নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুসলিম বাংলাদেশী। সর্ব অবস্থায় আলহামদুলিল্লাহ ।

নীল বৃষ্টি(রিপন)

আলোর দিশারী

নীল বৃষ্টি(রিপন) › বিস্তারিত পোস্টঃ

আতঙ্কের একদিন ! আমার বাসায় আমি নিরাপদ নয় ।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৩৩

গত কাউন্সিলর নির্বাচন এর সময় একদিন ছুটি পেয়েছিলাম,মনে মনে ভাবলাম কাল সারাদিন বাসায় কাটাবো,বের হবো না। পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো মনে হলে ভোটটা দিয়ে চলে আসবো। আর বাসার পাশেই যখন ভোট কেন্দ্র বসে বসে লাইভ দেখবো, রাতে ঘুমানোর আগে এমন ভেবেই ঘুমিয়ে ছিলাম।


ভোর ৪টায় বোমার বিকট আওয়াজে ঘুম ভাঙলো, বুঝতে দেরি হলো না যে,নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একটু বের হওয়ার চিন্তা করলাম, গেইট টা খুলেই উকি দিতেই দেখি গেটের সামনে সারিবদ্ধ ভাবে অনেক গুলো পুলিশ বসে আছে । বের হতে চেষ্টা করলাম আম্মু বললো এখন বের হইছ না, তাই আর বের হলাম না। যাইহোক এইরুম ঐরুমে হাটা-হাটি করে টিভি দেখে ঘন্টা ২/৩ ঘন্টা সময় কাটালাম, আর কত এবার ছাদে গিয়ে ভোট কেন্দ্রর পরিস্থিতি দেখি, আম্মুকে বললাম আমি ছাদে যাচ্ছি,আম্মু নিষেদ করলো কিন্তু তার পরও চলে গেলাম,গিয়ে দেখি কেউ বলতেছে আপা-ভাইয়া আসেন, কেউ বলতেছে ঘরে গিয়ে বসে থাকেন,এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে তাড়া করতেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে বার বার ব্যার্থ হচ্ছে। ভিড়িও করার চেষ্টা করলাম কিন্তু সব দেখি নিজেদের এলাকার কে কোন পক্ষের তাও বুঝতেছিনা, তাই আর ভিড়িও করলাম না। আধ ঘন্টার মত এমন দৃশ্য দেখার পর এবার নিচে চলে যাবো বলে ভাবতেছি.. আচমকা মাথার উপর দিয়ে পাশের বাড়ী থেকে আমাদের গেটের সামনে বসা পুলিশদের লক্ষ করে কে বা কারা একটা বোমা মেরে দিল ,আমি তাড়া-তাড়ি নিচে নেমে রুমে চলে গেলাম। আম্মু অনেক বকা-বকি করলো ছাদে কেন গিয়েছিলাম।
তারপর কি হল..
হঠাৎ ৮-১০টা পুলিশ আমাদের বাসায় ডুকে বলতে শুরু করলো এই বাসা থেকে কে বোমা মারছে,তখন আম্মু বের হয়ে তাদের বললো, এই বাসা থেকে কেউ বোমা মারে নাই। বোমা পাশের বাড়ী থেকে মারছে কিন্তু তারা আম্মুর কথা শুনার চেষ্টাও করতেছেনা চেক শুরু করলো আম্মুর সাথে কথা কাটা-কাটি হচ্ছে শুনে আমি রুম থেকে বের হলাম ওরা আমাকে দরে বসলো বললো এ কে ?
আম্মু বললো এটা আমার ছেলে জাগরণ সুপার সপে জব করে। পরে আমি আমার কার্ড বের করে দিলাম। ওরা কিছুতেই মানতে রাজি না, আমাকে এরেস্ট করবে। অনেক কথা কাটাকাটির পর আমাকে ছেড়ে দিল এবং বলতে লাগলো এই বাসা থেকে কেউ যেন না বের হয় আর কেউ আসলে তাদের জানাতে ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর তারা দেখলো ২০/২৫টা ছেলে পিছনের বাড়ীর এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে তখন পুলিশ বুঝতে পারে এরাই বোমা মেরেছে ততক্ষনে বিজিবিও এসে যায় তারপর পুলিশ বিজিবি উভয় ঐছেলে গুলোকে তাড়া করে অনেক দূর নিয়ে যায়। তবে কাউকে ধরতে পারে নাই।
পরিশেষে,
আনুমানিক ১১:৩০ কিংবা ১২ টা হবে তখন পরিবেশ খুব শান্ত দুই একটা ভোটাররাও হাসি মুখে ভোট দিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখলাম, তাই আমিও বের হলাম ভোট দেওয়ার জন্য, কেন্দ্রের কাছা-কাছি যাওয়ার সাথে সাথে ধর ধর বলে মৌমাছির মত চারদিক থেকে কে বা কারা আক্রমন শুরু করলো কেন্দ্র দখল করার উদ্দেশ্যে । আইন শৃংখলা বাহিনী কিছু বুঝে উঠতে পারেনাই এত বেশি ককলেট বোমা মারতেছে পুরা কেন্দ্র ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে কিছুই ঠিকমত দেখা যাচ্ছে না। তখন আমার ঠিক দুইহাত দূরে একটা বোমা এসে পড়লো, আল্লাহর অশেষ রহমত বোমাটি পানিতে পড়েছে আমি এক দৌড়ে বাসায় চলে আসি । এত বেশি ভয় পেয়েছি যা বলে বুঝাতে পারবো না।
এই ভাবে কাটালাম আতঙ্কের একদিন আর ভাবলাম আমার বাসায়ও আমি নিরাপদ নয়।

ইস্রাফিল রিপন।
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: শুনতে ভালো কিন্তু অভিজ্ঞতা ভয়ঙ্কর।১৭বছর চাকরি করছি।ভোট এলেই ডিউটি করতে যেতে হয়।বিচিত্র অভিজ্ঞতার একটি বলছি।সেবার আমি প্রিসাইডিং অফিসার।খুব সকালে প্রাত্যহিক কাজ সেরে স্নানটান করে নির্দিষ্ট সময়ে তৈরী থাকতে বাকি পোলিং পার্সেনদের নির্দেশ দিয়েছিলাম।EVM( Electronic Voting Machine) রেডি করে বসে আছি।কিন্তু first পোলিং এর দেখা নেয়।এমন সময় বাইরে কোথা থেকে চিৎকার ভেসে এল।ইতি উতি তাকিয়ে বুঝলাম,কোন বাথরুম থেকে আমার first পোলিং চিৎকার করছে।বাথরুমের দরজায় গামছা খুলে বসেছিল,কাজ শেষে দেখে গামছা নিয়ে কে পালিয়েছে।অগত্য আমি আমার গামছা দিয়ে বেচারাকে সে যাত্রায় উদ্ধার করি।এর পর থেকে ভোটের ডিউটি এলে আমি আগে ভাগে গল্পটি শুনিয়ে গামছা বিভ্রাট যাতে আর কারো না হয়,পোলিং পর্সেনদের সজাগ করি।ধন্যবাদ,ভাল থাকুন নিরন্তর।

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:১৬

নীল বৃষ্টি(রিপন) বলেছেন: মজা শিক্ষনীয় দুটোয় ছিল,ভালো লাগলো,ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.