নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাধিনতার শত সহস্র, লক্ষ কোটি “সুফল\" - কিন্তু একটি মাত্র “কুফল” - দেশের নিতি নির্ধারণে অযোগ্য লোকেরা সব উচ্চাশনে - রাজনিতিতে ও প্রশাসনে - ফলে দেশটি যথাযথভাবে উন্নতিতে আগাতে পারছে না।তারপরেও যেটুকু এগিয়েছে, অধিকাংশ সাধারণের ব্যক্ত

ডঃ রুহুল আমিন চৌধুরী।

আমার জন্ম ০৬ মে, ১৯৫৬ খৃস্টাব্দ (আমার এস এস সি সনদ, জাতিয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনপত্রে জন্ম তারিখ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮ খৃস্টাব্দ - যাকে আমি রাষ্ট্রিয় জন্ম দিন বলি)- বরিশাল উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩ খৃস্টাব্দে এস এস সি (বিজ্ঞান) - ১৯৭৫ খৃস্টাব্দে ব্রজমোহন কলেজ (বি এম কলেজ) , বরিশাল থেকে এইচ এস সি (বিজ্ঞান) - মাস্টারদা সূর্য সেন হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাঙলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পাশ করি - ২০০১৫ খৃস্টাব্দের মার্চ থেকে ২০০১৮ খৃস্টাব্দের মার্চ পর্যন্ত সময়ে আমি আমেরিকান ইনডিপেনডেন্ট উইনভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পি এইচ ডি (ডক্টরেট) ডিগ্রি লাভ করি। আমার গবেষণার বিষয় : গুড গভারনেস, ডেমোক্রেসি এন্ড ডেভলপমেন্ট : বাংলাদেশ পারসপেকটিভ - আমি জানুয়ারি, ১৯৭২ খৃস্টাব্দ থেকে জানুয়ারি, ১৯৮৫ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, খেলাঘর আসর, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সি পি বি) সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সক্রিয় ছিলাম - আমি বরিশাল শহরে অনামি লেন, সদর রোডে বড়ো হলেও - আমার নিজের বা বাবার কোনো বাড়ি নেই - আমার দাদার বাড়ি (দাদার বা তার বাবারও কোনো বাড়ি নেই - ওটিও দাদার দাদার বা তারও আগের কোনো পূর্ব পুরুষের বাড়ি) পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠী উপজেলার ০১ নং বলদিয়া ইউনিয়নের রাজাবাড়ি (চৌধুরীবাড়ি) তে - আমি ১৯৬৫ খৃস্টাব্দে প্রথম আুষ্ঠানিক ভাবে স্কুলে যেতে শুরু করি - তৃতীয় শ্রেনিতে - স্কুল থেকে পাক ভারত যুদ্ধ বিরোধি এবং ফাতেমা জিন্নার হেরিকেনের পক্ষে মিছিল করে বরিশাল শহর প্রদক্ষিণ করে হাটু পর্যন্ত ধূলা বালিতে একাকার হয়ে বাসায় ফিরি - সাদা জুতা মোজা প্যান্ট নষ্ট করে - তারপর ১৯৬৯ পাকিস্থান দেশকৃষ্টি বিরোধি আন্দোলন ও ১১ দফা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আন্দোলনে বরিশালের ততকালিন ছাত্র নেতা শহীদ আলমগির, আ স ম ফিরোজ, মনসুরুল আলম মন্টু, নওশের জাহান, আনোয়ার হোসেন, আনেয়ার জাহিদ, আব্দুল হালিম, কাশি নাথ দত্ত সহ আরো অনেকের সান্নিধ্যে যাবার সৌভাগ্য হয় - ১৯৭০ এর ভয়াল জলোচ্ছাসে উদয়ন স্কুলের বন্ধুদের নিয়ে আমি \"কাকলি ছাত্র সংঘ \" নামে ্একটি সংগঠন গড়ে তুলি - আমরা জুতা পালিশ করে, খবরের কাগজ বিক্রি করে, পেয়ারা বিক্রি করে, অর্থ সংগ্রহ করি ও বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে পুরনো জামা কাপড় সংগ্রহ করে ভোলার দুর্গত এলাকায় পাঠাই - ১৯৭১ এর পয়লা মার্চ থেকে মিছিল মিটিং ও মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণে অংশ নিলে মামা ও নানার সাথে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিলে, স্বরূপকাঠী কলেজ মাঠে জাহাঙ্গির বাহাদুর ও আবু বকর ছিদ্দিকের নেতৃত্বের মুক্তি বাহিনির সাথে সক্রিয় ছিলাম এবং সেপ্টেম্বর/ অক্টোবরে মহসিন ভাইর মুজিব বাহিনি এলে কাটাপিটানিয়া ক্যাম্পে ০৮ -১২- ১৯৭১ (বরিশাল মুক্ত দিবস) পর্যন্ত সক্রিয় ছিলাম - যেহেতু আমি নিজে কোনো পাকিস্থানি মিলিটারি মারিনি - অতএব মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়া সমিচিন মনে করিনি - আজো করি না - যে সব অমুক্তিযোদ্ধা মিথ্যে সনদ নিয়ে রাষ্ট্রিয় সুবিধা নিচ্ছে - তাদের কারণে অসহায় অসচ্ছল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা আজ মানবেতর জিবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে - সনদ পাবে - চাকুরির সুবিধা পাবে - মাসিক ভাতা পাবে - ছেলে মেয়ে নাতি পুতি শিক্ষার ও চাকুরির সুবিধা পাবে হত দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধারা ও তাদের বংশধরেরা - গণহারে সুবিধা দেয়াতে সনদধারিদের সংখ্যায় প্রকৃতরা বঞ্চিত হচ্ছে - সনদ পাবে - সুবিদা পাবে এমন আশা করে কোনো একজন মুক্তিযোদ্ধাও মুক্তিযুদ্ধে যায় নি - প্রত্যেকে জিবন বাজি রেখে দেশকে হানাদার মুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধে গেছে - জাতির পিতার ডাকে ও দেশ প্রেমের আবেগে - সুবিধাবাদি অমুক্তিযোদ্ধারাই ভূয়া সনদ নিয়ে প্রকৃত হতদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য থেকে বঞ্চিত করছে - হাজার হাজার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়নি - তারপরেও লাখ লাখ সনদধারি মুক্তিযোদ্ধা কোথা থেকে এলো ? আমি মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের পর পরই স্বাধিনতা বিরোধিরা (স্বাধিনতার পরাজিত শত্রুরা) সুকৌশলে সনদ নিয়ে, আজ এই বিতর্কের সৃষ্টি করেছে - আসলে সরকারের নিতি নির্ধারণেও কিছু ত্রুটি ছিলো - উচিত ছিলো -“মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান” এই সনদ সকল মুক্তিযোদ্ধাকে ও তাদের সহযোগিদের দেয়া - কিন্তু ভাতা - চাকুরির বয়স বৃদ্ধির সুবিধা - পোষ্যদের চাকুরি প্রদানের সুবিধা - মাসিক ভাতা - এগুলো কেবলমাত্র হতদরিদ্র অক্ষম অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদেরই দেয়া সংগত ছিলো - এখানেও আমলাদের বা নিতি নির্ধারণে স্বাধিনতা বিরোধিদের (স্বাধিনতার পরাজিত শত্রুদের) বিশাল ভূমিকা রয়েছে বলে আমি মনে করি - দৃঢ় চিত্তে বিশ্বাস করি - না হলে খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়েও বিতর্কের কারণ কি হোতে পারে ? খেতাব প্রদানের সময় থেকেই স্বাধিনতা বিরোধিদের (স্বাধিনতার পরাজিত শত্রুদের) সক্রিয়তা বুঝতে পারেনি - মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত সমর্থকরা ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা - কারণ যারা ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্থান সরকারের আজ্ঞাবাহক ছিলো সেই সব আমলারাই ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১ থেকে বাংলাদেশ সরকারের নিতি নির্ধারক হলেন ? স্বাধিনতার শত সহস্র লক্ষ কোটি ‘সুফল’ আছে - কিন্তু একটি মাত্র ‘কুফল’ - যা আজো জাতিকে পিছু টানছে - প্রতিনিয়ত - তা হোলো “উচ্চাসনে (নিতি নির্ধারণে) অযোগ্যরা (রাজনিতিক ও আমলা) ।। ।। আমি নিজ সামর্থানুসারে চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ও কিছু কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হত দরিদ্র শিক্ষার্থিদের আর্থি ক সহায়তা করে থাকি । দু’টি এতিমখানাতে ও চার - ছয়টি মসজিদে মৃত মা বাবা ও অকাল প্রায়াত ভাতিজির (স্বপ্নীল) নামে -

ডঃ রুহুল আমিন চৌধুরী। › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাষা আন্দোলনের কিছু অজানা স্মৃতি –

১১ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:১৩

ভাষা আন্দোলনের কিছু অজানা স্মৃতি –
(ডক্টর মো. রুহুল আমিন চৌধুরী),

গবেষকদের মতে পৃথিবিতে ৬,৯১২ টি ভাষা রয়েছে - তারমধ্যে ৫১৬ টি ভাষা সংকটময় অবস্থায়- ব্যবহারকারির অভাবে অচিরেই হয়তো বিলুপ্ত হবে।
১৯৪৮ খৃ: ভাষা আন্দোলনের যে উন্মাতাল ঢেউ জেগেছিলো তার সেনাপতিত্বে ছিলেন টু্ঙ্গিপাড়ার ‘খোকা’- বড়ো হয়ে হলেন ‘শেখ মুজিব’ ও ‘শেখ সাহেব’ - তারপর হোলেন ‘বঙ্গবন্ধু’ – অবশেষে হোলেন ‘জাতির পিতা’।
১১ মার্চ ১৯৪৮ খৃ: শেখ মুজিব কারারুদ্ধ হন, সতির্থ আরো ৬০ ছাত্র নেতাসহ । ২০০ পিকেটার আহত হয় পুলিশের লাঠি চার্জে। ভাষা আন্দোলনের সেনাপতি শেখ মুজিব ১৯৪৮ খৃ: কারাগারে ছিলেন ০৪ মাস- ১৯৪৯ খৃ: কারাগারে ছিলেন ০৯ মাস - ১৯৫০ খৃ: কারাগারে ছিলেন ১২ মাস- ১৯৫১ খৃ: কারাগারে ছিলেন ১২ মাস- ১৯৫২ খৃ: কারাগারে ছিলেন ০২ মাস।

শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন যে বাঙলা ভাষাকে নিয়ে গভির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে নব সৃষ্ঠ পাকিস্তানের মুসলিমলিগ সরকার। বাঙলাকে তারা প্রাদেশিক ভাষার উপরে উঠতে দেবে না। শেরেবাংলা এ. কে. ফজলুল হক তার টোপ গিলেছিলেন। তিনি ‘অ্যাডভোকেট জেনারেল’ (অ্যাটর্নি জেনারেল) পদ বাগিয়ে নিয়েছিলেন । পূর্ব বাংলায় হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দি অবঞ্ছিত ‍ও নির্বাসিত ছিলেন। জিন্নাহর মন পেতে তিনি ‘জিন্নাহ মুসলিম লিগ’ গঠন করেছিলেন ও ‘উর্দু রাষ্ট্র ভাষার সমর্থনে’ বিবৃতি দিয়েছিলেন।
রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন ‘আওয়ামি মুসলিম লিগের সাধারণ সম্পাদক’ জনাব শামসুল হক ও ‘রাষ্ট্রভাষা কর্ম পরিষদের আহ্বায়ক’ জনাব কাজি গোলাম মাহাবুব। তারা ১৯৫২ খৃ: ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ) ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজপথে তুলকালাম করার ‘প্রবল বিরোধিতা’ করলেন। রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলনের নতুন কমিটির আহ্বায়ক হলেন ‘আব্দুল মতিন’ (ভাষা মতিন)।

১৯৫২ খৃ: ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ) ভাষা আন্দোলনে যেসব যুবক সেদিন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা হলেন – শেখ মুজিববুর রহমান, অলি আহাদ, মোহাম্মদ ইমাদুল্লাহ লালা, মোহাম্মদ সুলতান, আব্দুল মতিন (ভাষা মতিন), গাজিউল হক, এম. আর. আখতার মুকুল, মোস্তাফা নুরুল ইসলাম, কে. জি. মোস্তফা, আব্দুল্লাহ আল মুতি সরফুদ্দিন, রুহুল আমিন কায়সার, শহিদুল্লাহ কায়সার, জহির রায়হান, রণেশ দাশ গুপ্ত, আনিসুজ্জামান, মোহাম্মদ ইলিয়াস, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, হাসান হাফিজুর রহমান, আবু জাফর ওবায়েদুল্লাহ, মুনির চৌধুরী, আলাউদ্দিন আল আজাদ, কবি শামসুর রাহমান, মাহবুব উল আলম চৌধুরী, মুনির চৌধুরীসহ আরো অনেকে।

১৯৪৮ খৃ: মার্চ মাসে যিনি আবিসংবাদিত নেতা রূপে আবির্ভুত হোয়েছিলেন সেই মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান জেলে। তাহলে মন্ত্রদাতা কে ? গণপরিষদে বাংলা ভাষার দাবি তুলেছিলেন সাংসদ ধিরেন্দ্র নাথ দত্ত। তিনি হেনস্তা হোয়েছেন মুসলিম লিগ সরকার কর্তৃক । প্রায় ৫৭ লাখ হিন্দু ৫০ এর দাঙ্গায় প্রাণ হাতে নিয়ে ভারতে উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ পাওয়া ১০ হাজার কমিউনিস্ট জিবন বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এমতাবস্থায় ১৯৫২ খৃ: ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ) বিষ্ফোরণ ঘটলো কি করে ? প্রশ্ন থাকতেই পারে ১৯৭৫ থেকে ২০০৮ খৃ: পর্যন্ত অপপ্রচারে বিভ্রান্ত নতুন প্রজন্মর। বদরুদ্দিন ওমর ভাষা আন্দোলন ও তৎকালিন রাজনিতি বইয়ে শেখ মুজিবকে আড়াল করেছেন সচেতন ভাবেই।

১৯৪৭ খৃ: দেশ ভাগের পরে ফরিদ আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সহ সভাপতি (ভি. পি) নির্বাচিত হন প্রগতিশিল ছাত্র ফেডারেশনের সমর্থন নিয়ে এবং গোলাম আযম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শা্হ আজিজুর রহমান, ফজলুল কাদের চৌধুরী ও খান এ. সবুরের সমর্থিত মুসলিম ব্রাদারহুড ও বঙ্গিয় মুসলিম ছাত্র লিগের চরম দক্ষিণপন্থি অংশের সমর্থনে।

১৯৫২ খৃ: ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ) বাঙলা ভাষার জন্যে ঢাকার রাজপথে জিবন দেয় একজন কিশোরসহ ৩৯ (উনচল্লিশ) ছাত্র জনতা । জন্ম হয় ‘শহিদ দিবস’। ০৭ টি লাশ পাওয়া যায়। অবশিষ্ট লাশ গুম করা হয় পাকিস্তানি পুলিশ ও মিলিটারি কর্তৃক।

১৯৬১ খৃ: ১৯ মে ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচরে বাঙলা ভাষাকে সরকারি ভাষা করার দাবিতে জিবন দেয় ১১ জন। (০১) কমলা ভট্টাচার্য (০২) কানাই লাল নিয়োগি (০৩) সুনিল সরকার (০৪) সুকোমল পুরোকায়স্থ (০৫) কুমুদ রঞ্জন দাশ (০৬) চন্ডি চরণ সুতধর (০৭) তরণী দেবনাথ (০৮) হিতেশ বিশ্বাস (০৯) বিরেন্দ্র সুত্রধর (১০) সত্যেন্দ্র দেব (১১) শচিন্দ্র পাল ।

১৯৫২ খৃ: ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ) পূর্ব পাকিস্তানের চিপ সেক্রেটারি ছিলেন পাঞ্জামি আই. সি. এস. অফিসার আজিজ আহমেদ- ভিষণ বাঙালি বিদ্বেসি ছিলেন। তিনিই ১৯৫২ খৃ: ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ ফাল্গুন ১৩৫৭ বঙ্গাব্দ) মিছিলে গুলি করার আদেশ দিয়েছিলেন।
১৯৫৩ খৃ: ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম শহিদ দিবস পালিত হয়- বিশাল মৌণ মিছিলের মাধ্যমে। এই মৌণ মিছিলের সামনের সারিতে ছিলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানি ও শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৫৩ খৃ: ছিলো পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লিগের নুরুল আমিন সরকারে শাসনের শেষ বছর। পূর্ব পাকিস্তানের চিপ সেক্রেটারি ছিলেন পাঞ্জাবি আই. সি. এস. অফিসার এন. এম. খান (নিয়াজ মোহাম্মদ খান)। দীর্ঘ দিন তিনি পূর্ব পাকিস্তানে চাকুরি করায় তিনি প্রায় বাঙালি হয়ে গিয়েছিলেন। নুরুল আমিন সরকার ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম শহিদ দিবস পালন করতে দেবেনা। প্রয়োজনে ১৪৪ ধারা জারি করবেন। চিপ সেক্রেটারি এন. এম. খান (নিয়াজ মোহাম্মদ খান) ভাষা আন্দোলনের যুব নেতাদের কাছে প্রস্তাব দিলেন, একুশের শোক মিছিল যদি শান্তিপুর্ণ এবং মিছিলে কোনো শ্লোগান দেয়া না হয়, তবে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম শহিদ দিবস পালন করতে দেয়া হবে। গাজিউল হক বললেন, দরকার হোলে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গতে হবে। মোহাম্মদ ইমাদুল্লাহ লালা বললেন, ‘আমাদের মিছিল মৌণ মিছিল হবে। মিছিল যতো বড়ো হোক তা যাতে মৌণ থাকে সে ব্যবস্থা আমি করবো’। ছাত্রদের নিয়ে কয়েকটি স্কোয়র্ড বা ব্রিগেড গঠন করে মিছিলের পাশাপাশি রাখা হবে। অলি আহাদের মধ্যে একটা নেতাজি সুলভ ভাব ছিলো। তিনি সেই শোক মিছিলে মিলিটারি কায়দায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করছিলেন। সে শোক মিছিল এতো বড়ো দীর্ঘ ছিলো যে, মেডিকেল কলেজ গেট (এখন যেখানে শহিদ মিনার) থেকে সদরঘাট পযর্ন্ত। কালো পতাকাবাহি এই মিছিলে কেউ শ্লোগান দেয়নি, ‘শাহিদ দিবস অমর হোক’, ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’। কিংবা জেলখানা অতিক্রমের সময়, ‘রাজবন্দিদের মুক্তি চাই’। জেলখানার অভ্যন্তরে রাজবন্দিরা অবশ্য শ্লোগান দিয়েছিলো।

মহান ভাষা আন্দোলনের উত্তাল উদ্বোধন ঘটালেন, আইন ভেঙ্গে দ্রোহের অগ্নিপথে প্রথম পা বাড়ালেন শাড়ী পরা অবগুন্ঠনমুক্ত ১৪ বাঙালি নারী (০১) সাফিয়া খাতুন (০২) ফজিলাতুন্নেছা (০৩) ড. হালিমা খাতুন (০৪) প্রতিভা মুৎসুদ্দি (০৫) সুফিয়া আহমেদ (০৬) সুফিয়া ইব্রাহিম (০৭) মমতাজ বেগম (০৮) সোফিয়া খান (০৯) জুলেখা নুরী (১০) শামসুন্নাহার (১১) সারা তাইফুর (১২) বানী ভট্টাচার্য (১৩) ড. সুফিয়া খাতুন (১৪) রওশন আরা বাচ্চু । আরো যে সব নারী মহান ভাষা আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন তারা হলেন, (১৫) ইডেন কলেজের ছাত্রী মাহবুবা খাতুন- ১৯৪৮ খৃ: ৩১ জানুয়ারি ঢকার বার লাইব্রেরিতে বলেছিলেন, ‘বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি স্বিকার করিয়ে নেয়ার জন্যে প্রয়োজন হলে মেয়েরা তাদের রক্ত বিসর্জন দেবে’। (১৬) বোরখা শামসুন (১৭) সুরাইয়া ডলি (১৮) সুরাইয়া হাকিম (১৯) নারায়নগঞ্জের মমতাজ বেগম এবং তার ছাত্রী (২০) ইলা বকশী, (২১) রেনু ধর ও (২২) শাবানীর মেতা কিশোরীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিলো। নারায়নগঞ্জের মমতাজ বেগমকে কারাবাসের সময় তালাক দিয়েছিলেন তার স্বামি। (২৩) সিলেটে কুলাউড়ার সালেহা বেগম ময়মনসিংহ মুসলিম গার্লস স্কুলের দশম শ্রেনির ছাত্রী থাকাকলিন ভাষা শহিদদের স্মরণে কালো পতাকা উড়ালে তাকে ০৩ বছরের জন্যে বহিষ্কার করা হয়। এর পরে আর তার পড়ালেখা চালানো সম্ভব হয়নি। ১৯৫২ খৃ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। এদের মধ্যে ছিলেন (২৪) স্পিকার আব্দুল ওহাব খানের কন্যা বরিশালের বাবুগজ্ঞর মেয়ে সামসুন্নাহার এবং নলসিটির নন্দিকাঠি গ্রামের খান সাহেব বদরুদ্দিন আহমেদের কন্যা (২৫) সুফিয়া খান। বরিশালে ১৯৫২ খৃ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২৫ সদস্য বিশিষ্ট রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের একমাত্র নারী সদস্য ছিলেন (২৬) রানী ভট্টাচার্য । ১৪৪ ধারা ভঙ্গের দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেফতার হওয়া ২১ জন ছাত্রীর মধ্যে ছিলেন (২৭) লায়লা নুর (২৮) রওশন আরা বেনু (২৯) ফরিদা বারী (৩০) জহররত আরা (৩১) কামরুন নাহার লাইলী (৩২) হোসনে আরা (৩৩) ফরিদা আনোয়ার (৩৪) তালেয়া রহমান প্রমুখ।

১৯৫৬ খৃ: ১৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বিকৃতি প্রদান করে ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান জাতিয় পরিষদ বাংলা এবং উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সংবিধানে পাশ করে। ০৩ মার্চ ১৯৫৬ খৃ: থেকে তা কার্যকর হয় ।

১৯৯৯ খৃ: ১৭ নভেম্বর ১৮৮ দেশের সরাসরি সমর্থনে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে হিসেবে গৃহিত ও স্বিকৃত হয়। সেই থেকে বাঙালির গর্বিত মুখের ভাষার একটা চিরস্থায়ি বন্দোবস্তো হয় বিশ্বমানচিত্রে। যদিও খোদ বাংলাদেশে আজো বাঙলা ভাষার ব্যবহার ও চর্চা নিয়ে চলছে নানা টালবাহানা ও ষড়যন্ত্র চলছে। (যেমন উচ্চ আদালতের বাঙালি বিচারপতিগণ বাঙলায় রায় লিখতে পারেন না)।

ভাষা আন্দোলনের বির শহিদদের প্রতি যেমন সালাম জানাই- তেমনি বিনম্র চিত্তে শ্রদ্ধা জানাই- সেইসব বিস্মৃতিময় নায়কদের প্রতি- যাদের লড়াকু ভুমিকা ছাড়া ভাষা আন্দোলন সফল হোতো না- আর ভাষা আন্দোলন সফল না হোলে বাংলাদেশও স্বাধিন হোতো না – সে অর্থে এরাও বাংলাদেশের স্থাপতি – বিস্মৃতি থেকে এদরকে তুলে আনা জাতির সকল নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য ।

(কৃতজ্ঞতা : আবদুল গাফফার চৌধুরী, শামসুল আরেফিন খান, কবির আনোয়ার, এফ. এম. শাহিন, ভায়োলেট হালদার)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.