নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চরন বিল

চরন বিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রকৃতির প্রতিশোধ !

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৩

পড়ালেখার জন্য রাত জেগে আছি। কিন্তু পড়া হচ্ছে কতটুকু সেটা গবেষণার বিষয়। এই সেই নিয়ে রুমমেটদের সাথে আড্ডা দিতে দিতেই সময় চলে যাচ্ছে। এর মধ্যে কি কারণে যেনো মানিব্যাগ থেকে একটা টাকা বের করলাম। দেখা গেল টাকার মধ্যে কে যেনো একটা মোবাইল নাম্বার লিখে রেখেছে। নিচে তার নাম লেখা। দেখে কিঞ্চিত দেশপ্রেমের চেতনা জাগ্রত হলো! জাতীয় সম্পদের এই অপব্যবহার? টাকার মধ্যে নাম লিখে টাকার সৌন্দর্য্য নষ্ট করার মত কাজ লোকটা কেন করেছে তাকে ফোন করেএকটা শিক্ষা দিতেই হবে। নতুন নতুন ফোন কিনেছি এসব সামাজিক দায়িত্ব পালনে আগ্রহ মোটামুটি বেশী। রুমমেটরা মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম তাকে একটা শক্ত ঝাড়ি দেবো। কথা বলার দায়িত্ব পড়লো আমার ওপর।

রাত বাজে দুইটার মতো। ডায়াল করলাম লোকটার নাম্বারে। দু একবার রিং হওয়ার পর লোকটা ফোন ধরলো। কি করে কোথায় থাকে জিজ্ঞেস করলাম। তারপর টাকায় নাম্বার কেন লিখেছে এজন্য কষে একটা ঝাড়ি দিলাম ( অবশ্যই ভদ্র ভাষায়)। লোকটা ভ্যাবলার মত শুনে গেলো। আমার কথা শেষ হওয়ার পর বললো, “ভাই নাম্বারটা আমি লিখিনি। হয়তো কেউ ফাজলামো করে লিখেছে।” আমি তাতে মানবো কেন! তাকে আরো কিছু উপদেশ দিয়ে রেখে দিলাম। তরুণ ব্যবসায়ী লোকটার অনুভুতি তখন কেমন হয়েছিলো জানতে পারি নি। তবে বিশাল একটা সামাজিক দায়িত্ব পালনের কারণে সেই খোশ মেজাজে ছিলাম!

আজ আট বছর পর সেই অনুভূতিটুকু জানার সুযোগ হয়েছে ভালোভাবেই। বড় মামী, ফুপাতো বোন ভর্তি হাসপাতালে। বন্ধুর ছোট ভাই এসেছে ডাক্তার দেখাতে। এইসব নিয়ে ছুটাছুটি করে করে বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা। সকালে নাস্তা করার সুযোগ পাইনি। ফুপাতো ভাইকে নিয়ে কলেজ ক্যান্টিনে সাড়ে এগারোটার দিকে নাস্তা করতে বসেছি। বার্গারে যেই মাত্র কামড়টা বসিয়েছি এর মধ্যে ফোন বেজে উঠলো। সালাম দিয়ে রিসিভ করলাম মাত্র আর ঐ পাশ থেকে অশ্রাব্য গালাগালি শুরু হয়ে গেলো।কথার ধরণ শুনে খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে গেলো। যেটুকু বোঝা গেলো কোন একটা টাকার গায়ে কোন এক সুধীজন আমার নাম্বারটুকু লিখে দিয়েছেন। আর আমি কেন টাকাতে আমার নাম্বার লিখেছি তার জিজ্ঞাসাবাদ করে এই মহান ব্যক্তি তার মহাগুরুত্বপূর্ণ ‘সামাজিক দায়িত্ব’ পালনে আমাকে ফোন করে খাস বাংলার যথোচিত ব্যবহার করছেন। একটা পর্যায়ে আমি ফোনটা কান থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হলাম। আর ঠিক সেই মূহূর্ত আমি আট বছর আগের ঝাড়ি দেয়া সেই ব্যক্তিটির জন্য দারুন সহানুভূতি বোধ করতে লাগলাম..

“প্রকৃতির প্রতিশোধ এতো তীব্র হয় কেন???”

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৪৬

ক্ষুদে লেখক বলেছেন: যিনি আপনাকে ঝারি দিয়েছে তিনি আর কেউই নন, আপনি যাকে কষে ঝারি দিয়েছিলেন সেই তিনিই !
আপনার উপর প্রতিশোধ নিলো .

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৫

চলন বিল বলেছেন: আসলেই ঠিক
প্রকৃতির প্রতিশোধের ভয়ে আজকাল অন্যায় করতে গেলে আগে ১০ বার চিন্তা করতে হয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.