নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখী মানুষ।

বনী জয়সোয়াল পান্ডে

সুখী মানুষ।

বনী জয়সোয়াল পান্ডে › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ের আগে বউ চুরি..!!

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫০



একটু ভাবুন বিবাহের পোশাকে সুসজ্জিত কনে, একটা ঘরের চালায় উঠে বসে আছে। বারংবার হুমকি দিচ্ছে লাফ দেয়ার। নিচে অনেক মানুষের উৎসুক চোখ। কি হয়, কি হয়, অবস্থা। মানুষের ভীড়ে এমন একজন আছে যার পোষাক অনেকটা বিয়ের বরের মত। অবস্থান ভীড়ের সামনে, ঘরের চালার নিচে। বরের ব্যাকুল আকুতি “ ওগো, নেমে এসো, আমরা সুখের সংসার গড়ব”। নেমে আসে কনে, নেচে গেয়ে বর-কনে ঘরে ফেরে। পরে তাদের সংসার কতটুকু সুখের হয় সে অন্য গল্প। এতক্ষণ বলছিলাম আমাদের আদীবাসি সাওতালদের বিয়ের কৌশল নিয়ে।

বিয়ে। দু-মানুষের সম্পর্কের সেতু। আমাদের মত দেশে যা পরিবারেরও বটে। এটা এমন একটি সামাজিক অনুষ্ঠান যা আনন্দের, আগ্রহের, আকাংখার। হয়ত সমাজ, শ্রেনী বা ব্যাক্তি বিশেষে রীতিটা ভিন্ন হয়। কিন্তু এই বিয়েই কথনও আতংকের হয় নাকি? হয়। এমন অনেক জনপদ আছে যেখানে অধিকাংশ নারীই অপহৃত হন বিয়ের সময়। দিনের আলোতেই। ভাবতে পারেন এটা আবার সেই সব দেশের ঐতিহ্যও..!!

কিরগিজস্তানের একটি নিষ্ঠুর ঐতিহ্য হলো বিয়ের আগে বউ অপহরণ করা। সেখানে কোন অবিবাহিত নারীকে বিয়ে করার ইচ্ছা হলেই তাকে কিডন্যাপ বা অপহরণ করা যায়। স্বাভাবিক ভাবেই এরপর নেমে আসে নিষ্ঠুরতম নির্যাতন, চলে যে পর্যন্ত না সে বিয়ের জন্য রাজি হন। মূলত ১৭-১৮ বছরের মেয়েরাই এই অপহরণের শিকার।

এখানে মেয়েদের তুলে নিয়ে গিয়ে তাকে প্রচুর মানসিক চাপে রাখা হয়। মেয়েরা বিয়ে করতে রাজি না হলে ছেলের বাড়ির মহিলারা অপহৃত মেয়ের মগজ ধোলাই-এর চেষ্টা করেন। এরপরও বিয়ের জন্য রাজি না হলে মেয়ের সঙ্গে ধর্ষণের মত জঘন্য কাজ করা হয়।
এই ঐতিহ্যের ব্যাপারে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কাহিনী শোনা যায়। কিন্তু, কিরগিজস্তানের দরিদ্র অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে আসছে না এই অবস্থার কোনো পরিবর্তন। পরিত্রান পাচ্ছেনা কিশোরীরা।

সেখানে বসবাসকারী এক মেয়ে বলেন “আমার মা কে অপহরণ করা হয়েছিলো তার বিয়ের আগে। আমার বড় বোনও অপহৃত হয়েছিলো। আমিও বাদ যাইনি এই জঘন্য কাজ থেকে। ১৬ বছর বয়সেই আমাকে অপরহণ করে বিয়ে করা হয়। তখন আমি বিয়ের কিছুই বুঝি না। আমি যাকে ভালোবাসি না তার সাথে থাকা অসম্ভব ছিলো আমার জন্য। কিন্তু আমার কাছে বিকল্প কোন রাস্তা ছিলোনা। তাই অবশেষে আমি তার সাথেই থেকেছি কিন্তু তাকে হৃদয়ে জায়গা দিতে পারিনি।”

এমন অনেক কাহিনী কিরগিস্তানের ঘরে ঘরে রয়েছে। সেখানে, অপহরণ করাকে কোনো খারাপ কাজ মনে করা হয় না। কিন্তু মেয়েরা যদি বিয়ের জন্য রাজি না হয়, তাহলে তাদেরকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এ ধরনের নৃশংস কাজ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু, এখনও তা যথেষ্ট নয়।

সাম্প্রতিক কিরগিজস্তানের একটি এনজিও এর গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ৪০ মিনিটে একটি করে মেয়ে অপহরণের শিকার হয়। এতে বছরে প্রায় ৫৪ হাজার মেয়ে অপহরণ হয়। প্রায় ১১ হাজার ৮০০ অপহরণ কেসের মধ্যে ২ হাজার মেয়েই ধর্ষণের শিকার। যেনে রাখা ভালো কিরগিস্তানের জনসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ।

এ রকম ৭০০ মামলা থেকে মাত্র একজন দোষীকে কাঠগড়ায় দাড় করানো যায়। বেশীরভাগ মহিলা ভয়ে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যায়, আবার অনেকে নিজের জীবন নিজ হাতেই শেষ করে ফেলেন।

এমন নারকিয় ঘটনার শিকার শুধুই কিরগিজ মেয়েরা নয়। আফ্রিকার তিনটি দেশ যেগুলো হলো-রোয়ান্ডা, ইথিওপিয়া, কেনিয়াসহ দক্ষিণ আফ্রিকাতে নববধূ অপহরণ হয়। এই অপহরণ কখনো কখনো ধর্ষণে রূপ নেয়।
মধ্য এশিয়ার মধ্যে, কিরগিজস্তান, কাজাকস্থান, উজ্বেকিস্থানেও এমন ঘটনার শিকার নারীরা। রাশিয়ার উত্তর ককেসাশ অঞ্চলের দাগেস্তান, চেচনিয়া ও ইনগুশেশিয়াতেও আছে এমন অভিষপ্ত রীতি।

জর্জিয়ায় বছরে প্রায় ১০০ জন বউ অপহরনের শিকার হন, যাদের ভেতর বেশীর ভাগই ধর্ষণেরও শিকার হন।
পাশের দেশ ভারতের মধ্য অঞ্চলের কিছু পিতৃতান্ত্রিক উপজাতিদের মধ্যেও বউ অপহরণের চর্চা আছে একালেও। শুধু অপহরণই না তাদের বিক্রি পর্যন্ত সামাজিক রেওয়াজ হিসেবে পালন করে আসছে চীনের দরিদ্র অঞ্চলে মানুষজন।



মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৫

লিযেন বলেছেন: বিষয়টা চিন্তার!

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৪

বনী জয়সোয়াল পান্ডে বলেছেন: অাসলেই তাই

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৯

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: অদ্ভুত রীতি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.