নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভালোবাসি বিজ্ঞানকে।। তাই বিজ্ঞান নিয়ে সকল পোষ্ট করার চেষ্টা করি।।

দীপংকর চক্রবর্ত্তী

যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে, হবে হবেই দেখা, দেখা হবে বিজয়ে।।।

দীপংকর চক্রবর্ত্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিল্প-সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধ

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:০৬

মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে অনেক ধরনের সাহিত্য কর্ম সৃষ্টি করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন চলচিত্র, উপন্যাস, ছোট গল্প, প্রামান্য চিত্র ইত্যাদি। মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে যেসব চলচিত্র এবং প্রামান্য চিত্র নির্মিত হয়েছে তা আজ লিখছি।



মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই জহির রায়হান মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্নদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ধীরে বহে মেঘনা’ নির্মানের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হওয়ার দেড় মাসের মধ্যেই জহির রায়হান নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে আলমগীর কবির এই সিনেমাটি নির্মান করেন।

বিজয় অর্জনের পরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মান করেন চাষী নজরুল ইসলাম, নাম ‘ওরা ১১ জন’। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন মাসুদ পারভেজ, জাগ্রত কথাচিত্রের ব্যানারে। ১৯৭১ সালে ১১জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে গঠিত গেরিলা দলের পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান এবং দেশ স্বাধীন নিয়ে এই চলচ্চিত্র নির্মিত। এই এগারোজনের দশজনই বাস্তবের মুক্তিযোদ্ধা, সিনেমা নির্মানে ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্র ও বুলেটের সবকটিই আসল। ১১ই আগস্ট ১৯৭২ এ মুক্তি পায় এই চলচ্চিত্রটি।

১৯৭২ সালের ৮ই নভেম্বর মুক্তি পায় মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সুভাষ দত্ত পরিচালিত সিনেমা ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’। কুসুমপুর গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ড, নির্যাতন, নারী ধর্ষন এবং প্রতিবাদে বাঙালিদের মুক্তি সংগ্রামকে কেন্দ্র করে এই চলচ্চিত্র নির্মিত।

বিজয়ের ঠিক এক বছর পর ১৫ই ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে মুক্তি পায় মুক্তিযুদ্ধের তৃতীয় ও চতুর্থ চলচ্চিত্র – ‘রক্তাক্ত বাংলা’ এবং ‘বাঘা বাঙালী’। ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায় আলমগীর কবির পরিচালিত ‘ধীরে বহে মেঘনা’, আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘আমার জন্মভূমি’ এবং খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘আবার তোরা মানুষ হ’। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় চাষী নজরুল ইসলামের ‘সংগ্রাম’, নারায়ন ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’ এবং আনন্দের ‘কার হাসি কে হাসে’।



মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচিত্র



ক্রম চলচ্চিত্র পরিচালক মুক্তিরসন

১ ওরা ১১ জন চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৭২

২ অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী সুভাষ দত্ত ১৯৭২

৩ রক্তাক্ত বাংলা মমতাজ আলী ১৯৭২

৪ বাঘা বাঙালী আনন্দ ১৯৭২

৫ ধীরে বহে মেঘনা আলমগীর কবির ১৯৭৩

৬ আমার জন্মভূমি আলমগীর কুমকুম ১৯৭৩

৭ আবার তোরা মানুষ হ খান আতাউর রহমান ১৯৭৩

৮ সংগ্রাম চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৭৪

৯ আলোর মিছিল নারায়ণ ঘোষ মিতা ১৯৭৪

১০ আমরা তোমাদের ভুলবো না হারুনর রশীদ ১৯৯৩

১১ একাত্তরের যীশু নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু ১৯৯৩

১২ আগুনের পরশমনি হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯৪

১৩ সিপাহী কাজী হায়াৎ ১৯৯৪

১৪ নদীর নাম মধুমতি তানভীর মোকাম্মেল ১৯৯৬

১৫ হাঙর নদী গ্রেনেড চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৯৭

১৬ এখনো অনেক রাত খান আতাউর রহমান ১৯৯৭

১৭ ছানা ও মুক্তিযুদ্ধ বাদল রহমান ১৯৯৮

১৮ ’৭১ এর লাশ নাজির উদ্দীন রিজভী ১৯৯৮

১৯ ইতিহাস কন্যা শামীম আখতার ২০০০

২০ একজন মুক্তিযোদ্ধা বি.এম সালাউদ্দিন ২০০১

২১ শ্যামল ছায়া হুমায়ূন আহমেদ ২০০৪

২২ জয়যাত্রা তৌকির আহমেদ ২০০৪

২৩ ধ্রুবতারা চাষী নজরুল ইসলাম ২০০৬

২৪ খেলাঘর মোরশেদুল ইসলাম ২০০৬

২৫ স্পার্টাকাস’৭১ মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী ২০০৭

২৬ গহিনে শব্দ খালিদ মাহমুদ মিঠু ২০১০

২৭ রাবেয়া তানভীর মোকাম্মেল ২০১০

২৮ গেরিলা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ২০১১

২৯ আমার বন্ধু রাশেদ মোরশেদুল ইসলাম ২০১১

৩০ কারিগর আনোয়ার শাহাদাত ২০১২

৩১খন্ড গল্প’ ৭১ বদরুল আনাম সৌদ ২০১২

৩২ পিতা মাসুদ আখন্দ ২০১২





মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র



মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্রগুলোর চারটি নির্মান হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই।এদের মধ্যে সব থেকে সমাদৃত হয়েছে জহির রায়হানের দুইটি প্রামান্য চিত্র- Stop Genocide এবং A State In Born। এই দুইটি প্রামান্য চিত্র মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে দেশে বিদেশে ব্যপক আকর্ষণ লাভ করে। স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে আলমগীর কবির ‘ডায়েরিজ অব বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মান করেন। পাশাপাশি সরকারী প্রতিষ্ঠান চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর তৈরী করে ‘দেশে আগমন’। সৈয়দ শামসুল হকের পরিচালনায় সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ-র নামে একটি করে তথ্যচিত্র তৈরী হয় ১৯৮৩ ও ১৯৮৪ সালে। ১৯৯৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভিন্ন ধারার প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ নির্মান করেন তারেক মাসুদ ও ক্যাথেরিন মাসুদ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশী শিল্পীরা বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ও রণাঙ্গনে গান গেয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করার যে বিশাল ভূমিকা পালন করেছিলেন তা উঠে এসেছে এই প্রামাণ্যচিত্রে। আবার এই‘করে তারেক ও ক্যাথেরিন মাসুদ দর্শকদের বিভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা ইত্যাদি নিয়ে নির্মান করেন ‘মুক্তির কথা’। এছাড়া মানজারে হাসীনের ‘চারুকলায় মুক্তিযুদ্ধ’, কাওসার চৌধুরীর ‘সেই রাতের কথা বলতে এসেছি’, তানভীর মোকাম্মেলের ‘তাজউদ্দীন: নিসঙ্গ সারথি’ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন প্রামাণ্যচিত্র।

ক্রম প্রামাণ্যচিত্র পরিচালক মুক্তিরসন

১. Stop Genocide জহির রায়হান ১৯৭১

২. A State In Born জহির রায়হান ১৯৭১

৩. দেশে আগমণ চলচ্চিত্র অধিদপ্তর ১৯৭২

৪. ডায়েরিজ অব বাংলাদেশ আলমগীর কবীর ১৯৭২

৫. দেশে আগমণ চলচ্চিত্র অধিদপ্তর ১৯৭২

৬ পোগ্রাম ইন বাংলাদেশ আলমগীর কবীর ১৯৭৩

৭. লংমার্চ টুওয়ার্ডস গোল্ডেন বাংলা আলমগীর কবীর ১৯৭৪

৮. মুক্তিযোদ্ধা চলচ্চিত্র অধিদপ্তর ১৯৭৬

৯. বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ সৈয়দ শামসুল হক ১৯৮৩

১০. বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর সৈয়দ শামসুল হক ১৯৮৩

১১. বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান সৈয়দ শামসুল হক ১৯৮৪

১২ জেনারেল এম এ জি ওসমানী চলচ্চিত্র অধিদপ্তর ১৯৮৪

১৩. বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সৈয়দ শামসুল হক ১৯৮৪

১৪. বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন সৈয়দ শামসুল হক ১৯৮৪

১৫. বীরশ্রেষ্ঠ আবদুর রউফ সৈয়দ শামসুল হক ১৯৮৫

১৬. বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল সৈয়দ শামসুল হক ১৯৮৫

১৭. এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আলমগীর কবীর ১৯৮৫

১৮. মুক্তির গান তারেক মাসুদ ও ক্যাথেরিন মাসুদ ১৯৯৫

১৯. মুক্তির কথা তারেক মাসুদ ১৯৯৮

২০. কামালপুরের যুদ্ধ চাষী নজরুল ইসলাম ২০০১

২১. দেশ জাতি জিয়াউর রহমান চাষী নজরুল ইসলাম ২০০১

২২. মৃত্যূঞ্জয়ী সাজ্জাদ জহির ২০০১

২৩. স্বাধীনতা ইয়াসমিন কবির ২০০২

২৪. মুক্তিযোদ্ধা আমরাও সৈয়দ তারেক ২০০৩

২৫. তখন এনামুল করিম নির্ঝর ২০০৪

২৬. নিসঙ্গ সারথি তানভীর মোকাম্মেল ২০০৭

২৭. অনেক কথার একটি কথা আনন্দ ২০০৭

২৮. অন্য মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুন্নাহার মৌসুমী ২০০৭

২৯. ১৯৭১ তানভীর মোকাম্মেল ২০১১



তথ্য গত অনেক ভুল থাকতে পারে। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

তথ্য সুত্র

উকিপিডিয়া, বিভিন্ন ওয়েব সাইট, এবং ব্লগ।।

দীপংকর চক্রবর্ত্তী :)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.