নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের পোস্টের উত্তর দিতে দেরী হয় সেজন্য সরি।

কাজী ফাতেমা ছবি

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতীত যে কোন কবিতা, গল্প, ছড়া, ছবি পোস্ট করা হতে বিরত থাকবেন।

কাজী ফাতেমা ছবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

=মেঘের কাছে রোদ্দুরের চিঠি-১১ (চল হারিয়ে যাই)=

০৯ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:১৪



#মেঘের_কাছে_রোদ্দুরের_চিঠি_১১
#চলো_হারিয়ে_যাই

হ্যালো মেঘ হাউ আর ইউ?
আ'ম ফাইন! আশা ও বিশ্বাস ভালো আছ। জগতের সকল প্রাণী সুখে থাকুক, এই কামনাই করছি। চিঠির উত্তর পেয়েছি, হুম হাতে এসেছে আলহামদুলিল্লাহ।

যন্ত্রের শহরে থাকতে থাকতে যন্ত্র হয়ে যাচ্ছি যেনো। অত্যধিক ব্যস্ততা আর লেখালেখি করতে গিয়ে রেস্ট পাচ্ছি না। আমার না খুব ঘুমাতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু ঘুমাতে পারছি না। আমার বেড়াতে ইচ্ছে করতেছে কিন্তু বেড়াতে পারছি না। আমার না পুকুরে সাঁতার কাটতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সাঁতার কাটতে পারছি না! আমার না আমগাছের ডালে গরুর শক্ত কাছি ঝুলিয়ে দোলনায় চড়তে ইচ্ছে করছে তা করতে পারছি না। আমার না মেঠোপথে নগ্ন পায়ে হাঁটতে ইচ্ছে করছে কিন্তু তাও তো পারছি না। আমার খুব ইচ্ছে করছে সবুজ ধান ক্ষেতের আল ধরে হাঁটতে। কাদায় মাখামাখি হয়ে পুকুর ঘাটে পা ডুবিয়ে বসতে ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু তাও করতে পারছি না।

মেঘ, আমাদের গ্রামের বাড়ি অনেক সুন্দর। সবুজে ঘেরা গ্রাম...... বাড়িতে যেতে ইচ্ছে করছে খুব। পুকুর পাড়ে তাল খেজুর গাছের ছায়ায় বসে বিকেলের গোধূলীর আভায় পাখির নীড়ে ফেরা দেখতে ইচ্ছে করছে।

পুকুরে ডোবায় বর্শি দিয়ে মাছ ধরতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কিছুই তো পারছি না। যন্ত্র মানবরা এক সময় সেই মুগ্ধতাগুলো হারিয়ে ফেলে তাই না! আমিও তাই যেনো।বছরে একবার যাই তাও তিন চার দিনের জন্য।ছোট থাকাকালীন সময়গুলোই আসলে ভালো ছিলো তাই না! পিছু টান ছিলো না। শুধু মুগ্ধতা আর ঝাক্কাস আনন্দে দিন কাটানো..... । এই গরমে পুকুরে সাঁতার কাটতে পারলে কি মজাই না হত!

জলে ভরা পুকুরে গাছের ছায়া পড়ে
স্বচ্ছ জলের আয়নায় নীল আকাশটা নড়ে!

হঠাৎ জলে শব্দ, ঝুপ করে পড়ল তাল
ভয়ের চোটে মারলাম জোড়ে এক ফাল!

মনে পড়ে খুবএখানে এবেলায়
ব্যস্ততায় বিতৃষ্ণায় কেটে যায় রে বেলা।

অফিস বাচ্চা সংসার স্কুল পড়াশুনা সব মিলিয়ে নিজেকে টাইম দেয়া বড় দূরূপ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবন এত যন্ত্রণার ক্যারে বুঝি না বাপু। নিজের মা বাবার কাছে থাকতেও যেনো সময়রে টেক্স দেয়া লাগে। সময় মেপে চলা সে কি করে সম্ভব শুনি। ভাল্লাগে না আর।। কত কিছু দেখার এখনো বাকি। কিছুই ত দেখলাম না ঘর হইতে বাইরে পা ফেলিয়া। আচ্ছা তুমি পারবে না আমাকে দুনিয়াটা ঘুরে দেখাতে। একা তো ঘুরতে পারব না তাই না। পাহাড় নদী ঝর্ণা, সমুদ্র এসব কিছুই দেখা হয় নি। নৈসর্গিক সৌন্দর্য এখনো উপভোগ করিনি। প্লিজ তুমি আমায় দেখাবে।

ইচ্ছে করছে ছুটে যেতে
আমার সোনার গাঁয়ে
বসতে ইচ্ছে বিকেল বেলা
বটবৃক্ষের ছায়ে।

ইচ্ছে করছে পুকুর ঘাটে
পা ডুবিয়ে বসি
পিড়ির দোলনায় দুলতে ইচ্ছে
গাছে বেঁধে রশি।

ইচ্ছে করছে পুকুর পাড়ে
গোধূলিয়া দেখি
এই শহর যে যন্ত্রের শহর
লাগে স'বি মেকি!

ইচ্ছে করছে বর্শি দিয়ে
মৎস্য শিকার করি
পুটি টাকি টেংড়া মাছে
খলই আমার ভরি।

ইচ্ছে করতে ক্ষেতের আলে
নগ্ন পায়ে হাঁটি
পায়ের তলায় স্পর্শ নিতে
ভেজা কাদা মাটি।

এই, যাবে নাকি আমাদের বড় গাঁয়ে। তুমি জানো কি মেঘ আমাদের থানাতে সতেরোটি চা বাগান আছে পাহাড় আছে, রাবার বাগান আছে, অভয়ারণ্য আছে আরো কত কিছু দেখার আছে। দেখবে নাকি প্রকৃতির মনোরম পরিবেশ।

কিভাবে সাজিয়ে দিয়েছেন বিধাতা এই ধরার প্রকৃতিকে। তুমি দেখলে সেখান থেকে আসতেই চাইবে না। এত সুন্দর সবুজ প্রকৃতি তো সিলেটেই আছে বেশী । আচ্ছা তোমার এখানে কি সবুজ আছে, চা বাগান আছে, নদী আছে? থাকতেও পারে । আমি তো আর তোমার বাড়ির ঠিকানা জানিনা ।

অদৃশ্য মেঘের ঠিকানা জানিনা । কি করে বলব। তুমি বলতে পারো উত্তরে। তবে জানো তো আমাদের এখানে সমুদ্র নেই। আমি সমুদ্র দেখিনি। আচ্ছা তোমাদের এখানে কি সমুদ্র আছে। আমাকে দেখাবে। শামুক ঝিনুক কুঁড়াবো আঁচল ভরে আামার খুব ইচ্ছে। আর সমুদ্রের নীল জলের পাশে বালিতে বসে সূর্যাস্ত দেখব যদি তুমি সাথে থাকো।

হাঁপিয়ে উঠেছি এই যন্ত্রের শহরে। বাহিরে বের হয়ে যে একটু শান্তি পাবো কোথাও গিয়ে তাও তো হয় না। জ্যামে পড়ে মূল্যবান সময়টুকু গচ্ছা দিতে হয় অবশেষে। এই শহরে যেমন মানুষ বেড়েছে তেমনি বেড়েছে যন্ত্র দানবের মতো গাড়ি।

বড় লোকদের একজনের জন্য একটা গাড়ী বরাদ্দ। তাদের জন্য আমরা সাধারণ মানুষের কষ্ট ভোগ করি। তুমিই বলো কেমন লাগে, বের হই শান্তির জন্য কিন্তু দুনিয়ার ক্লান্তি আর অশান্তি নিয়েই ফিরতে হয় ঘরে। তাহলে সে যাওয়ায় কি আর মনে আনন্দ হলো বা থাকে। তার চেয়ে আমার গাঁয়ে যেতেই ইচ্ছে করছে। আর আম্মার হাতের রান্না খেতে ইচ্ছে করছে।

দেখো কেমন লাগে এই শহরে থেকে এখনো শরতের আকাশটাই ভালোভাবে দেখা হয়ে উঠেনি। আর কাশফুল সেতো গুঁড়ে বালি। অনেক বছর হলো কাশফুলের বাগানে যাওয়া হয়নি। ছোঁয়া হয়নি কাশফুলের নরম পাপড়ি। আর শিউলী তো এখানে ফুটেই না মনে হচ্ছে। আহারে মাতাল করা ঘ্রাণ ভুলে যেতে বসেছি যেনো। আর শহরে এসব কেউ খুঁজে না সে তুমিও জানো। কেউ সুন্দর খুঁজে না টাকা খুঁজে।

এই শহরের মানুষগুলো
যন্ত্রের মতো পাথর
নিজের মতো থাকে সবাই
দুঃখে হয় না কাতর।

ইটপাথরের রাস্তা ধরে
নিজের মতো হাঁটে
ব্যস্ত মানুষ নিজের মাঝে
নিজের কর্ম পাঠে।

ফুল খুঁজেনা এখানে কেউ
মুগ্ধ হয় না কিছুতে
মানুষগুলো ছুটছে কেবল
স্বার্থ কর্মের পিছুতে

টাকার পিছে দৌঁড়ায় মানুষ
এই আজব শহরে
ক্লান্ত বেলা কাটে সময়
বসে জ্যাম বহরে!

সময় গেলো জ্যামের পিছু
সুন্দর খুঁজবে কখন
বিরক্তিতে ক্লান্ত দেহ
নীড়ে ফিরে যখন।

আচ্ছা সে যাই হোক, তবুও বেঁচে থাকার জন্য, জীবিকার জন্য লড়াই চালিয়েই যেতে হয়, হবে। জীবন এমনি। এমনভাবেই আমাদের পথ চলতে হবে। কিন্তু আমার কথা হল, নিজের মনের শান্তির জন্য সময় বের করতে হবে, তোমার আমার সবার। তুমিও ত মহা বিজি মানুষ। কোথায় থাক, কেমন থাক কে জানে! যেখানেই থাক তবে ভালো থেকো আজ আসি-
অচেনা রোদ্দুর।

পুনশ্চঃ উত্তর দিয়ো। আরেকটা মজার উত্তরের অপেক্ষায় থাকলাম। নিজের প্রতি খেয়াল রেখো। সুন্দর আর নিরাপদে থেকো। ফি আমানিল্লাহ, শুভেচ্ছা রইলো।

(২১-৯-২০১৬)

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১০:১২

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: দেখি আপনার এই পোস্টের কল্যাণে বৃষ্টি নামে কি না।

১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৫২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: বৃুষ্টি তো আসলো না। কী গরম পড়ছে বাপরে

ধন্যবাদ ভালো থাকুন

২| ১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ১২:০৫

জটিল ভাই বলেছেন:
উত্তর কি এসেছিলো? বড্ড জানতে মন চাচ্ছে.....

১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৫৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আরে না এসব কাল্পনিক চিঠির উত্তর দেয় কে আর।

থ্যাংকিউ সো মাচ
ভালো থাকুন

৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ১০:৩৯

মিরোরডডল বলেছেন:



জীবন এত যন্ত্রণার ক্যারে বুঝি না বাপু।

যন্ত্রণার আড়ালে নিশ্চয়ই কিছু সুখ লুকানো আছে, তা নাহলে কবে পালাতে এসব ছেড়ে :)

আর আম্মার হাতের রান্না খেতে ইচ্ছে করছে।

কি মনে করিয়ে দিলে, এখনতো মায়ের হাতের রান্না খেতে ইচ্ছে করছে :(

মেঘের উত্তর জানার অপেক্ষায় থাকলাম ছবিপু।


১১ ই এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৯:৩২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: যন্ত্রণা আমারে ছাড়ে না আপু। আসলে মানুষ ১০০ ভাগ কিছুই পেতে পারে না। অসুখের মাঝে সুখ খোঁজা আর কী। মনের সাথে মন না মিললে সেখানে মেলাও বসে না। দিন রাইত কেবল দীর্ঘশ্বাস

থ্যাংকিউ সো মাচ। আমার আম্মা এখন আর রান্না করতে পারেন না। কীভাবে সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে আল্লাহ মা বাবাকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখুন।

থ্যাংকিউ সো মাচ। মেঘ তো উত্তর দেবে না। কারণ মেঘ বলতে কেউ নাই আপু

৪| ১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর।

১১ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৪০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এজন্য ধন্যবাদ । ভালো থাকুন

৫| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৪:২০

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার লেখা.... ++++

পড়তে পড়তে নিজের কত কিছু ইচ্ছে করছিলো...

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:০০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খইর। এতটুকুনই আমার প্রাপ্তি । আমার কলিগ বলছিল একদিন আপনার লেখা একজনও যদি বলে ভালো লেগেছে তবে এটাই আপনার স্বার্থকতা।

ভালো থাকুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.