নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ মইন উদ্দীন। ডাক নাম মাঈনু। কিছু কিছু ফ্রেন্ডের কাছে কিশোর। বাড়ি চট্রগ্রাম। পড়ালেখার কারণে ঢাকায় থাকি। কৌতুহল একটু বেশী, হয়তো বাড়াবাড়ি ধরনের ই বেশী। দূঃসাহসী, কিন্তু সাহসী কিনা এখনো জানতে পারিনি।

কিশোর মাইনু

কিছু কিছু জিনিস জানি। সেগুলা মানুষের সাথে share করার জন্য ব্লগে প্রবেশ। তাতে দুটো সুবিধে। প্রথমত, আমার জানার ভুলভ্রান্তিগুলো দূর হবে। দ্বিতীয়ত, নতুন কিছু জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দুনিয়াতে জানার কোন শেষ নেই। এবং আমার আগ্রহের ও কমতি নেই। ইনশাল্লাহ কোনদিন হবে ও না।

কিশোর মাইনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্রীক মিথোলজি(৩): টাইট্যানম্যাকি যুদ্ধ

১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৫৯

ক্রোনাসের কাছ থেকে তার ভাইবোনকে মুক্ত করার পর সবার সাথে বসে জিউস ঠিক করলেন ক্রোনাস-কে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে। কারণ সুযোগ পেলেই ক্রোনাস পুনরায় তাদের গিলে ফেলতে পারেন। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য, ক্রোনাসের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তারা সবাই মিলে ক্রোনাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। শুরু হল গ্রীক মিথোলজির প্রথম যুদ্ধ, যা 'টাইট্যানোম্যাকি' নামে পরিচিত। এই টাইটান যুদ্ধ নিয়েই আজকের পোস্ট।

টাইটানদের যুদ্ধে যাওয়ার আগে টাইটানদের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া দরকার। ক্রোনাসসহ তাঁর বার ভাই-বোনকে বলা হয় প্রথম যুগের টাইটান। সাধারণ অর্থে তাদের যে সন্তান-সন্ততি জন্মগ্রহন করেছিলেন, তাদেরকে বলা হয় দ্বিতীয় যুগের টাইটান। এই হিসেবে ক্রোনাস এবং রিয়ার ছয় সন্তানকেই দ্বিতীয় যুগের টাইটান বলা উচিত ছিলো, কিন্তু অলিম্পাস পাহাড়ে অবস্থানের কারণে তাদেরকে বলা হয় অলিম্পিয়ান। আবার টাইটান ওসেনাস এবং টেথিসের সন্তান তিন হাজার নদী দেবতা এবং তিন হাজার ওসেনিড নিম্ফকেও টাইটান বলা হয় না। শুধুমাত্র ওসেনিড স্টিক্স এবং তার বোন মেটিস ব্যতিক্রম। এই দুইজন একইসাথে ওসেনিড এবং টাইটান হিসেবে গন্য হয়ে থাকেন। আবার দ্বিতীয় যুগের টাইটান হবার জন্য যে বাবা- মা দুইজনকেই টাইটান হতে হবে, তা কিন্তু নয়। যেমন, টাইটান ইয়াপেতুস এবং ওসেনিড (ওসেনাস এবং টেথিসের সন্তান) ক্লাইমেনে বা এশিয়ার চার সন্তান এটলাস, মিনোউটিয়াস, প্রমিথিউস ও এপিমেথিয়াস হচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ চারজন দ্বিতীয় যুগের টাইটান। দ্বিতীয় যুগের টাইটানদের মধ্যে আরো উল্লেখযোগ্য ছিলেন- টাইটান কয়ওস এবং ফয়বের সন্তান লেটো ও এস্টেরিয়া, টাইটান ক্রিয়াস এবং ইউরাইবিয়ার (গায়া ও পন্টাসের কন্যা) সন্তান পারসেস, পাল্লাস ও এস্ট্রাইস। আবার কেউ কেউ টাইটান হাইপেরিয়ন এবং থেইয়ার সন্তান হেলিয়াস ও তার বোনদেরকেও দ্বিতীয় যুগের টাইটান বলে থাকেন।

যুদ্ধের এক পক্ষে প্রথম যুগের টাইটান, যাদের নেতা শক্তিমান অ্যাটলাস। অপর পক্ষে দ্বিতীয় যুগের টাইটানদের নেতা ছিল জিউস। থেসালী নামক এক জায়গায় ২দিকে ২টো পাহাড় ছিল। উত্তরে ছিল অলিম্পাস পর্বত, দক্ষিণে অথ্রিস। ১ম যুগের টাইটানরা অথ্রিস, ২য় যুগের টাইটানরা অলিম্পাস পর্বত থেকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে লাগলেন।

পারসেস ও এস্টেরিয়ার কন্যা ছিলেন হেকাটে,৩য় যুগের টাইটান। রাতের রাণী, জাদুবিদ্যা, ডাইনিবিদ্যা, অগ্নি, আলো, উর্বরতা, পাতালপুরী ও চন্দ্রের দেবী হিসেবে তাকে অনেক সম্মান প্রদান করা হত। যুদ্ধের এক পর্যায়ে জিউস ঘোষণা দিলেন হেকাটের এইসব সুবিধা/ক্ষমতাগুলো তিনি বাতিল করবেন না। তখন ওসেনাস ও থেতিসের কন্যা স্টিক্স(নদী) তার সন্তান্দের নিয়ে অলিম্পাসে চলে আসেন জিউসদের সাহায্য করতে। যুদ্ধের শুরুতেই দুরদর্শি টাইটানদেবী থেমিস জানতেন যা, এই যুদ্ধে চাতুর্যের কাছে হিংস্রতাকে হারতে হবে। তাই তিনি জিউসের পক্ষাবলম্বণ করেন। তার দেখাদেখি নিরপেক্ষ প্রমিথিউস ও জিউসের পক্ষে চলে আসেন। এবং তার ভাই এপিমেথিউস-কে ও পক্ষে নিয়ে আসতে সমর্থ হোন। এই যুদ্ধে কোন নারী টাইটান অংশগ্রহণ করেনি। আর একমাত্র নিরপেক্ষ টাইটান ছিল ওসেনাস।

১০বছর ধরে যুদ্ধ চলার পর জিউস গায়ার পরামর্শে পাতালপুরী থেকে হেকাটনখিরাস ও সাইক্লপ্সদের মুক্ত করেন। এবং তাদের শক্তিশালী করার জন্য নেক্টার ও এম্ব্রোসিয়া খেতে দেন। কৃতজ্ঞতাস্বরুপ সাইক্লপসরা জিউসের জন্য লাইথনিং বোল্ট/বজ্র‍, পসাইডন জন্য ত্রিশুল ও হেডসের জন্য বিশেষ অন্ধকারের হেলমেট তৈরী করে দেয়, যা পড়লে সে অদৃশ্য হয়ে যেত। তারা ছিল বিশ্বব্রক্ষ্মান্ড্রের প্রথম কামার। এদিকে হেকাটনখিরাস-রা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তারা একসাথে ১০০টি পাহাড়ের সমান পাথর ছুড়ে মারত ক্লান্তিহীনভাবে। এত কিছুর ফলে যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেল। জিউসরা জিতে গেল।

টাইটানদের নেতা অ্যাটলাস-কে শাস্তি দেওয়া হল তাকে কাধে করে এই পৃথিবীটাকে ধরে রাখতে হবে অনন্তকাল।পর্যন্ত। প্রথমে বন্দী করা হলেও পরে পিতার সম্মান দেখিয়ে ক্রোনাসকে পাঠিয়ে দেওয়া হল মৃতদের দ্বীপে। আর বাকী টাইটানদের টারটারাসের বন্দী করে রাখা হল। যাদের পাহারায়য় নিযুক্ত করা হয় হেখাটনখিরাসদের, আর তাদের প্রতিনিধি ছিল ব্রিয়ারেস।

শাস্তি দেওয়ার পর তারা সবাই মিলে অলিম্পাস পর্বতে বসবাস শুরু করলেন, তাই তাদের অলিম্পিয়ান্স বলা হয়। তারপর কে কোন জায়গার দায়িত্ব নিবে সেটা ঠিক করতে বসলেন। ভোটাভুটি করে হেডাস পেলেন মর্ত্যের দায়িত্ব, পপাতালপুরীর দেবতা, সকল মৃতদের রাজা। পসাইডন পেলেন সমুদ্র/জলাশয়ের দায়িত্ব, পৃথিবীর সকল পানির উপর।আর জিউস আকাশের, যেহেতু আকাশ সব কিছু আবৃত করে রাখে তাই দেবরাজ হিসেবে ও জিউসকেই নির্বাচিত করা হল।
আগের দুই পর্বে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি থেকে অলিম্পিয়ান্সদের জন্ম পর্যন্ত এবং অলিম্পিয়ান্সদের ক্ষমতা/দায়িত্বনিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজকের পর্বে গ্রীক মিথোলজির প্রথম যুদ্ধ নিয়ে হালকা পাতলা আলোচনা করলাম। আগামী পর্বে মানবজাতির সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা করব। পরীক্ষার কারণে ৩য় পর্ব আসতে বিলম্ব হলেও ৪র্থ পর্ব দ্রুতই আসবে।
কষ্ট করে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্যে ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন।
শুভকামনা সবার জন্য।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:১০

মোঃ ফখরুল ইসলাম ফখরুল বলেছেন: :|

১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:২৭

কিশোর মাইনু বলেছেন: :D B-) ;) B:-)

২| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

কে ত ন বলেছেন: আমার কাছে অনেক কিছুই অপরিষ্কার ঠেকছে। প্রথমে লিখলেন, ইউরেনাস গায়ার সন্তান। তাদের অজাচারের ফসল হচ্ছে পন্টাস। অর্থাৎ পন্টাস ইউরেনাসের ছেলে হলেও গায়ার নাতি। এই পর্বে আবার লিখলেন গায়া ও পন্টাসের সন্তানের নাম ইউরাইবিয়া। এই ধারাবাহিকতার শেষ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে? সেই সময় কি গায়া ছাড়া সন্তান ধারণক্ষম আর কোন নারী ছিলনা?

১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৪৫

কিশোর মাইনু বলেছেন: আগে একটা কথা ক্লিয়ার করি। পন্টাস গাইয়ার সন্তান। ইউরেনাসের না। ইউরেনাসকে যেভাবে জন্ম দিয়েছে, পন্টাসকেও সেভাবেই জন্ম দেওয়া হয়েছে কোন পিতা ছাড়াই।
আর অজাচারের কথা বললেও পুরো গ্রিক মিথেই অজাচারের চড়াচড়ি। আর ধারাবাহিকতা?!?!?
এখনো চলছে। :D :D

৩| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: মিথলোজি গুলোতে আমার অনেক আগ্রহ।

১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩০

কিশোর মাইনু বলেছেন: সাথে থাকুন ভাই।
গ্রীক মিথোলজির পর একে একে রোমান, পার্সিয়ান সহ আরো অনেক মিথোলজি ও আরো অনেকের লেখার লিংক ই দেব।
ধন্যবাদ।

৪| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৩:০৫

অনল চৌধুরী বলেছেন: এগুলি ইলিয়াড-অডিসি'তে পাইনি।
কোথায় লেখা আছে?

১১ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:১১

কিশোর মাইনু বলেছেন: থিওগনি অব হেসিওড।
Btw, এ ব্যাপারে ইলিয়ড-অডিসিতে কি লেখা আছে?!?!?

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.