নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার মুক্তি আমার আলোয় এই আকাশে আমার মুক্তি ধুলোয় ধুলোয় ঘাসে ঘাসে

বন্ধু শুভ

আনকোরা যত নন্ভায়োলেন্ট নন্-কো’র দলও নন্ খুশী। ‘ভায়োরেন্সের ভায়োলিন্’ নাকি আমি, বিপ্লবী-মন তুষি! গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কন্ফুসি! স্বরাজীরা ভাবে নারাজী,নারাজীরা ভাবে তাহাদের আঙ্কুশি! © কাজী নজরুল ইসলাম

বন্ধু শুভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বন্ধু– জীবনের প্রাপ্তি নাকি আর্তনাদ

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:১০



যাহার লাগি চক্ষু বুজে বহিয়ে দিলাম অশ্রুসাগর,
তাহারে বাদ দিয়েও দেখি বিশ্বভুবন মস্ত ডাগর....।

জীবনের প্রাপ্তি কতটুকু তা বোধহয় কেউ-ই অংক কষে বলতে পারে না। পারার কথাও না। মানুষেন মন নামের যে একখানা বস্তু আছে তা কিন্তু শতকরার হিশাবে ভালো কিংবা খারাপ বোধ করে না। এই যেমন পরীক্ষায় পঁচাত্তর শতাংশ নম্বর পেলাম, তাইবলে মন পঁচাত্তর শতাংশ ভালো আর পঁচিশ শতাংশ খারাপ- এমন কিন্তু হয় না। হয় না, কারণ এটা বৈষয়িক ব্যাপার না; বরং মানসিক ব্যাপার।

পেছনে ফেলে আসা সমস্ত জীবনে এমন কিছু ঘটনার সাক্ষী আমাকে হতে হয়েছে যা কোনদিনই আমি হতে চাই নি। এত মানুষকে আমি তাদের রূপ পাল্টাতে দেখেছি যে এবার আমিই ক্লান্ত। ভাবি, প্রতিটা মানুষই কি এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়? যদি যায় তবে কেন সেই একই অভিজ্ঞতা অন্যকে উপহার দেয়? নিজের কথা বললে নিজেকে কেমন একটা হ্যাংলা হ্যাংলা লাগে। তবু তো আমরা অন্যের নাম করে নিজের কথাই বলি। বলি জীবনের কথা। সামান্য করে গজিয়ে উঠা আত্মসম্মানবোধ থেকে হোক আর মনের আড়ষ্ঠতা থেকেই নিজের কথা যে বলিয়াও পারি না বলিতে সে কি কেবলই ব্যর্থতা নাকি আত্মাভিমুখী হয়ে যাওয়া?

উত্তর যাই হোক একটা কথা বোধহয় অসত্য নয় যে মন কখনো কখনো সে গন্ডি থেকে বের হতে চায়। বলতে চায় কিছু কথা। কিছু মুখকে নিজের পরিচিত করে রাখতে চায়, কিছু মনকে চায় নিজস্ব করে রাখতে। তার মধ্যে থাকে স্তরায়ন। থাকে আধা-আত্মীয়, থাকে সোয়া-আত্মীয়, তেমনি পৌনে-আত্মীয় থাকার সাথে দেড় কিংবা আড়াই পরিসরের আত্মীয় থাকে কিছু। সর্বোচ্চ মানদন্ড কত তা হয়তো অজানা, তবুও মন নিজ থেকে নম্বর দেয়। নম্বর দেয়াতে বিশেষ কিছুই হয় না। কারণ রক্তমাংসের মানুষ যে মন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তার মন কিসের তৈরি সে কথা কেউ জানে না।

পরিস্থিতি সাপেক্ষ্যে অমুকের মন পাথরের, তমুকের মন লোহার কিংবা কারোর মন মোমের তথা নরম বলে নিজের মন যেভাবে সাব্যস্ত করে সেগুলো ঠিক তেমনি থাকে না। কেউ তার মনকে উন্নত করে কেউ করে নেয় অনুন্নত। কিন্তু মন কি সামগ্রিকভাবে উন্নত কিংবা অনুন্নত হয়? মানুষের মন যেহেতু হাজার রঙ ধারণ করতে পারে তবে তো মানুষের মনের চেহারাও হাজারটা। এই যেমন একজন মানুষ তার স্ত্রীর কাছে স্বামী-মন নিয়ে হাজির হয়, সন্তানের কাছে বাবা-মন নিয়ে। অফিসে অধীনস্থের কাছে বস-মন নিয়ে, ঊর্ধ্বতনের কাছে ছোটঅফিসার-মন নিয়ে। তবে কি মনকে একটা নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে ফেলা যাবে না?

আচ্ছা যদি একই ক্যাটাগরিতে ফেলা না-ই যায় তবে তো প্রতিটা মানুষের ভিন্ন ক্যাটাগরি থেকে সংস্পর্শ পাওয়া উচিৎ। এই যেমন একজন পুরুষের জন্য ছেলে, বাবা, ভাই, স্বামী। কিংবা একজন নারীর জন্য মা, বোন, স্ত্রী, মেয়ে ইত্যাদি। কি ভাবছেন? এগুলো তো পেয়েই যায়? কাঠামোগত কারণে এসব সম্পর্কের স্পর্শ সত্যিই পেয়ে যায়। কিন্তু অনুভব টা পায় কি-না বুঝার উপায় নেই। কোন সন্তান তার বাবাকে অস্বীকার করলেও সে বাবা থেকে যায়। যদিও অবহেলা নিয়ে বাবা হয়ে থাকার দুঃখটা আর কেউ বুঝতে পারে না। উপরোক্ত প্রায় সব ক'টা সম্পর্কের ব্যাপারে হয়তো এই কথা সত্য। হ্যা, হয়তো। তবুও থেকে যায় ফাঁকফোকর।

বাবা কিংবা অনুরূপ সম্পর্কের খাতা থেকে নাম কাটা না গেলেও কিছু সম্পর্ক থেকে নাম কাটা যায়, তার মধ্যে একটার নাম বন্ধুত্ব। এই জায়গা নিয়ে লিখলে হয়তো বেশি হয়ে যায় অথবা কম হয়ে যায়। কাঠামোর বাইরে তথা রক্তের বাইরে যা কিছু মহান তাই হলো বন্ধুত্ব। তবু কেন যেন এই মহান বিষয়টা সময়ের ব্যবধানে মামুলিতে নেমে আসে। কখনো সংঘাত কখনো স্বার্থ বিষয়টাকে হালকা করে দেয়। এই জীবনে এমন কত ঘটনার সাক্ষী হয়েছি তার হিশাব রাখা নাই। কত নির্মম বাস্তবতা দেখা হয়ে গেল। হ্যা, কত নির্মম! তাইতো বলা-
যাহার লাগি চক্ষু বুজে বহিয়ে দিলাম অশ্রুসাগর, তাহারে বাদ দিয়েও দেখি বিশ্বভুবন মস্ত ডাগর।
তবে এক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকে যেতে পারে, কতজন চক্ষু বুজে অশ্রুসাগর বয়ে দেয় আর ক'জনই-বা তাহারে বাদ দিয়ে বিশ্বভূবনকে ডাগর দেখতে পায়?

আবার এরকম একটা বিষয়ও থাকে।
দিনের পর দিন যখন একজন বন্ধু আত্মীয় থেকে পরমাত্মীয় হয়ে উঠে তখন তো কেউ আর দুইজনের মধ্যে কোন ফারাক দেখে না। তবু কেন যেন সব বদলে যায়। কতশত মানুষকে দেখেছি এমন ভাঙ্গা হৃদয় নিয়ে হাজার অভিমান নিয়ে বসে থাকে নিরবে। আবার গোপনে মনোবাসনা করে যদি তার বন্ধু আসতো ফিরে। যদি একবার আসতো।
মনে বাজে-
একটু যদি তাকাও তুমি, মেঘ গুলো হয় সোনা।
আকাশ খুলে বসে আছি, তাও কেনো দেখছোনা?
একই আকাশ মাথার ওপর, এক কেনো ভাবছোনা?
আকাশ খুলে বসে আছি, তাও কেনো দেখছোনা?


হাজার এলোমেলো চিন্তার ভিড়ে যখন আমি খুঁজে ফিরি আমার বন্ধুদের কি খবর। তখন তো কাউকে খুঁজে পাই না। একটা সরল সিদ্ধান্তে আসে মন। আমি হয়তো কোনদিনই কারো বন্ধু হতে পারি নি, অথবা কেউ পারে নি আমার বন্ধু হতে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই যে আমার দুর্বলতা বিদ্যমান তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। হয়তো অচিরেই বন্ধু হবে আমার। সমবয়সী ছাড়া অন্য কেউ। যেখানে থাকবে না কোন স্বার্থ কিংবা সংঘাত।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: জীবনে বন্ধুর দরকার আছে। তবে অবশ্যই ভালো বন্ধু।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৯

বন্ধু শুভ বলেছেন: বন্ধু মাত্রই ভাল। খারাপ-রা কখনোই বন্ধু হতে পারে না দাদা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.