নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পর্কে: https://t.ly/atJCp এছাড়া, বইটই-এ: https://boitoi.com.bd/author/2548/&

দারাশিকো

লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি

দারাশিকো › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাগলা মসজিদ ও কোটি টাকার দানের তাৎপর্য

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১৭



কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদ এখন প্রতি তিন মাস অন্তর দানকৃত অর্থের রেকর্ড সৃষ্টি করে টিভি-পত্রিকার শিরোনাম হচ্ছে। এই পাগলা মসজিদে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি অর্থ দান করা হয়। দানকৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা ও পয়সা, বিভিন্ন দেশীয় মুদ্রা এবং স্বর্ণ ও রৌপ্যের অলংকার। সিন্দুক থেকে দানকৃত সম্পদ বস্তায় সংগ্রহ করে শত শত মানুষের সহযোগিতায় স্থানীয় প্রশাসন, সাংবাদিক, ক্যামেরার উপস্থিতিতে দানের অর্থ গণনা করা হয় যার পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা।

পাগলা মসজিদের ইতিহাস
পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত। প্রায় সাড়ে তিন একর জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত তিনতলা বিশিষ্ট পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সের বয়স আড়াইশ বছরের বেশি বলে দাবী করা হয়। তবে প্রাচীন সেই মসজিদের কোন চিহ্নই বর্তমানে সেখানে নেই। মসজিদ কমপ্লেক্সের মূল ভবনে তিনটি গম্বুজ এবং পাঁচ তলা উচ্চতার একটি মিনার রয়েছে যেগুলো এই শতাব্দীতেই নির্মিত হয়েছে।

পাগলা মসজিদের নির্মাণ ও নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের গল্প প্রচলিত আছে। এইসব গল্পের কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই এবং কোন ইতিহাস গবেষক গ্রহণযোগ্য কোন সূত্রের উল্লেখ করেছেন বলেও জানতে পারিনি। এইসব গল্পকে মজবুত করার লক্ষ্যে ঐতিহাসিক চরিত্র ঈসা খানের নাম জড়িয়েও একটি গল্প প্রচলিত আছে। হয়বতনগর জমিদারবাড়ির ঈসা খানের বংশধর জিল কদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা সাহেব নামের এক আধ্যাত্মিক ব্যক্তি এখানে নামাজ পড়াতেন এবং তার নামানুসারে এই মসজিদের নামকরণ করা হয় – এটি একটি গল্প।

অন্যান্য গল্পের মধ্যে আছে হয়বতনগরের জমিদারবাড়ির এক নিঃসন্তান বেগম, যিনি পাগলা বিবি নামে পরিচিত ছিলেন, স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে যে মসজিদ নির্মাণ করেন সেটিই পাগলা মসজিদ। পাগলা মসজিদকে বিশেষায়িত করার লক্ষ্যে একটি অবাস্তব গল্পও প্রচলিত আছে। জনৈক পাগলা সাহেব খরস্রোতা নরসুন্দা নদীতে মাদুর পেতে ভেসে এসেছিলেন। তীরে নামার পর তার আশে পাশে ভক্তকূলের সমাবেশ হলে দেওয়ান পরিবারের পক্ষ থেকে টিলার মাঝখানে একটি মসজিদ তৈরি করে দেয়া হয়। সেটিই আজকের পাগলা মসজিদ।

পাগলা মসজিদের নির্মাণ কাল এবং প্রচলিত গল্পের ভিত্তিতেই সম্ভবত এই মসজিদের বয়স আড়াইশ বছর বলে ধরে নেয়া হয়। যেহেতু মসজিদটি বর্তমানে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ হয়ে উঠেছে, সেহেতু এই মসজিদের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। প্রত্নতাত্ত্বিক কোন নিদর্শন না থাকায় এই অঞ্চলের প্রশাসনিক নথিপত্র ঘেঁটে কিছু উদ্ধার করা যায় কিনা সেই চেষ্টা করা উচিত। বিশেষ করে – ব্রিটিশ শাসকদের নথিতে এই মসজিদের প্রতিষ্ঠা বা উত্থান সম্পর্কে কিছু পাওয়া গেলে ইতিহাস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যেতো। জমিদারবাড়ির কোন নথিপত্র-জীবনী ইত্যাদি সংরক্ষিত থাকলে সেখানেও খোঁজ করা উচিত। সত্যিকারের ইতিহাসপ্রেমী কোন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তার অনার্স-মাস্টার্সের থিসিস হিসেবে পাগলা মসজিদকে বাছাই করলে সঠিক ইতিহাস তুলে আনার মাধ্যমে দেশ ও দশের উপকার করা যাবে।

কেরামতি
পাগলা মসজিদের জনপ্রিয়তার পেছনে প্রচলিত একমাত্র কেরামতি হলো এর বড় অংকের দানকৃত অর্থ। ভক্তদের দানের পরিমাণ সম্মিলিতভাবে কোটি টাকা ছুঁলে সংবাদের শিরোনাম হয় এবং এর ক্ষমতা সম্পর্কে সকলে জানতে পারে। এরপর দানের পরিমাণ বাড়ে এবং এই দানকৃত অর্থই এর মূল কেরামতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পাগলা মসজিদে দান করলে নিশ্চয়ই উপকার পাওয়া যায়, নাহয় অন্যরা কেন নগদ টাকা-গয়নাগাটি দানবাক্সে ফেলে – এই ধারণার উপর নির্ভর করে আরও মানুষ দান করতে উৎসাহী হয় – বিধর্মীরাও আগ্রহী হয়ে যোগ দেয়। আগেরবারে দানবাক্সে ফেলা অর্থের কারণে বিপদ কেটে গেছে কিংবা দানের অর্থ কম হয়ে গেছে বলে বালা-মসিবত দূর হয় নাই – এই ধারণা থেকেও বহু মানুষ বারংবার দান করে যাচ্ছে নিশ্চিত। যেহেতু পাগলা মসজিদ শুধু না, যে কোন মসজিদেই অর্থকড়ি দান করার ফলাফল অপরিমেয়, সেহেতু পাগলা মসজিদে দান করার কারণে যদি কারও বিশ্বাস মজবুত হয়, অথবা দুর্বল, তাহলে তাকে দোষ দেয়া যায় না।

পাগলা মসজিদের কেরামতি দিনকে দিন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এবং প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক মিডিয়া। এই অঞ্চলে মাজারে এবং মসজিদে দানের ইতিহাস শত শত বছরের পুরাতন। মানত পূরণের জন্য এবং বার্ষিক ওরশ আয়োজনের জন্য ভক্তদের কাছ থেকে নিয়মিত দান-খয়রাত গ্রহণ করে এমন মাজার-মসজিদের সংখ্যা হয়তো লাখের ঘরে পৌঁছুবে। কিন্তু কে কবে জানতে পেরেছে – হযরত শাহজালাল (রহ) এর মাজার কিংবা চট্টগ্রামের মাইজভান্ডার শরীফ অথবা সাবেক সরকারপ্রধান এরশাদের প্রিয় আটরশির পীরের বার্ষিক দানের পরিমাণ কত? পাগলা মসজিদের আগে কোন মাজার বা মসজিদের দানের অর্থ গণনার সময় স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা করেছে?

এ প্রসঙ্গে একটি শোনা গল্প বয়ান করা যাক। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ নাকি একবার ঘোষনা দিয়েছিলেন – মাজারে ভক্তদের দানের টাকার হিসাব নিয়মিতভাবে সরকারকে জানাতে হবে। মাজার কর্তৃপক্ষই সেই অর্থ ব্যয় করতে পারবে, কেবল আয়-ব্যয়ের হিসাবটুকু সরকারকে দিতে হবে। শোনা যায় এই সিদ্ধান্ত মাজার পরিচালনাকারীদের ব্যাপক রাগান্বিত করে। সে সময় এরশাদ বিরোধী আন্দোলন জোরদার হচ্ছিল। এরশাদ সরকারের এমন ঘোষণায় তারাও স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

এই গল্প বয়ানের উদ্দেশ্য হলো – পাগলা মসজিদে নির্দিষ্ট সময় পর পর কত টাকা জমা হলো সেই তথ্য মিডিয়ার কল্যাণে আমরা নিয়মিতভাবে জানতে পারলেও সারা দেশের বাকী শত শত মাজারের আয় ব্যয়ের কোন তথ্য আমরা জানি না। তবে বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন মাজারের লক্ষ-কোটি টাকা খাদেমের পকেটে যাওয়ার খবর আমরা পড়েছি। ছোট্ট একটি উদাহরণ দেই। পাগলা মসজিদের দানবাক্স মসজিদ ছাড়া আর কোথাও নেই বলেই জানি। কিন্তু পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ ইয়ারউদ্দিন খলিফার দরবার শরীফের দানবাক্স বোধহয় দেশের সতেরো কোটি জনগণই দেখতে পেয়েছেন। সংবাদসূত্রে জানা গেলো – সারাদেশে ত্রিশ হাজারের বেশি দানবাক্সের শুধুমাত্র ইজারা থেকে বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা আয় করে দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ। বাৎসরিক আয় তবে কত হতে পারে ধারণা করে নিন।

পাগলা মসজিদে কত টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে কত টাকা পাওয়া যায় সে তথ্যটা একবার দেখা যাক। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী – ২০১৭ সালের জানুয়ারী থেকে শুরু করে ২০২৩ এর আগস্ট পর্যন্ত সর্বমোট ৪৮ কোটি টাকার বেশি দানকৃত নগদ অর্থ পাওয়া গিয়েছে। এর বাইরে আছে বিভিন্ন দেশীয় মুদ্রা, স্বর্ণ ও রৌপ্যনির্মিত অলংকার যেগুলো বিভিন্ন সময় ভাঙ্গিয়ে এবং নিলামে বিক্রি করা হয়।



কিভাবে ব্যয় হয়
এই যে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাচ্ছে মানুষের কাছ থেকে তার ব্যয় হচ্ছে কিসের কল্যাণে? সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের বরাতে জানা যাচ্ছে – মসজিদের আয়ের একটা অংশ আশেপাশের শ-খানেক মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক খাতে ব্যয় করা হয়। এ ছাড়া ২০০২ সালে মসজিদের পাশে একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ক্যান্সার, কিডনি রোগে আক্রান্ত দরিদ্র ব্যক্তিদেরও এই তহবিল থেকে সাহায্য দেওয়া হয়। গতবছর করোনা চলাকালীন এই তহবিল থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক, যারা করোনা রোগীদের সেবায় কাজ করেছেন, তাদের অনুদান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাগলা মসজিদে ষাট হাজার মুসল্লীর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স তৈরি করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যার বাজেট ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা।

যে প্রতিষ্ঠানে মাসে কোটি টাকার বেশি দানের অর্থ জমা হয় তাদের দায়িত্ব কি কেবল অন্যান্য মসজিদ মাদ্রাসা এতিমখানায় সহায়তা করা আর অবকাঠামো নির্মাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত? যেখানে দৈনিক ষাট হাজার মুসল্লী উপস্থিত হয় না, সেখানে ষাট হাজার মুসল্লীর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন মসজিদ নির্মাণ প্রকৃতপক্ষেই প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে নাকি দানের অর্থে দালান নির্মাণের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করা – তা নিয়ে প্রশ্ন জাগে৷

কিশোরগঞ্জের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে পাগলা মসজিদের কোন কার্যক্রম রয়েছে কিনা তা জানার ওয়েবসাইট বা অন্য কোন সহজ উপায় নেই। অথচ কিশোরগঞ্জেই সুদে নেয়া মাত্র পঁয়ত্রিশ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে জেল হাজতে গিয়েছে চায়না বেগম, পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে সুদ সহ বাইশ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেও ঘরছাড়া হয়েছে মোখলেসার রহমান। অন্যদিকে, সুইস ব্যাংক থেকে অর্থ আসলে বিনা সুদে ঋণ প্রদানের লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করেছে একটি এনজিও। কিশোরগঞ্জের মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নয়নে কাজ করছে বিখ্যাত এই মসজিদ, অসহায় দরিদ্রদের আর্থিক-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজের দায়বদ্ধতা এড়ানোর সুযোগ কি আছে?

পাগলা মসজিদ বাংলাদেশের মানুষের তাওহীদ বা একাত্মবাদ সম্পর্কে অজ্ঞতার চিত্রকেও স্পষ্ট করে তোলে৷ এই দেশের মানুষের একটি বৃহৎ অংশ যে শিরক-মুক্ত জীবন যাপন করতে সক্ষম নয়, পাগলা মসজিদে দানের ক্রমবর্ধমান পরিমাণ তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। যারা এই মসজিদে দান করতে আসছেন তারা সকলেই কোন না কোন মানত পূরণের জন্য দান করছেন। অথচ মানত তাকদীর পরিবর্তন করতে পারে না বলে হাদীসে উল্লেখ রয়েছে এবং এ ধরণের মানতকে নিষিদ্ধ বলেছেন ফিকাহবিদগণ। বুখারী ও মুসলিম শরীফে উদ্ধৃত হাদীসে বলা হয়েছে, “মানত কোন কাজকে এগিয়ে আনতে কিংবা আশু সংঘটিতব্য কোন কাজকে পিছিয়ে দিতে পারে না৷ তবে এভাবে কৃপণ ব্যক্তির কিছু অর্থ -সম্পদ খরচ করানো হয়৷”

পাগলা মসজিদে মানত পূরণের জন্য, ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, মনের বাসনা পূরণের জন্য দান-খয়রাত করা শরীয়তসম্মত কিনা সে বিষয়ে আলেম-উলামাগণ ভেবে দেখবেন এবং সে বিষয়ে দেশবাসীকে নির্দেশনা প্রদান করবেন এমনটা প্রত্যাশা করছি। একইসাথে ভক্ত-অনুরাগীদের কোটি টাকা দানের অর্থ সমাজ ও মানবের কল্যাণে ব্যয়ের উদ্যোগ নিবে পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন – সেই আহবানও জানাচ্ছি।

এই পোস্টে ব্যবহৃত তথ্যদির সোর্স আমার ওয়েবসাইটের মূল পোস্টে রেখেছি। ২০১৭ থেকে ২০২৩ (আগস্ট) পর্যন্ত দানকৃত অর্থের এক্সেল ফাইল কারও প্রয়োজন হলে আমাকে জানাতে পারেন, পাঠিয়ে দিবো। ধন্যবাদ।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৭

অপু তানভীর বলেছেন: আয়ের হিসাব হয়তো পাওয়া যায় কিন্তু এই সব মসজিদ মাজারের আয়ের সঠিক হিসাব পাওয়া যায় না । হিসাব নিতে উদ্যোগ নিতে গেলেই আপনাকে ধর্মবিদ্বেষী ট্যাগ দিয়ে দিবে ।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪১

দারাশিকো বলেছেন: আসলে হিসাব নেয়াটা জরুরী না। জরুরী হলো - দানের টাকা আশেপাশের সামাজিক উন্নয়নে ব্যবহার করে সকলের কল্যাণ করা। আনফরচুনেটলি, বাংলাদেশের সকল মসজিদ-মাজারের দানের টাকা খুব অল্প কিছু খাতে ব্যয় করা হয় এবং এর প্রভাব সামান্য।

২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দোষ এই দেশের জনগণের। এই দেশে অনেক ভিক্ষুক ভিক্ষা করে ৫ তোলা দালানের মালিক। তাহলে দোষ কি সেই ভিক্ষুকের নাকি যারা তাকে ভিক্ষা দিচ্ছে তাদের। আমার মতে যারা ভিক্ষা দিচ্ছে তাদের। তারা জেনে শুনে এই কাজ কেন করছে। কারণ আমাদের দেশে ৯০% ভিক্ষুক পেশাদার ভিক্ষুক। একই কথা মাজার বা এই ধরণের মসজিদ সম্পর্কে। মানুষ কেন টাকা দান করছে। যে দেশে হাজারে হাজারে দান বাক্স দেশের বিভিন্ন জেলায় ঝুলিয়ে রেখে কোটি কোটি টাকা আয় করা যায় সেই ক্ষেত্রে দোষ জনগণের। জনগণের নির্বুদ্ধিতার সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকেরা। একটা মানুষের চিকিৎসার সাহায্য চেয়ে কয় টাকা পাওয়া যায় কিন্তু মাজার বা দান বাক্সে কোন প্রচারনা ছাড়া কোটি কোটি টাকা উঠছে। সমস্যা জনগণের। জনগণ প্রকৃত অভাবীকে সাহায্য করতে চায় না। বাংলাদেশে এখন মনে হয় কয়েক হাজার মসজিদে এসি আছে। এই টাকা অতি সহজেই জোগাড় হয়ে যায়। কিন্তু দরিদ্র অসহায় মানুষকে সাহায্য করে যে প্রতিষ্ঠানগুলি সেগুলিতে দান পড়তে চায় না। বিদ্যানন্দ মানুষকে ফ্রি খাওয়ালে সেটা নিয়ে বিশাল সমালোচনা হয় কারণ এটার উদ্যোক্তা একজন হিন্দু। এই দেশে মসজিদের ফান্ড জোগাড় করা সবচেয়ে সহজ। রাস্তা ঘাটে ফান্ড তোলার জন্য লোক থাকে। এরা আহরন করা দানের ২৫% কমিশন হিসাবে পায়। আমরা এগুলি জানি। কিন্ত তারপরও দান করি। তাহলে দোষ কার।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫২

দারাশিকো বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। সমস্যাটা যে জনগনের সেটা অস্বীকার করি না, আপনার মন্তব্যটাও তারই প্রমাণ।

আপনার মন্তব্য পড়লে মনে হবে - দেশের সকল ভিক্ষুকই পাঁচতলা দালানের মালিক। এক্সেপশন ক্যান নট বি অ্যান এক্সাম্পল - এ্টা মাথায় রাখতে হবে। চিকিৎসার নামে সাহায্য চেয়ে বাটপারি করতেছে এমন লোক কি নাই? আবার সাহায্য চেয়ে চিকিৎসার বড় অংক টাকা জোগাড় হয়েছে - এমন উদাহরণও তো আছে, নাকি? ভিক্ষাবৃত্তি একটা পেশা - কোন সন্দেহ নাই, এদের একটা বড় অংশ অন্য কোন উপায়ে আয় করতে পারে না। এটাও ঠিক যে কিছু ভিক্ষুক চেষ্টাই করে না। কিন্তু ভিক্ষুককে দানের রাস্তা বন্ধ করে কি হবে? আসল প্রশ্নটা করলে ভালো হয় - সরকার কেন ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করতে পারতেছে না? আপনার চোখে কি দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ চোখে পড়েছে? যদি পড়েও - তার প্রভাব কতটুকু?

বিদ্যানন্দ নিয়ে আপনার যে মন্তব্য, সেটাও বেশ একচোখা। সম্ভবত বিদ্যানন্দের উদ্যোক্তা হিন্দু বলে কেউ সমালোচনা করেনি, সমালোচনার প্রায় পুরোটাই এদের মার্কেটিং একটিভিটিস নিয়ে। নিঃসন্দেহ হওয়ার জন্য পুনরায় সেই সমালোচনাগুলো দেখতে পারেন।

মসজিদের ফান্ড জোগাড় করা সহজ - কারণ এর জন্য কিছু লোক পরিশ্রম করে। দানের টাকায় চলে এমন আরও অনেক প্রতিষ্ঠান আছে - বিদ্যানন্দও দান গ্রহণ করে এবং এই কাজের জন্য তাদেরও কিছু লোক আছে যারা কম বেশি পরিশ্রম করে। সবচেয়ে বড় কথা - যারা দান করে তারা কেন দান করে সেটা অনেকেই বুঝতে পারে না - দানের সাথে ধর্মের, ইবাদতের একটা সম্পর্ক আছে - এই কারণেই মসজিদ, মাজার, ভিক্ষুক ইত্যাদি ক্ষেত্রে দান বেশি হয়।

দান চলুক - দানের পরিমাণ বাড়ুক। তাদের উপকারের পরিধি, ইম্প্যাক্ট এর আওতা আরও বিস্তৃত হোক - সাধারণ মানুষও এর কল্যাণ ভোগ করুক - সেটাই চাই।

৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: মসজিদে টাকা না দিয়ে অসহায় ও দরিদ্র মানুষকে দেওয়া উচিৎ।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৯

দারাশিকো বলেছেন: দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে দিতে বাধা নাই, মসজিদে দিতে বাধা দিচ্ছেন কেন? মসজিদকে একটা সু-প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমিকা রাখতে বলুন, তাহলে ব্যক্তিপ্রচেষ্টার তুলনায় অনেক বেশি ইমপ্যাক্ট রাখা সম্ভব।

৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:২৭

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মসজিদে বড় বড় দানবাক্স। পাগলা মসজিদের মতই মাসে মাসে কমবেশী বিপুল টাকা জমা হয়।
কিছু মসজিদ আছে নিশ্চিত ভাবেই পাগলা মসজিদের চেয়ে অনেক বেশি টাকা জমা হয়।
কত জমা হচ্ছে কখনো কাউকে জানানো হয় না। কিন্তু লামছাম খরচ আর ইমাম মুয়াজ্জিনকে নাম মাত্র বেতন দিয়ে, বাকি অর্থ আত্নসাত করা হয়,
পাগলা মসজিদের লোকরা অবুঝ পাগল, তাই ৩ মাস পর পর প্রশাসঙ্কে ডেকে এনে সবাইকে জানিয়ে দেয়।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০০

দারাশিকো বলেছেন: আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আপনার সাথে মেলে না, তাই সহমত জানাতে পারছি না। পাগলা মসজিদের দানের আশেপাশে দানের টাকা জমা হয় এরকম কোন মসজিদ আমার জানা নাই (আপনার জানা থাকলে জানাবেন প্লিজ)। বিশেষ কেরামতি না থাকলে কোন মসজিদে এইরকম দানের টাকা জমা হওয়া অসম্ভব এবং অস্বাভাবিক। মাজারগুলোর মধ্যে পুরাতন এবং বেশি মুরিদ রয়েছে এমন মাজারের দান হয়তো পাগলা মসজিদের দানের আশেপাশে থাকতে পারে, যেহেতু হিসাব প্রকাশ করা হয় না, তাই জানা যায় না। রমজান মাসে দানকৃত অর্থের পরিমাণ লাখ টাকা ছাড়ায় - এমন মসজিদ সম্ভবত সারা দেশে শ-খানেক, বড় আকারর মসজিদেই কেবল সেটা সম্ভব হয়।

ঢাকা শহরের প্রায় সব মসজিদে আমি জুমার দিনে বিগত সপ্তাহের দানের পরিমাণ জানিয়ে দিতে দেখেছি। কিছু মসজিদে ব্ল্যাক/হোয়াইট বোর্ডে পুরো মাসের রেকর্ড লিখে ঝুলিয়ে রাখতে দেখেছি। আপনার মসজিদে (কোন মসজিদ জানাতে পারেন) কেন জানানো হয় না জানি না। আপনি মসজিদ কমিটির কাছে প্রস্তাব পৌঁছাতে পারেন।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটা গুরুতর। বিনা প্রমাণে এরকম কথা আমি বলতে চাই না। ইমাম মুয়াজ্জিনের বেতন সামান্য - এ বিষয়ে কোন সন্দেহ প্রকাশ করি না। কিন্তু বাকী টাকাটা সাধারণত বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে ব্যয় হয়, ওভার ইনভয়েসিং এর ঘটনাও সম্ভবত ঘটে, কিন্তু সরাসরি আত্মসাৎ সহজ কাজ না।

সর্বশেষ - পাগলা মসজিদের লোকদেরকে অবুঝ/পাগল বলে আপনি সম্ভবত খোঁচা দিতে চেয়েছেন। প্রশাসনকে ডেকে আনাটা জরুরী, বড় অংকের দান জমা হয় এমন মসজিদ-মাজারেও এ ব্যবস্থা থাকা উচিত। লেখার মূল পয়েন্টটা ছিল - এই টাকাটা সমাজের উন্নয়নে ব্যয় করা হলে আরও বেশি প্রভাব রাখা সম্ভব - এটা বুঝতে পেরেছেন আশা করি।

ভালো থাকুন হাসান কালবৈশাখী!

৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ৯০% ভিক্ষুকই পেশাদার ভিক্ষুক। তাই এদের থামাতে হবে। ৯০% মাদ্রাসায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়। এগুলি থামাতে হবে। মাজারের টাকায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়। সেগুলিও ঠিক না। এইসবের উপর কারও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। কিছু বোকা জনগণ এই সব খাতে দান করে থাকেন। এগুলি কোন সমাজ ও জাতির জন্য ভালো না। একটা জাতির জনগণের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ভিক্ষাবৃত্তি আর প্রতারণার আশ্রয় নেয়া মানে ঐ জাতির ভিতরে বড় সমস্যা আছে। এগুলি দেখার কেউ নেই। আখেরাতের উদ্দেশ্যে অনেকে দান করে। ভালো কথা। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে এক শ্রেণীর প্রতারককে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে। আমরা নিজেরা সচেতন না হলে এভাবেই চলবে। কারণ রাষ্ট্রের এই সব ব্যাপারে কোন মাথা ব্যথা নাই।

কেউ দান করলে বুঝে শুনে সঠিক জায়গায় দান বা ভিক্ষা দেয়া উচিত।

৬| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১:২৭

কাছের-মানুষ বলেছেন: পাগলা মসজিদের ব্যাপারে সম্প্রতি বেশ কিছু নিউজ বেরিয়েছে। আপনি বিস্তারিত লিখেছেন, আমি পড়িনি তবে পরে সময় করে পড়ব।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০২

দারাশিকো বলেছেন: সম্প্রতি বের হওয়া নিউজগুলো কি বিষয়ে?

পড়া হলে মতামত জানানোর অনুরোধ।

৭| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৫৮

কামাল১৮ বলেছেন: কারো বিপদই স্থায়ী হয় না।বিপদ আসে আবার চলেও যায়।আমি প্রায় ছোট বেলা থেকেই এই সবে বিশ্বাস করি না।আমার কিছু বিপদ আসছে আবার চলেও গেছে।এসব কুসংস্কার।

৮| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩

ঢাকার লোক বলেছেন: ভাল লিখেছেন। মানত সম্বন্ধে আপনার পর্যবেক্ষণ সঠিক, মানত তকদিরকে পরিবর্তন করতে পারেনা। আমাদের দেশের অধিকাংশ মুসলমানদের ঈমান আরো শক্তিশালী হ‌ওয়া আবশ্যক।

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২৮

দারাশিকো বলেছেন: ধন্যবাদ ঢাকার লোক। এ ব্যাপারে বোধহয় অন্যান্য মসজিদের ইমাম-খতিবগণ ভূমিকা রাখতে পারেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.