নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এমদাদুল হক তুহিন

অনন্ত শুন্যতা ও একাকীত্বের মাঝে বেঁচে থাকা পথিক।

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব)

অনন্ত শুন্যতা ও একাকীত্বের মাঝে বেঁচে থাকা পথিক।

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব) › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি ভেজা রাতে একটি চুমোর অপেক্ষায়! (সামুতে আমার প্রথম পোস্ট)

০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ১:৫৯

ব্লগিং এ আছি প্রায় ২-৩ বছর ধরে। মূলত আমু, শব্দ-নীড়, চতুর্মাত্রিক, উন্মোচন, বন্ধু ব্লগ, মুক্তচিন্তায় সময় পেলে লেখালেখি করার চেষ্টা করি। সময়ের তাগিদে ও বিভিন্ন বন্ধুর ব্লগ পড়া স্বত্বেও মন্তব্য করতে না পাড়ায় নিজের কাছে ভালো লাগতো না, তখন মনে হত সামুতে আমার একটা নিক থাকা প্রয়োজন। ২০১১ এর শেষের দিকে সামুতে একাউন্ট খোলার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আর খোলা হয়ে উঠে নি সামুতে আমার ব্লগ একাউন্ট। যাই হোক অবশেষে গতকাল শাহজাহান সিরাজ ভাইয়ের সহায়তায় সামুতে একাউন্ট খুলি। আশা ব্লগিং এর পথ চলাতে সামুর অভিজ্ঞ ব্লগারদের সহায়তা পাবো। জীবনের প্রথম ছোট গল্পটি লিখলাম সামুতে পোস্ট করার জন্যে। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।















ক্যাম্পাস থেকেই বের হয়ে ধ্রুব সিগারেট মুখে পুরে বন্ধুদের সাথে কথা বলতে লাগলো। কতক্ষণ কথা বলেই মনে হয়ে গেল আজ তার নীলিমাকে উঠিয়ে নেওয়ার কথা। সিগারেট শেষ করতে করতেই ধ্রুব ও রাসেল ছোটনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাইকে বসল। ধ্রুব সিগারেটের মুতাটায় শেষ টান দিয়ে ফেল দিল। রাসেলকে সে বলল বন্ধু আজ কিন্তু আমার স্বপ্ন পুড়নের দিন। আজ আমি নীলিমাকে আমার বাসায় উঠিয়ে নিয়ে যাবো। বাইক চলছে হাউজ-বিল্ডিং থেকে বনানী অভিমুখে। এরই মধ্যে টুপটাপ বৃষ্টি পড়া শুরু হল, ধ্রুব বলল বন্ধু আমি অনেক কষ্টে ৫ টা কদম ফুল ম্যানেজ করেছি, আজ আমাদের প্রেমের বয়স ৫ পূর্ণ হতে চলছে। ধ্রুবের এক হাতে ৫ টি কদম ফুল অন্য হাতে ফোন নিয়ে পিক করে চলছে নীলিমার নম্বরে, অবশেষে যেন হাতের মুঠোয় পেল সেই অধরা কাঙ্ক্ষিত ময়ূরকণ্ঠী নীলিমাকে।

-হ্যালো তুমি কোথায় ?

-এই তো বাসায়।

-কি করছিলে?

- তোমার কথা ভাবছিলাম।

- তাই নাকি? আমি তো আত্মহারা এক পথিক, আমায় নিয়ে এত কিসের ভাবনা!

-দেখো ধ্রুব, তুমিই আমার চেতনা, তুমি আমার ভাবনা।

- আচ্ছা ঠিক আছে জানু, আমার ক্লাস শেষ, আমি আসছি। জানু এখন এক ফোঁটা দু ফোঁটা করে বৃষ্টি গড়িয়ে পড়ছে আমার গাঁয়ে।

- তাই নাকি, অনেক মজা তো! আমায় নেবে?

-আমি আসছি তোমার কাছে।

-তুমি কি বাইকে?

- হ্যাঁ।

-একটু সাবধানে, কেমন!

-ওকে। এই শুনো, আজ তোমার জন্যে দারুণ একটা জিনিস অপেক্ষা করছে।

-তাই নাকি, আমায় আর পায় কে! আমিতো দেখি না চাইতেই আকাশ পেয়ে যাচ্ছি।

-জানু তাহলে রাখছি, আমি এখন বাইকে বসে বৃষ্টি ভিজে তোমার কাছেই আসছি।

-এখন আমি কদম ফুল হাতে দাঁড়িয়ে তোমার অপেক্ষায়।

-আমার সাথেও তাহাই আছে।



void(1);





ফোনে কথা বলা শেষে ধ্রুব বৃষ্টির মধ্যেই পিঠে লাগানো ব্যাগ থেকে আরেকটা সিগারেট বের করল, কোন রকম বিড়িটা ধরাতে ধরাতেই বিমানবন্দর চলে এলো তারা। বিড়িতে দুই টানও দিতে পারলো না সে, কারণ যেভাবে বৃষ্টি পড়ছে এ যেন বৃষ্টি নয়, স্বর্গের পানি। ভিজা বিড়িতেই দুই টান দিয়ে ফেলে দিয়ে বলল বন্ধু হুণ্ডা থামানো দরকার নাই, আমি আজ ভিজে ভিজেই আমার উনার দেরাজে উপস্থিত হব। শুরু হল তুমুল গতিতে বৃষ্টি, অন্য দিকে ১২০কি মি বেগে চলছে ধ্রুবদের বাইক। এক একটি বৃষ্টির ফোঁটা যেন, এক একটি পাথর! তারপরও মনে ব্যাপক আনন্দ, আজ যে তার সাথেই দেখা হবে। এই তো আর আধা ঘণ্টা! বনানী থেকে সোজা ওকে নিয়ে যাবে ফার্মগেট। এমনকি আজ সে নীলিমাকে বিয়েও করে ফেলতে পারে। এমন দিনে বিয়ে না করে কি থাকা যায়! যেখানে সব ঠিক, ছোঁতে না পারার বেদনা সেখানে কি যে কঠিন এটা ধ্রুব থেকে আর কে ভালো বুঝবে! যাই হোক হুণ্ডা চলছে তার নিয়মে, আর ধ্রুব তার নিয়ম মত চশমা খুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে , কখনো বা মুখ বের করে বৃষ্টির পানি পান করছে। এক হাতে ৫ টি কদম, অন্য হাতে চশমা! এই দেখে গাড়িতে বসা একটি মেয়ে হা হা করে হেসে উঠল। এই ছেলেটা পাগল নাকি! এই ঢাকা শহরেও আবার কদম ফুল। না ঢাকা শহরে কদম ফুল পাওয়া বড়ই দুষ্কর! সে গত রাতে স্বপ্নের ঘোরেই ছোট ভাইকে ফোন করে অনেক অনুনয় বিনয় করে গ্রাম থেকে এই ফুলগুলো আনায়। আজ যে ৫ তারিখ, তার জন্যে আজ বিশেষ দিন! আজকাল ৫ তারিখ মানেই কিছু না কিছু, যেন ভালো মন্দ সব কিছু এই পাঁচেই এসে আটকে যায়।



খিলক্ষেত পেরিয়ে এখন এম ই এস এ এসে গেছে ধ্রুবদের বাইক, এই ফাঁকে ধ্রুব তার ছোট ভাই অসীমকে ফোন করে বলল আজ একটু খাবো। ব্যবস্থা করে রাখ, আমি প্রায় বনানীর কাছাকাছি। লাল-নীল পানিতে ধ্রুব আবার নিজেকে খুঁজে পেতে ভালোবাসে।



ধ্রুব এখন উন্মত্তের চেয়ে অনেক বেশি উন্মত্ত কারণ তার মতে সে এইভাবে আর কোন দিন সে বৃষ্টি উপলব্ধি করতে পারে নি! এমন ভাবে বৃষ্টি ভেজা রাতে প্রিয়ার হাত ছুঁয়ে দেওয়ার আকুলতায় সে কতবার আলো থেকে অন্ধকারে, অন্ধকার থেকে আলোর জগতে প্রবেশ করেছে। বনানী ফ্লাই ওভারে উঠেই সে নীলিমাকে ফোন দিলো।



- কই তুমি?

- বের হলাম!

- ওকে

-তুমি?

- বনানী ওভারপাসে।

-সাবধানে, তোমাকে খুব মিস করছি এই বৃষ্টিতে।

- আমি হুণ্ডাতে বসে ভাবছি, সেটা যদি তুমি হতে।

-কি করতে? ছুঁয়ে দিতে?

- না, তুমি আমাকে জড়িয়ে রাখতে।

- আমি কিন্তু...

- আবার কিন্তু কেন! ভালো হবে না কিন্তু বলে দিচ্ছি।

-আমিও যে তোমায় ভালোবেসে ভালোবাসাই দিচ্ছি।

- তাতে কি! আমাদের তো বিয়েই হয় নি, তাহলে আমায় ছুবে কেন?

- মনের দামে, দেব তোমায় ছুঁয়ে। ভালোবাসার আয়েসে।

-দেখো ধ্রুব, আমি কি তোমার সব? না অন্য কেউ আছে!

- এই পৃথিবীতে একটি মানুষ কি একজনের জন্যেই! একটি মানুষ তো হাজারের তরে।

- কি?

-দেখো তোমার চতুঃপার্শ্বে কত কিছু বহমান, তোমার ভালোবাসা আমার হৃদয়ে রবে।

-কিন্তু আমি যা বলছিলাম!

- না এই মুহূর্তে তুমিই শুধুই আমার, দেখ চতুঃপার্শ্বে অনেক কিছু ঘটে সে দিকে না তাকিয়ে নিজের দিকে তাকাও। সব উত্তর পেয়ে যাবে।

-ওকে আজ আমি তোমায় ছুঁয়ে দেবো, আমি তোমায় চুমো দেবো।উম্মা! উম্মা!

- আমি দিচ্ছি, প্রকৃতি থেকে এই ক্ষণে গ্রহণ করে নাও। এসেই দিচ্ছি, একটি চুমো শুধু মাত্র একটি চুমো... যে চুমোর জন্যে তুমি সেই ছোট্ট থেকে অপেক্ষা করেছ, যে চুমোর জন্যে তুমি আজ আমার হয়েছে।



বলেই ফোন কেটে দিল ধ্রুব। বৃষ্টি আপাতত বনানীতে এসে শেষ হয়েছে। ধ্রুব চশমার গ্লাস মুছে চোখে চশমা দিয়ে আকাশ দেখেছে, আকাশ এত কালো কেন? আজ তো আকাশের হেসে উঠার কথা! ঝলমল করে জ্বলে উঠবে আকাশের সব কটি তারা। তারাদের সাক্ষী রেখেই আজ ধ্রুব আর নীলিমার বিয়ে হবে। প্রচণ্ড জ্যামে ধ্রুব অস্থির হয়ে যাচ্ছে, একেতো শরীর ভেজা, দুইয়ে পকেটে সিগারেট নাই। অন্য দিকে তার প্রেয়সী তার অপেক্ষায় অপেক্ষমাণ। ধ্রুব রাসেলকে বলল বন্ধু আমার ফোন ভিজেতো একাকার, তোর টা? না,আমারটা তো সামনে রেখেছি কিছু হয় নি। ওকে নো প্রব! চায়না মোবাইল তো। যাই হোক, তুই থাক আমি আসছি। বলা শেষ তো ধ্রুব উধাও। রাসেল সব দিকে খুঁজেতে লাগলো, বলেই নিমিষে ছেলেটা গেল কোথায়?



void(1);



ধ্রুব এক দৌড়ে রাস্তা পার হতে চাইছে, ওপাড়ে নীলিমা! ধ্রুব এ দিক ও দিক দেখছে আর ফিসফিস করে বলছে কখন সিগন্যাল দিবে আর গাড়িগুলো থেমে যাবে। অপেক্ষা আর তার সইছে না, প্রায় ১৫ মিনিট ধরে সে দাঁড়িয়ে। সিগন্যাল যেন আজ আর পড়েই না। ১৫ মিনিট মানে ৯০০ মিনিট, ১৫ মিনিট মানে ৫৪০০০ সেকেন্ড। ওদিকে ধ্রুবর বুকেই যেন ঘড়ি ঘুরতে লাগলো। এত সময় ধরে সে অপেক্ষা করছে একটি চুমোর জন্যে, না আজ তো তার নীলিমাকে উঠিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। আবার ভেবে চলছে আজ যদি আমাদের বাসররাত হত! আজ যদি রাতের নির্জনতায় শুধু নীলিমাকেই পেতাম! কি যে আক্ষেপ! এককাল থেক অনন্ত কালের মতই চুমোর অপেক্ষায় ধ্রুব আজ যেন সব ভুলে গেছে। তাকিয়ে আছে এক পলকে রাস্তার ঐ ধারে, যেখান হতে দাঁড়িয়ে নীলিমা হাত নেড়ে যাচ্ছে অবিরত...।



ছবি ঠিকঠাক যায়গায় দিতে না পারায়, ফেবুর নোট লিঙ্ক দিয়ে দেওয়া হল।

বৃষ্টি ভেজা রাতে একটি চুমোর অপেক্ষায়!(ফেবু নোট)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:০৭

মুশাসি বলেছেন: তুহিন ভাইয়ের প্রথম পোষ্ট নাকি? পড়া শুরু করলাম।

২| ০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:০৯

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব) বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, আশা করি সতত সাথেই থাকবেন।

৩| ০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:১০

রক্তাক্ত-আমি বলেছেন: নিলিমা হারা ধ্রুবরা প্রতি প্রাণে প্রাণে বেঁচে থাক...জেগে থাক...

৪| ০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:১৬

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব) বলেছেন: রক্তাক্ত ভাইয়া, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

৫| ০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:১৭

মুশাসি বলেছেন: খুব ভালো লাগলো লেখাটা। :) :) :) :)
প্লাস+++++

৬| ০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:২৬

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব) বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাইয়া। :)

৭| ০৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৯:৩৪

"চিরকুট" বলেছেন: আমি তো মনে করছিলাম এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে। কিন্তু দেখলাম না, সব ঠিকঠাকিই আছে

০৬ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৫

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব) বলেছেন: লেখার সময় আমারও মনে হচ্ছিল এক্সিডেন্ট নিয়ে আসি, কিন্তু কেন জানি মনে হল তাতে অপূর্ণতাটাই বেশি ফুটে উঠবে। তাই অপেক্ষায় রেখে দেওয়া হল চুমোর তীব্র আক্ষেপ।

ধন্যবাদ চিরকুট।

৮| ০৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:১৬

মৌমিতা আহমেদ মৌ বলেছেন: খুব সুন্দর হয়েছে । অপেক্ষার প্রতিটা মুহূর্ত অনেক ভালোভাবে বর্ণনা করেছেন । মনে হচ্ছিল যেন আমিই সেই মানুষটা । :) । +++

০৬ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব) বলেছেন: অপেক্ষা যে কত করুণ ও তীব্র অস্থিরতা কাজ করে তখন তা মাত্র ভাবার চেষ্টা করেছিলা। পুরোটা কি আর ফুটিয়ে তোলা যায়, যে অপেক্ষায় সেই জানে অপেক্ষা কি !!!

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানবেন।

৯| ০৬ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: বাইরে এখন টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে,,,,,,সাথে তোমার লেখা ভাইয়া,,,,,,ভাল লাগলো,,,,,,,,,,,শুভকামনা,,,,,,,,,,,,,

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৫৯

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব) বলেছেন: ধন্যবাদ, আপি।

আপনার প্রতিও রইল অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা।

১০| ০৩ রা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:১১

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: সুন্দর লেখা!!! প্লাস!

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:১৪

এমদাদুল হক তুহিন(ধ্রুব) বলেছেন: ধন্যবাদ, আপিটা।

অনেক অনেক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.