নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চরন বিল

চরন বিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি অসমাপ্ত প্রেমের কাহিনী(সত্য ঘটনা অবলম্বনে)

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৫:০০

শীতটা যেন জেঁকে বসেছে।সময়টা তখন নভেম্বর মাসের শেষের দিকে হবে।লন্ডনে এই সময় খুব ভাল ঠান্ডা পরে।সারাদিন কাজ শেষে ক্লান্ত শরীরে বাসায় ফিরসে অপু।প্রতিদিন কাজ শেষে সন্ধ্যা সাতটা বিশের ট্রেন ধরে লুইশাম (ডি এল আর)ষ্টেশন থেকে। আজকে কাজ থেকে বের হতে দেরি হওয়া্য অল্পের জন্য ট্রেন টা মিস হয়ে গেল।

ষ্টেশনে একা বসে আছে।নেক্সট ট্রেন আসতে আরও বিশ মিনিট বাকি। একা একা বসে আছে আর ভাবছে এই একগেঁয়ে জীবন আর ভাল লাগে না। প্রতিদিন কাজ না হয় পড়াশুনা। প্রেম করতে খুব ইচেছ হয়। যেই কথা সেই কাজ পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফোন দিল বাংলাদেশে।

অনেক দিনের পুরনো এক বান্ধবী উর্মি। বান্ধবী বললে টিক ভুল হবে।উর্মির সাথে অপুর পরিচয় সেই ইউনিভারসিটি থেকে।অপুর ছোট বোনের বান্ধবি উর্মি। উর্মি তখন কলেজে পড়ে। উর্মি মনে মনে অপুকে ভালবাসত, অপু ও তা বুজত কিন্তু অপু কখন ও সেই ভালবাসায় সায় দেইনি।

বাংলাদেশ সময় তখন রাত একটা। ফোন বাজছে।অনেক্ষন ফোন বাজার পর ফোন রিসিভ করল উর্মি। অনেক দিন কথা হয় না উর্মির সাথে অপুর।চিনতে একটু অসুবিধে হচ্ছিল।যাই হোক অবশেষে পরিচয় পর্ব শেষ হল। উরমি প্রেম করব একটা মেয়ে খুঁজে দাও না। প্রেম করবেন আপনি? আপনাকে দিয়ে প্রেম হবে না।কেন?জিজ্ঞেস করল অপু। আপনার যেই মেজাজ,মেয়েরা পালাবে। তবে এক টা মেয়ের নাম্বার দিতে পারি, আমার বড় বোনের মেয়ে, নাম রাহা, খুব ভাল মেয়ে। তাহলে দাও, বলল অপু।

সবে মাত্র ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুত্তি ইউনিভারসিটি তে ভর্তি হয়েছে রাহা। মেয়েটি দেখতে অত সুন্দর না হলে ও অসম্ভব ভাল মনের।আজকালের এই সময়ে রাহার মত মেয়ে পাওয়া হয়ত একটু কঠিন ই বটে।

একদিন কাজে যাওয়ার পথে অপু ফোন দেয় রাহাকে। অদ্ভুত মায়াবী এক কন্ঠ। প্রথমে কথা বলতে রাজি হয়নি, দু- তিন দিন চেষ্টা করার পর একদিন ৩/৪ মিনিট কথা হয় অপুর। তারপর আস্তে আস্তে কথার পরিমান বাড়তে থাকে। শুরু হয় একটা নতুন সর্ম্পকের। অপুর অগোছালো জীবনে রাহার আগমন যেন এক নতুন আবহের সৃষ্টি করে।নতুন এক প্রান ফিরে পায় অপু। অপুর ফোন পেলে রাহা ও যেন নতুন করে নিজেকে চিনতে শেখে। অধীর আগ্রহ নিয়ে রাহা বসে থাকে কখন অপু ফোন করবে, কখন কথা হবে।একটি মেয়ে যে কতটা নিঃস্বার্থ ভালবাসতে পারে তা হয়ত এই রাহা কে না দেখেলে কখনো বোঝা যেত না।এভাবে দু বছর কেটে যায়।

অপু তার ফ্যামিলি কে জানায় সে রাহাকে বিয়ে করবে। আমাদের দেশে এখনও বিয়ের সময় মেয়েদের পারিবারিক অবস্থা এবং মেয়ের সৌন্দর্য কে প্রাধান্য দেয়া হয়। রাহাকে দেখতে চায় অপুর বাবা। একদিন ঘটা করে দেখা ও হয় দু পরিবারের।কিন্তু বিধি বাম অপুর পরিবারের কারোর ই পছন্দ হয় না রাহাকে, একমাত্র অপুর ছোট বোন বাদে। পারিবারিক অবস্থা, মেয়ের সৌন্দর্য সব ই যেন অপছন্দ অপুর বাবার। অপুর পরিবারে শুরু হয় বাংলা সিনেমার কাহিনী। অপু লন্ডন থেকে ফোন করে সবাইকে বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত হয়ে যায়। অবশেষে হার মানতে বাধ্য হয় অপু। দেশে ফিরে বিয়ে করে অন্য এক মেয়েকে। স্বার্থপরের মত একটি বারের জন্য দেখাও করেনি অপু। অনেক অনুরোধ করে রাহা, আমাকে বিয়ে করতে হবে না,একটি বারের জন্য দেখা কর। আমি তো তোমাকে কখন ও সরাসরি দেখিনি, একবার দেখা করি প্লিজ, তুমি দেখতে চাও না আমি কতোটা অসুন্দর। কোন কিছুই যেন অপুর মন গলাতে পারে না।অপু ভুলে যায় সেই দু বছরের কথা।ভুলে যায় রাহার সেই মায়া ভরা কথা, কন্ঠ।

বিয়ে করে আবার লন্ডন চলে আসে অপু। অদেখাই রয়ে যায় দুজন। এখন ও অপু যখন একা বসে থাকে মনে পড়ে সেই পুরনো দিনের কথা। আরেকটু সাহস করলেই হয়ত জীবনটা অন্য রকম হতে পারত। অপু প্রায় ভাবে কেমন আছে রাহা, রাহা কি বিয়ে করেছে, রাহার কি এখন ও আমার কথা মনে আছে? রাহা কি জানে যে আমার একটা মেয়ে হয়েছে? রাহার কি পরাশুনা শেষ? রাহা কি চাকুরী করে? রাহার সেই ছোট ভাইটা কেমন আছে? কাঁচের চুঁড়ি অনেক পছন্দ করত রাহা, সেই চুঁড়ি ও কিনে দেয়া হয়নি। কোন কিছুর উত্তর ই খুঁজে পায় না অপু। মাঝে মধ্যে এখন ও অপু যেন রাহার কন্ঠ শুনতে পায়।ভাবে দেশে ফিরলে রাহাকে সে খুজেঁ বের করবে। ক্ষমা চাইবে রাহার কাছে কিন্তু রাহা কি ক্ষমা করবে?

উত্তর টা আমার ও জানা নেই।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:২৬

জহুরুল কাইয়ুম বলেছেন: তারপরও রাহারা ভালবেসে যাবে অপুদের। আর অপুরা বারবার তা প্রত্যাখ্যান করে চলে যাবে। এটাই ভালবাসার আর একটি পরিনতি। অপু যেটা করেছে সেটাকে ভালবাসা বলা যায় না। সে তার বিষন্নতাকে কাটানোর জন্য সঙ্গতা খুজে ফিরেছে। আর রাহা এই সঙ্গহীন মানুষটির বলীরপাঠা হয়েছে।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:০৯

চরন বিল বলেছেন: আপনার সাথে কিছুটা একমত।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:১৯

চরন বিল বলেছেন: আপনার বল্গটা দেখলাম, খুব ভাল লেগেছে। গ্রাম আমাকে খুব টানে জানেন। ইচ্ছে করে সব কিছু ছেড়ে গ্রামে চলে যাই।

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৪৬

ফয়সাল এম,এফ,কে বলেছেন: গল্পের প্রথম অংশটা অনেকটা আমার সাথে মিলে গেছে। তবে আমাদের পরিচয়টা অনলাইনে। আমি অপুর মত সারাজীবন আফসোস করতে চাইনি তাই অনেক ত্যাগ, ধৈর্য আর সাহস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলাম। আজ আমরা অনেক সুখি। আমাদের কোল জুড়ে এসেছে ফুটফুটে একটা ছেলে। আর আমার পরিবারের সবাই তো এখন আমার ছেলে, বউ ছাড়া কিছু বোঝেইনা।
জীবনে চলার পথে অনেক বাধা আসবে সেটাই স্বাভাবিক কিন্তু যারা সাহস নিয়ে মোকাবিলা করতে পারে তারাই সাফল্যের মুখ দেখে। আর ভবিষ্যতে শুধু আফসোস করেনা।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:১৫

চরন বিল বলেছেন: ফয়সাল ভাই সবার সাহস কি আর আপনার মত হয়। বাই দ্যা ওয়ে ফয়সাল ভাই কি সুইডেনে থাকেন??

৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫

নিজাম বলেছেন: ধন্যবাদ।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৪:২০

চরন বিল বলেছেন: নিজাম ভাই আপনাকেও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.