নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"অলিখিত বিজ্ঞান\" একটি বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণা ও লেখালেখির ব্লগ। সাধারণত বাংলা ভাষার পাঠক, যারা বিশেষত বিজ্ঞান বিষয়ের প্রতি আগ্রহী ও নিত্য নতুন অজানা বিষয় যেমন- গ্রহ, নক্ষত্র- প্রকৃতি, পৃথিবীর জলবায়ূ আর জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট দৈনন্দিন বিজ্ঞানের

অলিখিত বিজ্ঞান

ফ্রীল্যান্স ব্লগ লেখক

অলিখিত বিজ্ঞান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"পৃথিবী এবং তার ভবিষ্যত"

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৩

এই বিশালায়তন মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্রহ-নক্ষত্রের মাঝে একমাত্র প্রান চাঞ্চল্যে ভরপুর প্রানবন্ত একটি গ্রহের নাম পৃথিবী। যেখানে অজস্র সংখ্যক প্রানীর মাঝে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য আর অত্যাশ্চর্য প্রানী- যার নাম মানুষ। কতই না সুন্দর আমাদের এই পৃথিবী! আমরা মানুষেরা প্রত্যেকে জন্মগতভাবে পৃথিবীতে বসবাস করি। পৃথিবীতে দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত করে আবার পৃথিবীতেই মৃত্যু বরণ করি। অর্থাৎ পৃথিবীর সাথে সত্যিকার অর্থেই আমাদের জীবন-মরণের সম্পর্ক। অথচ এই পৃথিবীতে বসবাসকারী আমরা পৃথিবী সম্পর্কে কতটুকু জানি? একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলেই দেখা যায় আসলেই আমরা তেমন কিছুই জানিনা। কিন্তু যে গ্রহে আমি জন্ম নিয়েছি, জন্ম নিয়েছে আমার পূর্বসূরী সত্ত্বা "হোমোস্যাপিয়েন্স", যে গ্রহের অক্সিজেন প্রতিটি মুহূর্তে ভর্তি করে দিচ্ছে আমার ফুসফুস, যে গ্রহের মাটিতে জন্ম নেওয়া ফসলাদি আমাকে জোগাচ্ছে বেঁচে থাকার মৌলিক উপাদান খাদ্য, যে গ্রহের ওজোন স্তর সর্বসময়ের জন্য অতন্দ্র প্রহরীর মত আগলে রেখেছে আমাদের সূর্যের অত্যন্ত ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে- সেই পৃথিবী সম্পর্কে বলতে গেলে আমাদের খুব বেশি আগ্রহ নেই। কী অদ্ভূত এক প্রানী আমরা!! এখানে জন্ম নেবার পর থেকে কিভাবে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারি এটাই যেন আমাদের মুল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা কিনা নিম্নস্তরের কোন প্রানীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আসুন আমরা অন্তত সামান্য কিছুটা হলেও জানি এই পৃথিবী সম্পর্কে। যে গ্রহটি তার পৃষ্ঠে আগলে রেখেছে আমাদের, তাকে রক্ষায় সচেষ্ট হই। প্রাণপন প্রচেষ্টা করি তাকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে। তবেই না আমরা এই পৃথিবীর সৃষ্টির সেরা !!!

পৃথিবী সম্পর্কে সাধারণ কিছু তথ্যঃ
পৃথিবী সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী তৃতীয়, সর্বাপেক্ষা অধিক ঘনত্বযুক্ত এবং সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ। এটি সৌরজগতের চারটি কঠিন গ্রহের অন্যতম। পৃথিবী হল মানুষ সহ কোটি কোটি প্রজাতির আবাসস্থল । পৃথিবীই একমাত্র মহাজাগতিক স্থান যেখানে প্রাণের অস্তিত্বের কথা বিদিত। ৪৫৪ কোটি বছর আগে পৃথিবী গঠিত হয়েছিল। এক বিলিয়ন বছরের মধ্যেই পৃথিবীর বুকে প্রাণের আবির্ভাব ঘটে। পৃথিবীর জৈবমণ্ডল এই গ্রহের বায়ুমণ্ডল ও অন্যান্য অজৈবিক অবস্থাগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। এর ফলে একদিকে যেমন বায়ুজীবী জীবজগতের বংশবৃদ্ধি ঘটেছে, অন্যদিকে তেমনি ওজোন স্তর গঠিত হয়েছে। পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে একযোগে এই ওজোন স্তরই ক্ষতিকর সৌর বিকিরণের গতিরোধ করে গ্রহের বুকে প্রাণের বিকাশ ঘটার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছে। পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদ ও এর ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস এবং কক্ষপথ এই যুগে প্রাণের অস্তিত্ব রক্ষায় সহায়ক হয়েছে। বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা ও গবেষণায় ধারণা করা হচ্ছে, আরও ৫০ কোটি বছর পৃথিবী প্রাণধারণের সহায়ক অবস্থায় থাকবে।
পৃথিবীর উপরিতল একাধিক শক্ত স্তরে বিভক্ত। এগুলিকে টেকটনিক প্লেট বলা হয়। কোটি কোটি বছর ধরে এগুলি পৃথিবীর উপরিতলে এসে জমা হয়েছে। পৃথিবীতলের প্রায় ৭১% লবণাক্ত জলের মহাসাগর দ্বারা আবৃত। অবশিষ্টাংশ গঠিত হয়েছে মহাদেশ ও অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে। স্থলভাগেও রয়েছে অজস্র হ্রদ ও জলের অন্যান্য উৎস। এগুলি নিয়েই গঠিত হয়েছে বিশ্বের জলভাগ। জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় তরল জল এই গ্রহের ভূত্বকের কোথাও সমভার অবস্থায় পাওয়া যায় না। পৃথিবীর মেরুদ্বয় সর্বদা কঠিন বরফ (অ্যান্টার্কটিক বরফ) বা সামুদ্রিক বরফে (আর্কটিক) আবৃত থাকে। পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ সর্বদা ক্রিয়াশীল। এই অংশ গঠিত হয়েছে একটি আপেক্ষিকভাবে শক্ত ম্যান্টেলের মোটা স্তর, একটি তরল বহিঃকেন্দ্র (যা একটি চৌম্বকক্ষেত্র গঠন করে) এবং একটি শক্ত লৌহ অন্তঃকেন্দ্র নিয়ে গঠিত। ৩.৮ বিলিয়ন থেকে ৪.১ বিলিয়ন বছরের মধ্যবর্তী সময়ে পরবর্তী মহাসংঘর্ষের সময় একাধিক গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষে গ্রহের উপরিতলের পরিবেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল।
পৃথিবী দেখতে পুরোপুরি গোলাকার নয়, বরং কমলালেবুর মত উপর ও নিচের দিকে কিছুটা চাপা এবং মধ্যভাগ (নিরক্ষরেখার কাছাকাছি) স্ফীত। এ'ধরণের স্ফীতি তৈরি হয়েছে নিজ অক্ষকে কেন্দ্র করে এর ঘূর্ণনের কারণে। একই কারণে বিষুব অঞ্চলীয় ব্যাস মেরু অঞ্চলীয় ব্যাসের তুলনায় প্রায় ৪৩ কিমি. বেশি। পৃথিবীর ভর প্রায় ৫.৯৮×১০২৪ কিগ্রাঃ। এর প্রায় ৩২.১% লৌহ, ৩০.১% অক্সিজেন, ১৫.১% সিলিকন, ১৩.৯% ম্যাগনেসিয়াম, ২.৯% সালফার, ১.৮% নিকেল, ১.৪% অ্যালুমিনিয়াম এবং বাকী ১.২% অন্যান্য পদার্থ দ্বারা গঠিত। তবে পৃথিবীর কেন্দ্রভাগের গঠন কিছুটা ভিন্ন; এর প্রায় ৮৮.৮% ভাগই লৌহ। এছাড়া আছে নিকেল (৫.৮%) ও সালফার (৪.৫%)। পৃথিবীর কেন্দ্র অত্যন্ত উত্তপ্ত কঠিন পদার্থ দ্বারা গঠিত। শুনলে অবাক হবার মতই যে পৃথিবীর কেন্দ্রের নিরেট অংশের গড় তাপমাত্রা প্রায় সূর্যপৃষ্ঠের সমান। যে অংশ স্বয়ংক্রিয় ভাবে থার্মোনিউক্লিয়ার পদ্ধতিতে শক্তি উৎপন্নের মাধ্যমে পৃথিবীর ঘূর্ণনকে তরান্বিত করে এবং চারিপাশে অত্যন্ত শক্তিশালী এক মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সৃষ্টি করে। (লিখেছেন- কৃষ্ণেন্দু দাস)
(প্রথম পর্ব সমাপ্ত)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.