![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন সাধারন স্বপ্নচারী মানুষ। লেখালেখি খুব ভালো লাগে। জীবনে লেখক হতে চাই।
ভালবাসার স্বপ্ন আমি আজও দেখি। মনে হয় ভালবাসা আমাকেও স্বপ্নে দেখে । কিন্তু যে আমাকে ভালবাসবে শুধু সে-ই দেখেনা। ১৪ ফেব্রুয়ারী এলেই আমি কোথাও বের হতাম না। অবশ্য তার একটি কারন ও ছিল। এমন দিনে সবাই তার বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ডদের সাথে ঘুরতে বের হয়। কিন্তু আমি? আমি কার সাথে ঘুরব? আমারতো কোণ গার্লফ্রেন্ড নাই।
পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন, ভালবাসা দিবস কিংবা বিজয় দিবসে এটাই ছিল আমার একমাত্র নিয়তি!!!
ভাবতাম কতকাল আর এমন থাকা যায়? ক্যাম্পাস জীবনতো প্রায় শেষ । এলো ক্যাম্পাসে আমার শেষ বইমেলা। ভাবছি এই মেলাতেই কিছু একটা করতে হবে। নিয়মিত মেলায় যাই। প্রতিদিনই কাউকে না কাউকে ভালো লাগে। পর্যবেক্ষন যখন শেষ হয় । আমি প্রস্তুতি নেই কিছু একটা বলার। তখনই বাধে বিপত্তি হয়ত একগাল হাসি নিয়ে হাজির তার বয়ফ্রেন্ড। এমন যে কত হয়েছে তার ঠিক নেই।
অতঃপর আমার কাঙ্ক্ষিত সেই দিনটি এলো। বইমেলায় সময় প্রকাশনীর স্টলে বই দেখছিল চশমা পড়া মেয়েটি। আমিও বই দেখছি। ভাবছি কি বই কেনা যায়। মেয়েটি মায়াবতী বইটি কিনলো। আমি শুধু বই দেখছি আর দেখছি। আমিও বললাম ভাইয়া আমাকে মায়াবতী দিনতো ।
মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
আমি হঠাত বলে উঠলাম হাসলেন কেন?
বাহ! আমার বুঝি হাসতে মানা?
না, আমি সেটা বলিনি।
কি বলেছেন, তাহলে?
আপনি হয়তো ভাবছেন আপনি মায়াবতী নিলেন তাই আমিও নিলাম।
না, আমি সেটা ভাবিনি। আমি ভাবলাম আপনার সত্যি মায়াবতী দরকার কি না?
আমি জানতে চাইলাম, আপনি বুঝলেন কিভাবে?
নিরুত্তর সে। আবার হাসলো।শুধু বলল, মায়াবতীকে এভাবে পাওয়া যায় না। তারপর চলে গেল।
আমি তার পিছু পিছু চললাম। ফাগুনের দিন তাই বৃষ্টি হওয়ার কথা না। কিন্তু কিছুদুর যেতেই বৃষ্টি শুরু হল। তুমুল বৃষ্টি।
টিএসসির জনতা ব্যাংকের পাশেই দাঁড়াল আমার মায়াবতী। হঠাত এক ঝড় এলো। বৃষ্টির ঝাপটা এলোমেলো করে দিল তার কেশগুচ্ছ। ওড়নাটি উড়ে এসে পড়ল আমার মাথার উপরে।মনে হল আমি যেন আমার মায়াবতীর স্পর্শ পেলাম। অত;পর...
আনমনা হল মন
ক্ষনিকের প্রয়োজন,
হৃদয়ে উঠল ঢেউ
জানলোনা তা কেউ।
আমি যেন কিসের রাজ্যে ডুবে গিয়েছিলাম। হঠাত কে যেন আমার কান ধরে টান দিল।
আমি বললাম, কে?
আপনার যম।
ঘুরে তাকিয়ে দেখলাম, আমার মায়াবতী।
বললাম, ও আপনি?
সে বলল, মেয়ে মানুষের ওড়না থেকেও কি মানুষের গন্ধ আসে নাকি?
না, তা ঠিক নয়, তবে...
তবে কি?
মনে হচ্ছিল সে রকমই।
এদিকে আমার বুকে ওড়না নেই, লোকজন কিভাবে নির্লজ্জের মত তাকাচ্ছে আর আপনি গন্ধ শুকছেন তাইনা??
সরি... আসলে আমি খেয়ালই করিনি।
করবেন কিভাবে, আপনার চোখতো এখন আর কিছু দেখে না। সব আপানার মন দেখে। এই নিন আমার চশমা। আপনাকে দিয়ে দিলাম এবার নিশ্চয়ই চোখে দেখবেন আশা করি...
আমি দারুন লজ্জা পেলাম আবার অবাকও হয়ে গেলাম। ভীড়ের মাঝে সে কোথায় যে হারালো টেরই পাইনি। কিন্তু কখন যে ভালোবেসেছিলাম আর ভালোবাসার ব্যাথা যে কত বিধুর তা পরক্ষনেই টের পেয়েছি। কোথায় যেন শুণ্যতা। বুঝি ঠিকই কিন্তু বোঝাতে পারিনা।
আমার মধ্যে কেমন যেন একটা পরিবর্তন এলো। আমি না পারি পড়াশুনায় মন বসাতে না পারি আমার মায়াবতীকে ভুলতে। আমার অনুভূতিটা তখন ঠিক...
“সুখের মত ব্যাথা যখন হৃদয় আঙ্গিনায়
প্রথম প্রেমের অনুভুতি এমনটাই হয় ।” রকম টাইপের।
কয়েকদিন চলে গেল। আমি নিয়মিত বইমেলায় যাই আমার মায়াবতীর আশায়। মায়াবতীর মোহ আমায় ঠিকই আচ্ছন্ন করে কিন্তু মায়াবতী আসেনা।
ভাবছি আর বইমেলায় যাবনা। আমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয়ে থাকে তবে তা আমার কাছে আসবেই।
সত্যিকারের ভালোবাসা ঠিক অস্তিত্বের মত যাকে দেখা যায়না ঠিকই কিন্তু তাকে ছারা চলবেই না। অসীম আকাশের মত যার বিস্তৃতি, কল্পনার মত যার রূপায়ন। তাকে ছাড়া কি থাকা সম্ভব?
আমিও উপেক্ষা করতে পারলাম না। বইমেলায় গেলাম।প্রবেশ করার জন্য লাইনে দাঁড়ালাম । সামনে এক আন্টি। তার সামনে দুইজন মেয়ের হাসি শুনলাম। মনের মাঝে মোচড় দিয়ে উঠল ।অনুভব করলাম আমার সত্তা মায়াবতীকে।
মেলায় গিয়ে সময় প্রকাশনীর স্টলে দেখলাম আনিসুল হক স্যারকে। নাম দেখে একটা বই খুব পছন্দ হল। বইটির নাম, তুমি আমার প্রিয়তা । স্যারকে বললাম অটোগ্রাফ দিতে। স্যার নাম জিজ্ঞাসা করলেন । পিছন থেকে কেউ একজন বলে উঠলো মায়াবতী... (চলবে)
©somewhere in net ltd.