![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীতে প্রতিষেধযোগ্য মৃত্যুর জন্য অন্যতম দায়ী বস্তুটি হল তামাক।
তামাক হল একধরণের কৃষিজাত পণ্য নিকোটিনিয়া গণের (genus Nicotiana) একধরণের উদ্ভিদের পাতা থেকে উৎপণ্ণ হয়।প্রচলিতভাবে এটা বিনোদনমূলক নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।এটা সিগারেটের মাধ্যমে সর্বাপেক্ষা বেশি সেবন করা হয়।ধূমপানে আছে বেশকিছু ক্যান্সারউদদীপক উপাদান, যা ডিএনএ’র সাথে যুক্ত হয়ে জিনগত মিঊটেশন ঘটায়।ধূমপানে প্রায় ৪৫ ধরণের জানা-অজানা ক্যান্সারউদ্দীপক রাসায়নিক রয়েছে।যখন তামাক সেবন করা হয়,নিকোটিন শারীরিক ও মানসিক নির্ভরতা ঘটায়।তাই একজন ব্যাক্তি,যার তামাকজাত পণ্যে সহনশীলতা নেই,প্রথম সেবনে মৃদু কম্পন অনুভূত হয়।দীর্ঘদিন ধূমপানের ফলে তামাকে থাকা নিকোটিনের এই বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্যবহারকারী দ্রুতই ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়ে।
পুরুষ এবং মহিলা ধূমপানকারীর আয়ুষ্কাল পৃথকভাবে ১৩.২ ও ১৪.৫ বছর হ্রাস পায়।
একজন নিয়মিত ধূমপানকারীর প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল একজন অধূমপায়ীর চেয়ে ১০-১৭.৯ বছর হ্রাস পায়।পুরুষ ধূমপায়ীদের অর্ধেকই ধূমপানজনিত অসুস্থতার কারণে মৃত্যুবরণ করে।
প্রাথমিকভাবে,ধূমপান বিতৃষ্ণা,মানসিক চাপ,মাথা ঘোরানো….সৃষ্টি করে।
তামাক সেবনকারীদের প্রাথমিক হুমকির মধ্যে রয়েছে কয়েক ধরণের ক্যান্সার,পৃথকভাবে-মুখগহ্বরের ক্যান্সার(ঠোঁট,জিহ্বা,মুখ,গলা),ফুসফুসের ক্যান্সার,অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার,পাকস্থলির ক্যান্সার,কিডনির ক্যান্সার,স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার,সর্বোপরি মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার,খাদ্যনালীর ক্যান্সার,স্তন ক্যান্সার,মূত্রথলির ক্যান্সার।
এছাড়া,ধূমপানের সাথে কার্বন-মনোক্সাইড,সায়ানাইড ধূমপায়ীর দেহে প্রবেশ করে যা,ফুসফুসসংক্রান্ত জটিলতা এবং অ্যালভিওলির(ফুসফুসের একক) প্রসারণক্ষমতা হ্রাস করে যার ফলে ইনফ্লুয়েঞ্জা,এমফাইসেমা,ব্রঙ্কাইটিস এবং পরিণামে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারক ফুসফুসসংক্রান্ত রোগের (COPD) কারণ হয়।প্রতিদিন ২০টি সিগারেট যহ্মার হার তুলনামূলভাবে বাড়িয়ে দেয়।
১ম ১০ মিনিট ধূমপানে হৃৎস্পন্দন প্রায় ৩০% বেড়ে যায়।কার্বন-মনোক্সাইড রক্তের অক্সিজেন পরিবহনক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
পাশাপাশি,ধূমপান হৃদরোগ,স্ট্রোক,অ্যাথেরোস্ক্লরোসিস,রক্তনালিকার রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।এছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী কিডনি বিকলতা এবং ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথির কারণ হতে পারে।
একজন অধূমপায়ীর তুলনায় একজন পুরুষ ধূমপানকারীর যৌনঅক্ষমতা প্রায় ৮৫% বৃদ্ধি পায়।কারণ,ধূমপান ধমনীকে সরু করে দেয়।পাশাপাশি,একজন মহিলা ধূমপানকারীর ক্ষেত্রে,ধূমপান ডিম্বাশয়ের জন্যও ক্ষতিকর,যা বন্ধ্যাত্বের হার বাড়ায়।
এতো গেল ধূমপানকারীর স্বাস্থ্যঝুঁকি…পাশাপাশি একজন ধূমপানকারী একজন অধূমপায়ীরও পরোক্ষ ক্ষতির কারণ হন।যারা পেশাার ধূমপায়ীর সাথে বসবাস করেন তাদের হৃদরোগ,ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায় ৩০ গুণ।সবচেয়ে বেশি বিপদগ্রস্থ হয় শিশুরা।
সবকিছু বিবেচনা করে….একজন ধূমপানকারীর কি উচিত নয়…এইমুহূর্তে ধূমপান বর্জন করা,নিজের স্বার্থে,কাছের মানুষটির কথা ভেবে,পরিবােরর দিকে তাকিয়ে,শিশুটির কথা চিন্তা করে।একজন অধূমপায়ী বন্ধুর অবশ্যই উচিত তার কাছের ধূমপায়ী বন্ধটিকে ধূমপান ত্যাগে উৎসাহিত করা….তবেই না ধূমপানমুক্ত সমাজ নিশ্চিত হবে।আসুন আমরা নিজেরা ধূমপান হতে বিরত থাকি সেইসাথে অন্যদেরকেও ধূমপানত্যাগে অনুপ্রাণিত করি….
©somewhere in net ltd.