নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চরন বিল

চরন বিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাদা মনের ভিক্ষুক

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৬

শুভ্র শশ্রুমন্ডিত এই বয়োবৃদ্ধ লোকটাকে দেখুন । বর্তমানে বেঁচে থাকা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষের একজন বুলগেরিয়ার এই বৃদ্ধ লোকটি । 100 বছর বয়সী 'ডবরি ডবরেভ' শ্রবণ শক্তি হারান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে । গত এক দশক ধরে প্রতিদিন 25 কিঃ মিঃ পথ পায়ে হেঁটে রাজধানী সোফিয়ায় যান ভিক্ষে করতে । জামাকাপড় নিজ হাতে তৈরি করেন , চামড়ার জুতো জোড়া ও অনেক পুরনো । সারাদিন ভিক্ষে করে রাতে বাড়ি ফিরে যান । সরকারের কাছ থেকে পাওয়া মাসিক 80 ইউরো ভাতা তাঁর জীবন ধারণের জন্য যথেষ্ট , তবুও ভিক্ষে করেন ।তবে নিজের জন্য নয় , প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ তিনি এতিমখানার অভাবগ্রস্ত শিশুদের জন্য ব্যয় করেন । তিনি একটি পয়সা ও নিজের কাছে রাখেন না । লোকজন তাঁকে তাঁর জন্মস্থানের নামানুসারে "সেইন্ট অব বেইলভ " বলে ডাকে ।আপনার জীবনে যদি কোন রোল মডেলের প্রয়োজন হয় তবে তাঁর চেয়ে সেল্ফলেস কাউকে পাবেন বলে মনে হয় না । আমরা সবাই প্রথম হতে চাই , পারফেক্ট হতে চাই । এই বুড়োর কাছ থেকে হাস্যকর রকমের পিছিয়ে আছি । আমি , আপনি , সকলেই



ছোটবেলায় দাদা দাদুর মুখে শুনেছি,এককালে কমিউনিষ্ট পন্হি রাজনীতিকরা নাকি বিত্তবানদের ধন সম্পদ লুটে এনে নিঃস্ব,অসহায়,গরিবদেরকে বিলিয়ে দিতেন।পরবর্ত্তী সময়ে কিশোরগন্জের অষ্টগ্রাম থানার ডাকু লাল খাঁর নামও শুনেছি।তিনি ও নাকি তার দলবল সমেত পার্শবর্ত্তী হাওরের বহিরাগত কৃষকদের উৎপাদিত ফসলাদি লুটেপুটে এনে নিজ এলাকার গরিবদেরকে দিয়ে দিতেন।কিন্তু আজ যার কথা বলবো-তিনি কমিউনিষ্ট নয় ডাকু ও নয়।তিনি হলেন কিশোরগন্জের ইটনা থানার পাটাবুকা গ্রামের করম আলি।বয়স ৭৫ । একটুকরো শুন্য ভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই তার ।দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তিকেই জীবিকা নির্বাহের উপায় হিসাবে বেছে নিয়েছেন তিনি ।যেখানে রাত সেখানেই কাত এই নিয়মেই কখনো মসজিদে কখনোবা এতিমখানায় রাতযাপনা তার অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে ।কিন্তু এই ভিক্ষুক আর দশজনের মত নয়, এবং এজন্যেই তাকে নিয়ে এত কথা ।তিনি সারাবেলা ভিক্ষা করে যা'পান তা' অন্যান্য অন্ধ কিংবা পঙ্গুদেরকে বিলিয়ে দেন,যা'ইতিপুর্বে আর কেউ শুনেছেন বা দেখেছেন কিনা আমি জানিনা ।বলাই বাহুল্য,যেখানে অনিয়মই নিয়ম,যেখানে ঘুষ দূর্নীতিকে প্রায় অস্বীকৃত আইনের মতই মেনে নিতে হচ্ছ,যেখানে যে কেউ সুযোগ পেলেই লুটে পূটে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাবার প্রবনতায় ভোগছে,সেখানে নিজের ভিক্ষার্জিত টাকা অন্য ভিক্ষুকদেরকে দান করার মাধ্যমে ভিক্ষুক করম আলি আমাদেরকে কি শিক্ষা দিতে চায়,তা'কি ভেবে দেখার বিষয় নয় ?






হরেকৃষ্ণ,হরেকৃষ্ণ ধ্বনি মূখে বাজারের দোকানে দোকানে ধুপের ধুয়া বিলিয়ে বেড়ায় এই লোকটি।তার নাম শ্রধরবাবু। বয়স আনুমানিক ৭৫ থেকে ৮০ ।কিশোরগঞ্জের ইটনা থানাধীন ধনপুরের শিলুন্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা সে।একহাতে একটি ছেড়া ব্যাগ অন্য হাতে একটি ষ্টীলের বালতি।ব্যাগটিতে কি আছে জানিনা, তবে বালতিটিতে ধকধকে তুষের আগুন।কিছুক্ষন পরপর ধুপের গুড়ো ছিটিয়ে ছিটিয়ে হরেকৃষ্ণ হরেকৃষ্ণ বলতে বলতে দোকানে প্রবেশকরে ধূপের ধুয়া ছড়িয়ে দেয়াই তার কাজ। কোন চাওয়া নেই তার। ইচ্চেকরে যে যা'দেয় ভক্তিভরে তা-ই হাতপেতে নেন তিনি।কথা প্রসঙ্গে ভিক্ষাবৃত্তিকে পাপ উল্লেখকরে তিনা তা' ঘৃনাকরেন বলে জানান।বলাইবাহুল্য,যে দেশে দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে রিলিফ চুরির মামলা হয়,যে দেশে যাকাত ফেতরা সংগ্রহ করতে গিয়ে মানুষ মারা যায়,স্বচ্ছল পরিবারের সদস্যরাও বিধবা ভাতা,বয়স্কভাতা ও দুঃস্হমাতার কার্ড পেতে হুড়াহুড়ি করে,যে দেশে সরকারি দলের বিত্তবানরাও নানা অজুহাতে মাননীয় মন্ত্রি ও এম পি মহোদয়দের ঐচ্ছিক তহবিলের দানের টাকা পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করেন,সে দেশে এই শ্রীধর বাবুর মত এমন একজন সহায় সম্বলহীন মানুষও ভিক্ষাকে পাপ বলে ঘৃণা করেন তা,কি আমাদের জন্য শিক্ষনীয় উদাহরণ হতে পারেনা ?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.