![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Atheist শব্দের অর্থ Disbelief in the existence of God , অর্থাৎ নাস্তিক শব্দের অর্থ—যারা ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেনা । এটাই বিশ্বজনীন মতবাদ অর্থাৎ এই মতবাদ বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত ।
বৈদিক সাহিত্য অবশ্য ‘নাস্তিক’ শব্দের একটু অন্যধরনের বিস্তৃত অর্থ তৈরি করেছে । যথা-
১) যে বেদ মানেনা
২) যে বেদকে অপৌরুষেয় অর্থাৎ ঈশ্বর-সৃষ্ট মনে করেনা
৩ যে বেদকে অভ্রান্ত মানেনা
৪) যে দেশাচার মানেনা
৫) যে পরলোকে বিশ্বাস করেনা
৬) যে ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেনা ।
বৈ্দিক সাহিত্যে ৬ টি শ্রেনীর নাস্তিকের কথা বলেছে , ১) মাধ্যমিক ২) যোগাচার ৩) সৌত্রান্তিক ৪) বৈভাষিক ৫) চার্বাক ৬) দিগম্বর ।
প্রাচীন ভারতীয় দর্শন বলতে যে চিন্তাধারা বোঝায় , তা প্রধানত নিরীশ্বরবাদী । কথাটা একটু নতুন শোনালেও এটাই সত্যি , একশ শতাংশ সত্যি ।
খবরের কাগজ পড়ে আমরা ততোটুকুই জানতে পারি, যা জানান হয়, ছাপা হয় । চাপা খবর আমরা পাইনা । ঠিক তেমনি বেশির ভাগ ‘ভারতীয় দার্শনিক’ যতটা ছেপেছেন , তার চেয়ে বেশি চেপেছেন ও বিকৃত করেছেন ।
বেদ এ কথাই বলে যে , বাঞ্ছিত ফল পেতে যজ্ঞই একমাত্র সত্য, দেবতার কোনও ভুমিকা নেই । দেবতা ফল দিতেও পারেনা , ফল লাভ বন্দ্ধও করতে পারেনা । বৈ্দিক যজ্ঞ নীতি ব্রাহ্মণ তার প্রমান । তাহলে দেবতা বা ঈশ্বর সর্বশক্তিমান নন । বৈ্দিক সাহিত্য একেশ্বরবাদীত নয়ই এমনকি ঈশ্বরকে সমস্ত কিছুর নিয়ন্তা বলে মনে করেনা ।
সাংখ্য ঃ
সাংখ্য দর্শনকে ভারতের প্রাচীনতম দর্শন বলে মনে করেন ভারতীয় দার্শনিকেরা এবং তথাকথিত পন্ডিতেরা । সাংখ্য দর্শন নিরীশ্বরবাদী দর্শন । এখানেই শেষ নয়, সাংখ্য দর্শন মুলত বস্তুবাদী দর্শন । সাংখ্য দর্শন যে একটি প্রাচীন মতবাদ , তার প্রমান –উপনিষদ সমুহে ও মহাভারতে সাংখ্য দর্শনের উল্লেখ আছে । গৌতম বুদ্ধ গৃহত্যাগের পরে সাংখ্য দর্শন অধ্যয়ন করেছিলেন বলে মনে হয় । কারন সাংখ্য দার্শনিক কপিল ছিলেন গৌতম বুদ্ধের উত্তরসুরী এবং বৌদ্ধ ধর্মের উপর সাংখ্য দর্শনের প্রভাব স্পস্ট ।
কপিল তার সাংখ্যে ব্রহ্ম বা পরমাত্মাকে স্থান দেননি । তার মতে, প্রকৃতি নিত্য , সমস্ত জাগতিক পদার্থ তারই পরিবর্তনের ফলে উতপন্ন ।
নিরীশ্বরবাদী কপিল মুনি হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কাছে ঈশ্বরের পরম্ভক্ত মুনি হিসেবে পুজিত হচ্ছেন—এটাই দুঃখ । ইতিহাস বিকৃতিকে দেখার দুঃখ । পুনঃপুন প্রচারের বদৌলতে বিকৃতকারী ও বিক্রিতকারীদের আলোকিত হতে দেখার দুঃখ ।
মীমাংসা ঃ
ভারতবর্ষে আরও একটি প্রাচীন ও অত্যান্ত শক্তিশালী দর্শন হোল মীমাংসা । মিমাংসাবাদীরা স্পস্টতই নিরীশ্বরবাদী । মীমাংসক কুমারিল ভট্টের রচিত শ্লকবাতিক থেকে আমরা মীমাংসা দর্শনের কিছু মতামত এখানে তুলে ধরছি ।
১) কেও যদি বলেন, এই বিশ্বব্রহ্মান্ড সৃষ্টির আগে থেকেই ঈশ্বর ছিলেন , তবে তাঁকে প্রশ্ন করা যেতে পারে , সৃষ্টি না থাকলে স্থান থাকেনা , স্থান না থাকলে ঈশ্বর তখন কোথায় থাকতেন ?
২) ঈশ্বর নিরাকার ছিলেন নাকি তার আকার ছিল , দেহ ছিল ? দেহ থাকলে সেই দেহের নিশ্চয়ই একজন স্রষ্টা ছিলেন ।
৩) ঈশ্বর সৃষ্টির জন্য নিশ্চয় আরেকজন ঈশ্বরের প্রয়োজন ছিল , সেই ঈশ্বরকে সৃষ্টি করতে আরও একজন ঈশ্বরের প্রয়োজন ছিল , এইভাবে অনন্ত ঈশ্বরের প্রয়োজন হতেই থাকবে , যেটা অগ্রহণযোগ্য ।
৪) কোন উপাদান দিয়ে তিনি বিশ্ব সৃষ্টি করেছিলেন ? সেই উপাদানগুলো কি সেই উপাদান গুলো কি সৃষ্টির আগে থেকেই বর্তমান ছিল ? থাকলে সেই গুলো কোথায় কী অবস্থায় ছিল ?
৫) সৃষ্টির উপাদানগুলোর স্রষ্টা কে ?
৬) যদি ঈশ্বর তার দেহ থেকেই এই উপাদান তৈরি করে থাকে তবু প্রশ্ন থেকে যায়, সেই ঈশ্বরের দেহের স্রষ্টা কে ? একের পর এক ঈশ্বর আনলেও এর উত্তর মিল্বেনা ।
৭) ঈশ্বর কেন জগত সৃষ্টি করলেন ? কী অভাববোধ থেকে এই সৃষ্টি ? ঈশ্বরের অভাববোধ থাকার অর্থ তিনি পূর্ণ নন ।
৮) এই সৃষ্টিকে লীলা বললে ,বলতেই হয় ঈশ্বর দায়িত্বজ্ঞানহীন ।
৯) ঈশ্বর যদি করুণা থেকে জগত সৃষ্টি করে থাকেন , তাহলে জগতে এতো দুঃখ কেন ?
ঈশ্বর বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে এমন ভয়ঙ্কর আক্রমন আর কোনও দর্শনই সেই সময় হানতে পারেনি ।
স্বভাববাদ ঃ
শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের যুগে আরও একটি যুক্তিমনস্ক মতবাদ উঠে এসেছিল , মতবাদটির নাম ‘স্বভাববাদ’ । স্বভাববাদের উল্লেখ আমরা পাই মহাভারতে, বৌদ্ধ লঙ্কাওবতার সুত্রে ও অশ্বঘোষের বুদ্ধ চরিত এ । স্বভাববাদ স্পস্টতই একটি যুক্তিমনস্ক মতবাদ । এই মতবাদ অনুসারে
১) বিশ্বপ্রকৃতি কার্যকারণের নিয়ম শ্রেংখলে বাঁধা ।
২) একটি বিশেষ ধরনের কাজের বা ঘটনার পিছনে একটি বিশেষ ধরনের কারন থাকে । যেমন মাটি থেকে মৃৎপাত্র-ই হতে পারে , পরিধেয় বস্ত্র নয় ,
৩) কারনহীন অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটা সম্ভব নয় ।
স্বভাববাদীরাও ছিলেন অতিপ্রাকৃতে অবিশ্বাসী নিরীশ্বরবাদী ।
বৌদ্ধ মতব
©somewhere in net ltd.