নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রহস্যপূর্ন ভবঘুরে

লিখতে হয় তাই লিখছি। বিবেক প্রস্ফুটিত হোক, শৃংখলে আবদ্ধ নয়।

রহস্যপূর্ন ভবঘুরে › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিকশা ও মামার বিবর্তন।।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫০

নিউমার্কেট থেকে বকসি বাজার যাব।

এই যে ভাই, যাবেন?

কই যাইবেন মামা?

বকসি বাজার।

হ যামু, উঠেন মামা।

কি মামা মামা করতেছেন! কে মামা?

আপনেরে কইছি।

আমি কি আপনার মামা হই?

না, মানে এখন তো আমাগোরে সবাই মামা ডাকে। তাই আমরাও আপনাদের মামা ডাকি।

না, ডাকবেন না।

শোনেন, সমস্ত মুসলমান ভাই ভাই। সমস্ত মুসলমান মামা মামা না।



তবে এখন কেন জানি সবাই শুধু এই রিকশা চালকদেরকেই মামা ডাকে না, চা দোকানদার, পান দোকানদার থেকে শুরু কইরা প্রায় সব দোকানদার, ড্রাইভার, কনট্রাক্টর সবাই ওদের কাছে মামা হয়ে গেছে। আজকাল এক বন্ধু আরেক বন্ধুরেও দেখি মামা ডাকে!

ওরা বলে এই মামা একটা সিগারেট দেন তো। যেন তার মামা সিগারেট দোকানদার।

এই মামা ভাড়া রাখেন। যেন তার মামা বাসের কনট্রাক্টর।

এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে বলে এই মামা আজকে ক্লাসে কি পড়াইছে রে? যেন সে তার মামার সাথে পড়ে। মোট কথা এই মামা শব্দটির একেবারে যা তা অবস্থা।



আমার মামা আমান সাহেব NSU’ র টিচার। হ্যাংলা পাতলা শরীর। ইকোনোমিক্স পড়ান উনি। একদিন আমি মামার সাথে দেখা করতে NSU তে গেলাম। লাঞ্চ টাইমে মামা উনার সহশিক্ষকদের সাথে বসে আছেন রিসিপশন রুমে। আমি সেখানে গিয়ে মামাকে বললাম, মামা আমাকে একটু ক্যান্টিন টা দেখিয়ে দিবেন? খুব ক্ষিদা লাগছে।

আমার এই কথা শুনার পর রিসিপশন রুমের সবাই হো হো করে হেসে উঠল।

ওরা ভেবেছে যে, আমি আমান সাহেবকে (আমার মামাকে) কোন কর্মচারী মনে করেছি।

কী এক বিব্রতকর অবস্থা!

সেখান থেকেই আমি কারো সামনে মামাকে আংকেল নামে ডাকি। কারন মামার জায়গায় ইংরেজী শব্দ আংকেল ডাকলে ওই যা তা মামার মত শুনায় না। অরজিনাল মামা ছাড়া আর যাদেরকে অন্য সবাই মামা ডাকে আমি তাদেরকে ভাই ডাকি।



এতক্ষন রিকশাচালক ভাই এর সাথে মামা সংক্রান্ত কথাবার্তার পর ওই রিকশায় উঠলাম। রিকশায় উঠতেই এ কি! রিকশা দেখি মোটরসাইকেলের মত চলছে, আর কেমন জানি মোটরের আওয়াজ। ইদানিং ঢাকার কিছু রিকশাতে মোটর যুক্ত হচ্ছে। এই ধরনের রিকশায় প্রথম উঠেছি আজ। যান্ত্রিকতা আমাদের চিন্তা চেতনাকেও যান্ত্রিক করে দিচ্ছে। কোন জায়গায় কি যন্ত্র লাগানো যায় সেইটা নিয়েই ভাবছে সবাই। এই রিকশা চালাতে পায়ের কোন কাজ নেই। দুই পা সামনে উঠিয়ে দিয়ে বসে থাকলেই হল। একটি সুইচ টিপলে মোটরসাইকেলের মত ছুটে।



আমি রিকশার এই বিরর্তন দেখতে দেখতেই প্রচন্ড বেগে ব্রেক। রিকশাচালক উড়ে গিয়ে পড়ল একটা সাদা মাইক্রো’র উপর। তার উপর আমি।। কি আর করা। বাধল রিকশাচালক মাইক্রোওয়ালার বাগযুদ্ধ। আমি কোনমতে উঠে আস্তে আস্তে বাসার দিকে হাটতে লাগলাম। ব্যাথা একটু পাইছি তয় আপনাগো কমু না। শরমের কথা। এমনিতেই ওই মাইক্রো’র উপর যেভাবে উড়াল মারছি সেটা দেখে রাস্তার পাশে থাকা কিছু মেয়ে খিল খিল করে হেসে উঠেছে। এইটার মধ্যে হাসার কি পেল ওরা আমি বুঝলাম না। পারলে কাছে এসে টেনে ধরে উঠা। যেভাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী রিকশার বিবর্তন ঘটছে কয়েক দিন পর দেখা যাবে হেলমেট পরে রিকশা চালানো বাধ্যতামূলক করে জাতীয় সংসদে একটি আইন পাস হয়েছে।



ভাই, তোরা মামাকে মামার মত থাকতে দে, রিকশাকে সেই আগের মত।। কিছু কিছু যায়গায় অতি আধুনিকতা দেখানোর দরকার নেই।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০১

অজয় বলেছেন: ভাই হাসুম না কান্দুম বুঝতাসিনা

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:০৫

দূষ্ট বালক বলেছেন: মামা এত অল্পতেই রেগে উঠলে কেমনে হবে?

৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৪

সুমন কর বলেছেন: আমিও বুঝতে পারছি না, হাসুম/কাঁদুম! !:#P তবে ঐ মোটরসাইকেলের ন্যায় রিকশায় না উঠাই ভাল। আমি উঠি না। ব্রেক কাজ করে না, উল্টায় যায়......... X(( X((

৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৮

গোবর গণেশ বলেছেন: অত্যন্ত বিরক্তিকর আর শ্রুতি কটু। বাংলালিংক এর একটা বিজ্ঞাপনে দেখি বন্ধুকে মামা ডাকছে আরেক বন্ধু, এই শুনে মা ভাবলো তার ভাই। এত জঘন্য অধঃপতন, ছি। মামা আর বন্ধু কি করে এক হয়। আদর করে কাকাকে মামা বা মামাকে কাকা ডাকতে পারে। তাই বলে ভাই বা বন্ধুকে কি করে মামা ডাকা যায়। দুটি সম্পর্কে আকাশ পাতাল ফাড়াক। থাপড়াইতে ইচ্ছা করে যখন আধুনিকতার নামে এ ধরনের অসঙ্গতিপূর্ণ আর ফালতু কার্যকলাপ দেখি। থুথু এ জাতীয় আধুনিকতাকে। প্যান্ট খুলে পড়ে যাচ্ছে, জীবনে কোনদিন সেলুনে যায়না, নখ কাটেনা, বাংলায় উচ্চারন পর্যন্ত করতে পারে না। লাথি মারি, গুষ্ঠি কিলাই এই আধুনিকতার। অসভ্য, বর্বর আর জংলীদের দ্বারাই এগুলি সম্ভব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.