বাবাদের সব কথা শুনতে নেই

১৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৫০

ঘটনটা বহু বছর আগের। তাঁর আগে বলে নেই আমার ছোট বেলার পুরোটাই কেটেছে বাবার কথা অমান্য করে। খুব সকালে পায়ের কাছে জানালা খুলে দেয়া কিম্বা আরও ছোট বেলায় খুব ভোঁরে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে হাঁটতে বেরনো, তাই শৈশব এর সকালটা কখনই আরামদায়ক ছিল না। আমার বাবা মা তখন থাকত ফরিদপুরে। আমার ব্যাংকে চাকরি হল, জয়েন করার দুদিন আগে গিয়েছিলাম তাদের দোয়া নিতে। তখন মেডিক্যালে পড়া আমার ছোট ভাইও কাকতালীয় ভাবে ওইদিন ছিল ফরিদপুরে। যথারীতি রাতের বেলায় খাওয়ার টেবিলে আমরা চারজন। হটাত বাবা বলে উঠলেন - তোমারা দুভাই আছো ,সারাজীবন তোমরা তোমাদের ইচ্ছা মতন চলেছ, একটা অনুরধ করি যদি পার তাহলে রেখ। আমার মাথায় তখন ঘুরপাক শুরু করল- এই বুঝি বলবেন- সিগারেট, মদ কিম্বা ঘুষ না খাওয়ার ব্যাপারে এক বিশাল বয়ান দিবেন। আমরা দুজন বললাম- বল, অবশ্যই রাখব। তখন তিনি বললেন- জীবনে এমন কোন কথা কাউকে বলবে না, হোক সে তোমার বস, কিম্বা সম পর্যায়ের কেউ কিম্বা তোমার অধিনস্ত কোন করমচারি, যে কথায় সে মনে আঘাত পায়। আমার শুধু এই টুকুই চাওয়া, বাকি জীবন তোমাদের, যা খুশি তাই কর। আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। খুশি মনে সম্মতি জানালাম...... তখন বুঝি নাই বাবা কি কঠিন উপদেশ দিয়েছেন! এখন মাঝে মাঝে মনে হয় বাবাকে বলি তোমার উপদেশ তুমি তুলে নাও, এই পৃথিবী অনেক কঠিন কিন্তু আর বলা হয়ে উঠে না। মাঝে মাঝে খুব রাগ হয়। তাঁর এই কথা রাখতে খুব কষ্ট হয়, মাঝে মাঝে নিজেকে মানুষ নয় বরং রাগ ক্ষোভহীন জড় পদার্থ মনে হয়। তাই মাঝে মাঝে কোন এক অবাধ্য সন্তানের মনে হয়- আসলেই বাবাদের সব কথা শুনতে নেই............

১ টি +১/-০