![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনের সোনাঝরা দিনগুলি সব শীতের পাতার মতো ঝরে যায়। দেখতে দেখতে কলেজ জীবনটা শেষ হয়ে গেল। আর মাত্র একটা দিন পরই ছাত্র জীবনের সবচয়ে আনন্দময় অধ্যায়টার ইতি ঘটবে ভাবতেই পারছিলামনা, চারটি বছরের হাসি আনন্দের দিনের স্মৃতিগুলো সব মনের আয়নায় ভেসে উঠছিলো। খুব নস্টালজিয়ায় ভুগছিলাম, হায়রে জীবন, এভাবেই হয়ত মানুষ বড় হয়ে যায় ...কিন্তু তারপরও নিয়তির লিখন মেনে হয়ত কাজের টানে আমাকে ছুটে যেতে হবে বহুদুরে, হয়ত এই আমি একদিন অনেক বড় কিছু হয়ে যাব, আমার জন্য পৃথিবী তার চলার গতি শ্লথ করবেনা, সে তার নিজের গতিতেই চলবে, ক্লাস হবে আগের মতই আবার আরেকটি ব্যাচের আগমন ঘটবে এবং নিয়ম মত তারাও বিদায় নিবে, কলেজের পাশের কৃষ্ণচূড়া গাছে যে হলদে পাখিটা থেকে থেকে ডেকে উঠতো, সেও হয়ত ডাকতে ডাকতে একদিন থেমে যাবে, স্মৃতির সাগরে হঠাৎ কোনদিন ভেসে উঠবে এক টুকরা সুখ। কিন্তু কলেজ জীবনের সেই দুষ্টুমি ভরা দিনগুলি, ক্যাম্পাসের কোনায় সেই আড্ডা, কিংবা দলবেদে ঘুরে বেড়ানো, নিরবিচ্ছিন্ন সুখের সেই কলেজ জীবনটা আর কখনোই ফিরে পাবোনা। ভাবতে বড়ই কষ্ট হয়। কিন্তু নিয়তির টানে থেমে থাকবেনা আমার জীবন তরীও, কৈশোর থেকে যোবন , যোবন থেকে প্রোড়ত্ত, প্রোড়ত্ত থেকে বাধ্রক্য –জীবনের এই সরলরৈখিক গ্রাফ কখনো বৃত্তাকার হবেনা। কিন্তু তারপরও হয়ত কোনদিন একাকী রাস্তায় চলতে চলতে মন চলে যাবে ক্যাম্পাসের সেই লাল চত্বরে কিংবা কলেজের পাশের আলমগীর ভাইর দোকানের চায়ের কাপে। হয়তো কোন একদিন জনসমুদ্রে চলতে চলতে কাউকে দেখে কিছুক্ষনের জন্য থেমে যাবো তারপর নাম মনে করার চেষ্টায় কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকা এরপর দোস্ত কেমন আছিস বলে জড়িয়ে ধরা, এসবই হয়ত কোন একদিন হবে। আবার হয়তোবা কোনদিন পথে চলতে গিয়ে বাসের পাশের সীটের কোন বয়োবৃদ্ধকে দেখে মনে হবে সেই প্রিয় শিক্ষকটির কথা, যার হাতে গড়া সেই কাদামাটির পুতুল এই আমি আজ সময়ের আগুনে পুড়ে বড় বেশি রুক্ষ, হয়তো কিছুটা পরিণত। সবই হয়তো আমার মনের কল্পনা, হয়তো আর কখনোই ফিরে পাবোনা সেই প্রিয় মানুষগুলোকে, ফিরে পাবোনা কলেজ জীবনের সেই সোনা রাঙা দিনগুলোকে। হায় সময় কেন কেবলই একদিকে বয়ে যায়, মানুষ কেন বড় হয়ে যায়।
কলেজটা যেন অদৃশ্য মায়ার জালে আমায় আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলেছে। কলেজটা ছেড়ে চলে যাবো ভাবতেই মনের গহীনে যেন চিন চিন করে উঠে। এইতো গতকাল বিকালে এই চেনা পরিবেশটা ছেড়ে চলে যেতে খুব খারাপ লাগছিলো তাই হাটতে হাটতে কলেজের সামনের লেকটার সামনে গেলাম এবং লেকের পানিতে নিজেকে দেখে চেনার চেষ্টা করলাম, হ্যাঁ ঠিকইতো আছি শুধু মনে হলো নাহ কাল থেকে আমি আর এই কলেজের ছাত্র নই, পানিতে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখলাম একদম ঠাণ্ডা লাগলোনা, মনে হলো যেন আমার বোবা হৃদয়ের অশ্রুর মত উষ্ণতা দিয়ে পরম মমতায় কাছে টানতে চাইছে, আজলা ভরে পানি নিয়ে ফিসফিস করে বললাম তোদের খুব মিস করবোরে।
মোঃ শাহাদাত হোসেন
[email protected]
©somewhere in net ltd.