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৫১
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: সোনালী কাবিন,
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি পড়ার জন্য। আপনি বলেছেন তরতর করে এগিয়েছে গল্পটি। গল্পটিকে সংক্ষিপ্ত করে লিখেছি চাইলে আরও ব্যাখ্যা করতে পারতাম কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় বড়গল্পে বা বেশি কথায় মাধুর্য থাকে না তাই সংক্ষিপ্ত করে সুন্দর রাখার চেষ্টা করেছি গল্পটিকে। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মতামত জানানোর জন্য।
আপনার লেখার কথা জানতে চেয়েছিলাম আপনি বলেছেন পুরনো আইডি থেকে একটা লেখা আপলোড করেছেন। ইনশাল্লাহ চেষ্টা করবো সময় করে পড়ে নিতে। ভালো থাকবেন।
শুভকামনা ,
-দেয়ালিকা বিপাশা
৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:০১
আমি রানা বলেছেন: প্রথমেই আপনার লিখার প্রশংসা করছি। যেন আমার জীবনের খানিকটা বাস্তব অংশ
নীলাঞ্জনা নীলা....
০৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৫৫
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে , লেখাটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জানতে পেরে আমি আনন্দিত। আসলে প্রতিটি গল্পেই জীবনের কিছু অংশ থাকে। জীবন থেকেই গল্প রচনা করা হয়।
নীলার নীলাঞ্জনা আমার প্রথম লেখা কোন গল্প। ভালো থাকবেন।
শুভকামনা,
- দেয়ালিকা বিপাশা
৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:৪৭
সোনালি কাবিন বলেছেন: লেখক বলেছেন:
নীলার নীলাঞ্জনা আমার প্রথম লেখা কোন গল্প।
# বাহ! প্রথম গল্পেই আপনি বেশ সাবলীল।
০৬ ই আগস্ট, ২০২১ ভোর ৬:১২
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে প্রশংসার জন্য।
শুভেচ্ছা
-দেয়ালিকা বিপাশা
৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ৭:৫৬
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
কিছু কিছু গল্প কবিতা আছে যা চমকে দেয় । সে সব কবিতা বা গল্প লেখকসত্তার ভিতরের
মুদ্রনশিল্প অবিরাম অর্থময় একটা সৌকর্য তৈরী করে -যা বুজতে জটিল মনে হয়না, সহজেই
তার ব্যঞ্জনা অন্যকে বুঝাতে পারে ।একজন লেখক কেমন করে তার সৃজিত-পুজিত লালিত
বাণীকে শৈল্পিকভাবে গল্প কবিতায় পাঠকের সামনে তুলে আনেন তা দেখা যায় এই গল্পের
প্রারম্বিক কবিতায় এবং পরের গল্প কথার গাথুনী ও প্রকাশ শৈলীতে।গল্পের বিষয়বস্তুর জরুরী
অনুসঙ্গকে দেখা যায় সুন্দরভাবে তুলে এনেছেন অপরূপ সৃজন দৃষ্টিভঙ্গী ও নিজস্ব মননে ।
গল্পটি স্বার্থক হয়েছে পাঠককে তার নীজ মহিমায় হাত ধরে টেনে আকর্ষন করতে ।
মানুষের মানুষ লক্ষণ - মানুষের জটিল দ্বন্ধমুখর মনোজগতের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার অন্তর্গত ছবিটিই
যেন ফুটে উঠেছে গল্পটিতে । সমাজ জীবনে বসবাসকারী মানব-মানবীর যে জীবন্ত ক্রিয়াশীলতা
এবং সে সব ক্রিয়াশীলতার গহীনে যে অন্তরবোধের অদৃশ্য ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া আছে তাকে জীবনাচার
ও মনের বোধনে আকারে ঈঙ্গিতে ধরিয়ে দেয়াইতো কবি সাহিত্যকের কাজ। সেটি সফলভাবেই
পরিস্ফুটিত হয়েছে গল্পটিতে ।
জগত ও সংসারের চলমানতার মধ্যে সংগতি আর অসংগতিকে ধরে চিহ্নিত করাই লেখক সত্তার
অনিবার্য বিষয় । মানুষের মন ও চেতনার ভিতরে গিয়ে সংগোপনে বসে সংগুপ্ত বেদনাকে চারিয়ে
দেওয়া এবং সুন্দর মুখশ্রীকে যাবতীয় অসুন্দরের বিরোদ্ধে সত্যের প্রেরনায় জাগিয়ে তোলাতেই
একটি গল্পের স্বার্থকতা । সেটিই দেখা গেল গল্পের ভিতরে। গল্পটি যেন তারি মুর্ত প্রকাশ।
চোখের সামনে বেড়ে উঠা দুটি প্রানান্ত খেলার সঙ্গী অনিক ও নীলার পরিবর্তনহীন মনোজগত অন্যের
কাছে সহজে প্রকাশ হতে দেয়না । দুটি সঙ্গীর ছেলেবেলাকার সে মনোজগতের ও বোধের প্রত্যাশা
জাগ্রত থাকে নিরন্তরই । তারি প্রকাশ দেখা যায় যৌবনে এসেও সুবোধভাবে বলা তাদের কথাবার্তা ও
চালচলনে । মনের অগোচরে সকল হিসাব মিলে গেলেও নীলার কাছে অনিক অজানা থেকে যায় ।
আর অনিকের মনের গভীরে কে আছে তা অনিকের ডায়রিতে পাওয়া কবিতায় কিছুটা নীলার মনে
সংসয় জাগায় , তবে অনিক বুঝতে পারে নীলা তাকে ভুল বুজেছে ।
যাহোক, এক পর্যায়ে নীলার ভুল ভাঙ্গে এবং খুব সরল করেই বলে হরিয়ে সে যায়নি তাই অনিকের
প্রশ্নে বলে সে হারিয়ে যায়নি কভু তার ফিরে আসার কথাই বা আসে কেমন করে । ভুলের অবসান
তাদেরকে টেনে নিয়ে যায় একান্ত কাছে। নীলার মনের ঘনকাল মেঘ সরে গিয়ে বিশাল আকাশে রোদের
দেখা মিলে , ঠিক যেমনটি বলা হয়েছে গল্পের প্রারম্বিক কবিতায় -
ব্যস্ত শহরে ক্লান্ত পদচারণা,
তখনই হঠাৎ আলোর জোছনা !
সেই আবছা আলোয় সূর্যের মতো কিরণ
স্বপ্ন বুনে, তারা, মনের গহীনে জন্ম নেয় অনিক-নীলা-নীলাঞ্জনার ভুবন হবে অসাধারণ ।
এমনি এক সময়ে হঠাৎ সড়ক দুর্ঘনায় নীলার জীবনাসনে নেমে আসে অনিকের জীবনে চরম
অমানিশা , থেমে যায় জীবনের গান । এখানে এসে গল্পের ট্রেজিক পরিনতিতে মর্মাহত হই
আমরা । যাহোক জীবন থেমে থাকেনা ।
কিছু দিন বাদে বিষাদের ঘনঘটা কেটে যায় মায়াময়ী আরেক সরল হৃদয় ইরার আগমনে ।
তার উদার ভালবাসা গোছাতে শুরু করে অনিকের জীবন। যদিও নীলার অবর্তমানে অনিকের মনে
অপুর্ণতা থেকে যায় । তবে অপুর্ণতা থেকে গেলেও নীলার নীলাঞ্জনা ঠিকই আসে অনিকের জীবনে ।
তাইতো দেখা যায় গল্পের যবনিকায় খুবই মুল্যবান কথা হযেছে বলা প্রকৃতির নির্মমতায় কিছু
ভালবাসা মানুষ হারিয়ে ফেলে আবার প্রকৃতির নিয়মেই পুনরায় ফিরে পায় সেই ভালবাসা ।
সুন্দর গল্পটির জন্য ধন্যবাদ ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল ।
০৭ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৫৭
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: ডাঃ এম এ আলী,
প্রথমে দুঃখপ্রকাশ করছি আপনার মন্তব্যের প্রতিমন্তব্য দেরিতে জানানোর জন্য। কেননা এক বাক্যে আপনার মন্তব্যের প্রতি মন্তব্য দেয়া সম্ভব না।
অসাধারণ আপনার উপলব্ধি ! আমি অভিভূত ! কেননা, আমার ধারণা লেখকের অনুভূতি শুধুমাত্র লেখকই অনুভব করতে পারেন কিন্তু আমার একান্ত উপলব্ধিকে এতটা সাবলীল ও মাধুর্যপূর্ণ ভাষায় ব্যাখ্যাটা সত্যিই আমাকে আনন্দিত করেছে !
আপনি বলেছেন, " জগত ও সংসারের চলমানতার মধ্যে সংগতি আর অসঙ্গতিকে ধরে চিহ্নিত করাই লেখক সত্তার অনিবার্য বিষয়।মানুষের মন ও চেতনার ভেতরে গিয়ে সংগোপনে বসে সংগুপ্ত বেদনাকে চারিয়ে দেওয়া এবং সুন্দর মুখশ্রীকে যাবতীয় অসুন্দরের বিরুদ্ধে সত্যের প্রেরণায় জাগিয়ে তোলাতেই একটি গল্পের সার্থকতা। " - কথাটি অসাধারণ এবং মনমুগ্ধকর। শৈল্পিকতার প্রতি এরূপ দৃষ্টিভঙ্গি যেন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত এক নিয়ামত।
মেয়েবেলায় একবার কোথাও পড়েছিলাম কবি শব্দের অর্থ সৌন্দর্যের পূজারী। সেদিন থেকেই মনের অজান্তেই সৌন্দর্যের খোঁজে বেরিয়ে পড়লাম। পৃথিবীর সকল সৌন্দর্যকে অনুসন্ধান করে আপন আলোতে পুরে ফেলার সুন্দর যাত্রার সন্ধান শুরু করে দিলাম। এ যেন এক দারুন খেলা! অসুন্দরের মধ্য থেকে সৌন্দর্যকে টেনে বের করে এনে বিলিয়ে দেয়াতে যেন এক অনাবিল সুখ লুকিয়ে থাকে। নিরবে যেন কাগজে-কলমে হাজারো ঘনঘটার রূপরেখা একে ফেলা!
গল্পটি সার্থক এবং সুন্দর হয়েছে এটি অনেক বড় প্রাপ্তি। জগতের কোন কিছুই সর্বোৎকৃষ্ট নয় তবুও আন্তরিকতার চেয়ে সর্বোৎকৃষ্ট অন্য কিছু হতে পারে না। লেখাটি আমার আন্তরিকতার অংশ। তাই মনে করি সামান্য ভুল ত্রুটিতেও গল্পের শৈল্পিকতার সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে না।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মনমুগ্ধকর এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য। অনেক অনেক শুভকামনা জানবেন এবং আশা রাখি আগামী দিনগুলোতেও সাথে থাকবেন।
- দেয়ালিকা বিপাশা
৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:১৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: একদম শুরুতে হয়তো আমাকে একথা বলা উচিত হচ্ছে না। বিষয়বস্তু ভালো লেগেছে। তবে অনেকটাই মেদবহুল হয়ে গেছে। কাহিনী বর্ণনা শব্দচয়ন উপমা ব্যবহারে পারফেক্ট। আপনি নিয়মিত লিখুন।ব্লগ একজন শক্তিশালী লেখককে পেলো। আগামীতে এমন পোস্টের আগ্রহে অপেক্ষায় থাকলাম।
পোস্টে পঞ্চম লাইক।
শুভেচ্ছা আপনাকে।
০৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১২:৪৩
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: পদাতিক চৌধুরী ,
দুঃখ প্রকাশ করছি দেরিতে প্রতি মন্তব্যের জন্য। গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জানতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত এতটা আশা করিনি। আপনি বলেছেন ব্লগ একজন শক্তিশালী লেখককে পেল জানিনা এতটা সম্মানের যোগ্য কিনা তবে আপনার মন্তব্যটি আমার জন্য অনুপ্রেরণা হবে এতোটুকু জানি। বলেছেন এমন পোস্টের জন্য আগামীতে আগ্রহে অপেক্ষায় থাকবেন এটি আমার জন্য অনেক বড় কমপ্লিমেন্ট।
চেষ্টা করব মন দিয়ে লিখতে এবং ত্রুটিমুক্ত লিখতে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সাথে থাকার জন্য এবং অনুপ্রেরণা দেবার জন্য।
অনেক শুভকামনা জানবেন।
- দেয়ালিকা বিপাশা
৯| ০৬ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:১৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনি মডারেটর কাল্পনিক ভালোবাসা ভাইকে একটা মেইল করে প্রথম পাতায় স্থান পাওয়ার একটা অনুরোধ করতে পারেন। আশাকরি দ্রুত সেফ স্ট্যাটাস পাবেন।
০৬ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১১:৪৭
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: পদাতিক চৌধুরী,
প্রথমেই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা প্রার্থনা করছি। কেননা ধন্যবাদ বলে আপনাকে ছোট করতে চাইছি না। আপনার পরামর্শটি একজন প্রকৃত বন্ধুর পরিচয়ক। ইনশাআল্লাহ আপনার পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করব।
অনেক শুভকামনা জানবেন।
- দেয়ালিকা বিপাশা।
১০| ০৬ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:২৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: দেয়ালিকা বিপাশা,
গল্পটি পড়লুম। প্রথম লেখা গল্প হলেও জড়তা ছিলোনা, তবে সিনেমাটিক টানাপোড়েন আছে। আর শেষের প্যারাটি অহেতুক মনে হয়েছে। ওটা না থাকলেই ভালো হতো।
আমার এমন কথাতে আশা করি মনে কিছু নেবেন না। আপনার লেখা যাতে আসলেই শক্তিশালী হয়ে ওঠে সেজন্যে আপনার যোগ্যতাকে সবলে ঝাঁকি দিতে এমন কথা বলা।
শেষে বলি - গল্প পড়ুন বেশী বেশী। লেখার পরে পরেই দ্রুততার সাথে প্রকাশ করবেন না লেখা । নিজে পাঠক হয়ে দেখতে চেষ্টা করবেন লেখার দূর্বলতাগুলো। বুঝতে চেষ্টা করবেন আর কি হলে লেখা আরও শক্তিশালী হতো। বারবার লেখা কাঁটাচেরা করতে হবে, ঘসতে হবে - মাজতে হবে।
সামনের দিনে সফলতা আর শুভ কামনায়।
০৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১২:৫১
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: আহমেদ জী এস ,
আপনার মন্তব্যের অপেক্ষাতেই ছিলাম!
ধন্যবাদ আপনাকে আমার ভুলত্রুটি ধরিয়ে দেবার জন্য। আপনি ঠিকই বলেছেন আপনার কথাতে আমি কিছু মনে করিনি বরং খুশী হয়েছি আমার ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে তা শুধরাবার পরামর্শ দেবার জন্য। আপনি ঠিকই বলেছেন গল্পটিকে আরো শক্তিশালী করতে পারতাম কিন্তু এত বেশি না ভেবেই লেখাটি প্রকাশ করে ফেলেছি।
আশা করি শক্তিশালী লেখার জন্য আপনি আগামীতেও পরামর্শ দেবেন এবং সাথেই থাকবেন।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
- দেয়ালিকা বিপাশা
১১| ০৬ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১১:২৮
শায়মা বলেছেন: বাপরে!
আপুনিমনি!!!!!!!!!!!!!
মন দিয়ে পড়লাম তোমাকে দেখতে এসে। আটকে গেলাম!!!!!
গুড গুড ভেরী গুড!!!!!!!!!
০৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১২:৩৪
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন:
আরে আপু !!! কেমন আছো তুমি ??
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু তোমাকে গল্পটি পড়ার জন্য এবং সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। গল্পটি তোমার ভালো লেগেছে জানতে পেরে খুব খুশি হলাম।
ভালো থেকো , সুস্থ থেকো, সাবধানে থেকো। অনেক অনেক শুভকামনা তোমার জন্য।
১২| ০৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ২:৪৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
উপরের ৭ নং মন্তব্যে থাকা নীচের বাকাংশটিতে পরের শব্দটিতে একটি মারাত্বক বানান প্রমাদ রয়েছে
এই গল্পের প্রারম্বিক কবিতায় এবং পরের গল্প কথার গাথুনী ও প্রকাশ শৈলীতে
এখানে পরের শব্দটিকে দয়া করে পরে হিসাবে ধরে নিবেন ।
০৭ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:০১
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: ত্রুটি সংশোধনের মনোভাব আপনার সচেতনতা এবং আন্তরিকতার পরিচয় বহন করে, যা প্রশংসনীয়। ধন্যবাদ আপনাকে গল্পটি পড়ে এত সুন্দর বিশ্লেষণমূলক মন্তব্যের জন্য।
অনেক অনেক শুভকামনা।
১৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:৫৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: নীলা আর ইরা দুইজনেই সংবেদনশীল ও বুদ্ধিমতি মেয়ে। ত্যাগের মানসিকতা উভয়ের মধ্যেই ছিল। যা ঘটার ছিল তা ঘটলো না। যা ঘটার কথা ছিল না, শেষ পর্যন্ত তাই ঘটলো। নীলা পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার আগে প্রাপ্তি আর তৃপ্তি নিয়ে গেছে। আর ইরার জন্য অনিককে প্রাপ্তি তার ধারনার ঊর্ধ্বে ছিল সম্ভবত। লেখিকা ভালো জানবেন। আর অনিকের ডাবল ডাবল প্রাপ্তি।
গল্প খুব ভালো লেগেছে। অনেক বাক্যের মধ্যে কোথাও কোথাও টেকনিকাল কারণে গ্যাপ তৈরি হয়েছে। সময় করে ঠিক করে নিবেন দয়া করে।
০৭ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:১৩
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: সাড়ে চুয়াত্তর,
ইরার জন্য অনিক অনাকাঙ্খিত প্রাপ্তি, অনেকটা ঘটনাক্রমে বলতে পারেন। আরো সহজ করে বলতে গেলে সমবয়সীর বেদনা একমাত্র কাছের বন্ধু বুঝতে পারে সেই সমবেদনা থেকে এবং মায়াবতী চরিত্রের দিক থেকে অনিকের প্রতি ইরার ভালোবাসার সৃষ্টি। অনিকের প্রাপ্তি একমাত্র নীলা এবং ইরা তার জীবনে পরিপূর্ণতা। কিছু প্রাপ্তিকে আমরা ঘটনাক্রমে হারাই আর কিছু প্রাপ্তি জীবনে পূর্ণতা এনে দেয়। অনিক সেই ভাগ্যবানদের মধ্যে একজন যে কিছু হারিয়ে প্রকৃত পূর্ণতা পেয়েছে।
টেকনিক্যাল গ্যাপ গুলো সংশোধন করা হয়েছে। ধন্যবাদ ভুলটি ধরিয়ে দেবার জন্য। গল্প খুব ভালো লেগেছে জানতে পেরে আনন্দিত হলাম।
শুভকামনা জানবেন।
- দেয়ালিকা বিপাশা
১৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৪:৪২
হাবিব বলেছেন: আপনি মনে হয় সেফ হয়েছেন। আপনার স্ট্যাটাস চেক করুন
০৮ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৯:১৪
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: হাবিব ,
জি, আমার মডারেশন স্ট্যাটাস সেফ দেখাচ্ছে। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
গল্পটি পড়ার আমন্ত্রণ রইল। আশা করি ভালো লাগবে।
শুভকামনা ,
- দেয়ালিকা বিপাশা
১৫| ১২ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ৮:৪২
আহমেদ জী এস বলেছেন: দেয়ালিকা বিপাশা,
আপনার নতুন লেখা কই ? প্রথম পাতাতে জায়গা হয়েছে সম্ভবত। এই পোস্টে আমার প্রথম মন্তব্যটি যখন করি তখনই তা
ব্লগের সাম্প্রতিক মন্তব্যের ঘরে দেখা গিয়েছিলো। সে থেকেই ধরে নিয়েছি আপনি সম্ভবত "সেফ" হয়েছেন।
১৩ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৫২
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: আহমেদ জী এস,
আপনি নিজে থেকে আমার ব্লগে এসে খোঁজ নিয়েছেন বলে খুবই খুশি হয়েছি ! সাম্প্রতিক একটি নতুন লেখা লিখছি কিন্তু একটু ঝামেলায় আছি বলে তা পোস্ট করা হয়নি। আশাকরি দু-একদিনের মধ্যে শীঘ্রই পোস্ট করব।
আর হ্যাঁ আরেকটি কথা প্রথম পাতায় আমার স্থান হয়েছে অর্থাৎ আমি এখন একজন সেফ ব্লগার। ব্যাপারটি আপনাকে জানানো হয়নি সেজন্য দুঃখপ্রকাশ করছি আর অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে সাথে থাকার জন্য।
নতুন একটি গল্প লিখছি কয়েকদিনের মধ্যেই সেটা পোস্ট করে দেব। পড়ে জানাবেন আপনার কেমন লাগলো।
অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।
- দেয়ালিকা বিপাশা
১৬| ১৪ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৩৮
ফেনা বলেছেন: সুন্দর একটা গল্পের জন্য শুভকামনা।
ভালো থাকবেন সতত।
১৪ ই আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৫:০২
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন:
আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছান্তে ,
-দেয়ালিকা বিপাশা
১৭| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৫০
মিরোরডডল বলেছেন:
পাশা ভালো লেখে, কিন্তু আমার প্রবলেমটা হচ্ছে গল্পটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঠিক যা হবে যেভাবে হবে মনে হচ্ছিলো,
ঠিক তাই হয়েছে । আই মিন ইন এডভান্স বুঝতে পারছিলাম কি হতে যাচ্ছে নেক্সট ।
নীলা ইরাকে নিয়ে ভুল বুঝেছে । মনেই হচ্ছিলো সে তার ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসবে, তাই হয়েছে । এও মনে হয়েছে ইরা অনিককে লাইক করে কিন্তু এটা কখনও প্রকাশ করেনি বা করবে না যেহেতু নীলা অনিক দুজন দুজনকে লাভ করে । খুশী হয়ে বিয়ে সেলিব্রেট করবে কাজিনের ভুমিকায় । নীলা মারা যাবার সাথে সাথেই মনে হয়েছে এবার ইরার প্রবেশ হবে । আর তাদের মেয়ে বাবু হলে নাম হবে নীলাঞ্জনা এ যেনো অবধারিত ।
নেক্সট গল্প কিন্তু টুইস্ট চাই । নতুন চমক । সাসপেন্স থাকতে হবে ।
কয়েক মাস আগে কবিতাপুর একটা গল্পের মেইন থিম এর সাথে কিছুটা মিল আছে ।
গল্পটার নাম মনে পড়ছে না । পরে মনে করে বলবো ।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০৩
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: সময় করে গল্পটি পড়েছ বলে অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।
আর তুমি যে বুদ্ধিমতী মেয়ে তাইতো অ্যাডভান্স বুঝতে পেরেছ কি কি হবে গল্পটিতে। আর হ্যাঁ ইচ্ছা আছে অনেক সাসপেন্স নিয়ে একটি গল্প লেখার। কখনো সুযোগ হলে লিখে পোস্ট করব।
১৮| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৫১
মিরোরডডল বলেছেন:
ওপরে ছবির মেয়েটা খুব সুন্দর !
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:০৪
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: ওপরের ছবির মেয়েটা খুব সুন্দর! হ্যাঁ একদম ঠিক বলেছ। গল্পটির সাথে যেন ছবিটা একদম মিলে যায়।
১৯| ১৬ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:৫৭
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: গল্প শেষে আমার মাথায় এটাই আসল যে অনিক মরে গেলে ব্যাপারটা কেমন দেখাতো ..............................................
আচ্ছা বিয়ের পর নীলা কী অনিকের সাথে থাকতো না ?
১৮ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ২:৩৬
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন: আপনার প্রশ্নটি আমি ঠিক বুঝতে পারি নি। একটু বুঝিয়ে বললে খুশি হবো। ধন্যবাদ।
২০| ১৮ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ২:৪৫
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: বুঝিয়ে বলত গেলে আবার পড়তে হবে , থাক তবে !!
১৯ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ৩:০৯
দেয়ালিকা বিপাশা বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২১ ভোর ৪:৩৪
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: অসাধারন হয়েছে- লিখা টা।
খুব সরল ভাবে এতো কঠিন ঘটনার প্রবাহ বর্ননা করেছেন- এক কথায় অনন্য।
আপনার লিখার শুভ কামনা।