নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখী মানুষ।

বনী জয়সোয়াল পান্ডে

সুখী মানুষ।

বনী জয়সোয়াল পান্ডে › বিস্তারিত পোস্টঃ

রক্তের বাহকের হাতেই রক্তপাত...!!!

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫০

কদিন আগের কথা। সকাল সকাল ফেসবুকে অনলাইনে আমি। সম্পর্কে ছোট ভাই, বয়স ১৪-১৫। আবদার একটা স্মার্ট ফোন কিনে দিতে হবে। সে যে ১২ হাজার টাকার ফোন দিয়ে আমার সাথে চ্যাট করছে, সেটা তার আর পছন্দ না। জানতে চাইলাম, কোনটা নিতে চাস? কি যেন একটা ব্যান্ডের নাম বললো, যার দাম ২৮ হাজার টাকা। শুনলাম, ভাবলাম, মিলিয়ে নিতে চেষ্টা করলাম আমার বয়স যখন ১৪-১৫ ছিল, তখন আমাদের চাহিদার লেভেলের সাথে। ফারাক আসমান–জমিন। ৮-১০টাকার চকবার-ই চাহিদার সর্বোচ্চ স্তর ছিল তখন। চাওয়ার আগে ৩-৪ বার ভাবতাম। মা-বাবার মেজাজ ঠিক আছে তো?

মানছি, যুগ বদলেছে। তার মানে তো এই নয় যে এখন সূর্য পশ্চিমে উঠতে শুরু করেছে কিম্বা গাছের শেকড় আসমানে উঠে গেছে। সমস্যাটা কোথায়? সমস্যা খোঁজার আমিই বা কে? তবে সচেতন মানুষ হিসেবে পারিপার্শ্বিক অবস্থা একটু পর্যবেক্ষণ তো করতেই পারি।
আবার ওই ছোট ভাইটার কথায় আসি। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। তার বাবা-মায়ের চাওয়া ছেলে মানুষের মত মানুষ হবে। ভাল রেজাল্ট করবে। যেহেতু ওর গানের গলা ভাল, তাই গানটাও গাইতে হবে। সাধতে হবে গলা। চাহিদা কি খুব বেশী? আমাদের কাছে না হলেও ছোট্ট ভাইটার কাছে হয়তো পাহাড় সমান।

ফের আসি আমাদের ছোট বেলায়। বড় সংসার। যেখানে ছোট সদস্যটাকে সামলাতে মা সারাদিন ব্যাস্ত। আমাদের দিকে সেঅর্থে নজরদারি ফলাতেন না। স্বাধীন ছিলাম আমরা। তবে হ্যা, সন্ধ্যা বেলা ঝিমুলে হয়তো চড় থাপ্পড় খেতাম না তা নয়। চাহিদা বড় হতে হবে; হতে হবে মানুষের মত মানুষ ব্যাস্। ছিল না পাশের বাড়ির ভাবির ছেলের সাথে জিপিয়ের লড়াই, কিম্বা স্মার্ট ফোনের রঙ্গিন দুনিয়ার ঝকমারি সব খেলা। আমরা খেলতাম মাঠেই।

খবরের কাগজে গত কদিন একই ধরনের বেশ কটা খবর দেখলাম। আটকে গেল চোখ। ১৫ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর শহরে নতুন মডেলের মোটরসাইকেল না পেয়ে নিজের বাবা-মার শরীরে আগুন দেয় ১৭ বছর বয়সি ফারদিন হুদা মুগ্ধ। মা সিলভিয়া হুদা ঝলসানো শরীর নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করলেও হার মেনেছেন বাবা রফিকুল হুদা। ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার মারা যান তিনি। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত নিখোঁজ মুগ্ধ।

বাবা-মা কতোটা বিমুগ্ধ হলে সন্তানের নাম রাখেন মুগ্ধ। সেই পেটের সন্তানের দেয়া আগুনেই, সমস্ত আবদার মেটানো বাবাকে মরতে হয়..!! সকল বাবা তার সন্তানের জন্য কি না করেন, তিনি সবসময় চান ছেলেটি তার দুধে-ভাতে থাকুক।



এর ২ দিন পর, ১৭ সেপ্টেম্বর, চট্টগ্রামের ঘটনা। মাকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে সুমিত নামের এক তরুণের বিরুদ্ধে। বড় ভাইয়ের ভাষ্য এইচএসসি পরীক্ষায় খারাপ করায় সুমিতকে বকাঝকা করায় মাকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে মেরে নিজেও আত্মহত্যা করা চেষ্টা করে সুমিত।

১৭ সেপ্টেম্বরেরই আরেক খবর। রাজশাহীতে খুন হয়েছে কাব্য। বয়স সাত বছর। কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। ওই মাও নাকি পরে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন।

আরো কয়দিনের আগের ঘটনা রাজধানীর বণশ্রীতে দুই শিশুসন্তানকে খুন করার অভিযোগে এক মা এখনো রয়েছেন কারাগারে, বিচারের অপেক্ষায়। বাবা-মাকে খুন করে মাদকসেবী ঐশী সর্বোচ্চ সাজা পেয়েছে, দিন গুনছে সাজা কার্যকরের।



আমি স্তব্ধ।
খবরে এসেছে এগুলো, হয়তো আরো অনেক ঘটনা কাভারই করা হয়না। সব মিলিয়ে হচ্ছেটা কি?
ভালবাসার কমতি আছে তা কিন্তু বলছিনা। কিম্বা বলছি না সব ক্ষেত্রেই অনেক ভেবে চিন্তে ঠান্ডা মাথার ঘটনা এগুলো। উপরের খবরগুলো একটু মনোযোগ দিয়ে দেখুন, ৪টা ঘটনার ২টাতেই অঘটন ঘটানোর পর আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত। তার পরেও অঘটন তো অঘটনই। একবার ঘটে গেলে কি আর ফেরে?

প্রতিটাতেই রক্তের বাহকের হাতে রক্তপাত। কামনা করি, প্রার্থনা করি। এমনটা যেন আর না হয়। সাধারণের মত সাধারণ হোক সবার ধৈর্যশক্তি। লাগাম যেন থাকে প্রত্যাশার চাকাতে, সে বাবা-মা হোক কিম্বা সন্তান।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমাদের সমাজে মানবিক মূল্যবোধটা মনে হয় কমে গেছে যার ফলে এই সব অঘটন বেশি ঘটছে

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৩১

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: সত্যিই এই ঘটনাগুলো আমাদের মনকে বড় বেশী নাড়া দেয়, কিন্তু এমন ঘটনাগুলো ঘটছেই বা কেন?

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫১

বেকার যুবক বলেছেন: সামাজিক অস্থিরতা, সংসার সদস্যদের পারস্পরিক যোগাযোগ কমে যাওয়া এগুলোর কারণ হতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.