নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

STRAIGHT FROM THE HEART

বাস্তবতার দুস্টচক্র

সাদা-কালো

Only because I'm telling you this story, doesn't mean I am alive at the end of it

সাদা-কালো › বিস্তারিত পোস্টঃ

দাসত্বের শিকলে বন্ধী বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৫:৩২

যুগে যুগে বাংলাদেশে যত আন্দোলন হয়েছে লক্ষ করলে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে যাবে। ৭১ কিংবা ৫২'র কথা বলব না। কিন্তু ৯০ এর শৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকে আমি জাতীয় আন্দোলন বলতে রাজী নই। এটি ছিল একটি রাজনৈতিক আন্দোলন। কারন এই আন্দোলনে আওয়ামীলীগ এবং বিএনপি এর রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত ছিল। রাজনৈতিক নেতাদের শিখিয়ে দেয়া বুলি বুকে পিঠে জড়িয়ে নুর হোসেন লাশ হয়েছে। সেই লাশ নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। লাভবান হয়েছে কারা??? আওয়ামিলীগ এবং বিএনপি।



আমাদের সামাজিক ব্যাবস্থা থেকে এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, যেহেতু এখনো দেশের দুই-ত্রিতীয়াংশ মানুষ উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায়নি, প্রায় অর্ধেক মানুষ অশিক্ষিত (যারা এস এস সি পাশ কিন্তু পরিশ্রম করে পেট চালাতে নারাজ তাদেরকে আমি অশিক্ষিতই বলছি) সেখানে আজকের এই কম্পিটিটিভ যুগে তারা তাদের নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পাবে না, এটা খুব সহজেই অনুমেয়। কাজেই পেট চালানোর লোভ দেখিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো তাদেরকে পা-চাটা গোলাম বানিয়ে রাখবে এটাই স্বাভাবিক। এই অশিক্ষিত মানুশগুলোর যেহেতু অন্য কোন উপায় নেই, কাজেই তারা তাদের রাজনৈতিক নেতার প্রতি অনুগত্য প্রকাশ করার জন্য খুন-অগ্নিসংযোগ-ধংস ইত্যাদি ইত্যাদি সব কিছুই করবে। কিন্তু বাংলাদেশের যে নাগরিক উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে, বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সুযোগ পেয়েছে, তাদেরকে যখন দেখি তার রাজনৈতিক সমর্থিত দলের পা-চাটা গোলাম এর মত আচরন করে তখন সেই দেশের সভ্যতার বিকাশ কিংবা দাসত্বের মুক্তি কিকরে সম্ভব আমার জানা নেই।



এত বছরের বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে যে কোন জাতীয় ক্রাইসিস এর একটি খুব চমৎকার বিষয় ছিল। সেটি হল এমন জাতীয় ক্রাইসিস-এ অন্তত কিছু বুদ্ধিজীবি আমরা পেতাম যারা জাতিকে পথ দেখাতো। অথচ এত বড় এই গনআন্দোলন হল যেখানে আমি কোন বুদ্ধিজিবীর আবির্ভাব দেখলাম না। খুব দুঃখজনক। প্রশ্ন হল কেন?? তার মানে কি স্বাধীনতার পর আর কোন বুদ্ধিজিবী জন্ম নেয় নি বাংলাদেশে?? তাহলে তারা কোথায়??? নাকি রাজনৈতিক দাসত্বের শিকলে থাকতে থাকতে তারাও ঘুমিয়ে পড়েছে?? হয়ত তাই। কিন্তু নিরীহ বাংলীর কথা কে ভাবে???



স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক নেতারা যখনই দেখেছে তাদের তলা ফুটা হয়ে যাচ্ছে, তখন দেশকে অস্থিশিল করে দিয়ে শুরু হয় তাদের রাজনৈতিক আন্দোলন। পরবর্তিতে তারা সেই রাজনৈতিক আন্দোলনকে জাতীয় আন্দোলনে পরিনত করার পায়তারা শুরু করে এবং কৃতিত্বের সাথে সফল হয়। আর আমরা বেকুব বাঙ্গালী জাতি সেই আন্দলনকে নিজেদের চেতনায় ধারন করে রাজপথে নামি। ফলাফল হিসেবে লাশ হয়ে ঘরে ফিরে নুর হোসেন। তবুও আবেগপ্রবন এই জাতি মরতেও রাজি। ভাবে দেশের জন্য আমি শহীদ। এবার শুনুন মুদ্রার অপর পিঠের গল্প।



যখন এই "নুর হোসেন"রাই রাজীব, ইমরান কিংবা আরিফ জেবতিক হয়ে জাতীয় কোন দাবী নিয়ে রাজপথে নামে, তখন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের হিসেবের খাতা খুলে বসে পড়ে। সবার আগে চিন্তা করে এতে তাদের কি লাভ - কি ক্ষতি। শাহবাগ আন্দোলন যখন শুরু হল তখন গোটা জাতি ভেবেছে বুঝি সত্যিই ৭১ ফিরেছে প্রজন্ম চত্তরে। অথচ শুধুমাত্র কিছু রাজনৈতিক দলের স্বার্থে আঘাত আসলো বলে তারা বিবেকের মাথায় প্রস্রাব করে নির্লজ্জ্বভাবে সেই আন্দোলনের বিরোধীতা করতে শুরু করল। আর সেই তথাকথিত শিক্ষিত বিবেক বর্জিত মানুষগুলো, যাদের ব্যাগ ভর্তি বড় বড় সার্টিফিকেট, তারাও যেন সেই রাজনৈতিক দলের নেতাদের দেখানো পথে গনজাগরনকে অস্বীকার করল। ফলাফল আন্দোলনের বর্তমান অবস্থা। বাড়তি পাওনা হিসেবে জন্ম নিল "হেফাজতি প্রতারকের দল" যারা মসজিদের ভিতরে দাঁড়িয়ে মসজিদের মাইক ব্যাবহার করে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে নিরীহ ধর্মপ্রান মানুষকে উস্কানি দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। ধর্ম যাদের কাছে রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার তাদের মত নিকৃষ্ট আর কে হতে পারে আমার জানা নাই। একটি ভিডিওতে দেখলাম কিছু নমরুদের দল ফটিকছড়িতে কিছু নিরস্ত্র মানুষকে কোপাচ্ছে আর সাথে সাথে স্লোগান দিচ্ছে - "আল-করানের আলো, ঘরে ঘরে জ্বালো"। আমার প্রশ্ন হল - এই যদি হয় তোদের আচরন তাহলে ইসলামের কথা শুনলে মানুষ ভয় পাবে না কেন?? আল্লাহুয়াকবার বলে এভাবে মানুষের উপর সসশ্র হামলা চালানো কি ইসলামের অপমান নয়?? আল্লাহ্‌ কে অপমান করা নয়?? এটা কোন ইসলামের কথা বলে তারা?? এমন ইসলামের কথা তো নবিজী কখনো বলেন নি। আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি - এভাবে যারা ইসলামের অপমান করছে নবিজী সয়ং তাদেরকে অভিশাপ দিবেন। কারন তিনি মানবতার বানী ছড়িয়েছেন সারা বিশ্বে, নৃশংসতা নয়।



খুব সহজ হিসেব। একটি দেশের অর্থনৈতক উন্নতি তখনই হবে যখন সেই দেশে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকবে। একথা কি আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো জানে না। অবশ্যই জানে। এটা তাদের মাথায় ঢুকে যখন তারা ক্ষমতায় যায় তখন। অথচ ক্ষমতা চলে গেলে তারা এক-এক জন দানবে পরিনত হয়। তাদের পোষা কুকুরগুলোকে লেলিয়ে দেয় হত্যা-খুন-অগ্নিসংযোগ চালাতে। ফলাফল ক্ষতবিক্ষত রাজীবের লাশ, বুয়েট ছাত্রের উপর একই উপায়ে নৃশংস আক্রমন। আর শাহবাগীরা উপাধী পায় "নাস্তিক"।



গত প্রায় ১ মাস ধরে দেশে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মত একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেটি "মাহমুদুর রহমান" নামের এক বাস্টার্ড যে পাকিস্তানি এক গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করেছে। কাজেই আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদককে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এক শয়তান বলার কারনে আমার বন্ধু আমাকে এফবি থেকে ব্লক করেছে। এমন ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, আমার উচ্চ শিক্ষা যদি আমাকেই রাজনৈতিক দাসত্বের শিকল থেকে মুক্তি দিতে না পারে, তাহলে সেটি জাতিকে কি দিবে?? দেশের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা বলে কি কিছুই নেই?? আমরা আরো কত যুগ এভাবে রাজনৈতিক দলগুলো দারা ধর্ষিত হব?? কবে সত্যিকার অর্থেই নিজেদের অধীকারগুলো বুঝতে শিখব। এই রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমার একটাই দাবী -



"ভিক্ষা চাই না মা, কুত্তা ক্ষেদাও"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.