নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I Am Muslim

Call to muslim

আমি একজন মুসলিম,

Call to muslim › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশ নেই যে সব মানুষের

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৩


ছবি, http://www.unhcr.org


মানুষ জন্ম নেয় রাষ্ট্রে, বেড়ে ওঠে রাষ্ট্রে, আবার মৃত্যুবরণও করে কোন এক রাষ্ট্রের অধীনে। রাষ্ট্র একজন মানুষের নিরাপত্তা, মৌলিক অধিকারসহ নিজস্ব পরিচয়ের একটি জায়গা করে দেয়। কিন্তু কেমন হবে যদি কোনদিন সকালবেলায় ঘুম থেকে জেগে দেখতে পান যে আপনার কোন রাষ্ট্র নেই? শুনতে অনেকটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি যে পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যাদের কোন রাষ্ট্র নেই। যারা কোন রাষ্ট্রেরই পরিচয় বহন করেনা। কোন দেশই যাদেরকে নিজের নাগরিক বলে মানে না। এমনকি তাদের নিজের দেশও না। আর এমনই কিছু দেশহীন মানুষকে নিয়েই আজকের এই আয়োজন।
১. রোহিঙ্গা শরণার্থী

মায়ানমারের আরাকান নামক স্থানে তখন বসবাস ছিল মুসলিম ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের। হঠাত্‌ই সেবার এক বৌদ্ধ নারীকে ধর্ষণ করে হত্যা করে তিন মুসলিম যুবক। আর সেই জের ধরে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি হয় দেশটির এই অংশটিতে। হঠাত্ করেই মুসলিম সব মসজিদগুলো বন্ধ করার নির্দেশ আসে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় শত শত ঘর। ধর্ষণ করা হয় মুসলিম নারীদেরকে আর তাড়িয়ে দেওয়া হয় নিজেদের দেশ থেকে। দিনের পর দিন লুকিয়ে থেকে, পানিতে ভাসতে ভাসতে একসময় বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় এই মানুষগুলো। সেখান থেকেও প্রথমে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তাদের। ফিরিয়ে দেওয়া হয় মায়ানমারে। সেখানকার প্রাণ ভয়কে কাছ থেকে দেখার পর আবার এই উদ্বাস্তুরা ফিরে আসে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ সাময়িক আশ্রয় দেয় তাদের। তবে এতে করে কোনো সমাধানই হয়নি। দিন দিন এই রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। এমনকি ১৯৮২ সালে গিয়ে রোহিঙ্গা এই নাগরিকদেরকে নিজের দেশের নাগরিক হিসেবে মানতে অস্বীকার করে মায়ানমার সরকার। বাংলাদেশের নাগরিকও নয় তারা ( এক্সাইল টু নোহোয়্যার )। তাহলে তারা কোথাকার নাগরিক? প্রশ্নের সমাধান এখনো দিতে পারেনি কেউ।
২. নুবিয়ান

নিজেদের সাম্রাজ্যকে আরো অনেক বেশি সম্প্রসারণ করতে ব্রিটিশরা সুদান থেকে হাজার হাজার মানুষকে কেনিয়াতে নিয়ে আসে। ব্রিটিশদের হয়ে বিশ্বযুদ্ধও লড়ে এই মানুষগুলো। কিন্তু খুব দ্রুতই ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ভাঙার পর দেশছাড়া হয়ে যায় এরা। এদেরকে শেষ সম্বল হিসেবে কেনিয়ায় কিবর নামক একটি স্থানে থাকার অনুমতি দিয়ে যায। সেখানেই বছরের পর বছর থাকা শুরু করে তারা। কিন্তু এর ফলাফল হিসেবে আজও একটি পরিচয় নিয়েই তাদেরকে বাঁচতে হয়। আর সেটি হচ্ছে শরনার্থী ( ট্রাস্ট )। কোন দেশের নাগরিক নয় বর্তমানে এই কেনিয়ার নামিবিয়াতে অবস্থিত নুবিয়ানরা। কেনিয়ার কোন সুযোগ সুবিধাতো তারা পায়ই না, উল্টো কোন ন্যায্য জিনিস চাইতে গেলেও সাধারন কেনিয়ানরা যেখানে কাজটা ২-৩ দিনের ভেতরে করে ফেলতে পারে, নুবিয়ানদের বেলায় সেটা সময় নেয় সর্বোচ্চ ১০ বছরও!
৩. ইউরোপীয়ান শরণার্থী

এক হিসেব মতে বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী ইউরোপের মোট ৬০০,০০০ মানুস বাস করছে যাদের না আছে কোন দেশ, না আছে কোন পরিচয়। শুরুটা হয় ১৯৯১ সালে স্নায়ুযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার মাধ্যমে(স্টেটলেসনেস. ইইউ )। বর্তমানে এস্তোনিয়া আর লাটভিয়াতে বসবাসরত অনেক মানুষেরই কোনো নাগরিকত্ব নেই। পূর্ব ইউরোপেও প্রায় ২২৫,০০০ মানুষ বাস করেন যাদের নাম সরকারী খাতাতেই রেকর্ড করা আছে দেশহীন হিসেবে।
৪. দালিত

কেবল উপরের কয়েকটি উদাহরনই নয়, দেশ নেই এমন মানুষের সংখ্যা ইউএনএইচসিআরের মতে প্রায় ১৫ মিলিয়ন। আর তাদের ভেতরে অন্যতম এক গোষ্ঠী হচ্ছে যুগ যুগ ধরে নেপালে কোন ধরনের নাগরিকত্ব ছাড়াই বাস করা দালিতেরা। নীচু জাত বলে পরিচিত এই মানুষগুলোর ভেতরে শিক্ষা তো নেইই, নেই কোনরকম চাহিদা পূরণের ব্যবস্থাও। অন্যদের চাইতে একদমই আলাদা হয়ে আছে তারা নিজেদেরই দেশে। আর এর কারণ তাদের নাগরিকত্বের অনুপস্থিতি। ২০০৭ সালে নেপাল সরকার দালিতদেরকে নাগরিক করার জন্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু তরপরেও বর্তমানে প্রান্তিক অঞ্চলে অনেক দালিতই রয়ে গিয়েছে নাগরিকত্বের বাইরে ( ন্যাশনালিটি ফোরাল )।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.