![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সে দিন আকাশে শ্রাবণের মেঘ ছিলো;তবে মেঘ গুলো যেন কাঠ কয়লার ন্যায় কালো ছিলো ।ভোরের সূর্যটা লাল ছিলো কি না জানি না। তবে সূর্যের তেজ ছিলো না, রশ্মির আলোয় কোন সক্রিয়তা ছিলো না। আর দক্ষিনা বাতাস তার গতি পরিবর্তন করে কেমন যেন স্থবির হয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিলো। রানার সেদিন ডাক নিয়ে আসে নি। মোয়াজ্জিনের আযানের আওয়াজ শুনা যায় নি। জায়নামাজ টা পড়েছিলো ঠিক যেখানটি রাখা হয়েছিলো এশারের নামাজের পর। বাড়ীর ছোট ছেলেটি বায়না ধরেনি আরেকটু ঘুমানোর। নববিবাহিতের হাতের মেহেদী রং যেন তখনো উজ্জল ছিলো। শাড়ীর আচঁল উচিয়ে এই ভোরে রান্না ঘরে যেন কেউ নেই। খাঁ খাঁ করছে শূন্যতায়।মালিহীন বাগানের ফুল গুলো যেন সুবাস হারিয়ে নেতিয়ে পড়েছিলো। ঝরা শুরু করেছিলো অঙ্কুরিত হওয়ার ঠিক আগ মহুর্তেই। এ যেন শোক আর শোকার্ত পৃথিবী এক বিবর্ণ আচরন। ঠিক এমন একটি কালো অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছিলো বাংলাদেশ। হত্যা করা হয়েছিলো বাংলাদেশকে। কারণ আমার কাছে বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ।
আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। যে দেশটির জন্মের ইতিহাস আমাদের সবার জানা; তবে আপনার ইতিহাস কি বিকৃত নাকি অবিকৃত তা আমার জানা নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট। সে দিন যেন লাশের স্তুপে অভিমানি হয়েছিলো ধানমন্ডির ৩২ নম্বর। এ যেন রক্তাত বাংলাদেশ। ধর্মশাস্ত্র অনুযায়ী যুদ্ধের একটি নিয়ম আছে।আমার ভাষায় একে আমি যুদ্ধ বলি। যুদ্ধে নাকি শিশু, বৃদ্ধা কিংবা অন্তসত্তা নারীদের রেহায় দেয়া হয়। কিন্তু কেউই তো সেদিন রেহায় পেলো না ঘাতকের বুলেটের আঘাত থেকে। নিষ্পাপ ছোট্ট রাসেলের রক্তে লাল ছিলো সাদা রংয়ের মার্বেল পাথরে ৩২ নম্বরের সে বাড়ীটি। হাতের মেহেদীর রং মুছে যেতে না যেতে আবার ও রক্তের লালে লাল হয়েছিলো নববিবাহিতের হাত। অন্তসত্তা মা যেন গগণ বিদারী আর্তনাদ করছিলেন আগত সন্তানের চিৎকারে। আর বাংলাদেশ যেন চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে পড়েছিলো সিড়িঁর মেঝেতে।
কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাষ্ট্রো বলেছিলো আমি হিমালয় দেখিনি আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। বঙ্গবন্ধু যে হিমালয় সমপরিমান ছিলেন তা তো এই বাঙ্গালী জানতো না।কারণ তাদের জানার ক্ষমতায় যেন কোন এক ফারাক ছিলো। আর স্বাধীনতা উওর এক ভাষনে বঙ্গবন্ধু কবি গুরু রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরকে উদ্বৃতি দিয়ে বলেছিলেন কবি গুরু আপনি মিথ্যা আমার বাঙ্গালী আজ মানুষ। বাঙ্গালী কি আসলেই মানুষ?? যে জাতি তার স্বাধীনতার স্থপতিকে হত্যা করতে পারে। যে জাতি বঙ্গবন্ধু ইস্যুতে বিভক্তির পথে হাটতে পারে। যে জাতি জন্মদিন নামক পুতুল খেলায় পুতুলের জন্মদিন পালনে ব্যস্ত থাকে। ফালুদা খেয়ে মণকে মণ কেক কেটে গলায় পদ পদবীর জন্য চাটুকারিতায় ব্যস্ত থাকে।
সমস্যা থাকতেই পারে। তবে সমাধানের পথও যে আমাদের আছে। তাই বলে তর্কের খাতিরে তর্ক করা নেহাত নিবুর্দ্বিতার পরিচয় ছাড়া অন্য কিছুই বহন করে না।
আপনার শেখ হাসিনা কে পছন্দ নাই হতে পারে তাই বলে কি আপনি বঙ্গবন্ধুকে ঘৃনা করবেন? তা কেমন করে হয়?? শেখ হাসিনার বাবা বলে? কই বাঙ্গালীর মুক্তির আন্দোলনে সে দিন তো তিনি শেখ হাসিনার বাবা হিসেবে নেতৃত্ব দেন নি। তিনি তো সেদিন জাতির পিতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন একটি স্বাধীন সোনার বাংলার।
আমরাই ঘৃনা করতে পারি। কারণ মুখোশের আড়ালে আমাদের কুৎসিত কালো প্রতিম্বিব দেখে আমরাই নিজেরা নিজেদের মুখে ঘৃণার স্বরে থু থু ছিটি। এ যেন নিষিদ্ধ পল্লীতে হলি খেলার মতো। হলির রংয়ে বেমালুম ভুলে যায় কেবা কি??
শোর্কাত জাতির একজন নগন্য মানুষ হিসেবে পঁচাত্তরের পনের আগস্টে বঙ্গবন্ধু সহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
©somewhere in net ltd.