নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"আমি নীল পেন্সিল।কষ্টের রং নীল বলে এই ভেবে বসবেন না যে কষ্টের অার নষ্টের গল্প লিখাটাই আমার কাজ! মনে রাখুন, নীলও কিন্তু একটি রং, অার রং থেকেই হয়ে ওঠে রঙিন...ব্যক্তিজীবনে অামি হয়তো খুব একটা সফল না,তবে অামি এতটুকুন হতাশও না...

নীলপেন্সিল

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

নীলপেন্সিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্নগুলো যদি সত্যি হয়ে যেত!

০১ লা মে, ২০১৬ বিকাল ৪:০৭

ফেসবুকে লেখক?

শৈশবের দুরন্তপনার মাঝেই জীবনের লক্ষ স্থির করেছিলাম বড় হয়ে ডিফেন্স অফিসার হিসেবে যোগ দিব, অন্য সবার মত অামিও ভাবতাম দেশের সেবা করব, এক সময় মাথায় চাপল ইন্জিনিয়ার হওয়ার ভূত। অথচ সেই অামিই কিনা অাজ কবিগিরি দেখাতে ব্যঙের মত কেমন লাফালাফি করছি!
স্কুল পালিয়ে কত যে লাইব্রেরীতে গিয়েছি!উদ্ভাসে কোচিং করতাম। এডমিশন কোচিংকালীন সময় এর মতো সেই নাজুক,সংবেদনশীল সময়েও প্রিয় লেখক হুমায়ন আহমেদের বাসার খোঁজে ধানমন্ডির অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়িয়েছি। পকেটে টাকা নেই অথচ কাউকে না জানিয়ে হেঁটে নিজের লিখাগুলি নিয়ে হাজির হয়েছি সমকাল,কালের কণ্ঠ কিংবা প্রথম অালোর কার্যালয়ে। অক্লান্ত পরিশ্রমে সেই সাথে কোন কিছু নিয়ে লেগে থাকার মত কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ন হই একসময়। শেষ পর্যন্ত শুরুটা হয়েছিল প্রথম অালোর জনপ্রিয় ফিচার শিল্প ও সাহিত্য পাতাটিতে কাজ করার মধ্য দিয়ে। যদিও সেখানের স্মৃতি খুব বেশী সুখকর ছিলনা তবুও যাত্রাটা তো অন্ততঃ শুরু হল।

টেলিভিশন সাংবাদিকতায় খুব ঝোঁক ছিল অামার। বড় কোন অভিজ্ঞতার আগেই হুট করে একদিন সুযোগ হয়ে যায় বায়ান্নো টেলিভিশনের শিশু কিশোরদের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান 'কচিকাঁচা'তে! আর সতের বছরের এ বালকটির নিজেকে তৈরী করার জন্য শুরু হয় নতুন করে শেখার যাত্রা। ফলাফল কিশোর অপরাধ নিয়ে করা প্রতিবেদন গুলোয় একটু একটু করে দেখা পাই সফলতার এবং সেই সাথে জায়গা করে নিতে থাকি একই অনুষ্ঠানের সংবাদ উপস্থাপনাতেও! অব্যাহত সাফল্যের ধারায় সে বার রেহান রুমী পরিচালিত বায়ান্নো টেলিভিশনের পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে প্রচারিত বিশেষ অনুষ্ঠানে ছোট একটা অভিনয়ও করেছি।

অসম্ভব রকম কল্পনার জগতে রাজত্ব করা এই বালকটির কলেজ জীবন কাটে বাসা থেকে অনেক দূরে রংপুরে। মেস থেকে যদিও খুব একটা কাছে ছিল না টাউন হল লাইব্রেরী, তথাপি সেই লাইব্রেরী যেন হঠাৎ করেই মুখর হয়ে উঠল অামার পদচারণায়। অার অামাকে পেয়ে বসল বই পড়ার এক মত্ত নেশায়। প্রতিদিন হুমায়ন আহমেদের একটি করে বই পড়ে তা ফেরত দিয়ে আবার একটি বই নিয়ে বাসায় ফেরা শুরু করলাম যা কিনা লাইব্রেরীয়ান এর সন্দেহে একদিন আটকা পড়ে গেল। আর এজন্য প্রায়ই দিতে হত গল্প সম্পর্কে ব্যাখা। বিশ কিংবা পঞ্চাশ নয় একে একে এক’শ সতেরোটি বই পড়ে অগোছালো এই ছেলেটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় সেও বই লিখবে!

কিন্তু ততদিনে হুমায়ুন আহমেদ এর গভীর প্রেম তাকে আসক্ত করে নিয়ে আসে রাস্তায়। ঢাকায় কোচিং করার সময়ে রুমমেট কৌশিকের কাছে জানতে পারি হুমায়ুন আহমেদ ধানমন্ডিতে থাকেন। মাত্র পঞ্চাশ টাকা পকেটে নিয়ে ও'কে সঙ্গী করে ঘুরে বেড়াতে থাকি ধানমন্ডির অলিতে গলিতে। অবশেষে হুমায়ুন আহমেদ এর বাসার দেখা পাই কিন্তু হুমায়ুন আহমেদের সাথে দেখা করা কি অার এতটাই সহজ! সেখানেও কৌশিকের বুদ্ধিদীপ্ত মেধার জোরে কিছু দুর্বলতাকে সুযোগে পরিনত করে ঠিকই পৌঁছে যাই হুমায়ুন আহমেদের কক্ষে।

যার চোখে মুখে অদম্য স্বপ্ন সে তো একদিন গল্প ঠিকই লিখল কিন্তু গল্প লেখা যত সহজ বই আকারে প্রকাশ করাটা কি অার ততটা সহজ? শুরু হল নতুন জুতা পুরান করার প্রচেষ্টা। দিনের পর দির পান্ডুলিপি হাতে দুই চার দশটা নয় চল্লিশের বেশী প্রকাশনী ছুটে বেরিয়েছি নিজের লেখা গল্পের বইটি প্রকাশ করতে। সেই সময়ে গল্পের বই ছাপতে না পারলেও ভিন্ন উপায়ে সফলতা পেয়ে যাই। গল্পটাকে একটু পরিবর্তন করে শিল্পকলায় অামার লেখা গল্পের নাটক মঞ্চায়িত হয়। আর এটাই বা কম কিসে! আর সে দিনের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অামার লেখা গল্পে নির্মিত হয় টেলিফিল্ম 'বাতিঘর' ।

নিজেকে ডাল ভাত মার্কা সস্তা লেখক হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।
”মেঘের ডানায় স্বপ্ন ওড়ে" নামের বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে খানিকটা সফলতার দেখা পাই। 'ইচ্ছেঘুড়ি' প্রকাশনা থেকে চলতি বছরের ফেব্রুআরির প্রথম দিনেই বই প্রেমীদের হাতে তুলে দিয়েছি মাকে উৎসর্গ করে লেখা “বৃষ্টিমাখা মেয়ে” নামের বইটি।
যাত্রার শেষ এখানেই নয়। বর্তমানে “মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে” নামে একটি অনুসন্ধানমূলক বই প্রকাশের জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি...

অামার এখন শুধু একটাই ইচ্ছে মনের লাগামটা যেন নিমেষেই তুলে নিতে পারি নিজের হাতে!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৬ বিকাল ৫:০৭

আমি মিয়াবাড়ির ছেলে বলেছেন: চেষ্টা করুন। স্বপ্ন সত্য হবে।

০১ লা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৭

নীলপেন্সিল বলেছেন: ধন্যবাদ। অনেকগুলো সহায়তার চেয়ে একটুখানি উৎসাহ-ই কখনো বড় হয়ে ওঠে,বড় করে তোলে! কৃতজ্ঞতা রইল।
দোঅা করবেন,প্লিজ।।

২| ০১ লা মে, ২০১৬ বিকাল ৫:১১

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: প্রচেষ্টা আর আত্মবিশ্বাস আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে। আশীর্বাদ রইলো। আর সঙ্গে শুভকামনা।

০১ লা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৩

নীলপেন্সিল বলেছেন: উৎসাহ,পরামর্শ,অাশীর্বাদ,শুভকামনা সবই পেলাম অাপনার কাছে।অামি অভিভূত।অনেক অনেক ধন্যবাদ।দোঅা প্রত্যাশী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.