![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এস এস সি শেষ করি ২০০৩ এ । খোকসা জানিপুর পাইলট হাই স্কুল থেকে । বরাবরই মাঝ বেন্চের ছাত্র ছিলাম । সাইন্স থেকে মাঝামাঝি মানের রেজাল্ট নিয়ে এস এস সি শেষ করি । প্রথমে রাজশাহি ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশেষে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ এ মানবিক বিভাগ এ ভর্তি হয়ে যাই ।
এইচ এস সি(০৪-০৫)এবং দুই বছর ভার্সিটি এডমিশন কোচিং(০৬-০৭) করেছি কুষ্টিয়াতেই । কুষ্টিয়াতে এই এস সি প্রথম বছর এ ইংলিশ প্রাইভেট পড়তে গিয়ে পরিচয় হয় রুবেল আশরাফ ভাই এর সাথে । উনি তখন প্রাইভেটে আমাদের সাথে এইচ এস সি পরিক্ষা দিবেন । তার বর্ণিল জীবনের গল্প শুনে খুব অল্প সময়ে তার ভক্ত হয়ে গেলাম । স্ংক্ষেপে উনি ছিলেন সাহিত্যিক । বেশ কয়েক বছর কুষ্টিয়াতে এবং ঢাকাতে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ এ প্রাইভেটে এসচ এস সি ভর্তি হয়েছিলেন । আমরা প্রতিদিন বিকেলে রেইনউইক বাধ এ গিয়ে বসতাম । উনি সাথে করে তার লেখা কবিতা অথবা ছোট গল্প নিয়ে আসতেন আমাকে শোনানোর জন্য । আমি ছিলাম ভালো শ্রোতা । এখনও । এজন্যই বস আমকে বেশি পছন্দ করতেন । উল্লেখ্য আমি তাকে এখনও বস বলেই সম্বোধন করি । এমনকি আমার সব বন্ধুরা তার মোবাইল নাম্বার রুবেল বস নামেই সেইভ করে । জীবন যুদ্ধ করতে করতে বেশ কিছু টাকা উনি জমা করেছিলেন ব্যাংক এ । লাগামহীন টাকা খরচ করতো । প্রতিদিন ২ টা ৩০০ টাকার গ্রামীন কার্ড কিনতো । সন্ধ্যা থেকে শুরু হইতো চা সিগারেট । ৮ অথবা ৯ টায় এসে বসতাম সরকারি কলেজ মাঠে । ১০ থেকে ১১ টা পর্যন্ত চলতো ভরপুর আড্ডা । পরে আমাদের সাথে যুক্ত হয় মধু (মাসুম) এবং দেবা দাদা । বস মাঝে মাঝে থানা মোড়ে সাইবার ক্যাফেতে বসতেন । আমি পাশে বসে থাকতাম । দেখতে দেখতে উনি যা যা করতেন আমি শেখার চেষ্টা করতাম । প্রায়ই আমি একা একা ক্যাফেতে যেতাম । প্রতি ঘন্টা তখন ছিলো ২০ টাকা । তখন থেকেই ইন্টারনেট ব্যাপারটার প্রতি অনেক দুর্বলতা । নিজে নিজেই ইয়াহুতে ইমেল আইডি ওপেন করি । তবে সবথেকে বেশি মজা পাইতাম বিডি চ্যাট এ । আর একটা সাইট এ মজা পাইতাম,,সেটা না বলি । যাইহোক, বস এর মাধ্যমেই ইন্টারনেট এ হাতেখড়ি। কত টাকা যে উড়িয়েছি ক্যাফেতে !!
কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাস করি ২০০৫ এ । প্র্রেম ঘটিত কারনে এইচ এস সি তে পড়াশোনা করতে পারিনি । ইমোশোনালি স্বপ্নের মত কেটে গেলো দুই বছর । মন যখন যা চেয়েছে সেটাই করেছি । আশ্চার্যজনক ভাবে এইচ এই সি পাস করলাম বি গ্রেড নিয়ে । বস ও বি গ্রেড নিয়েই পাস করলো । দুজনে ভর্তি হলাম ইউ সি সি কোচিং এ । কিছুদিন নিয়মিত কোচিং করেছিলাম । ১ মাস পর আমি বস দুজনেই অনিয়মিত হয়ে গেলাম । বস এর বন্ধুর কোচিং, সেই সুবাদে কোচিং না গিয়েই লেকচার সীট পেতাম । রাজশাহি, জাহাঙ্গিরনগর এ ভর্তি পরিক্ষা দিলাম । কোথাও হলোনা । তবুও ভালোই চলছিলো সব । হঠাৎ,, আব্বু চলে গেলো না ফেরার দেশে । সব হিসাব নিকাশ ওলোটপালট হয়ে গেলো । প্রথমবার কোথাও চান্স হলোনা, ২য় বারও কুষ্টিয়াতেই কোচিং করি, এবং ২য় বারও কোথাও চান্স হলোনা । বাড়ি চলে এলাম । বাড়িতে কাটলো বিষাক্ত কিছুদিন । একদিন ছোট কাকু বললো কুয়েত চলে যা, ওখান থেকে কয়েকবছর পর আমেরিকা চলে যেতে পারবি । আমি রাজি হলাম না । কারন কুয়েত গেলে আমার ভালোবাসার বাবা আমাকে তার জামাই হিসেবে মেনে নেবেনা । এমনিই বলেছিলো ভালোবাসা । তার বাবার চাই উচ্চশিক্ষিত জামাই । সবাই বলতো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কথা । বাড়িতে বললাম । প্রথমে ছোট কাকু রাজি হলোনা । অবশেষে রাজী হলো । আমার এক দুসম্পর্কের মামা তখন স্টামফোর্ড এ পড়তেন । উনি স্টামফোর্ড সাজেষ্ট করলো । অবশেষে আমার খালাতো ভাই এর সাথে ঢাকা এলাম । ভাইয়া জগন্নাথ এ পড়তো । উনার মেস পুরান ঢাকায় ১ সপ্তাহ ছিলাম, এরই মধ্যে স্টা্মফোর্ড বি বি এর ফর্ম তুলে ভর্তি পরিক্ষা দিই এবং চান্স ও হয়ে যায় । বাড়ি চলে আসি । ১০ দিন পর ভর্তি হতে যাবো । হঠাং একদিন সকালে কাকু ডাকলো রুম এ । পেপার দেখিয়ে বলল, এই দেখ তোর স্টামফোর্ড এ ফামের্সি বিভাগে মারামারি ভাংচুর হয়েছে । ব্যাস । আমার আর স্টামফোর্ড এ পড়া হলোনা । আবার শুরু হলো বিষাক্ত জীবনকাল । জীবনের দুঃসময়ের শুরু থেকেই ভালোবাসার মানুষটা আমার পাশে ছিলো । ও আমাকে সাহস দিয়েছিলো,.এভাবে বাড়িতে কাটলো বেশ কিছুদিন । আমার মেজো আব্বু দেশে এল । আমার আব্বুরা তিন ভাই । আব্বু বড় ছিলো । মেজো জনকে আমি মেজো আব্বু বলেই ডাকতাম ছোট থেকে্ই । উনি আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন । আমার কোন চাওয়া এখন পর্যন্ত অপুর্ণ রাখেনি । উনি আমেরিকা গিয়েছেন ১৯৯০ এ । যাহোক উনার পরিবার সহ দেশে এল । কয়েক মাস থাকলো । সে দেশে থাকা অবস্থায় কোথাও ভর্তি হওয়া হলোনা । মেজো আব্বু চলে যাওয়ার এক মাস পর ছোট কাকুর সাথে ঢাকা গেলাম । ছোটকাকুর বন্ধু এম বি এ করতো ইন্টারন্যশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ চিটাগাং, ঢাকা ক্যাম্পাস এ । ঢাকা তার কাছেই এসে উঠলাম । উনি তখন জিগাতলা থাকতেন, যেখানে এখন আমি থাকি । তার সাজেশন এ তার ইউনিতেই ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেই ছোট কাকু । সে সময় কোথাই ভর্তি হচ্ছি এসব চিন্তুা আমার মাথাই ছিলো না । পড়াশোনা শুরু করতে হবে যেভাবেই হউক, এটাই ভাবনা ছিলো । এডমিশন ফর্ম কিনে বাড়ি চলে গেলাম । পরিক্ষার কিছুদিন আগে তল্ণিতল্পা সহ ঢাকা চলে এলাম । আমাদের এ্লাকার বড় ভাই( আজাদ ভাই ) এক বন্ধুর সাথে সাবলেট সিষ্টেম এ শুরু হয় ঢাকার জীবন । আমি আর সৈকত ভাই একরুম এ,,,পাশের রুম এ নোয়াখালির এক ছোট পরিবার । প্রথমবার ভাইভা পরিক্ষায় ফরমাল ড্রেস পরে না যাওয়ার জন্য চান্স পেলাম না । রেজাল্ট দেখার সেই মুহুর্তটা মনে পড়লে এখানো গাযে কাটা দেয় । রেজাল্ট দেখার সাথে সাথে হাত থেকে পড়ে ভেঙে গেলো আমার সদ্য কেনা স্যামস্যাং মোবাইল । বাড়িতে কাউকে কিছু বলতে পারিনি । যাহোক অবশেষে স্পেশাল ব্যাচ এ পরিক্ষা দিয়ে চান্স পাই । আনেক অপেক্ষা প্রতিক্ষার পর শুরু হয় ভার্সিটি জীবন । মোহাম্মদপুর থেকে চলে আসি ধানমন্ডি ৬/এ স্কুল বন্ধুর সাথে । প্রথম কিছুদিন নিয়মিত ক্লাসে যেতাম । মিডটার্ম পরিক্ষা হলো,, সব সাবজেক্ট এ ভালো রেজাল্ট হলো । এরপর শুরু হলো অবহেলা । রাত জেগে তাস আড্ডা । দুপুর ২ টায় ঘুম থেকে ওঠা । ওদের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে ক্লাসে অনিয়মিত হয়ে গেলাম । সেমিষ্টার ফাইনাল পরিক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে দেখি আমাকে ডিসকলেজিয়েট করা হয়েছে । পরিক্ষার আর আছে মাত্র একদিন । সারাদিন স্যারদের কাছে অনেক ঘোরাঘুরি করেও কোন লাভ হলোনা । প্রথম সেমিষ্টার ফাইনাল দিতে পারলাম না । অখচ ভার্সিটির এ্ই ডিসকলেজিয়েট সিষ্টেম আমার জানা ছিলোনা । সামান্য অবহেলার জন্য ৬ মাস জীবন থেকে হারিয়ে গেলো । এভাবেই শুরু ভার্সিটি জীবন এর । এভাবে হোচট খেতে খেতে শেষ করলাম বি বি্ এ ।
এরই মধ্যে২০১১ তে ভালোবাসাকে হারিয়ে ফেললাম । এর জন্য দায়ী আমি নিজেই । আমার অবহেলার কারনেই হারিয়ে ফেললাম ৭ বছরের ভালোবাসা । তবে ওর চলে যাওয়ার পথ ছিলো খুব বেশি খারাপ,,,যে পথ ওকে নিয়ে কল্পনাতেও কখনোও আসেনি । ওর চলে যাওয়ার দিনগুলো মনে পড়লে মনের মধ্যে ওর প্রতি ঘৃণার সৃষ্টি হয় । তবে ওকে ভালোবাসতেই বেশি ভালোবাসি ।শুনেছি স্বামি, স্ংসার, পড়াশোনা নিয়ে ভালোই আছে । ভালো থাকার জন্য যেহেতেু গিয়েছে, যেনো ও ভালোই থাকে ।
আমার ব্যাচ এর বন্ধুরা অনেক আগেই বি বি এ শেষ করে এখন এম বি এ করছে, কেউ চাকরি করছে । ফেইসবুক এর বৈাদলতে কিছু বন্ধুর সাথে যোগাযোগ আছে । আমি ভেগাবন্ড ই রয়ে গেলাম । ফেইসবুক আই ডি টা এজন্য ভেগাবন্ড শয়ন নামেই চলছে ।
ইদানিং.......
আনেক ভেবে দেখলাম, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে স্যুট বুটেড হয়ে অফিসে গিয়ে স্যার স্যার বলতে বলতে অস্থির হয়ে যাওয়া আমার দিয়ে হবেনা । তবে যদি এমন হয় ১৮ ঘন্টা পিসির সামনে বসে কাজ করতে হবে, সেটা সম্ভব । কম্পিউটার ইন্টারনেট এর প্রতি এইচ এস সি থেকেই এক ধরনের টান অনুভব করি । কারন এটার মধ্যো আমি মজা খুজে পাই । এজন্য অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেখানে মজা খুজে পাই সেখানেই যাওয়াটা আমার জন্য ভালো হবে । কাছের কিছু বন্ধুরাও আমার সিদ্ধান্ত কে স্বাগত জানিয়েছে । কিছুদিন নেট এ অনেক খোজখুজি করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ,গ্রাপিক্স ডিজাইন এর উপর এক বছর এর ডিপ্লোমা কোর্স করবো ক্রিয়েটিভ থেকে । পাশাপাশি ওয়েব ডিজাই্ন এর উপর ৩ মাসের একটা কোর্স । এই বছরের পুরোটা শুধু শিখবো, বিভিন্ন কৈাশলে,,,পরবর্তি বছর থেকে ইনকা্ম এর দিকে যাবো । এমনি চিন্তা ভাবনা করছি ইদানিং ।
জানিনা কি আছে সামনে । তবে, এখনো হাল ছাড়িনি ,,এভাবে হোচট খেতে খেতেই একদিন আমার স্বপ্ন পুরন হবেই ইনশা্ল্লাহ ,,
২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:০১
স্বপ্নবাজ শয়ন বলেছেন: যতদুর মনে পড়ে এস এস সি তে রসায়নে পেয়েছিলাম এ+
ধন্যবাদ ভাইজান।
৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:০১
কামের কথা কন!! বলেছেন: আপনার এই অবস্তার জন্য তো আপনি দায়ি তবে এরকম নিজের ডায়রি শেয়ার করেছেন এ থেকে অনেকই শিক্ষা নিতে পারবে। ভাল লিখেছেন। আর হা পারলে আপনার এই লেখা টি আপনার আশেপাশে এমন কেউ কে দেখলে তাদের সঙ্গে শেয়ার করেন তাহলে এই লেখার সার্থকতা আর বাড়বে।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৭
স্বপ্নবাজ শয়ন বলেছেন: নিজের ভালো অথবা খারাপ সব অবস্থার জন্য সে নিজেই দায়ী,,আমিও ব্যতিক্রম না ।
অনেক ধন্যবাদ ভাইজা্ন ।
৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১০
রীতিমত লিয়া বলেছেন: হঠাং একদিন সকালে কাকু ডাকলো রুম এ । পেপার দেখিয়ে বলল, এই দেখ তোর স্টামফোর্ড এ ফামের্সি বিভাগে মারামারি ভাংচুর হয়েছে । ব্যাস । আমার আর স্টামফোর্ড এ পড়া হলোনা ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারি একটি অতি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে কেউ সীদ্ধান্ত পালটায় এই প্রথম জানলাম। যাই হোক শেষ পর্যন্ত আপনি ভাল কোন জায়গায় ভর্তি হতে পেরেছেন এটাই অনেক। ধন্যবাদ।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩২
স্বপ্নবাজ শয়ন বলেছেন: পাবলিক ইউনি হইলে হইতো এমন হতো না,,, প্রাইভেট বলেই হয়তো,,,, !!
ধন্যবাদ আপি,,,
৫| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০২
কালোপরী বলেছেন: শুভ কামনা
৬| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০৩
কালোপরী বলেছেন: স্যরি ভুল ইমো দিয়ে দিসি
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৪৮
জাহের ওয়াসিম বলেছেন:
+++++