নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ মইন উদ্দীন। ডাক নাম মাঈনু। কিছু কিছু ফ্রেন্ডের কাছে কিশোর। বাড়ি চট্রগ্রাম। পড়ালেখার কারণে ঢাকায় থাকি। কৌতুহল একটু বেশী, হয়তো বাড়াবাড়ি ধরনের ই বেশী। দূঃসাহসী, কিন্তু সাহসী কিনা এখনো জানতে পারিনি।

কিশোর মাইনু

কিছু কিছু জিনিস জানি। সেগুলা মানুষের সাথে share করার জন্য ব্লগে প্রবেশ। তাতে দুটো সুবিধে। প্রথমত, আমার জানার ভুলভ্রান্তিগুলো দূর হবে। দ্বিতীয়ত, নতুন কিছু জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দুনিয়াতে জানার কোন শেষ নেই। এবং আমার আগ্রহের ও কমতি নেই। ইনশাল্লাহ কোনদিন হবে ও না।

কিশোর মাইনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুমিনুল-বিসিবি-হাতুরেসিংহ

২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫৭

টেস্ট স্কোয়াডে মুমিনুল,মাহমুদুল্লাহ নেই।
মুমিনুল পরে চান্স পেলে ও আদো তার আদো খেলা হবে কিনা সেটা ও সন্দেহজনক।

আমাদের এই ব্যাপারটা মেনে নেওয়া খুবই হতাশাজনক!

আগে তো মেনে নেইনি আমরা। হাবিবুল বাশার অভিষেক টেস্টের দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তারপর জনগণ আর মিডিয়ার স্মর্থনে তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে বাদ পড়েছিলেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তাঁকেও মিডিয়া আর জনগণের দাবির মুখে ফিরিয়ে আনা হয়।

মুমিনুল ছেলেটাকে আমরা কিছুদিন আগ পর্যন্তও আমাদের ব্র্যাডম্যান বলতাম! ২২ টেস্টে 11টা হাফ সেঞ্চুরি আর ৪ টা সেঞ্চুরি! মাত্র ৩ টেস্ট আগেই নিউ জিল্যান্ডের সাথে ওয়েলিংটনে করেছেন ৬৪ আর ৩৩!

ঠিক এর আগের টেস্টে ইংল্যান্ডের সাথে জয়ের ভিত্তি ছিল তামিম আর মুমিনুলের জুটি! শ্রীলংকায় এসে প্রস্তুতি ম্যাচেও ৭৫ রান করেছেন তিনি। গল টেস্টে মাত্র এক টেস্টে ব্যর্থতার সূত্রে তাঁকে বাদ দেয়াটা মোটামুটিভাবে একটা ক্রাইম বলা চলে! অথচ আমরা কী-বোর্ড বাদে কিছুই লিখছি না। মিডিয়াতেও সেরকম প্রতিবাদ নেই।

রিয়াদকে বাদ দেয়ার যৌক্তিকতা আছে। সে কন্সিস্টেন্টলি খারাপ খেলছিল। কিন্তু মুমিনুলকে বিচার করলাম মাত্র শেষ দুই টেস্ট দিয়ে! এমনকি ভারতের সাথেও সে একেবারে সিঙ্গেল ডিজিটে আউট হয়নি। দুই ইনিংসে করেছে ৩৯ রান। তবু তাঁকে বাদ দেবার পিছনে যুক্তিটা কোথায়?

এই হাথুরুসিংহে প্রথমে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাবার আগেই বলেছিলো যে, মুমিনুল শর্ট বল খেলতে পারে না, ইত্যাদি ইত্যাদি! প্রথম থেকেই সে মুমিনুলকে পছন্দ করে না। তাঁকে বাদ দেবার একটা ছুতো খুঁজছিলো! ৩ টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি পায়নি, তাতেই তার গত ৪ বছরের অবদান ভুলে যাওয়া হলো!

৯ ইনিংসে মাত্র ১টা হাফ সেঞ্চুরি থাকার পরেও রাহানেকে দলে রেখে কুম্বলে বলেছিলেন যে, “সে গত ২ বছর ধরে যা করেছে, তাতে মাত্র ৯ ইনিংসে দেখে তাঁকে বাদ দেয়া অবিচার!”

মুমিনুলের ক্ষেত্রে তো তাহলে অবিচার না, মহাশাস্তি দেবার মতো অপরাধ হয়েছে!

সৌম্য-সাব্বির খুব ভালো খেলোয়াড়। তাদের পছন্দ না করার কোন কারণ নেই। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের এমনকি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের তালিকায় দুইজনেই থাকবে সেই আশা আমরা করি। ফ্রি ফ্লোয়িং ব্যাটিং দিয়ে টেস্টে কিছু রান তারা পেতে পারে। কিন্তু টেস্ট টেকনিক, টেম্পারমেন্টে তারা যে মুমিনুলের চেয়ে অন্তত এখন পর্যন্ত অনেক পিছিয়ে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

কোচ সৌম্য-সাব্বিরকে পছন্দ করেন বলে তারা ফর্মে থাকুক আর নাই থাকুক, জেদ করে খেলাতেই থাকবেন। আর মুমিনুলকে অপছন্দ করেন বলে একটু ছুতো পেলেই বাদ দিবেন! এই ধরনের বৈষম্য আমাদের ক্রিকেটের জন্য কত বড় ক্ষতির কারণ হচ্ছে তা যদি আমরা চিন্তা করতে পারতাম।

এটা সাকিব, মুশফিকদের জায়গা নিয়েও সংশয়ে ফেলে দেয়! একটা ভয় তৈরি করে দেয়। ভয়টা এমন, “আমি যদি কোচের পছন্দ না হই, তাহলে তো একটা দুইটা খারাপ পারফরম্যান্সের বাদ পড়ে যেতে পারি।” সেই চাপে খেলা আরও নষ্ট হয়!

আবার উল্টোদিকে যদি কোচের পছন্দ হই তাহলে চিন্তা আসবে, “আমার তো কোন চিন্তা নাই। ফার্স্ট ক্লাসে ভালো করে কী লাভ! কোচ তো নেট থেকে দেখে তানবির হায়দারকে দলে নিয়ে নেন। ফার্স্ট ক্লাসে এতো কষ্ট করে ভালো না খেলে। নেট বোলার অথবা নেট ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে ঢুকি। সেখানে ভালো খেলে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে যাবো!”

করুন নায়ারকে বাদ দিয়ে রাহানেকে নেবার সময়ে কোহলির কথা একটাই ছিল, “প্রসেসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ!”

আজকে যদি আশ্বিন একটা ম্যাচ ইনজুরিতে পড়ে আর তার জায়গায় কেউ ভালো খেললে আশ্বিনকে বাদ দেয়া হয়, তাহলে দলের অন্য সবার মধ্যে ভয় ঢুকে যাবে। এক-দুই ম্যাচ খারাপ করলেই তো বাদ! এভাবে করে দলের স্ট্যাবিলিটি আসে না। প্রসেসের ভেতর দিয়ে দলে আসলে, থাকলে সব দল ভালো করে। অস্ট্রেলয়া সারাজীবন এভাবেই ভালো করে এসেছে। ভারত একটু দেরিতে ব্যাপারটা বুঝেছে। তারপর থেকে ভালো করছে, এবং নিয়মিত লিজেন্ডস বের করছে। ১০০ টেস্ট খেলার পরেও কোচের ইচ্ছায় ফার্স্ট ক্লাস না খেলাদের নিয়ে, নেটে পছন্দ নিয়ে খেললে আরও ১০০ টেস্ট খেললেও লাভ হবে না!

একটা উদাহরণ দেই, তাসকিন কখনোই আগে ফার্স্ট ক্লাস খেলেনি। তার বোলিং প্রতিভা আর সমর্থ্য নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। সে ইন-শা-আল্লাহ ভালো করবে। তার ব্যাপারে হাথুরুসিংহেই প্রথমে বলেছিলেন যে, তাসকিনকে ফার্স্ট ক্লাস খেলে তৈরি হয়ে আসতে হবে। গত কয়েকটা টেস্টে আমরা তাসকিনকে নিয়ে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে সে এখনো তৈরি না।

উদাহরণ হিসেবে বলি শুভাশিস আর শহীদের কথা! হয়তো প্রতিভা অর্থে দুইজনের কেউই তাসকিনের সমকক্ষ না। সেটা ব্যাপার না। ম্যাকগ্রাথের তূণেও অস্ত্র কম ছিল। কিন্তু শুভাশিস আর শহীদ অনেক বছর ফার্স্ট ক্লাস খেলে এসেছেন। তাতে তারা ব্যাটসম্যান রিড করাটা কিছুটা হলেও শিখেছেন। যার ফল আমরা দেখেছি দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে শহীদের টানা ৮ মেডেনে, অথবা গত ২ টেস্টে শুভাশিসের বোলিংয়ে!

যতই পিকনিক ক্রিকেট হোক, খেলার পরিস্থিতি, ব্যাটসম্যান সেট আপ ইত্যাদি মিলিয়ে যে শিক্ষা-অভিজ্ঞতাটা হয় সেটা শুধুমাত্র প্রতিভা দিয়ে হয় না। এজন্যেই খেলাটা শিখে আসতে হয়। এজন্যেই প্রসেসটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নাহলে পুরো সিস্টেমটাতেই ঝামেলা লাগে।
হাথুরুসিংহে ট্যাকটিক্যালি, টেকনিক্যালি খুব ভালো কোচ। সেটা নিয়ে কারোই কোন সন্দেহ নেই। সমস্যা হচ্ছে তার চোখে পড়ার মতো পক্ষপাতিত্বে! যাকে তিনি পছন্দ করেন তার জন্য সব ছাড়, আর যাকে পছন্দ করেন না তার প্রতি প্রচণ্ড স্কেপটিক্যাল হবার ব্যাপারটা দলের জন্য খুবই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরি করে। সেটাও সমস্যা হতো না যদি চেইন অফ কমান্ড আর ক্ষমতার চেক এন্ড ব্যালেন্স থাকতো।

সমস্যা হচ্ছে হাথুরুসিংহে বিসিবিতে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। নির্বাচক বোর্ড কাজ করে পুতুলের মতো। এতদিন মনে হতো বোর্ড সভাপতি কিছু জিনিস পরিবর্তন করেন! আজকে “রিয়াদকে আমিই বাদ দিয়েছি” শুনে সেটা নিয়েও ধন্দে পড়ে গেলাম!

উনি দেশ থেকে যাবার আগে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। এবং আমি সেটাই বিশ্বাস করতে চাই, সাধারণ যুক্তি বলে যে সেটাই সত্যি ছিল। এরপরে শ্রীলংকা গিয়ে হাথুরুসিংহের সাথে নিশ্চয়ই কোন বৈঠক করেছেন।

আর তারপর কী আশ্চর্য! সব দায় নিজের কাঁধে টেনে নিয়েছেন। যে মানুষটা পুরো ব্যাপার সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, সাংবাদিকদের কাছ থেকে রিয়াদের ফিরে আসার খবর শুনেছিলেন, সেই মানুষটা শ্রীলংকায় গিয়ে টাইম মেশিনে চড়ে সময়ের আগে গিয়ে নিজেই দল থেকে রিয়াদকে বাদ দিয়ে দিলেন!

হাথুরুসিংহে নিশ্চয়ই বোর্ড সভাপতিকে কিছু বুঝিয়েছে যাতে বোর্ড সভাপতি সব দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন! হাথুরুকে নিয়ে কীসের এতো ভয়?

কী আশ্চর্য!

একটা কথা আছে, “Even the best kind Benevolent Dictatorship is always worse than the worst kind of democratic bureaucracy!”

হাথুরু যদি বেনেভোলেন্ট ডিকট্যাটরও হোন, তাহলেও নির্বাচক কমিটি, প্রসেস সব বাদ দিয়ে তার প্রতি সর্বময় ক্ষমতা দেয়া; আর তাঁকে বাঁচাতে এমনকি বোর্ড সভাপতিরও নিজের কাঁধে দায়িত্ব নেয়ার প্রবণতা থাকা আমাদের ক্রিকেটের জন্য এক বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে!
হাথুরুসিংহে টেকনিক্যালি খুব ভালো কোচ। কিন্তু তাঁকে কতটুকু ক্ষমতা দেয়া যাবে আর ক্ষমতা দেয়া যাবে না, সেটার সিদ্ধান্ত বিসিবিকে খুব শক্তভাবে নিতে হবে!

শুরুতে ফেরত যাই! মুমিনুলের ক্ষেত্রে আমরা হাবিবুল অথবা মিনহাজুলের মতো কোন উদাহরণ তৈরি করতে পারছি না যেখানে এমন একটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে শক্তভাবে প্রতিবাদ করা হবে! মিডিয়াকেও আরও নির্ভীক হতে হবে। বেশি বোল্ড কথা বললে তো বিসিবি সভাপতি তার সংবাদ সম্মেলনে আমাদের যেতে দেবেন না, এই ধরনের ভয় থাকা যাবে না!

বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বার্থের উপরে হাথুরুসিংহে না, কেউই না!
(Inspired)

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২১

ফয়েজ উল্লাহ রবি (পারিজাত) বলেছেন: ঠিক বলেছেন। :|
বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্বার্থের উপরে হাথুরুসিংহে না, কেউই না!

২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:০৩

কিশোর মাইনু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই সাপোর্টের জন্য।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সাধু সাবধান!!!!!!!! কিছু ব্লগার ভাই কিন্তু বেশি বুঝলে আপনাকে ১ বছরের জন্য মাঠে নেমে যেতে বলবে!!!!!! :)
view this link

২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:০২

কিশোর মাইনু বলেছেন: বেশি বুঝলে ভাই আমার কি আর করার আছে।
আমি বুঝলাম ভাই আমি তা লিখলাম।
তারা যা বুঝে তারা তা লিখবে।
মতবিরোধ হলেই তো ভাই জানা বাড়ে।
তাই না???

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:২৪

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: হাতুরেসিংহের আমলে দল সাফল্য পাওয়াতে তিনি নিজেকে অনেক বড় কিছু ভাবছেন। তার দায়িত্বের প্রথম কিছুদিনের মধ্যেই তো সাকিবের সাথে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। তবে বিসিবির সবকিছু এখন নিয়ন্ত্রণ করেন পাপন। তার কিছু সিদ্ধান্ত আবার ঝড়ে বক মরার মত কাজ দিয়েছিল। কিছুদিন আগেই এক বিশেষজ্ঞ সাকিব হাসানের বিকল্প ভাবার সময় এসেছে বলে পত্রিকাতে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। পরে তো সাকিব ঐ সফরে সেঞ্চুরী করেছিলেন। এভাবে একটা দল দাঁড়ালো। আর এখন হাতুরেসিংহে, পাপন, নান্নুরা বারবার এক্সপেরিমেন্ট করছেন...

২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:০০

কিশোর মাইনু বলেছেন: আমার মনে হয় কোচের ক্ষমতাটা কমানো দরকার।কোচের ব্যাক্তিগত পছন্দ অপছন্দের কারণে যদি দলের সেরা টেস্ট প্লেয়ারটিকে স্কোয়াডের ই বাইরে থাকতে হয়,সেটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য খুব ই খারাপ বলে আমি মনে করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.