![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনন্ত শুন্যতা ও একাকীত্বের মাঝে বেঁচে থাকা পথিক।
মেয়েলী বিষয়গুলো ভাবতে ভাবতেও ভাবনাগুলোকে ছুটি দেয় নি ধ্রুব। পারতপক্ষে এই চ্যাপ্টার বাদ দিয়ে অন্য চ্যাপ্টার নিয়ে অধ্যবসায়ে মনযোগী হওয়া সম্ভব কিনা তা ভাবে নি কোন দিন। কিন্তু প্রেম ভালোবাসার জগতের বাইরেরও যে একটা জগত আছে তা ভুলে গিয়েছিল ক্ষণিক-কাল আগে। অথচ কিছুদিন আগেও জীবনকে কত সুন্দর করে সাজাতো এই ধ্রুব। আজ আবারও দিবে ভাবনার ছুটি এই ভেবেও ভেবে পায় না কিভাবে দিবে এই পথ পাড়ি। নিজেতে মগ্ন ধ্রুবের মগ্নতা ভেঙে দিল সেই ছেলেটি যার নাম অসীম।
জীবন কি এ নিয়ে ভাবতে বসে গেল ধ্রুব! তার জীবনেই বা কি আছে, কিভাবে কাটবে ভবিষ্যৎ এ নিয়ে মগ্ন এখন সে। জীবন হল বহতা নদীর স্রোত, স্রোতের ন্যায় বহমান। কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না চলার পথে। চলার পথের সূক্ষ্ম অলিগলি ধ্রুবের চেনা। তো জীবনকে সাজাই এই ভেবে, ফোন দিল বাবাকে। হ্যাঁ বাবা আমি বিজনেস এ মনোনিবেশ করছি। আমাকেই হতে হবে সেরা বিজনেস মেগনেট। তো কি করা যায় ভেবেই যোগ দিল মার্চেন্ডাইজিং এ। এখন এ পোশাক খাতটিই আছে একমাত্র, যাতে করে অতি সহজে বড়লোক হওয়া যাবে। স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখা যাবে।
অতি অল্প সময়েই হয়ে গেল সে নামীদামী এক কোম্পানির মার্চেন্ডাইজার। অনেক ভালো বেতন, ফ্ল্যাট হয়েছে, গাড়ি হয়েছে। হাতের নাগালেই ৫০ অধিক বায়ার। তো ধ্রুবকে পায় কে, যে দিকে তাকাই সে দিকেই টাকা, সে দিকেই কমিশন। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই তার মধ্যে অহংকার এসে ভর করল। এত টাকা সে কামাই যে প্রতিদিন বারে যেতে পারে ইচ্ছে হলেই। উইকেন্ডে তো যাবেই এমনটা হয়েছে। আজকাল আর আকাশের তারা দেখা হয় না তার। আকাশের দিকে বিড়ির ধোঁওয়াও ছুড়ে দেওয়া হয় না।
প্রতি রাতে বিছানা চেঞ্জ করতে আজকাল বেশ অভ্যস্ত হয়েছে সে। না না, সে প্রেম করে বিয়েও করেছে। মেয়ে অতি সুন্দর, বাংলাদেশের যে কোন মডেলিং ফেইল। কিন্তু সমস্যা একটাই বৌকে সে সময় দিতে পারছে না।
-হ্যালো জানু।
-হ্যাঁ, জান।
-আমি এখন আসতে পারছি না।
-কেন তোমার না অফিস ছুটি হয়ে যাওয়ার কথা।
-হুম, কিন্তু আবারও মিটিং।
-সকালে নাস্তা করে যাও নি, দুপুরে বললে বাইরে থেকে খেয়ে নেবে, আর এখন রাত ১২ টা। অথচ...
-প্লিজ জানু একটু বুঝ, আমি না খুব বিজি...
-দেখ তুমি থাকো তোমার বিজিনেস নিয়ে, আমিও ...
-প্লিজ রাখছি, উম্মা।
-ওকে বাই।
অথচ ধ্রুব বিজি নয়, সে এখন নতুন মেয়ের সাথে কোম্পানি থেকে দেওয়া ফ্ল্যাটে ওয়াইন খাচ্ছে এবং আজ সাড়া রাত খাবে। একটা সিগারেট মুখে নিয়ে ধ্রুব বলল, তুমি কি আগে খেয়েছ ? মেয়েটি হ্যাঁ না কিচ্ছুটি বলল না। হ্যাঁ মেয়েটির কথাই বলা হল না, কে এই মেয়ে? সে হয়ত কারো বোন, কারো প্রেমিকা! এই মেয়েটি নতুন ধ্রুবদের কোম্পানিতে। তার অদতন কর্মচারী। তাঁকে নিয়ে তাই ইচ্ছে মত আয়েশ করতে মানা নেই।
-নাও, এক পেগ মারো।
-আমি খাই না, তাও স্যার আপনার সাথে।
-দেখ এখানে আমি তোমার স্যার নয়, তোমার শয্যাসঙ্গিনী।
-এভাবে আর কতকাল?
-সমস্যা নেই, বিয়ে করে নেব কোন একদিন!
-দিন, পুরো গ্লাস ভর্তি করে দিন। ইচ্ছেমত খেয়ে আপনাকে আনন্দে মাতাই। আমাদের জন্মই তো এই জন্যে, আমরা যে মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে।
-দেখ, আমাকে আবেগ দেখাতে এসো না। আবেগের জলাঞ্জলি দিয়েছি সেই অনেক আগে। হাত রেখো আমার কাঁদে, নাচবে।
-আমি নাচতে জানি না, তাও যেহেতু হয়েছি তোমার বাদী, তাইতো এখন নাচি।
-আরও কাছে এসে দীর্ঘশ্বাস দাও আমার মুখে।
-তুমি কি সব এভাবেই বুঝে নেবে?
-আমি তোমায় রাঙিয়ে দেব প্রেমের আলোয়। অর্থ আর সামজিকতায়।
-না না এই নয়, এই মুহূর্তে তোমার প্রেম চাই।
-নাও, আরও দু পেগ।
-আমি হলাম তোমাতে মাতাল, তুমিই আমার জীবনের শেষকাল। হবে তো?
-হ্যাঁ অবশ্যই হব, আমি তোমার এ কাল হতে ওকাল।
-তারপরও যে ভয় হয়, জানি তোমার বৌ আছে বাসায়। তারপরও কেন ডাকো আমায়?
-ভালোবাসি তাই ভালোবাসায়।
কাব্যময় প্রেম-কাব্যে মেতে উঠবে দুজনে। চলবে পেগের পড় পেগ মদ খাওয়া। নাচানাচিতে ধ্রুব ধরিয়ে দিবে মেয়েটির মুখে সিগারেট। সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়বে দুজন দুজনার মুখে। জড়িয়ে থাকবে এঁকে অপরকে সাড়া রাত। শেষ রাতে আদি-খেলা। এভাবেই চলছে ধ্রুবের সাথে শত মেয়ের মেশামেশি, ভাবছে এ যেন মেয়েদেরই আবাস ভূমিতে মেলা।
অপরদিকে তার বৌ, যাকে ভালোবেসে এনেছিল ঘরে, সামাজিক বন্ধনে সে হচ্ছে অবহেলিত বঞ্চিত সকল সুখের। বৃদ্ধ বয়সে এসে জানতে হবে সেও বেছে নিয়েছিল এক একটা নতুন নতুন পাখি।
©somewhere in net ltd.