নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতীত যে কোন কবিতা, গল্প, ছড়া, ছবি পোস্ট করা হতে বিরত থাকবেন।
শাশুড়ির বাড়ি... এখন শুধুই হাহাকার
================================
স্মৃতিগুলো একদিন ধূসর রঙ হবে। স্মৃতির পাতা মলিন, পোকা খাওয়া একাংশ হবে। হয়তো মনে পড়বে না আজ এদিন গত পরশু অথবা গত ২৩ মে ২০১৯। ভুলে যাবো যে চিরতরে চলে যায় তাকেও। এ যে এক নিয়ম জীবনের। এর উর্ধ্বে তুমি আমি সে কেউ নয়। কিছু স্মৃতি লিখে রাখা সমীচীন মনে করছি। কারণ কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পথ আর আমার জানা নেই । ভবিষ্যতে হয়তো লেখাগুলো পড়ে স্মৃতিকে জাগ্রত করার প্রচেষ্টা করা যেতে পারে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে তাঁর গল্প কিছুটা হলেও শুনাতে পারবো।
তাঁর চার ছেলে চার মেয়ে, তাঁর তৃতীয় সন্তান আমার বর (বদের হাড্ডি), তা-সীন তা-মীমের বাপ (আস্ত বদ বেডা)। তিনি আমার শাশুড়ি হন। গত ২৩ মে ২০১৯ তারিখ রাত নয়টায় আল্লাহর প্রিয় হন। আমার বিয়ের কয়েকবছর শ্বশুর বেঁচেছিলেন। শাশুড়ি তখন গ্রামেই থাকতেন। শ্বশুর মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি আমার মানে আমাদের সাথেই ঢাকাতে ছিলেন। আমি নিজ চোখে দেখেছি তিনি কিভাবে আটটি ছেলেমেয়েকে মুঠোয় আঁকড়ে রেখেছিলেন। ভাঙ্গনের সুর ছিলো না তাঁর সংসারে। তিনি কাউকে আলাদা হতে দেননি। প্রায় ষোল বছর আমরা একসাথে ছিলাম। তিনি আমার সাথে থাকার ফলে আমার চাকুরী জীবন নিশ্চিন্তে কেটেছে। আমার দু' ছেলে তাঁর হাত ধরেই বড় হয়েছে।
তাঁর অবদান আমি কখনো ভুলবো না। আমার ছেলেরা যা পছন্দ করতো সেটাই তিনি রেঁধে খাওয়াতেন। তাঁর কোনো ক্লান্তি আমার চোখে পড়েনি। রান্না বান্না নিয়েই তাঁর জীবন কেটেছে। সংসারের হাল তিনি ছেড়ে দেননি। ছেড়েছেন মাত্র তিন বছর হলো। আমি আলসে মানুষ রান্না বান্না সংসারের দায়িত্ব আমি আর নেইনি। রাইন্ধা বাইড়া অফিস কইরা বাচ্চা পাইলা আমার পক্ষে কষ্টকর ছিলো। কারণ আমি আদুরে মাইয়া। মা বাবাও আদর কইরা মানুষ করছে । কাজের বেলা আমার বড় বোন ছোট বোনই করতো। আমার কথা বললে আম্মা কইতো আরে দেখস না কেমন রোগা পাতলা গাঁয়ে শক্তি আছেনি যে কাম করতো। আমি ঠিক তখনো বাঁইচা যাইতাম।
আমার শাশুড়ি তাদের গ্রামের বাড়িতে গেলেও অন্য বউরা রান্না বান্না কাজ কাম করতো তিনি আমাকে দিয়ে করাতেন না। সবাইকে বলতেন তা-সীনের মা এসব পারবে না, তোমরাই করো, ব্যস কাজ থেকে বেঁচে যেতাম। প্রতিবছর আমরা গ্রামের বাড়িতে যেতাম । আমি টো টো করে ঘুরে বেড়াতাম ক্যামেরা হাতে নিয়ে। নদীর পাড়ে যেখানে ইচ্ছে সেখানে। যেখানে অন্য বউরা বাড়ি থেকে বের হতোই না। আম্মাকে বললেই হতো আম্মা এই জিনিস খেতে মন চায়। ব্যস তিনি অন্য বউদের দিয়ে রান্না করাতেন। শাশুড়ি আমার বরের মাঝেই বেশী ভরসা খুঁজে পেতেন। তাই বড় ভাই থাকতেও তিনি আমাদের কাছেই থাকতেন। এতে লাভবান আমরাই হয়েছিলাম। ঘরের একজন মুরুব্বী মাথায় শান্তির ছাতা। অবশ্য দেবর আর দেবরের বউ বাচ্চা আমার সাথ্ থাকে । মানে যৌথ ফ্যামিলি আমরা। বাচ্চাদের রেখে আসা আমার জন্য নিশ্চিন্ত প্রহর অফিস। শাশুড়ি যখন রান্না ছেড়ে দিলেন তখন প্রায় বছর খানেক আমি সকালে রান্তা করতাম। অবশ্য সব সময় একজন হেল্পার আমাদের বাসায় থাকেই। যার কারণে রান্না বান্নায় তেমন কষ্ট হয় না বা হচ্ছে না। পরে রান্নার দায়িত্ব দেবরের বউয়ের হাতে গিয়ে পড়লো এখন পর্যন্ত দেবরের বউ রান্না করতেছে। শাশুড়ি বলে দিতেন কী দিয়ে কী রান্না হবে, এতে আমাদের কোনো চিন্তা থাকতো না। কারণ তার ছেলেরা তাঁদের মায়ের পছন্দ করা খারারের মেন্যু দেখে আমাদেরকে উচ্চবাচ্য বলার সুযোগ পেতো না।
দুই বছর আগে দশ রমজানের রাতে শাশুড়ি অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ক্রিটিনাইন একটু বাড়তির দিকে। রক্তশূন্যতা আর হাই প্রেসার। ব্যস তার কষ্টে দিনগুলো শুরু। দেখেছি তার পড়ে যাওয়ার দৃশ্য মানে বিছানায় পড়ার দৃশ্য। কষ্টের দিনগুলো তাঁর পাশেই ছিলাম । তাই কষ্টগুলো বড্ড বেশী উপলব্ধি করি আর তাঁর মাঝেই আমি আমাকে দেখতে পাই। তাঁকে দেখে বারবার বলি জীবন কিছুই নয়, জীবন কিছুই না। তাঁর সাথে আমার অমিলও বেশী ছিলো কারণ উনারা ময়মনসিংহ আর আমি একলা সিলেট মানে হবিগঞ্জের। কস্ট হতো খাওয়া দাওয়ায়, তাদের কালচারের সাথের আমার কালচার কখনো মিলতো না। সবাই মিলে সিলেটকে পঁচাতো কেবল আমি কান্না করতাম। তারপরও আমি কখনো কারো সাথে মনোমালিণ্যের দিকে যাই নি। ভেবেছি সবাই মিলেমেশ থাকাটাই অনেক আনন্দের ব্যাপার। আমার অনেক কিছুই উনার হয়তো পছন্দ ছিলো না আমারও উনার অনেক কিছু পছন্দের ছিলো না তাতে কী তারপরও আমরা একসাথে এক ছাদের নিচে প্রায় ষোল বছর কাটিয়ে দিয়েছে। অবশ্যই ভালোবাসার বীজ বুকে রোপন করা ছিলো। আমার ছেলেরা না খেলে উনি খেতেন না। না খাওয়া পর্যন্ত অনেক জ্বালাতে সবাইকে। সবাই বিরক্ত হতো সেদিকে তিনি ভ্রুপেক্ষ করতেন না বলেই যেতেন তা-সীন খায়নি আজ, আমি রেগে বলতাম আম্মা তা-সীন না খাইলে ক্যামনে খাওয়াইতাম আপনিই কন। তা-সীনও না খেয়েও বলতো দাদু খেয়েছি তুমি চিন্তা করো না। আমরা কেউ বাসায় একটু দেরী করে ফিরলেই তিনি চিন্তা করতেন আর দেবরের বউকে ফোন দিতে বলতেন। দরজার দিকে মুখ করে বিছানায় শুয়ে তাকিয়ে থাকতেন কখন আমরা সবাই বাসায় ফিরবো। আরও কত শত স্মৃতি জড়িত শাশুড়ির সাথে। আবারও হয়তো লিখতে বসবো।
সেদিন বৃহস্পতিবার সারাদিনই তিনি একটু বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অফিস থেকে এক ফাঁকে দেখে এসেছি। আবার বিকেলে শরীর খারাপ, সেদিন তিনি সারাদিনই কালেমা পড়েছেন। প্রায় দুই তিন মাস যাবত তাকাননি। সেদিন বড় চোখে তাকিয়ে সবাইকে দেখেছেন। আমরা ইফতার করে তার মাথার কাছে বসে সূরা ইয়াসিন পড়েছি। তা-সীনও সূরা ইয়াসীন পড়েছে। পড়া শেষে আমি তাঁর মাথার কাছে বসতেই তিনি আমার দিকে মাথা নিয়ে আসলেন ঘুরিয়ে যেনো আমার কোলেই। আমি মাথায় বিলি কেটে দিতেছি আর দিতেছি দেখলাম যেনো একটু আরাম পাচ্ছেন কারণ প্রচুর শ্বাসকষ্ট আর হাই প্রেসার তখনো। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ঘুমিয়ে পড়লেন। আমি উঠে গেলাম, কিছুক্ষণ পর এসে দেখি জেগেছেন আমার মাথায় বিলি কেটে দিলাম আবারও ঘুমালেন। তারাবীর নামাজ পড়তে গেলাম ভাবলাম নামাজ পড়ে এসে বসবো তাঁর কাছে। নামাজ কিছু বাকী থাকতেই তা-মীম আমাকে ডাকছে মা আসো দাদুর বেশী শরীর খারাপ। কী নিরব শুয়ে আছেন, সবাই কালেমা পড়তেছি জোরে জোরে, আমি পায়ের তলা মালিশ করে দিচ্ছি আমার বর হাতের নাড়ী ধরে আছে বাসার সবাই তাকে ঘিরে আছি। মুহুর্তেবই দপ করে তাঁর শ্বাসকষ্ট ভালো হয়ে গেলো, স্বাভাবিক নি:শ্বাস, একটু একটু চোখ বন্ধ, পশ্চিমে চোখ ঘুরিয়ে নিতেই দেখলাম মুখে ফেনা ব্যস তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এত কাছ থেকে মৃত্যু এই প্রথম আমি দেখেছি। ভাবতেই পারি না এত মানুষের মাঝখান থেকে কেবল উনিই চলে গেলেন। মাথায় হাত দিলাম কপালে হাত দিলাম হাতে স্পর্শ করলাম ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে শুরু করলো। জীবন কিছুই নয়, জীবন এক ঝরা পাতা। বিত্ত বৈভব অহংকার তবে কেনো মানুষ করে। কেনো এতো চাহিদা এত হাহাকার এত অপূর্ণতা মানুষের মাঝে । কেনো মানুষ হিংস্র হয় কেনো মানুষ খুনী হয়। আর ভাবতেই পারছি না। অনেক বলার ছিলো অন্যদিন হয়তো বলে ফেলবো নির্দ্বিধায়।
শাশুড়িকে দেখে দেখে তাঁকে নিয়ে অনেক লেখাই লিখে ফেলেছিলাম... তার মাঝে তিনটি লেখা এখানে থাকুক স্মৃতি হয়ে। প্লিজ বিরক্ত হবেন না এসব অলেখা পড়ে। আমি কবিও না লেখকও না কিন্তু।
১।
=কষ্ট লাঘব করে দাও প্রভু=
নি:শ্বাসের আসা যাওয়ায় বিশ্বাস খুঁজি আমরা কয়জন
কখনো তাকিয়ে থাকি পায়ের দিকে কখনো চোখের পাতায়,
বুকের খাঁচায় উনি পুষে রেখেছেন এক ঝগড়াটে পাখি
দিনভর খাউমাউ জুড়ে দিয়ে উনাকে পাগল করে রাখে;
উনি নি:শ্বাস খুঁজে পান না নি:শ্বাস ছেড়ে।
কী এক বিভৎস মুহুর্তগুলো অশীতিপর মানুষটির,
মুখে বোল নেই, চোখজুড়ে মাকড়শারা বেঁধেছে বাসা
কী আকূতি বেঁচে থাকার, একটু স্বস্তির নি:শ্বাস নেয়ার
আহা রে তা আর হয়ে উঠে না; ক্রমেই বাড়ে তার যন্ত্রণা।
ক্যানোলার ঘা হাতে, নীলাভ গায়ের চামড়া,
একটু আঁচড়েই ক্ষয়ে যায় চামড়া, মাংসগুলো আছে ঝুলে,
যতনে গড়া দেহে তার চিহ্নভিন্ন সুইয়ের গুতা;
দীর্ঘশ্বাসগুলো যেনো থেমে সেই কবে,
এখানে এই দেহে কেবল অপেক্ষা, বেঁচে থাকা অথবা
একেবারে বেলাশেষের খেয়ার পা রাখার।
সহসা কেঁপে উঠে আমার বুক, সহসা কেঁপে যায় তার
নাতি নাতনি আর তার আত্মজদের কলিজা,
কারো কেঁপে উঠে চোখ, ভিজে যায় পাতা.......
কানের কাছে কেবল আল্লাহ্ আল্লাহ্ আল্লাহ রব,
কেউ সুরা ইয়াসিন কেউ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্........
আমি কেবল তার যন্ত্রণা লাঘবের প্রার্থনা করি বার বার।
ক্ষমা করার মালিক তো তিনি,
তার বান্দার কষ্ট তিনি সইবেন কাহাতক,
তিনিই মুক্ত করবেন তিনিই কষ্ট দিবেন তিনিই সব জানেন
তিনিই ভালো বুঝেন, তাঁর উপরে আর কেহ নাই কিছু বলার
কিছুর জানার নেই আর মাবুদ আমাদের; তুমি রহিমু রহমান
তুমি দয়াশীল তুমি মেহেরবান, তোমার বান্দার দেখভাল
কেবল তোমার হাতে, আমরা কেবল প্রার্থনায় হই নত
তুমিই ভালো জানো তোমার বান্দার হাল তুমি করবে কী।
২। ©কাজী ফাতেমা ছবি
=কষ্টের পাহাড় জমা বুকে
ধৈর্য্যের ওপারে সুখ আছে, তা কেমন করে, কোথায় সে সুখ?
নির্ভেজাল জীবন, কেবল সন্তান মানুষ করা আর
সংসার সংসার করে সময় কাটানো মানুষটি আজ বিছানায় শুয়ে,
তার যন্ত্রণার প্রতিটি শব্দ বুকে যেনো হাম্বলের বাড়ি।
আমি অপলক তাকিয়ে কেবল তার মাঝে আমাকে দেখি,
হে পরোয়ার দিগার, সুস্থ আমায় নিয়ে যেয়ো..
এমন বিভৎস, দু:সহ কষ্ট দিয়ো না যেনো শেষে,
বুক আমার ভারী হয়, হিমালয় পাহাড় চাপা।
কত যতনে গড়া সংসার, কত সুন্দর বিছানা পরিপাটি,
রান্নায় মন দেয় নারী, কে কী খাবে, স্বাদ কেমন হবে
ভাবনা আকাশ পাতাল নিয়ে কেবল অন্যের সুখ সুবিধা
খুঁজে নেয়া মানুষটি আজ দুনিয়ায় বেখেয়ালী মানুষ অন্য।
বুক উঠানামা ক্রমান্বয়ে, নি:শ্বাসের ব্যাঘাত প্রতিনিয়ত তার
ফুসফুস পাচ্ছে না পর্যাপ্ত অক্সিজেন, চোখগুলো রক্তবর্ণ
যেনো এখনি গলে যাবে, আমি আর তাকাতে পারি না,
চোখের কোণ বেয়ে গড়িয়ে যায় ক'ফোটা জল।
পরনির্ভরশীলতার এক জীবন, বিতিকিচ্ছিরি এক মুহুর্ত
কেউ কাৎ করালে তিনি কাৎ, নয়তো সটান শুয়ে যন্ত্রণায়;
বাক শক্তি সে কবেই চলে গেছে, ডাকলে না শুনার ভান
দু:খে ভেতর ফেটে যায় আমার, একি! দুরাবস্থা বহাল আজ।
কী এক জীবন, মোহ মায়া আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকি
যতই আগাচ্ছি, চাকচিক্যতার আড়ালে খুঁজি সুখ,
মুহুর্তেই মনে এসব ভ্রম, সবই ভ্রম, যেতে হবে তাঁর ডাকে
যেদিন চলে আসে ডাক, চলে যাবো নিশ্চুপ আমি,
ফরিয়াদ তব তাঁর কাছে আমার, নিয়ে যেয়ো সময় হলে
আমার ভার দিয়ো না প্রভু অন্য কারো হাতে,
কেউ যেনো না বলে তাকে পরিচর্যা বড় কষ্ট ।
৩। ©কাজী ফাতেমা ছবি
#শ্বাশুরির বিদায় বেলা
ভিতরবাড়িতে হাহাকার জমা যেনো লক্ষ...
তাঁর রুমের সামনে দাঁড়ালেই কেঁপে উঠে বক্ষ,
বাঁধ মানে দু'চোখ
আরেকবার দেখার স্বাধ, মন উন্মুখ।
বিছানাখান তাঁর পড়ে আছে খালি
আহা জীবন তুই যেনো চোরাবালি!
সহসা পা পড়ে যায় ফাঁদে, আর ফেরা যায় না
জীবন মাঝি হাতে নিয়ে শক্ত, বৈঠা আর বায় না,
শ্বাসের উঠানামা
আহা জীবন সারেগামা....
সুর তুলে বুকে, বাজে বেঁচে থাকার ঝংকার
আযরাইল অদৃশ্য, কখন করে প্রাণ সংহার।
আমি আমরা বয়সীর চারপাশে আছি বসে
উনি বিড়বিড় করে জীবন অঙ্ক যান কষে,
কখনো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ,
রহম করো রহম করো ইয়া আল্লাহ্ ইয়া আল্লাহ্
কখনো সূরা ইয়াসিন,
তখনো বুকে উনার বাজে নিঃশ্বাসের বীন।
দোয়া দরুদ মুহুর্মুহু বেজে উঠে ঠোঁটে ঠোঁটে,
কখন জানি উনার মুখেও বোল যায় ফুটে,
কালেমা ঠোঁটে নিয়ে উনি বিছানায় সটান শুয়ে
ঈমাণের ভিত এতটা মজবুত, আল্লাহ রহিমুর রহমান
হে মাবুদ তোমার দয়া তোমার রহমত
আমাদের উপর বহমান।
এতটি প্রাণী তাঁর আপনজন, চারিদিক ঘিরে
শেষ বেলা তাঁর চোখ খুলে যায়,
বড় বড় চোখ আমাদের দেখেছিলো ফিরে ফিরে,
তাঁর হাত পা বুক ছুঁয়ে আছি আমরা, হয়রান ডেকে ডেকে
হুট করে থেমে যায় নিঃশ্বাস,
তিনি চিরতরে চলে গেলেন আমাদের রেখে।
পরিবারের মাথার ছাতা, দমকা হাওয়ায় গেলো উড়ে
উনাকে বলেছি আমরাও একই পথের যাত্রী
আসছি আম্মা....সে পথ নয় আর দূরে,
দুঃখী চোখে কেবল জল আর প্রার্থনা...
লাঘব করে দিয়ো তাঁর কষ্ট যন্ত্রণা
মাবুদ তুমি জান্নাত করো নসীব, ভালো রেখো তাঁকে
উনার অপরাধ করো মার্জনা,
আর তাঁর সন্তানদের শোক সইবার
ক্ষমতা দিয়ো তাদের হৃদয় বাঁকে।
২৮ শে মে, ২০১৯ দুপুর ২:১২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমিন। আমরাও এই প্রার্থনাই করি বুবু । আল্লাহ উনাকে জান্নাত দান করুন ।
২| ২৮ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৩:০৫
ভুয়া মফিজ বলেছেন: চোখের সামনে কাউকে মারা যেতে দেখিনি, কখনও দেখতেও চাই না। আল্লাহ যেন এই অভিজ্ঞতা না দেয়।
জীবন ঝরা পাতার মতো......খুবই সত্য কথা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এটা খুবই কম মানুষ-ই সত্যিকারভাবে অনুধাবন করে। যদি করতো তাহলে এই যে ক্ষমতার লোভ, কোটি কোটি টাকার লোভ আর দূর্ণীতি কখনও করতো না!
ওপারে উনি জান্নাতবাসী হোন, এই দোয়াই করি।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ৯:৫১
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: নিজের চোখে মৃত্যু দেখা এ এক অন্যরকম অনুভূতি। ছোটবেলা এসব বড় ভয় পেতাম। একটুতেই অজ্ঞান হয়ে যেতাম । বিয়ের পর থেকে কেনো জানি অনেক মায়াদয়া কমে গেছে ভিতরবাড়ির। তবে সব সময় আল্লাহর নাম জপ করি মনে মনে তাই হয়তো ভয়টা আল্লাহ তাআলা কাটিয়ে দিয়েছেন।
মানুষ মৃত্যুকে ভয় পায় না,,,,, মৃত্যু মানুষটার জন্য কাঁদে অথচ নামাজ ঠিকই কাযা করেছে, তছবি অথবা কোরআন পর্যন্ত পড়েনি। আমি নিজে দেখেছি...। জোরে কান্নাকাটির চেয়ে শবের কাছে বসে কোরআন পড়া অনেক বেটার । কতজনকে বুঝালাম কাদলে লাশের আযাব হয়। এখন তারাই তার আপন যারা আল্লাহর কাছে তার হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। কে বুঝে এসব
জাজাকাল্লাহ খাইরান ভাইয়া । ভালো থাকুন
৩| ২৮ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৪:০০
ওমেরা বলেছেন: খুব ভালো লাগল আপু আপনার শাশুরী কথন। আল্লাহ উনাকে জান্নাত নসীব করুন।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:২৭
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জাজাকিল্লাহ খাইরান আপি ভালো থাকুন সবাইকে নিয়ে।
আমীন....
৪| ২৮ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৫:১৯
মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: আল্লাহ আপনার শাশুড়িকে জান্নাত নসিব করুুক আমিন।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:২৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমিন
জাজাকাল্লাহ খাইরান
ভালো থাকুন অনেক অনেক
৫| ২৮ শে মে, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনাদের পরিবার সময়ের সাথে শোক কাটিয়ে উঠুক ।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৩৩
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমিন।
ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকুন
৬| ২৮ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: আপনার লেখা ই প্রমাণ করে উনার প্রতি আপনার ভালোবাসা।
আল্লাহ উনাকে বেহেশত নসীব করুন।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৩৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জাজাকিল্লাহ আপি ভালো থাকুন
আমিন
৭| ২৮ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি ভাগ্যবান, আপনার শ্বাশুড়ি আপনাকে পছন্দ করতেন।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৩৬
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ ।
ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো থাকুন অনেক
৮| ২৮ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৩০
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: আল্লা আপনার শাশুরীকে জান্নাতবাসী করুন ।
শাশুরীর ভালবাসা পাওয়া সহজ কর্ম নয়
যদিওবা পাওয়া সহজ হয় তাবে তা
ধরে রাখা বেশ কঠীনই হয় ।
আপনি ভাগ্যমান তা ধরে রাখতে
পেরেছেন সারা জীবন ।
চারদিকে বদ রেখে সুখেই আছেন
সেও এক মহা বিস্ময় ,যাহোক
সকলের তরে মাহে রমজানের
শুভেচ্ছা রইল ।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৩৭
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমিন। আসলেই ঠিক । ভালোবাসা পাওয়া সহজ না আবার পেতেও কষ্ট করতে হয়। কেউ সহজেই পায় আবার হারিয়ে ফেলে আবার কেউ পায় না অবহেলা ছাড়া।
চারিদিকে বদই বদ ...... বদরে গুল্লি মাইরা আলহামদুলিল্লাহ ভালো থাকি।
ভালো থাকুন ভাইয়া
৯| ২৮ শে মে, ২০১৯ রাত ১১:৪৫
মুক্তা নীল বলেছেন:
আপনার আম্মা (শাশুড়ি) কে আল্লাহ বেহেশত নসিব করুন। আপনাদের কেউ সবুর করার তৌফিক দান করুন আল্লাহ।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৩৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমিন । জাজাকিল্লাহ খাইরান আপি
ভালো থাকুন অনেক অনেক
সুন্দর থাকুন
১০| ২৯ শে মে, ২০১৯ রাত ১:৫২
ল বলেছেন: আহা ! জীবন
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৩৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এইতো জীবন... হুটহাট চলে যাওয়া পৃথিবী ছেড়ে
ধন্যবাদ ভাইয়া
১১| ২৯ শে মে, ২০১৯ ভোর ৪:৩৬
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: প্রিয়জন হারানো ব্যাথা অনেক কষ্টের কিন্তু সৃষ্টির এই রিতী অস্বীকার করার মতো নয়। আপনার শ্বাশুরীকে আল্লাহ বেহেস্ত দান করুন। আপনাকে হায়াত দান করুন।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৩৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এবং সান্ত্বনা দেয়ার ভাষাও নেই এই বিষয়ে। আমিন।
জাজাকাল্লাহ খাইরান
ভালো থাকুন অনেক অনেক
১২| ২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ৭:৪৩
আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: আল্লাহ আপনার শাশুড়ীকে বেহেশত নসিব করুন।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৩৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমিন। জাজাকাল্লাহ খাইরান
ভালো থাকুন অনেক অনেক
১৩| ২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ৮:৫৫
জুন বলেছেন: কাজী ফাতেমা ছবি আপনার লেখায় আমার শাশুড়ীকে দেখতে পেলাম। তবে উনার মৃত্যু হয়েছিল আইসিইউতে। মুখ দিয়ে নাক দিয়ে গলায় ছিদ্র করে একাধিক নল নিয়ে। আমার স্বামী তার মায়ের আইসিইউতে রেখে এই করুন মৃত্যু মানতেই পারেনি। তার একই কথা "আম্মা জানি তাকে কি বলতে চেয়েছিল চোখ বড় বড় করে,বলতে পারেনি"।
আপনার শাশুড়ী মাকে আল্লাহ বেহেশত নসীব করুন। কবিতাগুলো ভালো লাগলো।
+
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৪১
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমার শাশুড়িও আইসিইউতে ছিলেন.... ৭/৮ দিন তারপর বেডে। প্রায় একমাস হাসপাতাল ছিলেন। মৃত্যুর তিনদিন আগে বাসায় নিয়ে আসি আমরা। আর আমাদের চোখের সামনেই তিনি মারা যান
আল্লাহ আপনার শাশুড়িকেও বেহেশত নসীব করুন। আমিন।
জাজাকিল্লাহ খাইরান আপি
১৪| ২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:১৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় আপু,
লেখাটা একটু অন্যভাবেই ভালো লেগেছে এই জন্য যে আজকের দিনের শাশুড়ি বউয়ের সম্পর্ক যেখানে অহি-নকুলের সম্পর্কে পর্যবসিত, সেখানে আপনার লেখাটির এক্কেবারে ব্যতিক্রমধর্মী মর্মস্পর্শী লাগলো। মৃত্যু আমাদের হবেই কেউ আগে কেউবা পরে। কিন্তু এই সুখানুভূতি পোস্টটির গুরুত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি করল।
আপনার শাশুড়ির মাগফিরাত কামনা করি।
পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে কাটান কামনা করি।
২৯ শে মে, ২০১৯ সকাল ১০:৪৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: বিয়ের পর অনেকেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না। যার কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক ছেলেই দেখছি বউয়ের কথায় উঠে বসে । আমি এদেরকে ঘৃণা করি। অনেকে মাকে নিজেদের কাছে রাখে না বউয়ের কারণে। ভালোবাসা পেতে হলে অনেক কিছু মেনে নিতে হয়। সহ্য করতে হয়। মেয়েরা সহ্য না করলে পরিবারে অশান্তি।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো থাকুন অনেক অনেক।
আমিন।
১৫| ২৯ শে মে, ২০১৯ রাত ৯:০৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: কাজী ফাতেমা ছবি,
স্মৃতিরা বড্ড কষ্ট জাগায়।
তবে স্মৃতিরা হারায় না, শুধু ...........
যে যায় সে যায় –
তার স্মৃতি মাটির গহন অবধি
নেমে যায়, নেমে যায় আরো গভীরে।
হৃদয়ের নিটোল দুয়ার খুলে অকস্মাৎ
দেখি তার মুখ
বুকের পকেটে নিভাজ রুমালের মতো অমলিন।
আপনার এই কষ্টের স্মৃতিকাতরতায় সমব্যথী। আপনার শাশুড়ি-আম্মার রূহের মাগফেরাত কামনায়!
৩০ শে মে, ২০১৯ দুপুর ২:০৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: লেখাটা খুবই সুন্দর ভাইয়া। এমন লিখতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করতাম
আমিন
জাজাকাল্লাহ খাইরান ভালো থাকুন অনেক অনেক
১৬| ৩০ শে মে, ২০১৯ ভোর ৬:৩৪
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক। (আমীন)
৩০ শে মে, ২০১৯ দুপুর ২:১০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমিন।
আল্লাহ আপনাকে নেক হায়াত দান করুন
জাজাকাল্লাহ খাইরান ভালো থাকুন
১৭| ০২ রা জুন, ২০১৯ বিকাল ৫:৪২
অক্পটে বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। আমার মা এমনি করেই ২০১১ সালে রোজার মধ্যেই আমাদের ছেড়ে গেছিলেন।
জীবনের ওপারে তারা ভালো থাকুন।
১১ ই জুন, ২০১৯ বিকাল ৫:২৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আল্লাহ উনাদের বেহেশত নসীব করুন। আমিন
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে মে, ২০১৯ দুপুর ২:১০
রাবেয়া রাহীম বলেছেন: পবিত্র মাসে মহান আল্লাহ তোমার শবাশুরী কে জাননাতুল ফেরদৌস দান করুন আমিন।