নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার মুক্তি আমার আলোয় এই আকাশে আমার মুক্তি ধুলোয় ধুলোয় ঘাসে ঘাসে

বন্ধু শুভ

আনকোরা যত নন্ভায়োলেন্ট নন্-কো’র দলও নন্ খুশী। ‘ভায়োরেন্সের ভায়োলিন্’ নাকি আমি, বিপ্লবী-মন তুষি! গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কন্ফুসি! স্বরাজীরা ভাবে নারাজী,নারাজীরা ভাবে তাহাদের আঙ্কুশি! © কাজী নজরুল ইসলাম

বন্ধু শুভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গীতা-সীতা উপাখ্যান ; সমীপে জাস্টফ্রেন্ড

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৪



তখনো আন্তপাড়া ক্রিকেট খেলি। আমি উত্তরপাড়ার শতবর্ষী বিখ্যাত "ইয়াং স্টার ইলেভেন" এর ভাইস ক্যাপ্টেন কাম ডান হাতি লেগস্পিনার। সাথে ব্যাটিংও করি ভালো। ডানহাতি। আমার ব্যাপক চাহিদা। আমার কী-; এই ক্লাবে আমার বাবা খেলেছেন, তাঁর বাবা আই মিন আমার দাদা খেলেছেন। দুর্বলসূত্রে জানা যায় তাঁর বাবা অর্থাৎ আমার দাদার বাবা (আমরা তাঁকে বড়বাবা বলি) খেলেছেন। লোকমুখে প্রচলিত থাকা কথাবার্তার সারমর্ম করলে দাঁড়ায়, আমার বাবার, তাঁর বাবার, এবং তাঁর বাবারও ব্যাপকতর চাহিদা ছিল। বাবার খেলা আমি দেখি নি, তাঁর বাবার খেলাও দেখি নি, তাঁর বাবারও না। দেখলে নিশ্চিত আমি "বাবাবেলার দিনগুলোতে ক্রিকেট", "দাদাবেলার দিনগুলোতে ক্রিকেট" টাইপের কিছু বই লিখতাম। এসব না লিখেও আমি বহুল পরিচিত। কারণ আমি তো বাবার ছেলে আর দাদার নাতি। আমি তো সাকসেসর। উত্তরাধিকারী। তবে খেলছি যোগ্যতাবলে।

সারাদিন খেলা নিয়ে থাকতাম তখন। ক্লাবের ঐতিহ্য নিয়ে প্রচুর ভাবতে হতো। টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টি ভার্সনে আমাদের ক্লাব আন্তপাড়া, আন্তমহল্লা, আন্তগ্রাম, আন্তইউনিয়ন পর্যায়ে খেলতো ফি বছর। তাই ভাবতে হতো বেশি। কিন্তু এতসব ভাববার মাঝেও মাঝেমাঝে হঠাৎ কষে ব্রেক ধরতে হতো। কারণ সেই বিখ্যাত দুউ বোন। "গীতা" ও "সীতা"। একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে তাদের মনের গভীরের প্রেম কখনো কখনো মন বেয়ে উপচিয়ে পড়তো। ফলতঃ পারিবারিক বিশেষ তলবে আমাকে তাদের বাসায় বিশেষ হাজিরা দিতে হতো।

এই বিশেষ হাজিরায় আমাকে যেসব বিষয়ের সমাধান করতে হতো তা ছিল এমন- আমাকে রঙিন জার্সিতে ভালো দোখায় নাকি সাদা জার্সিতে, আমি প্রথমে বল করবো নাকি পরে, আমি হেলমেট পরে ব্যাটিংয়ে নামবো নাকি সাহেবি টুপি। এসব সমাধান করতে আমাকে নানা কায়দার আশ্রয় নিতে হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সমাজের নানা উঠতি মাঝারি, নিম্ন-নিম্ন মধ্যবিত্ত, দীর্ঘ, ক্ষুদ্র, নানা আকারের তাত্ত্বিকগণের সরকারি-ফরমায়েশি কায়দা। তবুও এসব ফৌজদারি বিষয়াদি সমাধা করতে আমাকে বেশ বেগ পেতে হতো। প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমার ডাক আসতো কাকীমার কাছ থেকে।



সাধারণত রাজনৈতিক দলগুলির গোষ্ঠীসংঘর্ষ বা নিজেদের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াইতে সাধারণ নীচু তলার কর্মীদের প্রাণহানি ঘটার ক্ষেত্রে যে ভয়াবহতা আমরা লক্ষ্য করি, গীতা সীতার 'শুভেন্দু দা' কে দখলে রাখার প্রচেষ্টা এহেন কর্মকান্ডের কম নয় ; শুধু প্রাণহানিটাই বাকি থাকতো। আর কিছুটা সুখানুভূতি সত্ত্বেও আমি অনুভব করতাম দলিত, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক মানুষজনের উপর সম্পন্ন ও প্রভাবশালীদের অত্যাচারের ন্যায় একপ্রকার ভালোবাসা মিশ্রিত অসহ্য অদ্ভুদ ভালোত্যাচার (ভালোবাসা+অত্যাচার)।

এসব অত্যাচার যে শুধু গীতা আর সীতা-ই করতো, ব্যাপারখানা কিন্তু এমন না। তাদের সাথে ঊর্বশী নামের আরেক কাঙালের যোগ ছিল। এসব ভালোত্যাচারে আমার জীবন ছ্যারবা ছ্যাবরা হয়ে যাচ্ছিল প্রায়। সেই সময়টাতে আমি তাদের ভালোত্যাচার থেকে বাঁচতে আমার পারিবারিক স্মৃতি বিজড়িত ইয়াং স্টার ইলেভেন ক্লাবটা ত্যাগ করতে হলো, সাথে ত্যাগ করতে হলো আমার নিজের পাড়াটাকে।

তুমি গীতা সীতার ব্যাপারে জারতে চেয়েছো বলে আজকে এই চিঠির অবতারণা। তোমার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, সবশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী গীতা, সীতা এবং ঊর্বশী- প্রত্যেকের দুই বা ততোধিক বাচ্চা আছে। ৬০/৭০ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনের কিছু কাজ তারা ইতোমধ্যে এগিয়ে নিয়েছে। আপাতত তাদের ভবিষৎ পরিকল্পনা জানাতে পারছি না বলে রাগ করো না।

প্রিয় জাস্টফ্রেন্ড,
পরবর্তী চিঠিতে আরো বিস্তারিত জানানোর প্রয়াস থাকবে। তোমার ফিরতি চিঠিতে তোমার যাবতীয় জিজ্ঞাসা লিখে পাঠিয়ো।


ইতি-
তোমার শুভেন্দু দা

২৬ ভাদ্র ১৪২৬

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: চিঠিতে তারিখ কই?

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২৭

বন্ধু শুভ বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা। আমার একমাত্র জাস্টফ্রেন্ডের কাছে লেখা চিঠি, তারিখ থাকাটা অতীব জরুরি। দিয়ে দিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.