নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নবীন আনন্দ

আবদুল্লাহ আল আমিন

আবদুল্লাহ আল আমিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়: আকাশ আমি ভরবো গানে

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৬

২৫- তম প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়: আকাশ আমি ভরবো গানে
আবদুল্লাহ আল আমিন
আর পাঁচটা বাঙালি মধ্যবিত্তের মতই বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হয়ে প্রকৌশলী হবে। ছেলের স্বপ্ন, সে হবে সাহিত্যিক। বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য ছেলে ভর্তি হয়েছিল যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। তারপরও সাহিত্যিক হবার বাসনা তিনি ত্যাগ করেননি, শুরু করেন লেখালেখি। কিন্তু হঠাৎ করে মাঝপথে সব কিছু থেমে যায়। তিনি গানের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে গান হয়ে ওঠে তার ধ্যান জ্ঞান, স্বপ্ন কল্পনা এবং শেষমেষ পেশা। পরিচিতিজনের গ-ি পেরিয়ে তার গান যখন বেতারে বেজে উঠলো বাঙালি শ্রোতা শুনলো এক বিস্ময়কর কণ্ঠের অধিকারীর ভরাট গলা। এই শিল্পীর নাম হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। বাংলা বলয়ের বাইরের ভারতীয় শ্রোতারা তাকে জানলো হেমন্তকুমার হিসেবে।
এক পর্যায়ে হেমন্ত হয়ে ওঠেন ভারতীয় সঙ্গীত জগতের দ্যুতিময় নাম এবং তিনি নিজেকে এমনভাবে জনপ্রিয় করে তোলেন যে তাকে ছাড়া বাংলা গানের কথা ভাবাই যায় না। রবীন্দ্র সঙ্গীত থেকে আধুনিক গান, সিনেমার প্লেব্যাক থেকে গানের জলসা সবখানে তিনি নিজেকে অনিবার্য করে তোলেন। খাদ থেকে চড়া, দরাজ গলার সর্বত্র অনায়াস বিচরণ- সবই ব্র্যান্ড হেমন্তকে সঙ্গীত ভুবনের আইকনে পরিণত করে। শুরুর দিকে খানিকটা এলেমেলো হলেও কীভাবে যেন গানের সাথে তার জীবন একাকার হয়ে যায়। গানের ঝরনাতলার ডাক কবে পেয়েছিলেন তা হয়তো নিজেই মনে করতে পারেন না, তবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা বলতে যা বোঝায় তা শুরু করেন মিত্র ইনস্টিটিউশনে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে। গান গাওয়ার অপরাধে তাকে একবার ইনস্টিটিউশন বের করে দেয়া হয়েছিল। অবশ্য পরে অনুনয় বিনয় করে, ঘাট স্বীকার করে নিয়ে সেই আদেশ কর্তৃপক্ষকে দিয়ে প্রত্যাহার করিয়ে নেয়া হয়। ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশন ছিল অভিজাতদের স্কুল এবং এখানে মোটা অংকের টিউশান ফি দিয়ে পড়তে হত। হেমন্তের বাবা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে হাফ ফি দিয়ে ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন। তারপরও যখন শুনলেন গান গাওয়ার জন্য ছেলেকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে তখন তিনি কষ্ট ভীষণ কষ্ট পান। বাবা কালীপদ ছিলেন সামান্য কেরানি। দক্ষিণ ২৪ পরগণার বহুড়া তার পৈতৃক ভিটে। হেমন্তের মাতামহ অর্থাৎ কালীপদবাবুর শ্বশুরবাড়ি ছিল উত্তর প্রদেশের বারানসীতে। স্ত্রী কিরণবালাদেবীর বাবা সেখানকার হাসপাতালের কৃতী চিকিৎসক ও সিভিল সার্জন। কালীদাস -কিরণবালা দম্পতির চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে হেমন্ত ছিলেন দ্বিতীয়। হেমন্তের বড়ভাই তারাজ্যোতি মুখোপাধ্যায় ছিলেন গল্পকার এবং ছোটভাই অমলকুমার মুখোপাধ্যায় ছিলেন খ্যাতিমান ষাটের দশকের জনপ্রিয় সুরকার। হেমন্তের জন্ম ১৯২০ সালের ১৬ জুন বারানসীতে, শৈশব কাটে দক্ষিণ ২৪ পরগণার বহুড়াতে; পরে তারা সপরিবারে কলকাতায় চলে আসেন। কলকাতায় তাদের ঠিকানা হয় ২৬/২ এ রূপনারায়ণ নন্দন লেন, ভবানীপুর। হেমন্তের প্রাথমিক শিক্ষার সূচনা হয় বাড়ি সংলগ্ন নাসিরুদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুলে, পরে মিত্র ইনস্টিউিশনে। হেমন্তের বেড়ে ্ওঠা এক বিশাল সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক পরিম-লে। সমরেশ রায়, পরিমল সেন, রামকৃষ্ণ মৈত্র ও কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ছিলেন তার সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু। রামকৃষ্ণ তখন লিখছেন গল্প আর কবি ও গায়ক হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়। হেমন্ত কবিতার পথে না হেঁটে ভিড়ে গেলেন রামকৃষ্ণের দলে অর্থাৎ শুরু হয়ে গেল গদ্য চর্চা। হেমন্তের লেখা একটি ছোটগল্প দেশ পত্রিকায়ও বের হয়। এর মধ্যে শামসুন্দর নামে আর এক বন্ধুর সঙ্গেও সম্পর্ক গাঢ় হয়ে উঠলো। সম্পর্কের পিছনে মূল কারণ, শ্যামসুন্দরদের বাড়িতে ছিল ভাল হারমোনিয়াম-তবলা, গ্রামোফোন-রেকর্ড। শ্যামসুন্দরদের বাড়ি থেকে শুরু হল গ্রামোফোন রেকর্ডে গান শোনা এবং সেই গান বাজিয়ে হারমোনিয়ামে তোলা। আড্ডা, গদ্যচর্চা, গানবাজনা সবই চলতে থাকলো। তবে সবকিছু চলতে থাকলো পড়াশুনার বিষয়টি ঠিক রেখে। বন্ধুদের মধ্যে সুভাষ মুখোপাধ্যায় হঠাৎ হেমন্তকে রেডিওতে গান গাওয়ানোর জন্য ভীষন পণ করে ফেললো। এক পর্যায়ে ১ নম্বর গার্স্টিন প্লেসে ব্রডকাস্টিন কর্পোরেশন দপ্তরে অডিশনের কাজটি সারিয়ে নিলেন সুভাষ। হেমন্তকে অডিশনে বিশেষভাবে সাহায্য করে এক সময়ের বাংলা ছায়াছবির নায়ক অসিতবরণ। তিনি তখন রেডিওতে তবলাবাদক হিসেবে কাজ করতেন। বলতে হয়, কোন টেনশন না করে অনায়াসে চান্স পেয়ে গেলেন। তিন মাস পর রেকর্ডিং-এর ডাক আসলো। সব ঠিক ছিল, কিন্তু বাবা যে এত সহজে রাজি হবেন, তা তিনি ভাবতেই পারেননি। বাবাকে রাজি করানোর কাজটি করেছিলেন মা কিরণবালাদেবী। কিন্তু রেকর্ডিং এ কী গাইবে, কার লেখা গান গাইবেন? এ কাজেও এগিয়ে এলেন আবার সেই সুহৃদ সুভাষ মুখোপাধ্যায়। হেমন্তের রেকর্ডিং এর জন্য রাতারাতি লিখে ফেললেন এক অনবদ্য গান। আর একটি শিখলেন ভাটিয়ালি গান। ১৯৩৫ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে হেমন্তের প্রথম গান গাওয়া। গানের প্রথম কলি: ‘আমার গানেতে এলে নবরূপী চিরন্তনী’, শুরু হল গানের পথে যাত্রা। ষোল বছরের এক তরতাজা তরুণের কণ্ঠে গান শুনে মুগ্ধ হল বাঙালি শ্রোতা।

ম্যাট্রিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে হেমন্ত যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হলেন। এ সময়ে পিতৃবন্ধু শান্তি বসুর মাধ্যমে সাক্ষাৎ হল কলম্বিয়া রেকর্ড কোম্পানির ট্রেনার শৈলেশ দাশগুপ্ত’র সাথে। হেমন্তের গান শুনে রেকর্ড করালেন শৈলেশ বাবু। নরেশ ভট্টাচার্যের কথা এবং শৈলেশ দাশগুপ্তের সুরে হেমন্ত গাইলেন ‘যদি গো তুমি জানতে’ ও ‘বলো গো বলো মোরে’। ১৯৩৭ সালের ডিসেম্বরের পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি হেমন্তকে। দু মাস অন্তর চারটি করে রেকর্ড আর পাঁচটি করে প্রোগ্রাম পেতে থাকলেন রেডিওতে। গান গেয়ে যে টাকা পেতেন তার একটা অংশ বাড়িতে পাঠাতে লাগলেন। মা তো সব সময়ই তাকে সাহস জুগিয়েছেন গান গাওয়ার ব্যাপারে এবার বাবাও প্রসন্ন হলেন। এরই মধ্যে ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিকের তালিম নিয়ে নিলেন ওস্তাদ ফৈয়াজ খানের শিষ্য ফণীভূষণ গাঙ্গুলীর কাছে। ইঞ্জিনিয়ারিং এ তৃতীয় বর্ষে উঠেই প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনার পর্ব চুকিয়ে দিলেন তিনি। এতে বাবা-মা ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলেন। তারপর গানই হয়ে উঠলো তার ধ্যান-জ্ঞান,স্বপ্ন-সাধনা এবং সর্বসময়ের আধার। রবীন্দ্রনাথের গানের প্রতি ছিল তার প্রবল আগ্রহ। তবে রবীন্দ্রনাথের গান তিনি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ওস্তাদের কাছে শেখেননি। শৈলেশবাবুর কাছেই স্বরলিপি ধরে ধরে তার রবীন্দ্রনাথের গান শেখা। পঙ্কজ মল্লিকের স্টাইল অনুসরণ করে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন বলে সেই চল্লিশের দশকেই তিনি পেয়ে যান ‘ছোট পঙ্কজ’ এর অভিধা। দেবব্রত বিশ্বাস এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, পঙ্কজ মল্লিকের পর হেমন্তই একমাত্র শিল্পী যিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করেন। দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ও বলেছেন, ‘ হেমন্তদা আসলে পঙ্কজবাবুর স্টাইল ফলো করতেন। সেটা নিজের মতো করে আত্মীকরণ করে পরিবেশন করতেন। আমি যেমন হেমন্তদার স্টাইল অনুসরণ করে গাইতাম, তেমনই।’ ‘ প্রিয় বান্ধবী’তে ‘পথের শেষ কোথায়, শেষ কোথায়’ দিয়ে শুরু, তারপর আমৃত্যু রবীন্দ্রনাথের গানকে নিত্যসখা করেই পথ চলেছেন। শুরু থেকেই হেমন্ত প্রাণ উজাড় করে, নিষ্ঠার সাথে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে গেছেন। হেমন্ত আসলে সৌভাগ্যবান শিল্পী, যিনি খুব সহজেই শ্রোতাদের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে সক্ষম হন। ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরে তিনি সঙ্গীত শিল্পী বেলা মুখোপাধ্যায়কে বিয়ে করে। হেমন্ত-বেলা দম্পত্তির দু’ছেলেমেয়ে জয়ন্ত মুখোপাধ্যায় ও রানু মুখোপাধ্যায়।

গত শতকের চল্লিশের দশকে তিনি বাংলা ছবি ‘ নিমাই সন্ন্যাসী ’তে প্রথম প্লে ব্যাক করেন। তারপর কিছু ছবিতে তিনি সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চল্লিশের দশকে তিনি গণনাট্য আন্দোলনে যোগ দেন। এখানেই সখ্য সম্পর্ক গড়ে ওঠে সলিল চৌধুরী, দেবব্রত বিশ্বাস, বিনয় রায়, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, সুচিত্রা মিত্র প্রমুখের সঙ্গে। সলিল চৌধুরীর কথা ও সুরে তিনি কয়েক বছর বেশ কটি গানের রেকর্ড করেন।‘ কোনও এক গাঁয়ের বধূ’ থেকে‘ রানার’ এ বাঙালি শ্রোতা পেল আর এক ভিন্ন হেমন্তকে। সমসাময়িক আধুনিক গানের রেকর্ডগুলিও আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেল। তার গান পৌঁছে গেল গলি থেকে মধ্যবিত্তের অন্দর মহলে। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘ আনন্দমঠ” ছবিতে সুর করবেন বলে তিনি ১৯৫১ সালে কলকাতা ছেড়ে বোম্বাই চলে গেলেন। হিন্দিবিশ্ব পেল এক নতুন সঙ্গীতসাধক ও গায়ক হেমন্তকুমারকে, যিনি আসলেন এবং জয় করলেন। সারা ভারত মুগ্ধ হল তার দরজ কণ্ঠে। পঞ্চাশের দশকেই সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার ও শিল্পী হিসেবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি প্রযোজক হিসেবে ভ’মিকা পালন করেছেন। মৃণাল সেন পরিচালিত ‘নীল আকাশের নীচে’ ছবির প্রযোজক ছিলেন স্বয়ং হেমন্ত নিজে। পরে কয়েকটি হিন্দি ছবিরও প্রযোজক ছিলেন তিনি। তবে সব পরিচয় ছাপিয়ে গায়ক হেমন্ত ছিলেন অনন্য ও অদ্বিতীয়। ছায়াছবির গান হোক, আধুনিক কিংবা রবীন্দ্রনাথের গান হোক---গান দিয়ে বাঙালি শ্রোতাকে সম্মোহিত করার অলৌকিক ক্ষমতা তার ছিল। হেমন্ত আমৃত্যু সাদামাটা ,সহজ-সরল, আটপৌরে জীবন যাপন করে গেছেন আর তার পোশাক আশাক, অবয়বে সেটাই ফুটে উঠেছে । খ্যাতি, বিত্ত-বৈভব কোন কিছুই তাকে জীবনের সারল্য-ধর্ম থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদাররের প্রয়াণের পর তার পরিবারের সাহায্যার্থে কলকাতায় যে সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় তাতে তিনি কেবল গান পরিবেশন করেই দায়িত্ব শেষ করতে চাননি, পাশাপাশি শ্রোতাদের কাছে আহবান জানিয়েছিলেন প্রয়াত গীতিকারের পরিবারের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য। তিনি কেবল বড়মাপের শিল্পী ছিলেন না, মানুষ হিসেবেও ছিলেন উঁচুমাপের ও মনের। বাংলার আকাশ তাকে আলো দিয়ে ভরিয়েছিল, তিনি বাংলার আকাশকে গানে গানে ভরিয়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের মাটি মানুষের প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম ভালবাসা ও গভীর প্রেম। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অকুণ্ঠ সমর্থক হেমন্ত মুখোপাধ্যায় একাত্তরের অগ্নিঝরা দিনগুলিতে বাংলাদেশের মানষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং মুক্তিকামী বাঙালিকে উজ্জীবিত করার জন্য গান গেয়েছেন। সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ এ মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার গ্রহণের জন্য ঢাকায় এসেছিলেন এবং কয়েকটি গানের মজলিসেও হাজির হন। ঢাকা থেকে কলকাতা ফিরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন এই মহান শিল্পী। ১৯৮৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি নার্সিং হোমে শেষ নিঃশ্বাষ ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর পর আড়াই দশক পার হয়েছে, তারপর বাংলা গানের আকাশে কত নক্ষত্র জ্বলেছে এবং নিভেছে, তবে তিনি আজও শুকতারা হয়ে আছেন।








মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.