নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইসলাম হলো শান্তির বাণী।।।।\nfacebook id www.facebook.com/mujib.boksh

বকস মুজিব

আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। আমি মুসলিম এটাই আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়।।।

বকস মুজিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রশ্ন শিয়া আর সুন্নি কারা? এদের মধ্যে পার্থক্য কী? কুর্দি কাদেরকে বলে? ইয়াজিদি কারা ?

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৫

সকল প্রশংসা একক আল্লাহর জন্য, অতঃপর অসংখ্য দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ও তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সঙ্গী-সাথীদের উপর।

প্রশ্ন শিয়া আর সুন্নি কারা? এদের মধ্যে পার্থক্য কী? কুর্দি কাদেরকে বলে? ইয়াজিদি কারা ?

উত্তর--
ইসলামের প্রধান ২ টি সেক্ট এই সুন্নি আর শিয়া। সুন্নিদের বলা হয় orthodox মুসলিম, অর্থাৎ মেইনস্ট্রিম মুসলিম বা প্রথাগত মুসলিম।

অনেকগুলো বই আর নেট ব্রাউজ করে এ পোস্টের তথ্যগুলো যোগাড় করা হয়েছে।
আর, পোস্টটি একটু বড়, তাই ধৈর্য নিয়ে পড়তে হবে।

শিয়া অরিজিনঃ
একদম প্রথম থেকে বলি। হিজরত এর ঘটনায় কুরাইশদের মধ্যে কেউ কেউ হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন, “আপদ গেল” বলে। কিন্তু কারা সবচেয়ে অখুশি হয় জানেন? মদিনার ইহুদীরা। তাদের নেতা ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুল। মদিনার নেতা হওয়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায় মুহাম্মাদ (সা) এর আগমনে। তখন থেকেই ইসলামের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়। তাই, মুহাম্মাদ (সা) ষড়যন্ত্রকারী ইহুদিদের ইয়াস্রিব (মদিনার আগের নাম) থেকে বহিষ্কার করেন।

এবার, ঘটনা ফাস্ট ফরওয়ার্ড করে উমার (রা) এর আমলে আসি। তাঁর সময় পারস্য জয় করে মুসলিমরা। তখনি সেই বিখ্যাত ঘটনা ঘটে, হরমুজান এর । এটা সবারই জানার কথা, আমরা সবাই ছোটো ক্লাস এ ধর্ম বই এ উমার (রা) এর মহানুভবতার কাহিনী পড়তে গিয়ে হরমুযান এর কাহিনী পড়েছি। পারস্য বাহিনীর কমান্ডার হরমুযান, যে কিনা মৃত্যুদণ্ড এড়াতে ছলনার আশ্রয় নেয়। পানি চেয়ে বলে এটাই তাঁর শেষ ইচ্ছা যে, এ পানি পান না করা পর্যন্ত তাঁকে হত্যা করা হবে না, আর পরে সে এ পানি ফেলে দেয়। কিন্তু উমার (রা) তাঁকে হত্যা করেন নি। আমাদেরকে শেখান হয়েছিল, তাঁর মহানুভবতা দেখে হরমুজান ইসলাম “গ্রহণ” করে। আসলে, কিন্তু অতি দুঃখের ব্যাপার, সেটা লোকদেখানো ছিল।

মুক্তি পেয়ে হরমুজান বাস করতে থাকে মদিনায়। এবং, উমার (রা) কে হত্যা করার পরিকল্পনা সাজাতে থাকে। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয় জাফিনা আলখালিল (খ্রিস্টান) আর সাবা ইবনে শামুন (ইহুদী)।
কেন তারা একসাথে হল? কারনঃ
১/ হরমুজানের পারস্য বাহিনীকে হারিয়েছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।
২/ জাফিনার রোমান বাহিনীকে হারিয়েছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।
৩/ সাবার ইহুদী গোষ্ঠীকে বহিষ্কার করেছে মুসলিমরা। প্রতিশোধ চাই।

আর নতুন ধর্ম ইসলামের প্রতি সম্মিলিত বিতৃষ্ণা তো আছেই। আর, গুপ্তহত্যা করার ব্যাপারে ইহুদিদের সর্বদাই খ্যাতি ছিল। তো, ৭ নভেম্বর ৬৪৪ সালে ফিরোজ নামের এক আততায়ীকে দিয়ে উমার (রা) কে হত্যা করা হয়। ফিরোজ ৬ বার মতান্তরে ৩ বার ছুরিকাঘাত করে। সাহিহ বুখারি মতে, ফিরোজ ধরা পড়ার পর আত্মহত্যা করে। কিন্তু, শিয়ারা তা মানে না।

উমার (রা) এর ছেলে উবাইদুল্লাহ হরমুযান আর জাফিনাকে হত্যা করেন। অবশ্যই, ইহুদী সাবা বেঁচে যায়। (আড়ালে কাজ করেছিল সাবা) পরে, উবাইদুল্লাহকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। তাঁকে উপস্থিত করা হয় নতুন খলিফা উসমান (রা) এর সামনে। উযির আলি (রা) বললেন, উবাইদুল্লাহ বিনা প্রমাণে তৎক্ষণাৎ হত্যা করেছে, যেটা ইসলাম মানে না। এটা তাঁর করা উচিত হয়নি। আলি(রা) এর পক্ষে সমর্থন দেন অনেকে। আবার উবাইদুল্লার প্রতিও অনেকে সমর্থন দেন। তখন তারা ২ ভাগ হয়ে যান। পরে, উসমান (রা) উবাইদুল্লাহ এর পক্ষ হতে জরিমানা প্রদান করেন।

কিন্তু, ততদিনে বিভেদ যা হবার হয়ে গেছে। ইহুদী পরিকল্পনা সফল হতে শুরু করেছে। ইহুদী সাবা তখন যেটা করলেন, তাঁর ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা কে বললেন, মুসলিমদের দেখিয়ে ইসলাম গ্রহণ করতে, যেন এরপর থেকে সহজেই ইহুদীরা মুসলিমদের গোপন খবর পেতে পারে। ভিতর থেকে বিভেদ সৃষ্টি করতে একজনকে দরকার ছিল।

পরিকল্পনামত, আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা তাই করলেন। তিনি নিজেকে অতীব ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে প্রকাশ করলেন। আর বললেন, মুহাম্মাদ (সা) এর আপন আত্মীয় হিসেবে খেলাফত সবচেয়ে বেশি প্রাপ্য আলি (রা) এর। তিনি আলি (রা) এর পক্ষে প্রচারনা করা শুরু করলেন। আর, উসমান (রা) এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার। শুধু উসমানই নন, আবু বকর(রা), উমার(রা) এবং উসমান(রা) ৩ জনের নামের বিরুদ্ধেই তিনি কুৎসা ছড়াতে লাগলেন। জনতা ক্ষিপ্ত হতে লাগল উসমান (রা) এর উপর। ইবনে সাবা হয়ে উঠলেন জনপ্রিয়। ফল কী দাঁড়ালো? ১৭ জুলাই ৬৫৬ সালে উসমান (রা) কে হত্যা করা হল।

আর আলি(রা) এর অনুসারীরা দাবি করতে লাগল, আলি (রা) যেন খলিফা হন। তারা নিজেদের ‘শিয়া’ নামে পরিচয় দিতে লাগল। শিয়া মানে পরিবার বা অনুসারী। “শিয়াতু আলি” থেকে “শিয়া”, মানে, আলির পরিবার বা আলির অনুসারী।

যাই হোক, প্রথমে আলি (রা) রাজি হননি খলিফা হতে। পরে লোকজন গিয়ে সাদ (রা), তালহা (রা), জুবায়ের (রা) প্রমুখের কাছে গিয়ে খলিফা হবার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তারাও রাজি হলেন না। শেষ পর্যন্ত আলি (রা) এই বলে রাজি হলেন, সবাই তাঁকে মানলেই তিনি খলিফা হবেন। পরে সবাই তাঁকে মানলেই তিনি খলিফা হবেন। পরে সবাই তালহা (রা) আর জুবায়ের (রা) কে সভায় হাজির করল। তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হল, আপনারা আলি(রা) কে মানবেন? তারা নীরব রইলেন। পরে উপস্থিত একজন তরবারি বের করে হুমকি দিলে তারা শর্তসাপেক্ষে রাজি হলেন। বিস্তারিত কাহিনী এখানে উল্লেখ করলাম না। অন্যদিকে মুয়াবিয়া (রা) মানলেন না তাঁর খেলাফত। মুয়াবিয়ার দূত মদিনায় এলে সেই ইহুদী ইবনে সাবার লোক তাঁকে হত্যা করতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু, মনে হল, আলি (রা) চেষ্টা করেছেন। ফলে আলি আর মুয়াবিয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হল। তা দেখে এক পর্যায়ে, তালহা (রা) আর জুবায়ের (রা) মদিনা ত্যাগ করলেন।

অন্যদিকে আয়িশা (রা) হজ পালন শেষে মদিনা ফেরার পথে খবর পেলেন উসমান (রা) কেও গুপ্তহত্যা করা হয়েছে। তৎক্ষণাৎ তিনি তাঁর উটের উপর থেকে একটি উদ্দীপক ভাষণ দেন যে, উসমান (রা) হত্যার প্রতিশোধ নিতেই হবে। উপস্থিত মানুষজন তাঁর কথায় উদ্দীপ্ত হয়ে আন্দোলন সৃষ্টি করে। তালহা (রা) আর জুবায়ের(রা) মক্কা পৌঁছে আন্দোলনে যোগ দেন।

পরের ঘটনা, আলি (রা) আর আয়িশা (রা) এর বাহিনী মুখোমুখি হয়। কিন্তু আলি (রা) সংলাপে বসতে চাইলেন। ইবনে সাবা তখন প্রমাদ গুনলেন। কারণ, সন্ধি হলে বিভেদ হবে না, তাঁর উদ্দেশ্য সফল হবে না। চক্রান্ত শুরু করলেন তিনি। তো, সংলাপ সফল হল না। যুদ্ধ হবেই।

২ পক্ষই চাইল যুদ্ধ যেন না হয়। কিন্তু রাতের আঁধারে ইবনে সাবার দল আলির (রা) শিবিরে আক্রমন করে। কিন্ত মনে হল, প্রতিপক্ষ আয়িশা (রা) এর বাহিনী আক্রমন করেছে। তাই তারাও পাল্টা আক্রমণ চালাল। যুদ্ধ হলই। যুদ্ধের এক পর্যায়ে আলি(রা) জুবায়ের (রা) এর কাছে গিয়ে বললেন, “মনে আছে? একদিন রাসুল বলেছিলেন তুমি ভবিষ্যতে অন্যায়ভাবে আলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে?” জুবায়ের বললেন, “ও! হ্যাঁ! তাই তো!” সাথে সাথে জুবায়ের (রা) যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে চলে গেলেন। ইবনে সাবার এক লোক জুবায়েরের পিছু নেয়। পরে জুবায়ের (রা) জোহোর এর নামায শুরু করতেই তাঁকে খুন করল। আনন্দের সাথে আলি (রা) এর কাছে এল খুনি, এরপর জুবায়েরের (রা) তরবারি, বর্ম পেশ করল। আলি(রা) তাঁকে জাহান্নামের সুসংবাদ দিলেন। সাথে সাথে, সেই লোক পেটে তরবারি ঢুকিয়ে আত্মহত্যা করল। অন্যদিকে তালহা (রা) যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করার সময় একটি তীরের আঘাতে মারা যান। আলি (রা) এ ২জনের মৃত্যুর কথা শুনে মনবেদনায় কাতর হয়ে পড়লেন।

আলি (রা) বুঝতে পারলেন, যুদ্ধ সহজে শেষ হবে না। যতক্ষণ আয়িশা (রা) উটের উপর থেকে উৎসাহ দিবেন, ততক্ষণ চলবে যুদ্ধ। ১০০০০ মুসলিম মারা যাবার পর আলির(রা) বাহিনীর একজন উট পর্যন্ত পৌঁছে পা কেটে ফেলেন। ফলে উট বসে পড়ল। আর আয়িশার (রা) বাহিনীর মন ভেঙ্গে গেল। পরে, আলি(রা) আয়িশার(রা) হাওদাটি অদুরে নিয়ে গিয়ে পর্দা দিয়ে ঘিরে দেয়ার ব্যবস্থা করলেন। এরপর সেখানে ঢুকে কুশল জিজ্ঞেস করলেন। তারা পরস্পরের কাছে ক্ষমা চাইলেন। যুদ্ধ বন্ধ হল। এ যুদ্ধ জামাল (উট) যুদ্ধ নামে পরিচিত। কারণ, আয়িশা (রা) উটের উপর থেকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন।
মুসলিমদের যতই ক্ষতি হোক, লাভ হল ইসলামের শত্রুদের। আলি (রা) ইবনে সাবা আর তাঁর অনুসারীদের নির্বাসিত করলেন। তারা নির্বাসনে গিয়েও একটি secret societyর অনুরুপ কাজ করতে লাগল, যার সমতুল্য বর্তমান FreeMasons, Illuminati ইত্যাদি। সাবায়িরা (ইবনে সাবার অনুসারী) আলি (রা) কে পরে হত্যা করে।

আর এরপরের কাহিনী মোটামুটি সবারই জানা। সেই যে মুয়াবিয়া (রা) অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন, পরে খিলাফত চাইলেন, এরপর, হাসান (রা), হুসাইন (রা), ইয়াজিদ(রা) এর কাহিনী... আর এরপর কারবালা। এ পর্যন্ত এবং এর পরেও যারা আলি (রা) আর তাঁর বংশকে অনুসরণ করেছে, তারাই হলো... আজকের শিয়া সম্প্রদায়।

সুন্নি আর শিয়া বিশ্বাসের কী পার্থক্য?

শিয়াদের অনেক ভাগ-উপবিভাগ আছে। এখানে তাদের মৌলিক বিশ্বাস এর সাথে সুন্নিদের বিশ্বাস তুলনা করা হলঃ

# সুন্নিঃ চার খলিফাতে বিশ্বাসী। আবু বকর (রা), উমার (রা), উসমান (রা), আলি(রা)
শিয়াঃ আবু বকর, উমার, উসমান খলিফা হয়েছিলেন অবৈধভাবে (নাউযুবিল্লাহ); কেউ কেউ তাঁদের কাফির বলে। উমার (রা) এর হত্যাকারী ফিরোজ এর কবর সযত্নে সংরক্ষণ করেছে তারা।

# সুন্নিঃ ইমাম প্রথার উপর তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় নি।
শিয়াঃ তাঁদের মূল বিশ্বাস এ ইমাম প্রথা। ১২ ইমামে বিশ্বাসী। প্রথম ইমাম আলি(রা)। এবং মনে করে ইমামরা মাসুম । তারা গায়েবের খবর জানেন । যেটা শিরক ( নাউযুবিল্লাহ ) ।

# সুন্নিঃ সুন্নীরা বিশ্বাস করে বিশ্বাসের সাথে সাক্ষ্য দিতে হবে।
শিয়াঃ আর শিয়ারা প্রয়োজনে বিশ্বাস গোপন রাখাকে জায়েজ মনে করে।যা তাকিয়া নামে পরিচিত।
# সুন্নিঃ মাহদি আসবেন মুসলিম জাতিকে নেতৃত্ব দিতে।
শিয়াঃ মাহদি হবেন ১২শ ইমাম। ইমাম মাহদি। (সুন্নিরা উপমহাদেশীয় শিয়াদের সংস্পর্শে এসে মাহদির আগে ইমাম বলে) তারা অতি সম্মানার্থে মাহদির পরে আলাইহিস সালামও বলে।
# সুন্নিঃ সাহিহ হাদিস বলতে সিহাহ সিত্তাহ কে বুঝান হয়।
শিয়াঃ তাঁদের হাদিস আলাদা। তারা বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির হাদিস বর্জন করে। যেমন, আয়িশা (রা), আবু হুরাইরা (রা) প্রমুখ।

# সুন্নিঃ রাসুল (সা) মৃত্যুশয্যায় ইহুদীর বিষ যন্ত্রণা ভোগ করেন।
শিয়াঃ (সবার বিশ্বাস না) সেই বিষ খায়বারের ইহুদী নারীর না। এ বিষ নবী (সা) কে প্রয়োগ করেন আয়িশা (রা) আর হাফসা (রা) যারা যথাক্রমে, আবু বকর (রা) আর উমার (রা) এর মেয়ে। (নাউজুবিল্লাহ)

# সুন্নিঃ দুনিয়ার সর্বত্র নামাযের সিজদা করা যাবে।
শিয়াঃ সাধারনত কারবালার মাটিতে তৈরি বস্তু সামনে রেখে সেটার উপর সিজদার সময় কপাল রাখা হয়।

# সুন্নিঃ পাঁচ ওয়াক্তে নামাজ পড়া হয়।
শিয়াঃ তিন বারে পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করা যায়। ফযর, এরপর জোহর+আসর, এরপর মাগরিব+এশা ।

# সুন্নিঃ নামাযে হাত বেধে রাখা হয়। তবে, মালিকি মাযহাবের অনুসারীরা হাত ছেড়ে পড়ে। উভয়টিই গ্রহণযোগ্য।
শিয়াঃ হাত ছেড়ে নামাযে দাঁড়ায়।

# সুন্নিঃ হিজাবের ক্ষেত্রে ২টি মতবাদ আছে। মুখ খোলা রাখা, আর মুখ ঢাকা।
শিয়াঃ মুখ খোলা রাখা।

# সুন্নিঃ মুতাহ বিয়ে নিষিদ্ধ ।
শিয়াঃ মুতাহ বিয়েকে তারা জায়েজ বলে । ( কিছুদিনের চুক্তির বিয়ে )

এসব ছাড়াও আরও কিছু পার্থক্য এর কথা বলা হয়, যেগুলো প্রমানিত না। তাই ওগুলো বাদ দিলাম। আর এমনিতে আরও কিছু ছোটোখাটো পার্থক্য আছে।

শিয়া (রাফেজী) এর ভ্রান্ত ও ভয়ংকর আক্বীদা

শিয়া (রাফেজী) এর ভ্রান্ত ও ভয়ংকর আক্বীদা
বিসমিল্লাহ হির রহমানীর রহীম, আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াস্ব সলাতু ওয়াস স্বলামু আলা রসুলুল্লাহ।

আমরা এমন এক যামানায় বাস করছি যেখানে প্রায় ৩ লাখের উপর দল ও মত আছে।এত দলের মধ্যে প্রধান প্রধান আক্বীদাভিত্তিক ভাবে দেখলে সব দলের একই উৎস।
কিন্তু আপনি আমি মুসলিম হিসেবে যেভাবে সহজে ইসলামকে ভাগ করি সেটা হলঃ ১. সুন্নী মুসলিম || ২. শিয়া মুসলিম

এখন কথা হল মুহাম্মাদ(সঃ) এরকম নাম দিয়েছেন কিনা সেটা কোন প্রমান নেই।

কে জানে এটা কোন চক্রান্ত। যাই হোক ইদানিং দেখা যাচ্ছে যে, ইরান, ও ইরাকের কিছি শিয়া এলাকার লোকদের ইসলামী আন্দোলন ও তাদের জোশ জোশ কথা কাজ ও তাদের কিছু নেতাদের (আহমাদিনেজাদ, আয়াতুল্লাহ আল- খোমেনী…) কাজ দেখে সবাই মারহাবা, সুবহানাল্লাহ, আল্লাহু আকবার বলে FB তে POST করে আর দুনিয়া কাপায়া দেয়। ভাই একবার কি জানার চেষ্টা করেছেন আসলে এরা কারা বা এই শিয়া জিনিষটা কি??
আসুন সংক্ষেপে জানি এদের আক্বীদা ও বিশ্বাস যা আপনার অন্তরকে কাপিয়ে দেবে।

شِيعَ শি’য়া শব্দটি কুর’আনের অনেক জাগায় এ

সেছে। যেমনঃ সুরা-সফফাতঃ ৮৩, মরিয়ামঃ ৬৯, ক্বসাসঃ ১৫। এর অর্থঃ “সম্প্রদায় বা অনুসারী”। মুলত এদের নামঃ “রাফেযী” অর্থ, “অস্বীকার কারী” কারন তারা আমদের অধিকাংশ সাহাবীদের কাফের বলে ও মানে না। রাফেযী নাম দিয়েছেন হুসাইন(রাঃ)।

১. ইহুদী, খ্রিষ্টান ও সকল মুশরিকদের মত আল্লাহর সাথে শির্কের আকিদা (বিশ্বাস) পোষণ করাঃ তারা আলী (রাঃ) ও তাদের ইমামদের সব ক্ষমতার মালিক ও আলেমুল গায়েব মনে করে (নাউযুবিল্লাহ)
২. البداء- “বাদা” এর আকিদা পোষণ করা, যা আল্লাহ তা‘আলার প্রতি অজ্ঞতার সম্পর্ককে আবশ্যক করে তোলঃ এর মানে আল্লাহ আগে কিছু জানতেন না পরে কি চিন্তা ভাবনা করে জেনেছেন।(নাউযুবিল্লাহ)

৩. বার ইমামের নিষ্পাপ হওয়ার আকিদা পোষণ করাঃ এর মানে তারা বার ইমামকে চিরঞ্জীব ও নবুয়্যাতের দাবীদার ধরে।
৪. ‘কুরআন বিকৃত ও পরিবর্তিত অবস্থায় মওজুদ রয়েছে এবং তাতে বেশি ও কম করা হয়েছে’ — এমন আকিদা বিশ্বাস পোষণ করাঃ তারা মনে করে কুর’আন ৯০ পারা আবকি কুর’আন এর অংশ গোপন আছে আর এটা তাদের নোংরা ও নিকৃষ্ট আকিদাসমূহের অন্যতম, যা তাদেরকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়া আবশ্যক করে তোলে

৫. মুমিন জননী, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুন্না-দের গালিদেয় ও তাদের জারজ ও বেশ্যা বলে অসম্মান করে। (নাউযুবিল্লাহ)
৬. এরা আলী(রাঃ), মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ, আবূ যর আল-গিফারী এবং সালমান ফারসী ইত্যাদি কিছু সাহাবী ব্যতিত সকল সাহাবা (রাঃ)দের কাফের ও জারজ সন্তান বলে গালিদেয়। (নাউযুবিল্লাহ)

৭. ‘তাকিয়া’ (التقية) –এর আকিদাঃ এর মানে সুযোগ বুঝে মিথ্যা কথা বলে মুনাফেকী করা। প্রয়োজনে নিজেকে অমুসলিম দাবী করা খারাপ কাজ করা/
৮. মুত‘আ বিয়ের (সাময়িক বিয়ে) আকিদাঃ এটা হল টাকার বিনিময়ে নারী ভোগ করা এতে কোন স্ত্রী মর্যাদা, উত্তরাধীকার নেই বরং তারা হাজার হাজার বিয়ে করতে পারে ভাড়া খাটিয়ে।স্পষ্ট বেশ্যাবৃত্তি।

৯. মহিলাদের যৌনাঙ্গ ধার করার (বেশ্যাবৃত্তি) বৈধতার আকিদা।

১০. নারীদের সাথে সমকামিতা বৈধতার আকিদা।

১১. রাজ‘আ (الرجعة) বা পুনর্জন্মের আকিদা।

১২. মৃত্তিকার আকিদাঃ এরা আলী, হাসান(রাঃ) বা এদের ইমামদের কবরের মাটিকে বর্কতময় মনে করে ও তা নিয়ে মাথায় গায়ে, মাখে।

১৩. হোসাইনের শাহাদাতের স্মরণে মাতম, বক্ষ বিদীর্ণকরণ ও গালে আঘাত করার মধ্যে সাওয়াব প্রত্যাশার আকিদা; যা বিপদে ধৈর্য অবলম্বন করার ইসলামী আকিদা বিশ্বাসের পরিপন্থী।

১৪. এরা সাধারনত হাজ্জ করে না বরং ইমামদের কবরে আলী(রাঃ)এর কবরের চারপাশে তাওয়াফ করে হাজ্জ মনে করে।

১৫.এরা কুর’আনের মধ্যে “আল-বেলায়াহ” ও “লাওহে ফাতিমা” নামে দুটি সুরা বানিয়ে রেখেছে।

১৬.এরা সমগ্র বিশ্বের মানুষকে জারজ সন্তান বলে শুধু মাত্র ইরানের বা ইরাকের মাটির শিয়াদেরকে original মানুষ মনে করে।

এখন আপনি বিবেচনা করুন এদের ব্যাপারে। কাউকে support করার আগে তার ভেতরের কথা জেনে নিন। এরা মুসলিম সমাজের প্রথম শত্রু এবং কাফের। অথচ আমরা এখনো ইরানের মত একটা দেশ আর তাদের ইমাম ও নেতাদের ইসলামের অনেক বড় কিছু মনে করি ও তাদের আদর্শ হিসেবে নেই এটা চরম ভুল আর এই ভাবে জাম'আত ও শিবির দলটিও এই আক্বীদার মধ্যে থেকে ইসলামের নামে বাতিল ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আল্লাহ এদের হিদায়াত দিন নয়তো এদের ধ্বংস করুন আমীন

শিআ একটি ভয়ংকর মতবাদ

সকল প্রশংসা এক আল্লাহর জন্য, অতঃপর অসংখ্য দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ও তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সঙ্গী-সাথীদের উপর।

আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি যে, মুসলিম ছদ্মবেশী রাফেযী বা শিয়া সমপ্রদায়ের কার্যক্রম ও তাদের ভ্রান্ত মতবাদের দাওয়াত ইসলামী বিশ্বে দিনদিন বেড়েই চলছে। খুব সম্ভব অদূর ভবিষ্যতে খাঁটি মুসলমানের বৃহৎ একটি জামাত তাদের দ্বারা প্রতারিত হবে, যদি না আমরা তাদের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সোচ্চার হই এবং মুসলিম জনসাধারণকে তাদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে অবহিত করি। ছদ্মবেশ ও বাহ্যিক আচরণের কারণে অনেকেই তাদেরকে মুসলিম মনে করে, কিন্তু তাদের অন্তরে নিহিত শিরক, কুরআন সম্পর্কে সংশয়, সাহাবা বিদ্বেষ এবং তাদের কথিত ইমামগণের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি ও সীমালঙ্ঘন সম্পর্কে খুব লোকেই জানে। তাই তাদের মুখোশ উম্মোচন ও মুসলিম জনসাধারণকে সতর্ক করার জন্য এ গ্রন্থ রচনার প্রয়োজন অনুভব করি এবং তাদের কিছু সংশয়ের জবাব দেয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করি।

এ ময়দানে আমি শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-জিবরীন রহ. রচিত

التعليقات على متن لمعة الاعتقاد
এবং রাফেযী শিয়াদের বহুল প্রচলিত কিছু বই ও অন্যান্য মুসলিম মনীষীদের লেখনির শরণাপন্ন হয়েছি, যারা ছিলেন শিয়া বিশেষজ্ঞ এবং যারা নিজেদের লেখনির মাধ্যমে শিয়াদের শিরক, মিথ্যাচার, গালমন্দ, বিদ্বেষ, সমালোচনা ও তাদের কথিত ইমাম সম্পর্কে বাতিল ধ্যান-ধারণার অসারতা প্রমাণ করেছেন। আমি অতি শালীন ও ভদ্র ভাষায় তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য পুস্তকের আলোকে তাদেরকে দীন শেখাতে চেষ্টা করেছি। যেমন শায়খ ইবরাহীম বিন সুলাইমান আল-জাবহান রহ. বলেন: “হে শিয়া আস, আমি তোমার দ্বারাই তোমাকে দীন শেখাব।”

মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমার এ সামান্য প্রয়াস দ্বারা বিবেকমানদের সঠিক ও সরল পথে চলার তাওফীক দান করেন। যেমন তিনি ইরশাদ করেন :

“নিশ্চয় এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য, যার রয়েছে অন্তর অথবা যে নিবিষ্টচিত্তে শ্রবণ করে।” সূরা কাফ : (৩৭)

আমরা এখানে ধারাবাহিকভাবে এই শি’আ মতবাদ ও তার ভয়ংকর দিক গুলো দালীলের মাধ্যমে তুলে ধরব যেন আমরা এদের ধোকায় না পড়ি। আল্লাহ আমাদের এই ফির্কাহ থেকে হেফাযাত করুন এবং দু’আ করি এদের মুখোশ উম্মোচন করে মুসলিম জাতি যেন তার ঈমান রক্ষা করতে পারে।

অধ্যায়ঃ

রাফেযী(শিয়া)দের আবির্ভাব ও দলীয় নামকরন।
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ১ (বাদা ও আল্লাহর সিফাত)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ২ (৯০ পারা কুরআন ও সাহাবা)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৩ (ইয়াহুদি ও বারা ইমাম)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৪ (পুনর্জম্ম ও তুকাইয়া)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৫ (কবর পুজা ও আহলে সুন্নাহ)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৬ (ভাড়ায় বিয়ে করা)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৭(নাজাফ সম্মেলন)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৮ (আশুরা ও বায়াত)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ৯ (মুশরিক ও সালাফ সালেহীনদের মন্তব্য)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ১০ (একটি প্রশ্ন ও তার জবাব)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ১১ (শিআদের দ্বারা রচিত ২ টি সুরা)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ১২-শেষ পর্ব (গালি দেয়া ও উপসঙ্গহার)

এবার আরেক প্রশ্নে আসি।
কুর্দি কারা?

উত্তরঃ
পশ্চিম এশিয়ার একটি জাতি কুর্দি। ( کورد, Kurd)
ইরান ইরাক সিরিয়া আর তুরস্কের কিছু অঞ্চল মিলিয়ে কুরদিস্তান গঠিত, এ অঞ্চলের অধিবাসীকে কুর্দি বলে।
সারা বিশ্বে ৩ কোটি কুর্দি আছে। বেশির ভাগ থাকেন কুর্দিস্তানে। এছাড়াও তারা থাকেন পশ্চিম তুরস্ক, আরমেনিয়া, জর্জিয়া, ইসরাইল, আজেরবাইজান, রাশিয়া, লেবানন, কিছু ইউরোপীয় দেশ আর যুক্তরাষ্ট্রে।
তাদের ভাষা কুরদিশ।

বেশিরভাগ মুসলিম কুর্দিরা শাফিয়ি মাজহাবের সুন্নি মুসলিম। তবে কিছু শিয়াও আছে।
আর অন্যান্য ধর্মের অনুসারীও আছে, "আহলে হক" ধর্ম, ইয়াজিদি ধর্ম- এসব নবউদ্ভাবিত ধর্ম যেমন আছে তেমন আছে প্রাচীন ধর্মের অনুসারীও যেমন, ইহুদি আর খ্রিস্টান।

সাম্প্রতিক সময়ে ইরাকের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস ( সংগঠনটি প্রথমে আইএসআইএল নামে আত্মপ্রকাশ করে) এর কারণে ‘ইয়াজিদি’ সম্প্রদায়টির নাম গণমাধ্যমে বারবার আসছে। সম্প্রতি উত্তর ইরাকের শিনজার পর্বতে প্রায় ৪০ হাজার ইয়াজিদিকে আটকে রাখে আইএস সদস্যরা। সেখান থেকে বের হলে আইএসের গুলিতে ‍মৃত্যু আর আটকে থাকলে ক্ষুধা তৃষ্ণায় মৃত্যু এ রকম দ্বিমুখী চাপের মধ্যে ছিল সম্প্রদায়ের মানুষগুলো। এ রকম অবস্থায় সম্প্রদায়টির ৫০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেেই উত্তর ইরাকে আইএসকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। আসলে কারা এই ইয়াজিদি, কী এদের পরিচয়? তাদের প্রতি কথিত সুন্নি বিদ্রোহীদের ক্ষোভের কারণটাই বা কী?

ইয়াজিদি নাম শুনলেই অনেকের মনে হতে পারে এরা ইসলামের পঞ্চম খলিফা মুয়াবিয়ার ছেলে ইয়াজিদের বংশধর (ইয়াজিদ নিজেও ষষ্ঠ খলিফা ছিলেন)। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইয়াজিদিদের সঙ্গে ইয়াজিদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরেও শুধু ইয়াজিদের নামের সঙ্গে মিল থাকার কারণেই সুন্নি ও শিয়া মুসলিমদের কাছে ঘৃণিত হয়ে আসছে এই সম্প্রদায়টি। কেননা উমাইয়া বংশের খলিফা ইয়াজিদের প্রতি সুন্নি ও শিয়া উভয় অংশের প্রচণ্ড ঘৃণা রয়েছে। কারণ তার ষড়যন্ত্রেই মহানবীর (সা.) দুই দৌহিত্র ইমাম হাসান (রা.) ও ইমাম হোসেনকে (রা.) হত্যা করা হয়।
এবং রাফেযী শিয়াদের বহুল প্রচলিত কিছু বই ও অন্যান্য মুসলিম মনীষীদের লেখনির শরণাপন্ন হয়েছি, যারা ছিলেন শিয়া বিশেষজ্ঞ এবং যারা নিজেদের লেখনির মাধ্যমে শিয়াদের শিরক, মিথ্যাচার, গালমন্দ, বিদ্বেষ, সমালোচনা ও তাদের কথিত ইমাম সম্পর্কে বাতিল ধ্যান-ধারণার অসারতা প্রমাণ করেছেন। আমি অতি শালীন ও ভদ্র ভাষায় তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য পুস্তকের আলোকে তাদেরকে দীন শেখাতে চেষ্টা করেছি। যেমন শায়খ ইবরাহীম বিন সুলাইমান আল-জাবহান রহ. বলেন: “হে শিয়া আস, আমি তোমার দ্বারাই তোমাকে দীন শেখাব।”

মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমার এ সামান্য প্রয়াস দ্বারা বিবেকমানদের সঠিক ও সরল পথে চলার তাওফীক দান করেন। যেমন তিনি ইরশাদ করেন :

“নিশ্চয় এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য, যার রয়েছে অন্তর অথবা যে নিবিষ্টচিত্তে শ্রবণ করে।” সূরা কাফ : (৩৭)

আমরা এখানে ধারাবাহিকভাবে এই শি’আ মতবাদ ও তার ভয়ংকর দিক গুলো দালীলের মাধ্যমে তুলে ধরব যেন আমরা এদের ধোকায় না পড়ি। আল্লাহ আমাদের এই ফির্কাহ থেকে হেফাযাত করুন এবং দু’আ করি এদের মুখোশ উম্মোচন করে মুসলিম জাতি যেন তার ঈমান রক্ষা করতে পারে।

অধ্যায়ঃ

রাফেযী(শিয়া)দের আবির্ভাব ও দলীয় নামকরন।
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ১ (বাদা ও আল্লাহর সিফাত)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ২ (৯০ পারা কুরআন ও সাহাবা)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৩ (ইয়াহুদি ও বারা ইমাম)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৪ (পুনর্জম্ম ও তুকাইয়া)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৫ (কবর পুজা ও আহলে সুন্নাহ)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৬ (ভাড়ায় বিয়ে করা)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৭(নাজাফ সম্মেলন)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ৮ (আশুরা ও বায়াত)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ৯ (মুশরিক ও সালাফ সালেহীনদের মন্তব্য)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ১০ (একটি প্রশ্ন ও তার জবাব)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ১১ (শিআদের দ্বারা রচিত ২ টি সুরা)
শিয়া ভ্রান্ত আক্বীদাঃ ১২-শেষ পর্ব (গালি দেয়া ও উপসঙ্গহার)

এবার আরেক প্রশ্নে আসি।
কুর্দি কারা?

উত্তরঃ
পশ্চিম এশিয়ার একটি জাতি কুর্দি। ( کورد, Kurd)
ইরান ইরাক সিরিয়া আর তুরস্কের কিছু অঞ্চল মিলিয়ে কুরদিস্তান গঠিত, এ অঞ্চলের অধিবাসীকে কুর্দি বলে।
সারা বিশ্বে ৩ কোটি কুর্দি আছে। বেশির ভাগ থাকেন কুর্দিস্তানে। এছাড়াও তারা থাকেন পশ্চিম তুরস্ক, আরমেনিয়া, জর্জিয়া, ইসরাইল, আজেরবাইজান, রাশিয়া, লেবানন, কিছু ইউরোপীয় দেশ আর যুক্তরাষ্ট্রে।
তাদের ভাষা কুরদিশ।

বেশিরভাগ মুসলিম কুর্দিরা শাফিয়ি মাজহাবের সুন্নি মুসলিম। তবে কিছু শিয়াও আছে।
আর অন্যান্য ধর্মের অনুসারীও আছে, "আহলে হক" ধর্ম, ইয়াজিদি ধর্ম- এসব নবউদ্ভাবিত ধর্ম যেমন আছে তেমন আছে প্রাচীন ধর্মের অনুসারীও যেমন, ইহুদি আর খ্রিস্টান।

সাম্প্রতিক সময়ে ইরাকের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস ( সংগঠনটি প্রথমে আইএসআইএল নামে আত্মপ্রকাশ করে) এর কারণে ‘ইয়াজিদি’ সম্প্রদায়টির নাম গণমাধ্যমে বারবার আসছে। সম্প্রতি উত্তর ইরাকের শিনজার পর্বতে প্রায় ৪০ হাজার ইয়াজিদিকে আটকে রাখে আইএস সদস্যরা। সেখান থেকে বের হলে আইএসের গুলিতে ‍মৃত্যু আর আটকে থাকলে ক্ষুধা তৃষ্ণায় মৃত্যু এ রকম দ্বিমুখী চাপের মধ্যে ছিল সম্প্রদায়ের মানুষগুলো। এ রকম অবস্থায় সম্প্রদায়টির ৫০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেেই উত্তর ইরাকে আইএসকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। আসলে কারা এই ইয়াজিদি, কী এদের পরিচয়? তাদের প্রতি কথিত সুন্নি বিদ্রোহীদের ক্ষোভের কারণটাই বা কী?

ইয়াজিদি নাম শুনলেই অনেকের মনে হতে পারে এরা ইসলামের পঞ্চম খলিফা মুয়াবিয়ার ছেলে ইয়াজিদের বংশধর (ইয়াজিদ নিজেও ষষ্ঠ খলিফা ছিলেন)। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইয়াজিদিদের সঙ্গে ইয়াজিদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরেও শুধু ইয়াজিদের নামের সঙ্গে মিল থাকার কারণেই সুন্নি ও শিয়া মুসলিমদের কাছে ঘৃণিত হয়ে আসছে এই সম্প্রদায়টি। কেননা উমাইয়া বংশের খলিফা ইয়াজিদের প্রতি সুন্নি ও শিয়া উভয় অংশের প্রচণ্ড ঘৃণা রয়েছে। কারণ তার ষড়যন্ত্রেই মহানবীর (সা.) দুই দৌহিত্র ইমাম হাসান (রা.) ও ইমাম হোসেনকে (রা.) হত্যা করা হয়।
এদিকে ইয়াজিদি হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত এই সম্প্রদায়টি নিজেদের পরিচয় দেয় ‘দাসিন’ হিসেবে। ইয়াজিদি শব্দটি এসেছে ফার্সি ইজদ থেকে যার অর্থ দেবদূত। ইয়াজিদিদের প্রতি ঘৃণার অন্য একটি কারণ হলো তাদের রহস্যময় ধর্মীয় বিশ্বাস। গবেষকদের মতে সম্প্রদায়টির ধর্মীয় বিশ্বাস গড়ে উঠেছে খ্রিস্টান, ইসলাম, ইহুদি, জরথ্রুস্টবাদের মতো ধর্মগুলো থেকে। ইয়াজিদিদের বিশ্বাস অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা পুরো বিশ্বকে সৃষ্টি করার পর সাতটি পবিত্র আত্মার হাতে এর দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন। এদের মধ্যে প্রধান আত্মাটির নাম মালিক তাউস। ইসলাম ও খ্রিস্ট ধর্ম অনুসারে, মালিক তাউস আসলে শয়তানের অপর নাম। সে কারণে ইয়াজিদিদেরকে অনেক মুসলিম ও খ্রিস্টান শয়তানের উপাসক মনে করে। তবে কুর্দিশ ভাষাতাত্ত্বিক জামেল নেবেজের মতে, তাউস শব্দটি গ্রিক যার অর্থ সৃষ্টিকর্তা।

এদিকে বর্তমানে সুন্নি বিদ্রোহীদের কোপানলে পড়লেও সুন্নি শাসক সাদ্দামের সুদৃষ্টিতেই ছিল ইয়াজিদিরা। তার শাসনামলে এ সম্প্রদায়টিকে আরবদেরই একটি অংশ হিসেবে মনে করা হতো। এসময় তাদেরকে কুর্দিদের বিপক্ষে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হয়। তবে কুর্দিস্তান আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হয়ে যাওয়ার পর থেকেই উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ কুর্দি সশস্ত্র সংগঠন পেসমার্গার হয়ে সাদ্দাম সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। ২০০৩ সালের পর থেকেই কুর্দিরা ইয়াজিদিদের কুর্দিদের একটি অংশ হিসেবে মেনে নিলেও সব সময় বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করেনি।

জাতিগত দিক থেকে উত্তর ইরাকের এই সম্প্রদায়টি কুর্দিদের একটি অংশ। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টের জন্মের দু’হাজার বছর আগে থেকে এই সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে সারা বিশ্বে এই জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। অনেকের মতে পুরো বিশ্বে সম্প্রদায়টির এক লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে। তবে সম্প্রদায়টির নিজেদের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয় তাদের সংখ্যা আট লাখের মতো। ওয়েবসাইটটির দাবি অনুযায়ী কেবল জার্মানিতেই সম্প্রদায়টির ৩০ হাজার শরণার্থী রয়েছে।

সম্প্রদায়টির মধ্যে নারীদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী প্রচলিত রয়েছে। পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে নারী হত্যা ও সম্প্রদায়ের বাইরে নারীদের বিয়ের ব্যাপারে বেশ কড়াকড়ি রয়েছে। কিছু দিন আগে সুন্নি একটি ছেলেকে বিয়ে করার কারণে সম্প্রদায়টির এক নারীকে পাথর মেরে হত্যা করা হয়। গণমাধ্যমে ঘটনাটি ফাঁস হওয়ার পর সম্প্রদায়টিতে নারীদের অপমানজনক অবস্থানের কথা ফাঁস হয়ে যায়।

আল্লাহ ভাল জানেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.