নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতীত যে কোন কবিতা, গল্প, ছড়া, ছবি পোস্ট করা হতে বিরত থাকবেন।
টুকরো স্মৃতিগুলো
শৈশবের কত স্মৃতি আজও ভাবায়, কিছু সুখ আর কিছু দুঃখ স্মৃতি সবই হারালো সময়ের থাবায়। শৈশবের কিছু কথা কিছু গানে ছিল ভুলভাল উচ্চারণ, যৌবনে এসে শুদ্ধ করে করে করি স্মৃতিচারণ। এই যে সময়ের ঘুর্ণিপাকে ঘুরে ঘুরে আজ এখানে, এখানে কী মন চায় থাকি, ইচ্ছে চলে যাই শৈশবের টানে।
০১। তখন আমি ক্লাস টু অথবা থ্রিতে পড়ি। আমাদের ছিল তখন হারিকেন সন্ধ্যা। শীতল পাটি বিছিয়ে পড়াশোনার আসর বসতো। আধো ঘুম চোখে বইয়ের অক্ষর ঝাপসা, ইশার আযানের অপেক্ষায় বসে থাকতে হতো হারিকেনের আলোয়। সেদিনও আমরা ভাই বোনের হারিকেন নিয়ে পাটিতে বসে পড়াশোনা করার জন্য সবে বসেছিলাম। সন্ধ্যা তাইতো দরজাটা ছিল খোলা। আম্মা আর দাদী বিছানায় বসে পান খাচ্ছিলেন।
আমার আব্বা সেনাবাহিনীতে জব করতেন। তখন আব্বা ঢাকায়। আমরা ভাইবোন আর দাদী আর আম্মাই থাকতাম বাড়ীতে। আব্বা যেহেতু সেই যুগে চাকুরীজীবী । মানুষের ধারণা আমাদের সম্পর্কে একটু অন্যরকম ছিল মানে টাকা পয়সার অভাব নেই মনে করত।
সেদিন আমরা পড়তেছি জোরে জোরে। ঠিক সেই মুহূর্তে আট দশজন ব্যাটা লোক হইহই করে রাম দা হাতে ঘরে ঢুকে পড়লো। এখনো স্পষ্ট মনে আছে এক ডাকাত আম্মার ঘাড়ে রামদা ধরে বলে কেউ চিল্লাইবা না, চিল্লাইলে গলা কাইট্টা ফেলমু। আরেকজন ছিল দাদীর কাছে ইয়া লম্বা দাও হাতে। তখন বাকী ডাকাত'রা সব জিনিস তছনছ করা শুরু করলো। আম্মার গলার চেইনটা নিল। আম্মা একটা ডাইরীর ভিতর ১৫০০ টাকা রাখছিল বেটারা সেই টাকাটা নিয়ে নিল। আমরা হা করে তাকিয়ে আছি, ভয়ে গলা দিয়ে শব্দও বেরোয় না। ধারণাই ছিল না আমরা বাঁচবো কিনা, রাম দা দেখে গলা শুকিয়ে গেছে । (বড় দা কে কী বলে জানি না, আমরা রাম দা বলতাম)
আমরা যে ঘরে থাকতাম, সে ঘরটা আমার চাচাদের ঘরের থেকে একটু দূরে, একটু সুনসান জায়গা। তো যখন ডাকাতরা রুমে রুমে জিনিসপত্র উল্টা পাল্টা করতেছে ঠিক তখনই আমার এক ফুফাতো বোন দরজা খোলা পেয়ে ঢুকেই মামী বলে ডাক দিল। এক ডাকাত তাৎক্ষণিক ফুফাতো বোনের গলায় রাম দা ধরে বলে এই চুপ, তখন তার কানের দুল টেনে খুলে নিয়ে নিল। অবশ্য বোনের কানের দুলটা ছিল ইমিটেশনের। হাতে নিয়ে দেখলো এটা স্বর্ণের না। এ নিয়ে ডাকাতদের কথাবার্তার ফাঁকে ফুফাতো বোন এমন দৌঁড় দিল , ডাকাতরা তাকে ধরতে পারেনি। সে বের হয়েই চিৎকার অই মামুরে নিতাছে গা, মামুরে নিতাছেগা। এই চিৎকার শুনে বাড়ীর চাচা, চাচাতো ভাইয়েরা আমাদের ঘরে না এসে গ্রামের দিকে দৌঁড়ানি শুরু করলো আর ডাকাতরা গেল ভেগে। সবাই ভাবছে আব্বার উপরে বিপদ আসছে। কারণ আব্বার বাড়িতে আসার কথা ছিল সেদিন বৃহস্পতিবার। আব্বাকে কোথাও না পেয়ে তখন সবাই আমাদের ঘরে আসলো তখন দেখলো আসল কাহিনী কী। সবাই ফুফাতো বোন ধমক দিতে থাকলো, কারণ সে ডাকাতি হইতাছে না বলে বলেছিল মামুরে নিতাছে গা।
মধ্যরাতে আব্বা আসেন বাড়ীতে । পরের দিন থানায় কেস করা হলে পুলিশ এসেছিল। মাইগ্গো পুলিশ দেইখা আরও ভয় পাইছিলাম। ডাকাতদের হদিস পাওয়া গেছিল শেষে। গ্রামের পরিচিতজনই ছিল। কিন্তু মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ । সেদিনের ভয়ের মুহূর্তটি মনে হলে গায়ে আজও কাঁটা দিয়ে উঠে।
০২। অতীতে মানে আমার শৈশব কৈশোর বেলায় গ্রামে কেবল চুরিই হইতো। বাহিরে কিছুই রাখা যেত না। তাছাড়া মাটির ঘর কেটে ঘরে ঢুকে পড়তো চুরেরা। আমাদের ঘরে অসংখ্য বার চোরেরা হানা দিয়েছে। অনেক জিনিসপত্র চুরি হইছে। এত কাহিনী বললে আপনারা বিরক্ত হই যাইবেন।
একদিন আম্মা নানা বাড়ী গেলেন আমাদেরকে রেখে। ঘরে চাচাতো ভাইকে বলেছিলেন রাতে ঘুমাতে। তো মধ্যরাতে হঠাৎ আমাদের পালা কুকুরের হাউকাউ শুনে ঘুম ভেঙ্গে যায়। লাইট জ্বালিয়ে দরজার সামনে গেলাম, শুনলাম কুকুরটা সেখানেই ডাকছে। পূর্বের দরজা ছেড়ে পশ্চিমে আসছি ওমা কুকুর দেখি সেই দরজার কাছে ডাকছে । তার মানে চোর বুঝতে পেরেছে আমরা জেগেছি। তাই দরজা খুললেই তারা ঢুকে পড়বে। এমতাবস্থায় আরেক দরজার সামনে গিয়ে দেখি চাঁদনি রাতের আলো দেখা যাচ্ছে, ব্যাপার কী কেন আলো আসতেছে বাহির থেকে। কাছে গিয়ে দেখি দরজাটাকে ড্রিল মেশিন দিয়া ছিদ্র কইরা ঝাঁঝরা কইরা ফালাইছে। ঘর হতেই আমরা চিৎকার শুরু করলে চাচারা আর ভাইয়েরা ছুটে আসে আর চোরেরা ভেগে যায়। সেদিন বড় অঘটন ঘটে নাই আলহামদুলিল্লাহ। সেদিনও কেইস করেছিলাম আমরা পুলিশও আসে। তখন আর পুলিশরে ডরাই না। তাদেরকে ড্রয়িং রুমে বসাইয়া চাও খাওয়াছি। তখন হয়তো টেনে পড়ি। কিন্তু চোর কে, বের করতে পারেনি।
০৩। তখনকার দিনে ধান কাটার মৌসুমে ভাটি থেকে অনেক মহিলা পুরুষ স্বপরিবারে আমাদের এখানে চলে আসতো । আমাদের বাড়ীর প্রত্যেকেই পরিবারই এদেরকে রাখতেন ধান কাটার সাহায্যের জন্য। সেজন্য বাড়ির অপর পাশে তাদের জন্য ঘর বাঁধাই থাকতো।
একদিন মধ্যরাতে পাশের ঘরের হইচই শুনে আমরা দরজা খুলে বাহির হইছি। গিয়ে দেখি মাটির ঘরের দুয়ারের চৌকাটের নিচে ইয়া বড় গর্ত। সেই ঘরে ভাটির কাজের লোকেরা থাকতো। তাদের মধ্যে এক ষোড়শিও ছিল। উঠোনে দাঁড়িয়ে কাহিনী শুনছিলাম কী না কী হচ্ছিল সে সময়। শুনি কী ঘরে গর্ত করে জোয়ান মেয়েটাকে বের করার জন্য পায়ে ধরে চোর বেটারা টানাটানি করতেছিল। পরিবারের সদস্যসহ মেয়েটা প্রাণপণ নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করতেছিল আর চেঁচামেছি করতেছিল। বাড়ীর মানুষ জেগে যাওয়ায় অঘটনটা ঘটেনি। এসব শুনে আমি গভীর চিন্তা করতেছিলাম, যদি মেয়েটারে নিয়ে যেত ধরে মুখ বেঁধে. কী হতো, কী হতো ........ কী সর্বনাশই না হতো এই ভেবে ভেবে শেষে নিজেকে আবিষ্কার করি আম্মার কোলে মাথা, মাথায় পানি ঢালা হচ্ছে। কই থেকে আর সবাই চোক খুঁজে আমাকে নিয়ে সবার চিন্তুা কী না কী হলো আবার। আমি তখন নাকি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম। আল্লাহ মেয়েটার ইজ্জত বাঁচাইছিল সেদি আলহামদুলিল্লাহ।
০৪। তখন আমি ইন্টারে পড়ি। আর আব্বা তখন কুয়েতে থাকতেন। আমাদের ঘর ভেঙ্গে নতুন করে বানানোর কাজ চলতেছে। উঠোনে বাঁশের বেড়ার ঘর বানিয়ে আমরা থাকতাম। একদিন তিন বোন এক বিছানায় ঘুমিয়ে আছি। হঠাৎ দেখি কালো হাত আমাদের মাথার উপর হাতড়াচ্ছে খালি, সেখানেই ছিল দেয়াল ঘড়িটা। এমন চিল্লানি দিছি , চোর নাই হয়ে গেছে। নিতে পারে নাই।
০৫। একদিন ঠিকই চুরি হইছে স্বর্ণের জিনিসগুলো। এক রাতে আমরা গভীর ঘুমে। আগে থেকেই চোর ঘরে ঢুকে বসেছিল আমাদের ধারণা। সেদিন চোর এসেছিল আমরা টেরই পাইনি। ফযরে উঠে দরজা খোলা দেখে সবাই সবাইরে জিগাই দরজা খোলা কেন। তখন ভাবতেই পারিনি খাটের কাছে রাখা কাঠের বক্সটা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। চুরি হইছে তখনো জানি না। দুপুর বেলা আমাদের ক্ষেতে গিয়ে দেখি কাঠের বক্সটা, যার দুয়ারটা ভাঙ্গা। ভিতরে স্বর্ণ ছিল। আব্বা তিন বোনের জন্য স্বর্ণের চেইন এনেছিলেন কুয়েত থেকে। কী আর করার নিলো তো নিলোই।
আমাদের ছোটবেলা কেটেছে মহা আতঙ্কে। একেতো আব্বা ছিলেন না কাছে। সেনাবাহিনী থেকেই আবার কুয়েত গেলেন শান্তি বাহিনীর সদস্য হয়ে। তারপর দেশে এসে চলে গেলেন কাতারে। আম্মাই একা আমাদের পাঁচ ভাই বোনদের সামলিয়েছেন। আমাদের সহজ সরল পেয়ে আমাদের আত্মীয় স্বজনরাই চোর সেজে ঘরে ঢুকে নানান সময় কত জিনিস যে নিয়ে গেছে চুরি করে। কত মানুষ যে বাজার করার নামে কত কত টাকা খেয়েছে। বাড়ী করার সময়ও অসংখ্য টাকা মেরে দিয়েছে আমাদের আপনজনেরা। এখন বুঝতে পারি তখনকার দিনের ঘটনাগুলো। চোখের সামনে ভেসে উঠে সেই দিনের স্মৃতিগুলো।
ঘর বানানোর সময় বারো সেট দরজা জানালা তৈরী করা ছিল কাঠের। একদিন সকালে গিয়ে দেখি সবই চুরি হয়ে গেছে। নিয়েছে আমাদের আপনজনেরাই, বিক্রি করেছে কোথায় তাও জানতে পারি। তখন আমরা কিছুই করতে পারিনি। আব্বা নাই বলে। এই যে তোরা টাকা মেরে খেয়েছিস, আজও তো সেই ধান্ধাতেই থাকিস । অথচ দেখ আল্লাহ কত মেহেরবান আমরা ভাইবোনেরা ঠিকই উঁচু পর্যায়ে আছি, চাকুরী করছি, সম্মান নিয়ে বেঁচে আছি আলহামদুলিল্লাহ। আর বাড়ীর মধ্যে আমাদের ঘরটাই এখনো জমজমাট। আত্মীয় স্বজন অসহায় সবাই এক দুই বেলা আমাদের এখানেই খান। সকালে এখনো চায়ের আসর বসে। গ্রামের কত কত মুরুব্বি এক কাপ চায়ের জন্য আমাদের ঘরে আসেন। আব্বা কাউকে কখনো ফেরত যেতে দেননি এখনো দেন না। আমরা নাই বাড়িটা অনেকটাই জৌলুস হারিয়েছে। স্মৃতিগুলো অম্নান থাকবে বুকের মাঝে।
আমাদের গ্রামে চোরের বেশ উপদ্রব ছিল। বড় হওয়া পর্যন্ত বেশ আতঙ্কে কেটেছে। ডিগ্রি পড়ার সময় পাড়ার ছেলেরা ঠিক করলো পালা বদল করে রাত্রে পাহারা দেবে। তাই হল, ফিকল (বাঁশের আগায় ধারালো চৌকা লোহার অস্ত্র), দা, শাবল এসব উপকরণ রাতে ব্যবহার হত। তখন থেকে চোরের উপদ্রব কমেছে। তারপর একদিন বাড়ীর সামনে পিছনে পিচ ঢালা রাস্তা হল। মানুষ রুজি রোজগারের পথ খুঁজে পেল। আলহামদুলিল্লাহ এখন গ্রামে সিঁদ কাটা চোর, বড় চোর নাই বললেই চলে।
চোরের অজস্র কাহিনী আছে আরেকদিন বলবো নে।
ছোটবেলা স্মৃতিগুলো লিখলে মনে হয় যেন লিখে শেষ করতে পারবো না। আরও কিছু স্মৃতি নিয়ে আসবো ইংশাআল্লাহ। আল্লাহ হাফেজ।
১৬ ই মে, ২০২৩ দুপুর ২:৪২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ ভাইজান
আমরা হারিক্যানের আলোয় বেশীদিন লেখাপড়া করিনি। ক্লাস ফোরেই বিদ্যুত এসে গেছিল । কুপি বাতি পাখা দিয়া বাতাস করলেই নিভে যেত। তবে দিনগুলো সুন্দর ছিল। চাঁদনি রাতে উঠোনে বসে মতলিব চাচার কিচ্ছা শুনতাম, রাত চলে যেত কিচ্ছা শুনতে শুনতে। আমাদের মত আনন্দ হয়তো অনেকেই করতে পারেনি।
২| ১৬ ই মে, ২০২৩ ভোর ৬:৪১
নজসু বলেছেন:
শৈশব জীবনের বিশেষ মধুর একটি সময়। শুধু আমার বা আপনার না। সবার। এই সময়ের দিনগুলি থাকে দুরন্তপনা, দুষ্টুমি এবং হৈ হুল্লোড় করে করে ছুটোছুটি করা। দুনিয়ার সেরা সেরা ঘটনা ঘটে এই শৈশবে। আমার শৈশব ছিলো অন্যরকম। প্রিয় আপা, আপনার লেখাটা পাঠে অনেক কিছু মনে পড়ে গেলো। আমার শৈশব আমাকে যেন পিছন ফিরে ডাকছে।
সুন্দর, সাবলীল, লেখাটি উপহার দেয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৬
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হ্যাঁ শৈশব কৈশোর হল মধুময় সময়। কত ধরনের দুষ্টুমি ।পাখি পালা, মাছ ধরা, গোল্লাছুট থেকে ধরে কত খেলাই না খেলেছি। এখন গ্রামে কেউ খেলেও না, মাছও ধরে না সবাই টিভিতে ব্যস্ত অথবা নেটে মুঠোফোনে
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য রাখার জন্য
৩| ১৬ ই মে, ২০২৩ সকাল ১১:০৮
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ! পড়তে পড়তে নিজের অজান্তেই নস্টালজিক হয়ে গিয়ছিলাম। আমিও হারিকেনের আলোই পড়া লোক, আমার ছোটবেলায় গ্রামে চুরি ডাকাতির প্রকোপ ছিল সত্যিসত্যিই আতংকজনক। আপনার ছোটবেলার সাথে আমার ছোটবেলার বেশ কিছু মিল খুঁজে পেলাম।
শুভকামনা রইল।
১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হারিকেনের আলোয় আমি বেশীদিন পড়িনি। কারেন্ট এসে গেছিল আমাদের এলাকায়। । গ্রামের সব এলাকাতেই চোরের উপদ্রব ছিল বেশীই। ডাকাতিও হতো।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য জাজাকাল্লাহ খইর
৪| ১৬ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: বেশ।
১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৪০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ । আপনার স্মৃতিগুলো শেয়ার করুন। করে থাকলে লিংক দিয়েন।
৫| ১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:০৬
শাওন আহমাদ বলেছেন: কোন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন আপু? আপনাদের এলাকা তো চোরের অরণ্য ছিলো মনে হচ্ছে। আমার দাদীর মুখে শুনেছি আমাদের এলাকাতেও অনেক চোরে-ডাকাতের উপদ্রব ছিলো। মানুষ একবার ডেসপারেট হয়ে বেশকিছু চোর পিটিয়ে আদমরা করে জীবন্ত কবর দিয়ে দেয়, এরপর থেকে চোর-ডাকাতের উপদ্রব একেবারে কমে যায়।
১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আমি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার পীঁরেরগাঁও গ্রামের কথা বলছিলাম । সেখানেই আমার ২৬ বছর কেটেছে। চাকুরী করার লাইজ্ঞা ঢাকা আইছি আর যাইতে পারি নাই। আহারে আমার প্রিয় বাড়ী এখন বছরে মাত্র একবার যাই তাও কয়েকদিনের জন্য ।
মাইরের উপ্রে ঔষধ নাই। আমাদের এখানেও পাহারা দেয়ার পর কমেছিল কিছুটা চুরি।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
৬| ১৬ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৪:১৬
রানার ব্লগ বলেছেন: আমাদের অঞ্চলে একটা এলাকা আছে তার নাম চোরাবোরা । ওই এলাকার সব্বাই চোর। গুষ্টির আবাল বৃধ্য বনীতা সবাই চুরি পেশায় জড়িত । শোনা কথা এদের যন্ত্রনায় বাড়িতে গরু রাখা যেত না । এমনো শুনেছি গৃহস্ত রাতে ঘুমালে পায়ের সাথে গরুর রশি বেঁধে ঘুমাতো । চোরাবোরার লোক কিন্তু দুই একটা আপনার বাড়ির আশেপাশে পেয়ে যেতেও পারেন । এরা চোরা শব্দটা লুকিয়ে কেবল এলাকার নাম বোরা বলে ।
১৭ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:২৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এমন চোর আগে গ্রামে গ্রামে ছিল । এখন অনেকটা কমেছে। চোরাবোরা হাহাহা সুন্দর নাম
চোরের গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে বিয়ে শাদি হইতো না মনে হয়
ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকুন
৭| ১৬ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:০৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বোঝা গেল আপনার অতীত স্মৃতির ভাণ্ডার অনেক সমৃদ্ধ। আশা করি মাঝে মাঝে এই জাতীয় পোস্ট আরও দেবেন স্মৃতি রোমন্থন করে।
১৭ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১২:৫১
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হ্যাঁ সত্যিই অনেক স্মৃতি জমা আছে। আলহামদুলিল্লাহ আমার শৈশব কিশোর বেলা অনেক আনন্দেরস্মৃতি সমৃদ্ধ। ইংশাআল্লাহ সময় পেলে পোস্ট দেব।
জাজাকাল্লাহ খইর
ভালো থাকুন
৮| ১৬ ই মে, ২০২৩ রাত ৮:৩৪
করুণাধারা বলেছেন: চোর নিয়ে এতো স্মৃতি!!
ভালো লাগলো পড়তে। সহজ সরল প্রকাশ।
১৮ ই মে, ২০২৩ দুপুর ১:১৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জাজাকিল্লাহ খইর আপুন
ভালো থাকুন ফি আমানিল্লাহ
৯| ১৬ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৫৫
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
চুরির কাহিনীতে সয়লাব ।
ধান কাটতে আসত ভাটি থেকে
তাদের মেয়েকে করতে গেছে
উজানের চোরে চুরি এত বড়
তাদের বুকের পাটা ।
তবে ভাটির বেটা উজানের বেটিকে
চুরি থুক্যু ডাকাতি করে নিয়ে গেছে ভাটিতে
থানা পুলিশ করেও লাভ হবেনা কোন তাতে ।
চুরেরা এত নিখুত ভাবে চুরি করে কি কৌশলে ?
কে দেয় তাদের প্রশিক্ষন বা চোর বেশের উপকরণ,
তাদের প্রশিক্ষন কৌশল সম্প্রসারণ করে জাতীয়
সিলেবাসে ডুকিয়ে দিলে সারা বিশ্বের বিদ্যাবুদ্ধি
প্রযুক্তি রণকৌশল চুরী করে কিংবা এডাপ্ট করে
দেশের উন্নতিতে সফল ভাবে প্রয়োগ করে
সকলের জীবন মানে উন্নতি ঘটাতে পারলে
ছিচকে চোর বলে দেশে আর কিছু থাকবেনা,
কারো চুরি করার প্রয়োজনই আর থাকবেনা ।
চোরতে নিয়ন্ত্রনের জন্য থানা পুলিশ বাবদ সরকার
সে টাকা করি সম্পদ নিয়োগ করে তার একাংশো যদি
ছিচকে চোরদের জীবন মান ও শিক্ষায় উন্নয়নে ব্যয় করত
তাহলে দেশের ছিচকে চুরি কাহিনী শুধু স্মৃতির পাতাতেই থাকতো ।
সুন্দর হয়েছে স্মৃতি কথন ।
শুভেচ্ছা রইল ।
২১ শে মে, ২০২৩ সকাল ১০:২৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: মাশাআল্লাহ কী সুন্দর লিখে ফেলেছেন। আরও কত চুরি ঘটনা যে আছে। তখন ধানের খড়ে আগুন লাগিয়েও চোরটা ঘরে ঢুকার চেষ্টা করতো।
ধন্যবাদ ভাইয়া
ভালো থাকুন
১০| ১৭ ই মে, ২০২৩ সকাল ৭:৩৯
সোহানী বলেছেন: ও মাই গড!!! এসব কি শুনাইলা। কিভাবে সম্ভব!!!
একবার শুধু শুনেছিলাম আমার দাদার বাড়িতে ডাকাত ঢুঁকেছিল। কিন্তু নিজে কখনই দেখিনি। দেখলেতো মনে হয় মারাই পড়তাম............
২১ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জি আপু আমাদের এলাকায় প্রচুর চুরি হত। রাতে তো আমরা ভয়েই ঘর থেকে বের হতাম না। প্রথম বেলা বাহিরে বাথরুম ছিল । পরে ঘর করার সময় ভিতরে বাথরুম দিয়েছি আমরা।
ধন্যবাদ আপু ভালো থাকুন
১১| ১৭ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৩২
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: চোর ডাকাত নিয়ে বিভিন্ন রকমের স্মৃতি
২১ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৪৯
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জি ভাইয়া। অনেক স্মৃতি মনে হলেও সময়ের জন্য লিখতে পারছি না
ধন্যবাদ ভালো থাকুন
১২| ২০ শে মে, ২০২৩ রাত ১:১৮
চারাগাছ বলেছেন:
দারুণ ছিল আপনার স্মৃতিচারণ।
এটা সম্পদ।
২১ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জি ভাইয়া এসব স্মৃতি মনে করলে মজাই লাগে। একা একাই কখনো হাসি
ধন্যবাদ আপনাকে
ভালো থাকুন
১৩| ২১ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৪:৫০
জুন বলেছেন: আপু দারুণ স্মৃতিচারণ। চোর নিয়ে আমার শৈশব এর স্মৃতি কথা এই ব্লগেই আছে। অনেক মজা পেলাম সাথে হারিকেন যা এখন একটা রিসোর্টে দেখলাম অন্য ভুমিকায়। তেল সলতে ছাড়া বালব দিয়ে জ্বালায়। শেড আর কি। দাড়ান একটা ছবি দেই
+
২৩ শে মে, ২০২৩ দুপুর ২:৫৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আপু স্মৃতিকথার লিংক পেলে দিবেন প্লিজ
হ্যাঁ হারিক্যান বিভিন্ন ভাবে এখন ইউজ করে। বিশেষ করে কিছু রিসোর্টে
ধন্যবাদ আপু
১৪| ২২ শে মে, ২০২৩ দুপুর ১:২৩
জটিল ভাই বলেছেন:
লিখা পড়তে গিয়ে বারবার ভীড়িম খেয়ে চেক করছিলাম যে, এটা কি আদৌ আভীর লিখা? আপনার কাব্যের হাত তুলনাহীণ। কিন্তু গদ্যেও যে হাত এতোটা পাকা তা দেখে সত্যি লা'জবাব! বলবেন, এতো গল্প নয়, সত্যি ঘটনা। তবুও সত্য ঘটনার এমন অপূর্ব বর্ণনা গল্পকেও হারিয়ে দিলো। মাশাল্লাহ্।
২৩ শে মে, ২০২৩ দুপুর ২:৫৮
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সত্যিই ভালো লেগেছে। মনের মাধূরি মিশিয়ে লিখার সময়ই নাই আমার। সময় নিয়ে লিখলে হয়তো কিছু লিখতে পারতাম। দুইনার ভাবনা চিন্তা মাথার উপর। এর মাঝে তাসীনের বাপ অসুস্থ বাড়তি দায়িত্বও মাথার উপর। অফিসও আমারে সময় দেয় না কিত্তাম
জাজাকাল্লাহ খইর
১৫| ১৩ ই জুন, ২০২৪ রাত ৮:৫০
খায়রুল আহসান বলেছেন: একটি ব্যতিক্রমী বিষয় নিয়ে চমৎকার স্মৃতিকথা লিখেছেন। + +
আমি যেহেতু ঢাকায় বড় হয়েছি, সেহেতু ছোটবেলা থেকেই বিদ্যুতের আলোয় পড়াশুনা করার সুযোগ হয়েছিল। তবে মনে আছে যখন পিচ্চি ছিলাম (বয়স আটের নীচে) তখনও ঢাকায় থাকা সত্ত্বেও আমাদের বাড়িতে রাতের বেলায় হ্যারিকেন জ্বলতো। কারণ, সে এলাকাটিতে তখনও বিদ্যুত সংযোগ আসেনি।
আমাদের নানাবাড়িতে চোরের ভীষণ উপদ্রব ছিল, কিন্তু দাদাবাড়িতে তেমন ছিল না। উভয় বাড়ির মাঝে দূরত্ব ছিল দশ বারো কিঃমিঃ এর মত। স্কুলের বার্ষিক ছুটি হলে আমরা উভয় বাড়িতে সময় ভাগাভাগি করে ছুটি কাটাতাম। নানাবাড়িতে আমার সমবয়সী অনেক কাজিনরা ছিল বিধায় সেখানে সময় কাটাতে মজা পেতাম বেশি। একবার আমি থাকাকালীন সময়ে আমার বিছানার নীচেই সিঁধ কেটে চোর গৃহে প্রবেশ করেছিল। আমি কিছুই টের পাই নাই, বাড়ির অন্য কেউও কিছু টের পায় নাই।
শাওন আহমাদ বলেছেন: ...."আমার দাদীর মুখে শুনেছি আমাদের এলাকাতেও অনেক চোরে-ডাকাতের উপদ্রব ছিলো। মানুষ একবার ডেসপারেট হয়ে বেশকিছু চোর পিটিয়ে আদমরা করে জীবন্ত কবর দিয়ে দেয়, এরপর থেকে চোর-ডাকাতের উপদ্রব একেবারে কমে যায়।" ঠিক একই রকমের ঘটনা আমাদের এলাকাতেও হয়েছিল। আমাদের নানাবাড়ি এলাকায় 'বুদা চোর' নামে এক দুর্ধর্ষ চোর ছিল। সে অবশ্য নিজ এলাকায় তেমন প্রয়োজন না হলে চুরি করতো না; আশেপাশের এলাকায় প্রতি সিজনে অন্ততঃ একটি করে বড় ধরণের চুরি করতো। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সে একবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। অতিষ্ঠ জনগণ তাকে পিটিয়ে আধমরা করে বিন্যাগাড়ির বিলের পাড়ে জ্যান্ত ক্ববর দিয়ে আসে।
১৯ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:২০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এক বছর আগের পোস্টে আপনার মন্তব্য দেখে খুবই খুশি হলাম। এই ব্লগে আপনি ছাড়া কেউই পুরাতন পোস্ট পড়ে না ভাইজান।
আমাদের গ্রামের চোরের নাম ছিল আবু চোর। আমরা বলতাম আউব্বা চোর, সে চোর এখন মুরগি ব্যবসা করে। পোলাপান মোটামুটি ভালোই চলতেছে। আগের মত আর চুরি হয় না আমাদের গ্রামে। চোরের বাড়ীতে বড় বড় বিল্ডিং এখন। মানুষ ব্যবসা পাতি করে বাঁচতে শিখে গেছে। বিষয়টা ভাল্লাগে।
জ্যান্ত কবর দেয়া বাপরে কী ভয়ংকর শাস্তি। অবশ্য দুই একটার শাস্তি হলে অন্যান্য চোরেরা সাবধান হয়ে যায়।
ধন্যবাদ ভাইজান
অনেক অনেক ভালো থাকুন। ঈদ মুবারক
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মে, ২০২৩ রাত ১০:৫০
আহমেদ জী এস বলেছেন: কাজী ফাতেমা ছবি,
স্মৃতির ঘরে সিঁদ কাটলেন! শৈশবের কতো কিছুই যে চুরি করে নিয়ে এলেন।
আহ....হা... হারিকেনের আলোতে লেখাপড়া করা। কি মধুর ছিলো যে সেসব দিনগুলো!!!!!! অবশ্য সেইসব দিনগুলোতে আমাদের কপালে হারিকেন জুটতো কম, ওসব থাকতো বড়দের জন্যে। আমরা পিচ্চিরা পড়তুম "কুপিবাত্তি"র আলোয়!