![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সাধারণ একজন মানুষ, সবসময় সত্য কে খোঁজার চেষ্টায় রত থাকি।সত্য বলতেও দ্বিধা করিনা, সত্য মানতেও বিলম্ব করিনা এবং লেখার গঠনমুলক সমালোচনা পছন্দ করি।আমার লেখা পড়ে কারো গায়ে জ্বালাপোড়া ধরলে সেজন্য আমাকে দায়ী করা চলবেনা মোটেই ।ধন্যবাদ। ।
ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে বাঙগালি সংস্কৃতির সাদৃশ্য, প্রেক্ষিত এবং কিছু জিজ্ঞাসা
ভারত, দক্ষিন এশিয়া ত বটেই পুরো পৃথিবীর প্রেক্ষাপটেই একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ দেশ।অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অবস্থানগত যেকোনো দিক থেকেই ভারতের উত্থান বেশ ভালোভাবেই লক্ষনীয় এবং তা শুধুই উর্দ্ধগামি। দেশটি যে আর কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বের পরাশক্তি গুলোর মাঝে নিজেকে শামিল করবে সে কথা আর নতুন করে বলার মতন কিছু নেই। আর সৌভাগ্যবশত আমরা এই দেশটির খুবই নিকটতম প্রতিবেশী।আরেকটি যেটি কারন, যার জন্য ভারত আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হল ভারত আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সর্বাত্মক সহযোগীতা করেছিল, যা আমরা কখনই ভুলতে পারিনা আর এর বিনিময় স্বরুপ উঠতে বসতে প্রায়সময়ই আমাদের রাজনৈতিক নেতাকর্মী দের এই অভূতপূর্ব কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে দেখা যায় অবনত মস্তকে, চাই সেটা যে দল ই হোক না কেন।
প্রতিবেশি দেশের কিছুটা হলেও প্রভাব তো প্রতিবেশির উপর পড়বেই,সেটাই ত স্বাভাবিক।এবং তার ই ফলস্বরুপ ভারতীয় সিরিয়াল,পাখি ড্রেস,চেন্নাই এক্সপ্রেস শাড়ি, বলিউড এসবের জয়জয়কার তাদের দেশের তুলনায় আমার দেশেই বেশি। আমার এই কথাটা ভিত্তিহীন মনে হলেও পুরোপুরিভাবে উড়িয়ে দেয়াই যাবে না বৈকি।তারপর আমাদের দেশের মানুষ যে সংস্কৃতিগত দিক থেকে তাদের উপর কতটা নির্ভরশীল সেটা তো চারপাশে তাকালেই বোঝা যায়।আর সবচেয়ে বেশি মজা লাগে তখন ই যখন অমুক লেখক,তমুক সাহিত্যিক আর লেখকেরা বলে বেড়ান যে ভারতের সাথে সংস্কৃতিগত মিল আমাদের মজ্জাগত ভাবেই।এমনকি একজন সস্বনামধন্যা লেখিকা তো এইরুপ ও বলেছেন যে আজকালকার মেয়েরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে দুরে সরে গিয়ে তথাকথিত ইসলামিক কালচার তথা বেশভুশার ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহন করছে।তিনি হিজাব পরিধান করাটাকে সরাসরি বিজাতীয় কালচার হিসেবে বর্ননা করেছেন। (!) যাই হউক, উনার বক্তব্য খন্ডন করার মতন মহানুভবতা আমার নেই আর নিজেদের সংস্কৃতিকে ভারতীয় সংস্কৃতির যোগ্য উত্তরাধিকার বা দাবীদার হিসেবে বলতেও আমার দ্বিধা থাকতোনা যদি না তাদের মধ্যকার কিছু ভয়ানক ত সংগতি আমার চোখে না এসে পরত। এই যেমন ভারতে চলন্ত বাস এ নির্ভয়া নামক মেয়েটি গনধর্ষনের শিকার হল। আর নির্লজ্জভাবে সেটারই অনুকরণ করা হল কিছুদিন পরেই বাংলাদেশে একটা মেয়েকে ট্রাক এ গনধর্ষন করে। কি প্রমান করতে চাইলাম আমরা যে আমরাই তাদের প্রকৃত উত্তরসূরি? ফিল্ম ইন্ড্রাস্টির মতন একটা মোটামুটি সম্মানজনক স্থানে যারা কিনা একজন কুখ্যাত পর্নস্টার কে দ্বিধাহীনভাবে উপুর্যুপুরি ব্যবহার করে,তাদেরকেই কিনা আমরা আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করি আর তাদের বানানো ফিল্ম শতশত কোটি টাকা দিয়ে আমদানি করি আর তাদের বানান কোটি টাকার মুনাফার কর্পোরেট বানিজ্যে নিজেদের জড়িয়ে ফেলি আর প্রতারিত হই তাদেরই সাহারা,বাজাজ এইসব কোম্পানির কাছে। আমাদের নিয়তি কে বেধে দিয়েছি তাদের ইচ্ছা আর অনিচ্ছার দোলাচালে, আর তাই তো কখনও সীমান্তপথে ঘটিত হত্যাকান্ড গুলোর হয়নি কখনো সুরাহা বা বিচার, রামপাল আর টিপাইমুখি বাধের নিরন্কুশ যাতনা মাথা পেতে নিই,আর তাদের কে দিয়ে দেই আমারই দেশের মাটির উপর দিয়ে অগাথ ট্রানজিট সুবিধা,হাতে তুলে পাইয়ে দেই সেই অধরা বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল, যার স্পষ্ট দাবিদার ছিলাম কেবলি আমরা.... শুধু ১টি স্বাধীনতার সাহায্যের বিনিময়ে।মাঝে মাঝে মন টা বলে স্বাধীনতার মুল্য কি এতই কম? এতই সহজলভ্য একটা দেশের স্বাধীনতা? ৩০ লাখ শহিদের রক্তের মুল্য টা কি এতই কম ছিল? যে মোদির মতন একটা হিংস্র খুনি, একটা আজন্মা শত্রু কে যে কিনা সরাসরি নিরীহ মানুষকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত তাকে এইভাবে দেশে ডেকে এনে দেশের মাটিতে সংবর্ধনা দিই। মাথায় ঢোকেনা কিছুই। আসলেই হয়তবা আমাদের আত্মসম্মানবোধেই ঘাটতি রয়েছে।
পুনশ্চ :শুনলাম ভারতের এইবারকার স্বরাস্ট্রমন্ত্রী মহোদয় বলেছেন,যে করেই হোক বাংলাদেশের মানুষকে গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত রাখতেই হবে। প্রয়োজনে গরু রপ্তানিকরণ একদম বন্ধ করে দেবেন, তাতে যদি গরুমাতা কে আমরণ পালতে গিয়ে তাদের রপ্তানিকৃত আয়ের তুলনায় ৩০০ গুন বেশি ব্যয়ও হয়ে যায় তাতেও তাদের কোন কষ্ট নেই। এরকম প্রতিবেশি সুলভ আচরনের নজির কোন যুগে পাওয়া গেছিল কিনা তা ঠিক আমার জানা নেই। তাও যেখানে প্রতিবেশি কে এতটা নিকটাত্মীয় (!) ভাবা হয়। তবে তাতেও নেতাকর্মী দের কোন রা নেই। দেশটার নাম ভারত তো বুঝতে হবে।যত তাদের ক্রিপাধন্য হওয়া যাবে, ততই তো রাজনীতির আসনটি আরও পাকাপোক্ত হবে।এই দুয়ের মধ্যে একটা সহজ সমানুপাতিক সুত্র আছে কিনা।
ফেসবুক এ কিছুদিন আগে বেশ তাৎপর্যবাহী একটা পোস্ট দেখেছিলাম, আপনাদের সাথে শেয়ার করি। পোস্ট টা বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতের হেরে যাবার পরের সময়কার।এটা ছিল এমন,
"ভারতে নারীরা সুরক্ষিত নয়,এমনকি ক্রিকেটাররাও নয়। তবে যে জিনিসটা অতিমাত্রায় নিরাপদ তা হল গরু।"
সমাপ্তি
©somewhere in net ltd.