নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার মুক্তি আমার আলোয় এই আকাশে আমার মুক্তি ধুলোয় ধুলোয় ঘাসে ঘাসে

বন্ধু শুভ

আনকোরা যত নন্ভায়োলেন্ট নন্-কো’র দলও নন্ খুশী। ‘ভায়োরেন্সের ভায়োলিন্’ নাকি আমি, বিপ্লবী-মন তুষি! গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কন্ফুসি! স্বরাজীরা ভাবে নারাজী,নারাজীরা ভাবে তাহাদের আঙ্কুশি! © কাজী নজরুল ইসলাম

বন্ধু শুভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আয়েশা, আমাদের রুচিবোধ ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী : নাট্য সমালোচনা

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:১৭



'দর্শকদের ভাবালেন ফারুকী, কাঁদালেন আয়েশা' শিরোনামে একটা নিউজ করেছে চ্যানেল আই অনলাইন। রাজনৈতিক একটি বিষয়কে নিয়ে আনিসুল হকের রচিত "আয়েশামঙ্গল" উপন্যাস অবলম্বনে নাটকটি নির্মিত হয়েছে। নাট্যরূপ দিয়েছেন বিশিষ্ট নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী (জয়নাল আবেদীন) এবং নুসরাত ইমরোজ তিশা (আয়েশা বিবি)। নাটকটি প্রচারিত হয়েছে চ্যানেল আই'তে। এটা অনুমেয় যে, নাটকটি দর্শক গ্রহন করেছে, এজন্যই চ্যানেল আই অনলাইন এমন সংবাদ প্রচার করছে।

নাটকটি যেহেতু রাজনৈতিক বিষয়কে কেন্দ্র করে ; এমনকি এতে জাসদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সেহেতু নাটকটির গুণগত দিক নিয়ে কথা না বলে, নাটকটি নিয়ে (রাজনৈতিক) পক্ষপাতিত্ব হবে এমনটা অনুমিতই ছিল। ইউটিউবের ৪০০ মন্তব্য পড়ে রাজনৈতিক মেরুকরণ তথা দৃষ্টিভঙ্গি চোখে পড়েছে বেশিরভাগক্ষেত্রে। অবশ্য এতে ব্যক্তিগতভাবে আমি বিচলিত নই।

আমাদের দেশের প্রায় শতভাগ জনগণ একইসাথে ডাক্তার, রাজনীতিবিদ, ক্রীড়া বিশ্লেষক, সমালোচক এবং বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রাণি ; ক্ষেত্রবিশেষে সকলেই দলের নেতা। নাহয় এতবেশি শিল্পগুণ সমৃদ্ধ একটি বিষয়কে নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য আসত না। কেউ বলেছেন ফারুকী বাকশালের দালাল আবার কেউ বলেছেন জিয়ার কুকীর্তি প্রকাশ পেল বলে, কেউ বলেছেন বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসলে ফারুকীকে দেখে নেওয়া হবে, কেউবা আবার সামো ব্লগ রকমারি ডটকম এবং অনলাইন লাইব্রেরির রেফারেন্স দিয়ে দলীয় ভিত শক্ত করার কাজে বেজায় ব্যস্ত। তাই এইসব রাজনৈতিক প্রাণিদের মনে-
"জীবিত মানুষটারে দেখতে চাইলাম, দিলেন না। মৃত মানুষটারেও দেখতে দিলেন না। কবর কোথায় দিছেন, এটাও কইতেছেন না। আমরা কবর জিয়ারতও করতে পারবো না। এটা কোন বিচার স্যার?"
কিংবা
"ওর লাশটা দেখতে দিলেন না। যে বাপ মা জন্ম দিলো, ওদেরও দেখতে দিলেন না। আমি ওর স্ত্রী, আমাকেও দেখতে দিলেন না।" -হৃদয়বিদারক কথাগুলো পৌছতে পারে নাই।

একজন স্ত্রী যখন স্বামীর কবরের চিহ্নটাও জানতে না পেরে খালি জায়গায় মোনাজাত করে এবং বলে "আমি জানি না আমার স্বামীর কবর কৈ, তাই এই ৫৬ হাজার বর্গমাইল আমার স্বামীর কবর।"
তখন আমরা নাটক দেখে নিছক মন্তব্য করি, "কোয়াটার ছেড়ে যাওয়ার সময় তিশার মাথার হিজাব না থাকাটা ঠিক হয় নি" কিংবা "নিজের বউকে দিয়ে নাটক করায়, পরপুরুষ দেখে, পরকালের কথা ভুলে গেছে, নাউজুবিল্লাহ্"। বলাই বাহুল্য, কমেন্টে পরকালের বায়ান প্রদানকারী আল্লামা এই বেগানা নারীর সম্পূর্ণ নাটকটা দেখেই মন্তব্য করেছেন। শুধু দেখেন-ই নি, এই বুজুর্গ টাইম মেনশন করে হিজাব না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

ফারুকীর এই নাটকটি নিঃসন্দেহে উন্নত শিল্পমানসম্পন্ন একটি শিল্পকর্ম। তিশার অভিনয়, শেখ রাজিবুল ইসলামের ক্যামেরার কারসাজি, 'চিরকুটের' পাভেল অরিনের অসাধারণ মিউজিক- সব মিলিয়ে চমৎকার একটি কাজ হয়েছে। চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয়ও যথারীতি সাবলীল ও গলার স্বর ছিল উচ্চ। নাম ও অভিনয়- উভয়ক্ষেত্রেই তিশা ছিলেন নাটকের প্রাণ।
জাপানি বিমান ছিনতাইয়ের সাথে কারা জড়িত, বিচার কি সত্যিই ১ মিনিটে হয়েছিল, জাসদ-তাহের ইস্যু, জিয়ার কুকীর্তি, বাকশালের দালাল- ইত্যাদি বিষয়গুলো বাদ দিয়ে যদি আমরা শিল্পকে শিল্পের মতো করে বিচার, বিবেচনা ও গ্রহণ করতে পারি, তবেই আসন্ন দিনগুলোতে আমাদের শিল্প হবে উন্নত থেকে উন্নততর। তাই প্রয়োজন শিল্পবিজ্ঞানজাত দৃষ্টিভঙ্গি, শিল্পবোধসম্পন্ন অনুভুতি।

(৩০ আগস্ট ২০১৮ ইং তারিখে লিখিত)

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:০০

কামভাখত কামরূখ বলেছেন: আমি জানিনা আপনি কতটা ফারুকীর পরিচালনার সাথে পরিচিত আমি সম্পূর্ণ নিজের মতামত দিচ্ছি আমার দেখা ফারুকীর প্রত্যেক নাটক সিনেমা ভালো লেগেছে শিকড় সন্ধানী পরিচালক এতে আমার কোন সন্দেহ নেই কিন্তু উনি উনার প্রত্যেক নাটকে সিনেমায় কোন না কোন পক্ষের হয়ে দালালী করেন এটা বলতে আমার কোন দ্বিধা নেই। জানি এই কথা অনেকের পছন্দ হবেনা কিংবা উগ্রবাদিী মৌলবাদী বলে কথা উঠবে যেমন ধরুন টেলিভিশন সিনেমাটা কি সুন্দর সিনেমা এর মধ্যে সে তার মন গড়া কিছু জিনিস ঢুকিয়ে দিয়ে ধর্মীয় ভুল আছে এটা দিয়ে পশ্চাত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে কারণ তারা এসব দালালদের খুঁজে। আবার হুমায়ুন আহম্মেদের বিতর্কিত বায়পিক বানিয়ে এই বিতর্কের ফায়দা নিতে চেয়েছে কিংবা এখন হয়ত তার একটা নুতুন ধন্দা এঁটেছে ২১শে পদক কিংবা জাতিয় পুরষ্কার এর এজন্য হয়ত এই বিতর্কিত নাটকের জন্ম দিয়েছে । তার উদ্দেশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু রেখে সাথে ভালো পরিচালনা দিয়ে আরও ভালো কিছু করা আর এসব ভণ্ডামি এই দেশেই সম্ভব।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫৪

বন্ধু শুভ বলেছেন: বিরুদ্ধ মতকে আমি স্বাগত জানাই

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:০২

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: নাটকটি দেখব। লিস্টে রাখলাম।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫৬

বন্ধু শুভ বলেছেন: চট করে দেখে ফেলুন দাদা। দারুণ হয়েছে।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১:৪৪

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: আপনার রিভিউ লেখনিতে আন্তরিকতা ও কিছু ডায়লগ পড়ে মনে ভীষণ সাধ জাগলো নাটকটি দেখবার। দেখেই ঘুমুবো আজ মনে হচ্ছে।

সুন্দর রিভিউ লিখেছেন, এদেশের মানুষ সম্পর্কেও দারুণ ধারণা তুলে ধরেছেন, ভালো লাগলো আমার।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৫৯

বন্ধু শুভ বলেছেন: আন্তরকি ধন্যবাদ। নাটকটি দেখলে ব্যক্তির শিল্পীসত্ত্বা জেগে উঠতে বাধ্য।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: নাটকটি দেখেছি। তবে অর্ধেক।
তিশার অভিনয় বাস্তব মনে হয়নি।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০১

বন্ধু শুভ বলেছেন: ওভার অল ভাল ছিল

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১৯

কানিজ ফাতেমা বলেছেন: তিশার মোনাজাতের অংশটি যেমন আবেগ সৃষ্ঠি করে তেমনি দেশমাতৃকার প্রতি গভীর অধিকার জাগিয়ে তোলে । আর গল্পের প্রয়োজনে রাজনৈতিক ইস্যু উঠে আসতেই পারে কারন জীবন রাজনীতির বাইরে কিছু নয় । উপস্থাপন শৈলীর উপর নির্ভর করে গ্রহণযোগ্যতা ।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৬

বন্ধু শুভ বলেছেন: আপনার সাথে আমি প্রায়ই একমত তবে আমার পয়েন্ট টা ছিল এরকম যে, শিল্পগুণ নিয়ে কথা না বলে আমরা ছোট বিষয়গুলো মত্ত ছিলাম যাতে আমাদেরই মনের সংকীর্ণতা প্রকাশ পেয়েছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.