নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ মইন উদ্দীন। ডাক নাম মাঈনু। কিছু কিছু ফ্রেন্ডের কাছে কিশোর। বাড়ি চট্রগ্রাম। পড়ালেখার কারণে ঢাকায় থাকি। কৌতুহল একটু বেশী, হয়তো বাড়াবাড়ি ধরনের ই বেশী। দূঃসাহসী, কিন্তু সাহসী কিনা এখনো জানতে পারিনি।

কিশোর মাইনু

কিছু কিছু জিনিস জানি। সেগুলা মানুষের সাথে share করার জন্য ব্লগে প্রবেশ। তাতে দুটো সুবিধে। প্রথমত, আমার জানার ভুলভ্রান্তিগুলো দূর হবে। দ্বিতীয়ত, নতুন কিছু জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দুনিয়াতে জানার কোন শেষ নেই। এবং আমার আগ্রহের ও কমতি নেই। ইনশাল্লাহ কোনদিন হবে ও না।

কিশোর মাইনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫৮

সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার স্যার গ্যারি সোবার্স বা আধুনিক ক্রিকেটের সেরা জ্যাক ক্যালিস,আশির দশকের চার বিখ্যাত অলরাউন্ডার স্যার ইয়ান বোথাম,ইমরান খান,কপিল দেব,স্যার রিচার্ড হ্যাডলি,ইংল্যান্ডের এই যুগের সেরা ফ্রেডি ফ্লিন্টফ বা অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের সেরা কিথ মিলার,৫০ টেস্ট শেষে কেমন ছিল তাদের ক্যারিয়ার???
৫০ টেস্ট শেষে ৩ হাজার রান আর ১৫০ উইকেটের যুগলবন্দী ছিল না কারও। আবারও বলছি,ছিল না তাদের কারও।
৫০ টেস্ট শেষে সাকিবের রান ৩ হাজার ৫৬৮,উইকেট ১৮৬টি।ক্রিকেট ইতিহাসের সবার চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে!!!
সাকিব ভালো করা মানেই রেকর্ডের কিছু পাতায় ওলট-পালট। কিছু পাতা নতুন সংযোজন। এমনিতেই তার রত্ন ভান্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ। এই টেস্টে সেই ভাণ্ডারে যোগ হয়েছে আরও কিছু মণি-মুক্তা, হীরে-জহরত।(Inspired)
৫০ তম টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি আর ১০ উইকেট,ক্রিকেট ইতিহাসে ছিল না আগে আর কারও।একই টেস্টে ১০ উইকেট ও হাফসেঞ্চুরি একাধিকবার,আগে ছিল কেবল স্যার রিচার্ড হ্যাডলির।বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টে একাধিকবার ১০ উইকেট।৯টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে ৫ উইকেট।একই টেস্ট হাফসেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট ৮ বার, স্রেফ বোথামের পরে।
একগাদা রেকর্ড।
এই রেকর্ডের মালা কিংবা ৫০ টেস্ট শেষে সব অলরাউন্ডারের চেয়ে এগিয়ে,এসবের মানে এই নয় যে সাকিব সর্বকালের সেরা।এসবের মানে এই নয় সোবার্সের সঙ্গে সাকিবের তুলনা করা যায়।তুলনায় আসতে হলেও একই ভাবে পারফর্ম করে যেতে হবে হয়ত আরও অন্তত ৫-৬ বছর। তবে এই পরিসংখ্যান এটা বলছে,সাকিব সেরাদের পথ ধরেই এগোচ্ছেন।যে পথ ধরে সেরা হয়েছেন সোবার্স-বোথামরা,সেই পথে উসাইন বোল্টের গতিতে ছুটছেন সাকিব।গতি তীব্র বলেই ৫০ টেস্ট শেষে সবার চেয়ে এগিয়ে।
তবে টেস্ট শেষে,জয়ের রেশ গায়ে মেখে,পরিসংখ্যানের ওজন এক পাশে সরিয়ে,বার বার চোখে ভাসছে একটি দৃশ্য।
দ্বিতীয় দিন সকালে প্রথম ড্রিংকস ব্রেক।রেনশ আর হ্যান্ডসকমের জুটি বেশ দাঁড়িয়ে গেছে।বাংলাদেশের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ একটু ম্রিয়মান।পানির ট্রলির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো কিছু অবসন্ন শরীর।একজনকে দেখলাম, হঠাৎই তেতে উঠলেন।গায়ের জোরে দু হাতে তালি বসালেন বার চারেক।ঠোটের নাড়াচাড়া থেকে বোঝা গেল বলছেন, “কাম অন….।”
সাকিব আল হাসান!!!
সাকিব হঠাৎ এরকম খ্যাপাটে?!?!?তার পর থেকে মাঠে তাকেই অনুসরণ করতে থাকল চোখ। মাঠে দারুণ সক্রিয়। চিৎকার, কথা, তালি, ছুটোছুটি।দ্বিতীয় ইনিংসে ফিল্ডিংয়ের সময়ও একই অবস্থা।দারুণ চার্জড আপ।ইনটেনসিটি প্রবল।
নিজের কাজ করছেন।তিনদিন ধরে যা করার করেছেন। তার পর চতুর্থ দিন সকালে ২০ ওভারের টানা স্পেলে ৪ উইকেট নিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার আশা।প্রাণ ফিরিয়েছেন বাংলাদেশের স্বপ্নে।পাশাপাশি দলকে উজ্জীবিত করছেন।মাঝে মধ্যে ফিল্ড সাজাচ্ছেন।একে-তাকে ডাকছেন চিৎকার করে সরাচ্ছেন,নাড়াচ্ছেন নাচছেন,খেপছেন,খেপাচ্ছেন,জ্বলছেন,জ্বালাচ্ছেন।সাফল্য উদযযাপন বা অল্পের জন্য না পারার হতাশা,দুটির প্রকাশই তীব্র।
সব ম্যাচেই নিশ্চয়ই সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেন।তবে সব ম্যাচে এক রকম ইনটেনসিটি থাকে না।থাকা সম্ভব না। এই টেস্টের মত এতটা ইনটেনসিটি সাকিবের আর দেখেছি বলে মনে পড়ে না।স্মরণীয় পারফরম্যান্সের অভাব নেই তার। ম্যাচ জেতালেন কত কত বার।কিন্তু এতটা সাকিবময় জয় কমই এসেছে।কারণ, এই টেস্ট সাকিব জিততে চেয়েছিলেন।সাকিব একটা স্টেটমেন্ট দিতে চেয়েছিলেন,নিজের,দলের,দেশের স্টেটমেন্ট।

যেটা বলতে চাইছি,সাকিব এই টেস্টে ছিলেন নেতা। ব্যাটে-বলে নেতা,আগ্রাসনে নেতা,তাগিদে নেতা,করে দেখানোয় নেতা,অনুপ্রেরণায় নেতা,প্রতিপক্ষকে ব্যাটে-বলে,শরীরী ভাষায়,কথায়,মনোবলে হারিয়ে দেওয়ার নেতা।
ব্যাটে-বলে অনেক জিতিয়েছেন।কিন্তু এত বেশি ইনভলভড থেকে হয়ত আগে জেতাননি।এজন্যই এতটা সাকিবময় জয় আগে আসেনি।
সাকিব একটা কথা সবসময় বলেন।দলে অবদান।যদি স্পেসিফিক মনে করতে পারি,২০১০ সাল থেকে এই কথা তার মুখে অসংখ্যবার শুনেছি,দলের জয়ে অবদান রাখতে পারাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।সেটা হোক ছোট বা বড়। আজকেও নানা ভাবে প্রশ্ন করে তার ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে তেমন কোনো চটকদার “কোট” পাওয়া যায়নি। বলে গেছেন,“দলে অবদান রাখতে পেরেই খুশি।”
এই অবদানেই চলে আসে নেতা সাকিবের কথা।ক্যারিয়ার শেষ হতে হতে পরিসংখ্যান আরও সমৃদ্ধ হবে।আরও কত কত রেকর্ড গড়বেন।কিন্তু পেছন ফিরে যখন তাকাবেন সাকিব,সবার আগে চোখে ভাসবে হয়ত এই মিরপুর টেস্ট।যেখানে তিনি শুধু ব্যাটে-বলে অবদান রাখেননি, অধিনায়ক না হয়েও নেতা হয়ে অবদান রেখেছেন।একটি জয়কে আক্ষরিক অর্থেই সাকিবময় করতে পেরেছিলেন।

দলের সেরা পারফরমার,ইতিহাসের সেরা তারকাকে এমন চেহারায় নিয়মিত পাওয়ার দাবী করতেই পারে দল।সাকিবের মত একজন পারফরমারের নেতা হয়ে উঠতে অধিনায়ক হওয়া জরুরী নয়,চাইলেই পারেন।
ব্যাটিং-বোলিংয়ে এই মিরপুর টেস্টের মত পারফরমান্স সাকিবকে একদিন নিয়ে যাবে সোবার্সদের কাতারে।সঙ্গে মিরপুর টেস্টের “নেতা” সাকিব যোগ হলে, দেশের ক্রিকেটও দ্রুত চলে যাবে শীর্ষ কাতারে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:২২

বারিধারা বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.