![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সাধারণ একজন মানুষ, সবসময় সত্য কে খোঁজার চেষ্টায় রত থাকি।সত্য বলতেও দ্বিধা করিনা, সত্য মানতেও বিলম্ব করিনা এবং লেখার গঠনমুলক সমালোচনা পছন্দ করি।আমার লেখা পড়ে কারো গায়ে জ্বালাপোড়া ধরলে সেজন্য আমাকে দায়ী করা চলবেনা মোটেই ।ধন্যবাদ। ।
এই যে পশ্চিমা বিশ্বের হঠাৎ করেই উন্নতি আর অগ্রগতির
শীর্ষে আরোহণ করা এবং দর্শন, রাজনীতি আর অর্থনীতির
ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয়া মুসলিম বিশ্বের জন্য এক বড় দুর্ঘটনা
থেকে কম ছিল না।আর মুসলিম বিশ্ব তখন এই আকস্মিকতা ও
তিক্ত বাস্তবতা কে উপলব্ধি করতে সক্ষম ছিলনা বিধায় আর
এই বিপদ কে সঠিকভাবে মুল্যায়ন করতে না পারার ফলে
সুদীর্ঘকাল ধরে স্বপ্নে বিভোর ছিল। এর ফলে তারা পশ্চিমা
বিশ্ব হতে তুফানের বেগে আগত ঐসকল দর্শন,সভ্যতা,গবেষণা
ইত্যাদির প্রতি দৃষ্টিপাত করতে ব্যর্থ হয়।এরপর যখন এ তুফান
একেবারে মাথার উপর এসে পড়ল আর মুসলিমদের নেতৃত্ব ও
খেলাফত তাদের হাত থেকে চলে যেতে লাগল তখন তারা
বুঝতে সক্ষম হল যে এই তুফান থেকে বাচার জন্য মাত্র ২ টি পথ
খোলা রয়েছে। প্রথম পথ হল একজন তোষামোদ কারী বা
একান্ত অনুগত ও বাধ্যগত ছাত্রদের রাস্তা। আর দ্বিতীয় পথ হল
একজন দুশমন, পরাজিত ও পতিত সৈনিকের মত,যে সর্বদা
প্রতিশোধ এর আগুনে জ্বলছে আর প্রতিশোধ গ্রহন ছাড়া তার
জিবন তিক্ত ও বিষাদ হয়ে আছে।
এ দুটি পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্যই যেন মুসলিম বিশ্ব নিজেদের
কে প্রস্তুত করে রেখেছিল।
১ম পথ অবলম্বনকারী দের বিশ্লেষণ করলে আমরা পাই যে
তাদের মানসিকতা,চিন্তা চেতনা ইত্যাদি খুব ই সাধারন
ধাচের।তারা এর আগে অগ্রসর হতে অক্ষম।আসলে সোজা
বাংলায় বললে এরকম দাড়ায়, তারা নিজেদের কে পশ্চিমা
বিশ্বের কাছে একদম বলিদান করে দিয়েছে আর নিজেদের
অন্তর কে হিনমন্যতা দিয়ে একেবারে পরিপূর্ণ করে রেখেছে।
যেন মুসলিম বিশ্বের তথা প্রাচ্যের উপর পশ্চিমের কর্তত্ব
আল্লাহর বিধান। তাদের সকল কথায় জ্বী হুজুর না বললে যেন
তাদের পেটের ভাত ই হজম হয় না। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল
এই যে পশ্চিমাদের এরকম ভাবে অন্ধ অনুকরন করার মাধ্যমে
তারা তেমন কোন শিল্প ও টেকনোলজিগত অগ্রগতি লাভ
করতে পারেনি, বরং শিখেছে কিভাবে নিজেদের প্রতিবেশী
ভাইদের সাথে অন্তর্দ্বন্দে লিপ্ত থাকা যায়,আর এই মানসিক
গোলামী কে কি করে পুর্ণতা দেয়া যায়।
আমি কাদের বিষয়ে বলছি তা হয়ত পাঠকেরা ইতিমধ্যে ধরে
ফেলেছেন। আসলে পশ্চিমা লেজুড়বৃত্তি তে এদের যেমন জুড়ি
নেই, ঠিক তেমনি নিজের আপন ভাই এর সাথে চরম থেকে চরম
মাত্রার বিশাসঘাতকতা করতেও এদের সময় লাগেনা।
আর দ্বিতীয় পথ অবলম্বনকারীরা এই প্রথম অবস্থা গ্রহনকারী
দের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তারা পশ্চিমা বিশ্বের ব্যাপারে
অত্যন্ত হিংসাত্মক দৃষ্টিভংগি রাখে।পশ্চিমাদের এই কতৃর্ত্ব
তাদের মাঝে সীমাহীন ক্রোধ আর মনোবেদনার জন্ম দেয়।আর
এর প্রতিকারে তারা সবধরনের সশস্ত্র বিপ্লব,সর্বোচ্চ
প্রচেষ্টা, এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত।অথচ মজার বিষয় হল,
তারা পশ্চিমাদের শক্তির রহস্য,গোপন বিষয়াদি, তাদের
দুর্বলতা আর শক্তির উৎসসমূহ ভালভাবে বুঝতে আগ্রহী নয়।
তারা কিছুতেই জ্ঞান বিজ্ঞান, শিল্প, সামরিক
ক্ষেত্র,শিক্ষা দীক্ষা ইত্যাদি কোনোকিছু ই গ্রহন করে
নিজেদের সমৃদ্ধ করতে নারাজ, যেখানে তারা এসকল ক্ষেত্রে
সম্পুর্ণ রিক্তহস্ত। তারা শুধুই জানে হিংসাকে অন্তরে পুষে
রাখতে আর ঘৃণা করতে। আর এইভাবে নিরর্থক যুদ্ধ ঘোষনার
মাধ্যমে তারা যাচ্ছেতাই ভাবে পশ্চিমাদের নগ্ন শিকারে
পরিনত হচ্ছে অথবা তাদের বিষাক্ত আর শ্লেষপুর্ণ ছুড়ির
আঘাতে নির্মম ভাবে নিহত হচ্ছে।কাদের কথা বলছি তা আশা
করি পাঠকেরা বুঝতেই পারছেন।নতুন করে বলার মত কিছু নেই
আসলে।
আজকে মুসলিম বিশ্ব সত্যিকার অর্থেই হয়তোবা এই ২টি ভাগে
বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এইভাবে কি আসলে মুসলমানরা কিংবা
ধরি প্রাচ্যই কি কখনো তাদের হারানো সমৃদ্ধি কিংবা
নেতৃত্ব ফিরে পেতে সক্ষম হবে? আমার তো মনে হয়, ২ পন্থার
একটিও সঠিক নয়। পবিত্র আল কোরআনে কিন্তু সর্বদাই
মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।এমনকি রাসুল (স) ও তার
উম্মাতদেরকে সরল এবং মধ্যপন্থা গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ
করেছিলেন।
এই দুর্দিনে এমন এক তৃতীয় পক্ষ অবলম্বনকারী দরকার যারা
'ভাল যা তা আকড়ে ধর, খারাপ যা তা পরিহার কর' এই
মুলনীতিতে বিশ্বাসী।আর আমাদের বুঝতে হবে যে এই
শিল্প,বিজ্ঞান, গবেষণা, টেকনোলোজি ইত্যাদি কারো
একচ্ছত্র সম্পত্তি নয়।বরং এতে গোটা বিশ্বমানবতার জন্য
অধিকার সংরক্ষিত আছে।তাই বলে এটা নয় যে এই পক্ষকে
পশ্চিমাদের সভ্যতা,আচার,কালচার ও সমাজ ব্যবস্থা গ্রহন
করতে হবে, বরং এই ক্ষেত্রে প্রাচ্য তথা ইসলামিক সমাজ
ব্যবস্থা আরও বেশি রুচিশীলতার পরিচয় দেয়। আমাদের নীতি -
নৈতিকতা তাদের থেকে ঢেড় গুনে ভাল।
সত্যিই বর্তমান দুনিয়ায় এই তৃতীয় পক্ষের নিজ নিজ ভূমিকায়
অবতীর্ণ হওয়া এখন সময়ের দাবীমাত্র। মুসলিম বিশ্বের ঘুরে
দাড়ানোর সময় এসে গেছে,নিজেদের গুরুত্ব উপলব্ধি করার সময়
এসে গেছে। এখনি প্রকৃত সময় মধ্যযুগীয় বর্বরতা ত্যাগ করে
সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার ও তা বাস্তবায়ন করার।নয়তো
এ ধরায় বিশ্বমানবতার পতন অনিবার্য।
©somewhere in net ltd.