নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যদিও কখনো পথ ভুল করে চলে যাই সেই প্রাঙ্গণে । যেথায় বিলীন হয়েছে সত্য, আমি আবার ঘুরে দাঁড়াই সেই মুছে যাওয়া প্র্ত্যয়ের কাছে … !

আমি অতি সহজ । তবু সাধারণ নই ।আমি অতি বোকা তবু বেকুব নই।আমি তাই অসাধারণের সাধারণ হই । আর বেকুবদের মধ্যে আহাম্মক হয়ে রই.....।

ফজলে রাব্বি চৌধুরী

একলা বসে থাকার দরূণ নিজেকে অনেকবার আবিষ্কার করতে পেরেছি নবরূপে। আর তাই বসে থাকি নির্জনে একলা একা আমি........।

ফজলে রাব্বি চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক অজানা গল্পের না জানা কথা!! আর এক প্যাকেট সিগ্যারেটের বিষ মাখানো ধোঁয়া !!

০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ রাত ১:৫৩

আজ থেকে বিশ বছর আগের কথা । কোন এক অজপাড়া গাঁয়ের কিছু লোকের মুখে হাসি নেই!!কারণ একটা ছেলের জন্ম হয়েছে । আশ্চর্যের কথা তাই না?? কিন্তু আসলেই সত্যি।কারণ এই ছেলেটার ওজন মাত্র ৩ কেজি !! সবাই সংকিত ! ডাক্তার হঠাৎ আরেকটা দুঃসংবাদ নিয়ে আসলেন…ছেলেটির রক্ত লাগবে । সবার আগে ছেলেটার বাবা স্কুল শিক্ষক এগিয়ে গেলেন। কিন্তু ডাক্তার বলল আপনার যা অবস্থা তাতে আপনাকেই হাসপাতালে ভর্তি করা লাগবে! তাহলে এখন কে দিবে সেই ছোট্র শিশুকে রক্ত? তখন এগিয়ে এলো ছোট্র একটি ৫ বছরের মেয়ে কারণ ঐ ছেলেটা তার ভাই। কি আশ্চর্য !! ডাক্তার বললেন তুমি দিবে মেয়ে?? মেয়েটার নির্বিকার উক্তি বাহ রে আমার ভাইকে আমি রক্ত দিলে কি হবে ?? আব্বু দিতে পারবে …! আমি দিলে সমস্যা কি??? ছেলেটা প্রাণে বেছে গেল. . আসলে সহজভাবে নিলে এক বোন তার ভাইকে রক্ত দিছে !! এ আর এমন কি?? কিন্তু বাস্তবে?? ছোট্র্র একটি মেয়ে যার নিজের ভাল মন্দ বুঝার বয়স হয় নি !! সে এমন একটা কিছু করবে এটা অকল্পনীয় ! ছেলেটা দেখতে যত টা না ? কাজ কর্মে তার চেয়ে পটু । ওকে সবাই ভালবাসে । আর ঐ বেচেঁ যাওয়া ছেলেটার প্রতি সবার আলাদা একটা মায়া থাকবে এটাই স্বাভাবিক । মা-বাবা আর ওরা ৫ ভাই-বোন মিলে পৃথিবীর বুকে শুরু হলো আরেকটি নতুন প্রজন্ম !সবার বড় বোন । নাম সুপ্রিয়া (পরিবর্তিত) .. তারপরে আরেকটা বোন নাম সুষ্মিতা (পরিবর্তিত) , তারপরে ঐ বেচেঁ যাওয়া রুগা , হালকা আর উজ্জল ফর্সা যাকে বোন/ভাইরা আদর করে ডাকে লাল ভাই! বাহ কি সুন্দর নাম ! আসল নাম না হয় অজানাই থাকলো ? তারপরে দুইভাই শফিক আর সাফিন । সবাই এখন বেশ বড় হয়ে গেছে। বড় বোন সুপ্রিয়া পড়ে নবম শ্রেণীতে। সুস্মিতা সপ্তম শ্রেণীতে । আর ঐ রোগা ভাইটা পঞ্চম শ্রেণীতে। বাকি দু'ভাই শফিক চতুর্থ । আর সবার ছোট্র সাফিন এর বয়স মাত্র ১ বছর। বড় বোন সুপ্রিয়া পড়াশুনায় খুব ভাল সবসময় ক্লাসে ফার্স্ট হয় । মেজো মেয়েও ভাল ফার্স্ট না হলেও ক্লাসে ৩ এর ভিতরই রোল । আর সেই আপাদমস্তক অসুস্থ ছেলেও ফার্স্ট হয় সবসময়। কিন্তু এইবার তার আসল পালা । প্রাইমারী বৃত্তি পরীক্ষা দিতে হবে। কিন্তু অসুস্থ আর রাগী এই ছেলেটা কে নিয়েই সবার চিন্তা! কারণ ও যে পড়াশুনায় এতো ভালো তার পেছনে সবচাইতে বড় ভূমিকা ওর বড় বোনের। কারণ স্কুল শিক্ষক বাবার পক্ষে এতো বড় পরিবার চালানোর পর সবাইকে প্রাইভেট টিউটর রেখে পড়ানো সম্ভব ছিল না!! আর তাই বড় বোন কষ্ট করে তার ছোট ভাই-বোন গুলোকে পড়ায় ! আর তাই বড় বোন তাদের শিক্ষক ও বটে ।তাই মাঝে -মধ্যে দুষ্টমি করলে মারার আদেশ দিয়েছেন বাবা। আদেশ পেয়ে বোনটাও কঠিন হতে শুরু করলো ।আর তাই দেখে রাগী ছেলেটা বলছে আমি আর ওর কাছে পড়বো না আম্মু! আপু কিছু না পারলেই আমাদের মারে !ব্যাস অলিখিত ভাবেই ওর পড়ার মধ্যে একটা নতুন পরিবর্তন আসলো । যার ফলাফল স্কুলের ২য় সাময়িক পরীক্ষায় ও সবার রেকর্ড ভেঙে পঞ্চম স্থান লাভ !!রেজাল্ট দেখে বাবার চক্ষু চড়ক গাছ! গণিতে ৯৮, বাংলায় ৮৮, ইংরেজীতে ৯২, ইসলাম শিক্ষায় ৯৩, সাধারণ বিজ্ঞানে ৯৫ আর সমাজে ৫৭ !! বাবার সহ পরিবারের আর সবার মনেই একই প্রশ্ন সমাজে এতো কম কেন ?? ছেলের উত্তর ছিল আরো ভয়াবহ !! আপু বলছে সমাজে নাকি এতো বুঝা লাগে না!! তাই আমি কিছুই পরি নাই !! না বুঝে আবার পড়া যায় নাকি ??আর তাই সবাই চিন্তায় অস্থির বৃত্তি পাবে তো?? আব্বু বললেন সুপ্রিয়া তো ক্লাস ৫ ,ক্লাস ৮ দুইটা তেই ট্যালেন্টফুলে পেয়েছে আবার ক্লাস এইটে সারা বিভাগে ৯ম হয়েছে! তোমার বিভাগ দরকার নাই সারা উপজেলায় যদি ১০ এর ভিতরে থাকো তোমায় একটা ক্রিকেট ব্যাট দেয়া হবে। কিন্তু আজ থেকে তোমার ভালো করে পড়া লাগবে ! আর সমাজ বই না হয় আমি-ই পড়াবো!!সমাজ বই আব্বু পড়াতেন আর বাকীগুলো যথারীতি তার বড় আপু ! আব্বুর পড়ানোর ধরণটা খুব ভালো । একটি উদাহরণ- সমাজ কি ?? আব্বু বলে উঠলেন ধরো তোমার কাছে কয়েকটা লুডুর ঘুটি আছে । তুমি যেখানে ইচ্ছা সেখানে ঘুটি নাড়াতে পারবে কিন্তু তুমি আগে একটা কৌটার ভেতরে ছক্কা ডুকিয়ে মারতে হবে…! এখানে তোমার হাত নেই। ছক্কাও উঠতে পারে !! আবার ১ ও উঠতে পারে। তার মানে ঐ ছক্কার কৌটা টা হচ্ছে সমাজ , যা উঠবে সেটা মানুষের বেধে দেয়া নিয়ম আর ঘুটি তোমার হাতে ! সেটা ঐ বেধে দেয়া নিয়মে চালাতে হবে!! অবশেষে বৃত্তি পরীক্ষা শেষ হলো !! ছেলেটা যথারীতি ক্লাস ৬ এ উঠলো ফার্স্ট হয়ে। বৃত্তি ও পেল ট্যালেন্টফুলেই , তাও উপজেলায় ৩য়!!! এভাবেই চললো অনেক বছর !! কিন্তু ছেলেটার মনে একটা চরম দুঃখ । ও যখন বৃত্তি পরীক্ষা দিতে যায় সবার অভিভাবক নিয়ে। একমাত্র সে ছাড়া ! তার কেউ সাথে যায় না! এমনকি স্কুলের বার্ষিক পুরষ্কার বিতরণীতেও কেউ যায় না !! না বাবা না মা!এইভাবেই নানা মজার কিছু সুখের আর দুঃখের স্মৃতি নিয়ে কাটে সেই দুঃখি ছেলের সারাবেলা। একদিন তার বাসায় বেড়াতে আসে কিছু লোক। মা বললেন তোমার খালা। ছেলেটার চোখ খালা নয়। খালার পাশে বসা খালার মেয়ের দিখে!!! তারপর ঘন ঘন আসতো ঐ মেয়েটা।কেন জানি প্র্থম দেখাতেই ভাল লেগেছে। কথাও বলে দারুণ। ভাই-বোনের আদরের লাল ভাই তখন ক্লাস নাইনে পরে ।মেয়েদের সাথে কথা বলা তো দূরে থাক নিজের বোন ছাড়া অন্য কোন মেয়েদের দেখলেই সে পালিয়ে যায়। কিন্তু এই মেয়েটা এতোই আসা-যাওয়া করতো যে তার সাথে মনের অজান্তেই একটা ঘনিষ্টতা হয়ে যায়। হটাৎ একদিন এই শান্ত, নীরব আর বন্ধুমহলে পরিচিত ব্যাক্তিত্ব্সম্পন্ন মানুষ এই মেয়েটাকে বলে বসল আমি তোমায় ভালবাসি। এর পর থেকেই মেয়েটা আর আসে না! ছেলেটা তার ছোট বোনকে বলে আপু তাসনিম আসে না কেন?? আপু বলল তা আমি কি জানি ??অনেকদিন হওয়ার পর ছেলেটা সিদ্বান্ত নিলো মেয়েটার বাড়ি যাবে…! পরদিন যেই ভাবা সেই কাজ । বাড়ি গেলো । কিন্তু গিয়ে যা পেল না!! একদিন মেয়েটা কি করলো একটা চিঠি লিখলো… তাতে অনেক কিছুই লেখা!! যা কোন অজানা কারণে না বলাই ভাল বলে মনে করি । আর চিঠি টা দিলো ছেলেটার ছোট ভাই শফিককে তাও শফিকের একগাদা বন্ধুর সামনে! আর বলল তোমার ভাইকে বলো যেন আমার পেছনে না ঘুরে । স্বাভাবিক ভাবে বন্ধুদের সামনে নিজের বড় ভাইয়ের সম্পর্কে এ ধরণের কথা শুনে তার খুবই খারাপ লাগলো !সে বাসায় এসে তার বোন সুস্মিতাকে সব অকপটে বলে দিলো!বোন সারা বাসা মাথায় তুলল আজ আসুক গাধাটা …আজ তার একদিন না হয় আমার একদিন !! বাসায় এসে অসম্ভব নীরব ছেলেটা যে কিনা এসবের কিছুই জানে না! সে এসেই কিছু বুঝে উঠার আগেই বোনের পিটুনি খেল!! যখন সব কিছু জানতে পারলো সে ঐ মেয়েটার সাথে দেখা করতে মেয়েটার কোচিং সেন্টারের সামনে দাড়াঁলো ! তারপর ছুটির পর মেয়েটার পেছনে গিয়ে বলল তুমি এমন করলে কেন ? মেয়েটা উত্তর দিল আমি তো তোমাকে এমনি এমনি পেছনে ঘুরাইছি ! ঐ দিন ঐ মূহুর্ত থেকেই ছেলেটা ঐ মেয়েটাকে আর দেখতে পারতো না!! মেয়েটা প্রায়ই তাদের বাসায় আসতো কিন্তু ওর পরিবারেরে কেউ যেমন মিশতো না!! ও তো দেখতেই পারতো না!! এইভাবে কেটে গেল অনেকদিন । এই ছেলেটার জীবনে ঘটে যাওযা এই ঘটনাকে প্রেম না ঐটা বয়সের দোষে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা তা পাঠকের বিবেচনায় বিষয়ই বটে !!এক সময় ঐছেলেটা এস. এস. সি পাশ করলো জেলার শ্রেষ্ট স্কুল থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে। তারপর সবার একান্ত ইচ্ছায় এমনকি ছেলেটার সদিচ্ছায় সে ভর্তি হল বিভাগের শ্রেষ্ট কলেজে । এইচ .এস .সি পরীক্ষার ঠিক ৫ মাস আগে হঠাৎ মারা গেলেন তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম তাদের জন্মদাতা পিতা!!!বিশেষ করে ছেলেটার সবচাইতে প্রিয় আর একান্ত একজন । যার সাথে সে একসাথে বসে খেলতো ক্যারাম বোর্ডের মজার খেলা । যার সাথে সে গল্প করতো নানান চিন্তায়… বাবা যাকে নিয়ে গর্ব করে বলতেন আমার এক মেয়ে পড়ে মেডিকেলে , আরেক মেয়ে পাবলিক ভার্সিটি তে , আর আমার সবচেয়ে প্রিয় আদরের বড় ছেলেটাকে নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই ও সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে। এমন নিরিবিলি, নিরীহ আর ভাল ছেলেকে পেয়ে আমি গর্বিত । আমি না থাকলেও এই ছেলে ঠিক নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে ! তার বোনদের দেখবে !! ঐ ছেলেই আমার সব স্বপ্ন পূরণ করবে!!! ছেলেটার সবচাইতে আদর্শের মৃত্যু সে কখনই মেনে নিতে পারে নি !!! যাহোক তার পরে এইচ. এস. সি পরীক্ষা শেষ হলো । পরীক্ষা ভালোই হলো !! এইবার তার পরিবারের সবাই পড়লো মহা চিন্তায় । কিভাবে তাদের পরিবার চলবে ?? তাদের একমাত্র উপার্জনের ব্যাক্তি আর নেই । তাদের একজন চাচা আছেন বাইরে থাকেন । উনার সাথে তাদের সম্পর্ক বেশ ভালোই ! এখন উনি একমাত্র ভরসা এখন সময় হলো ! পরীক্ষার রেজাল্ট বের হলো । আবারো জিপিএ ৫ পেল । পরিবারের সবার মনে কিছুটা স্ব্স্তি ফিরে এলো !!এইবার ভালো কিছুতে ভর্তি হওয়ার পালা। বাবার বড় ইচ্ছা ছিল ছেলে প্রকৌশলী হবে । কারণ সে অংকে বেশ ভালো ! কিন্তু তার মায়ের ইচ্ছা ডাক্তার হবে । যেহেতু দু'জনের ইচ্ছার কারো বিপক্ষে সে যেতে পারবে না! তার ইচ্ছা যেকোন পাবলিক বিশ্ব্ববিদ্যালয়ে পড়া! তাই সে মেডিকেল এবং ইন্জিনিয়ারিং এর কোচিং এ ভর্তি হলো !!ফলাফল হলো উল্টো ! মেডেকিলেও সরকারি ভাবে চান্স পেল না! ইন্জিনিয়ারিংয়েও না! একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মোটামুটি একটা সাবজেক্ট পেলো ! কিন্তু পরিবারের এখন যে কর্তা ওর বোন তা মানলো না!! সে বলল একবছর ভালো করে পড়ে মেডিকেলে দে ?? বাধ্যগত কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে মেনে নিলো !কারণ তার বাবাকে একদিন যখন তার বোনের প্রতি অভিযোগ করে বলেছিলো আব্বু আপু সব সময় পড়া না পারলে আমাদের ইচ্ছেমতো যা খুশি বলে আর পিটায়!! আব্বু তখন তাকে বলেছিলেন ও তোমার বড় বোন শুধু নয় !! ও তোমায় পড়ায় , তাই ও তোমার শিক্ষক ও বটে !আর সবচাইতে বড় কথা তোমার যখ্ন জন্ম হয়েছিলো তখ্ন তোমার অবস্থা খুব খারাপ ছিলো !! তখন এই মেয়ের বয়স ছিলো মাত্র ৫ বছর কিন্তু তখন এই মেয়ে তোমায় রক্ত দিয়েছিলো না হলে হয়তো তুমি বাচ্ঁতে না!! তাই তোমার এই বোন যদি কখনো কিছু করতে বলে কখনই না করবে না!! যা করতে বলবে বিনা বাধায় মেনে নিবে !! সে কখনই তোমার খারাপ কিছু চাইবে না!! ঐ দিনের পর থেকে তার এই বোনটার প্রতি এক অন্যরকম শ্রদ্ধা আসতো ! কখনই তার কথার বিরুদ্ধে যায় নি !তবে তার কষ্টটা কেউ বুঝে মাঝে মাঝে বাবার জন্যে কাদেঁ ! প্রায়ই তার বাবার কবরের পাশে যায় !! কিন্তু কাউকে তার কষ্টের কথা বলতে পারে না!! তার এখন প্রচুর সময় । এক বছর গ্যাপ ! সবসময়তো আর পরতে ভালো লাগে না !! মাঝে মধ্যে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে যায় !কিন্তু বন্ধুরাও সময় দিতে পারে না!! সবাই কোথাও না কোথাও ভর্তি হয়েছে ! এখন সে পুরোপুরি একা !! যা কিছু বন্ধু আছে সবাই তাদের প্রেমিকাদের নিয়ে ব্যাস্ত !সে সম্পূর্ণ একা একটা মানুষ!! তার মনের কথাগুলো বলার কেউ নেই !! একসময় ওর কষ্ট টা ওর সবচাইতে কাছের বোন সুস্মিতাকে বলতো । কিন্তু ঐ তাসনিম (পরিবর্তিত নাম) গঠিত ব্যাপারের কারণে এখন ঐ বোনের কাছেও যেতে পারে না!!কেউ বুঝে না! বাবা থাকলে হয়তো বাবার সাথে সে অনেক কথা বলতো !! তাই বেশীরভাগ সময় সে বাবার কবরের পাশে গিয়ে তার না বলা কথা গুলো বলতো !! আর কাদ্ঁতো !! রাতের পর রাত যায় ! সে মনে করে তার বাবার কথা তার বাবার সে স্বপ্নের কথা ! আর তাই তার ইচ্ছা জাগে তার বাবার কাছে চলে যেতে ! আত্বহত্যার চিন্তাও যে করে নি তাও নয় ! অনেকবার করেছে ! যাহোক একদিন তার মনে হলো ফেইসবুকে তার একটা আইডি আছে একবার ঢুকি! অনেকদিন আগে খুলেছিলো ।সে এখন অন্যরকম আনন্দ খুঁজে পেলো !! তার সকল সহপাঠি দের সাথে গল্প করে .… আড্ডা দিতে পারে !! কিন্তু তার কষ্টের কথা গুলো তো কাউকে বলতে পারে না!! হঠাৎ একদিন সে তার ফেইসবুকে দেখতে পেলো অজানা একটি নাম । ছেলে না মেয়ে তা জানে না তবে নামটা তার বেশ ভাল লাগলো !! info তে গিয়ে দেখে সে তার একই কলেজের সহপাঠী । সে একটা মেয়ে ! তার চেনার কোন কারণ নেই !! কারণ সে কোন মেয়ের সাথেই কখনো কথা বলে নি! এমনকি মেয়ে দেখলে নিচের দিকে চেয়ে তার নিজ পথে চলে যেত । মেয়েটাও তার friend request accept করলো ...!তারপরের কাহিনী খুব সুন্দর ! মেয়েটির ও কোন বন্ধু নেই !! দু'জন দু'জন কে নিজেদের কষ্টের কথা বলতো ! সুখের কথা বলতো !! দিনের পর দিন তারা chat করে । একে অপরের দুঃখে দুঃখী হয় ! সুখে সুখী হয় । মেয়েটার একটা sms এর জন্যে ছেলেটা যেমন অপেক্ষার প্রহর গুনে ! মেয়েটাও ঠিক একইরকম ছেলেটার একটা sms এর জন্যে অপেক্ষার প্রহর গুনতো !!এইভাবে অনেকদিন যায় ! একদিন মেয়েটা আর ফেইসবুকে আসে নি!! ছেলেটার খুব চিন্তা হয় ! কোন সমস্যায় পরে নি তো ?? নাম্বারটা রাখা উচিৎ ছিলো !! এইবার যখন কথা বলবে নাম্বারটা নিয়ে নিবে ! ঐ দিন ছেলেটা ঘুমাতেই পারলো না!! মেয়েটার কথা চিন্তা করে করে ভোরবেলা ঘুম আসলো !হঠাৎ ঘুম ভাঙলো । দেখে সকাল ৯ টা !! সাথে সাথে ফেইসবুকে ঢুকলো । একটা sms এসেছে - তাতে লেখা আমার প্যাকেজ শেষ আজ আর আসতে পারবো না! তখন ছেলেটা প্রশ্ন করলো যদি কিছু মনে না করো ?? আমি তোমায় টাকা দেই ?? তুমি পরে আমায় দিয়ে দিও ?? জবাবটা রাতে পেলো! ঠিক আছে , পরে দিব ! এই নাও আমার নাম্বার । মোবাইলটা যদিও আমার না! আমার আম্মুর ! ! ছেলেটা খুব খুশি মনে ওর মোবাইলে ৫০ টাকা দিলো ! তারপর আবার কথা শুরু হলো ! সারা রাত চললো !এভাবে অনেকদিন পার হল । একদিন ছেলেটা সাহস করে ফোন দিলো ! মেয়েটা কোন কথাই বললো না! তারপর একদিন কথা বললো । ছেলেটা তখনো বুঝে নি যে মেয়েটা কি চায় ? কিংবা তাদের মধ্যে সম্পর্কই বা কি ? সে মেয়েটাকে তার ভালো বন্ধু হিসেবেই জানে ! একদিন ছেলেটা ওর ঘটে যাওয়া কথা বলল ! এবং মেয়েটাকে প্রশ্ন করলো যে সে কাউকে ভালোবাসে কিনা?? মেয়েটা উত্তর দিলো তোমাকে !! ছেলেটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো! কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না!তার ভয় হয় যদি না বললে মেয়েটার তার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক চিহ্ন করে দেয় ? তাই সে বলে আচ্ছা যাও আমি কাল তোমায় জানাবো । মেয়েটা তখন কাদ্ঁতে শুরু করে !!আর বলে তুমি যদি না বলো আমি আত্মহত্যা করবো ! আমায় তুমি ফিরিয়ে দিও না!! ছেলেটা ভয় পেয়ে যায় । সে জানে মেয়েরা খুব নরম মনের হয় ! তাই সে বলে আচ্ছা যাও আমিও তোমাকে ভালবাসি ! ছেলেটা ভাবলো এমন বন্ধুকে সে হারাতে চায় না! আর যদি সত্যি সত্যি মেয়েটা আত্মহত্যা করে ? তখন কি হবে ?এই অপরাধের ভাগী হয়ে সে থাকতে চায় না! মিথ্যে বলেও যদি একজনের প্রাণ বেচেঁ যায় ?? তাতে ক্ষতি কি ? এর পরের একসময় কথা বলতে বলতে ছেলেটাও মেয়েটার প্রতি দূর্বল হয়ে পরে !!একদিন ছেলেটা মেয়েটাকে বললো যে আমি সত্যি সত্যি তোমায় খুব ভালবেসে ফেলেছি ! আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই ! কিন্তু ছেলেটা যেখানে থাকে সেখান থেকে মেয়েটার বাসা প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে !!আর তাই দেখা করতে হলে ওকে অনেক মিথ্যে কথা বলে বাসা থেকে যেতে হবে ! ছেলেটা খুব ধার্মিক !তাই তার পক্ষে মিথ্যা বলা সম্ভব না ! আর তাই মেয়েকে বললো সামনে তো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা তখন দেখা করি ? মেয়েটাও রাজি হয় ! তারা প্রতি রাত কথা বলে ! মেয়েটাও খুব প্রস্তুতি নেয় দেখা হলে কি বলবে ? কি করবে ? তারা কোথায় দেখা করবে ? ছেলেটাও একইভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকে !মেডিকেল পরীক্ষার দিন তারা দুজনেই পরীক্ষা দেয় ! ছেলেটা পরীক্ষা দিয়েই মেয়েটাকে ফোন করে ! কিন্তু নাম্বার বন্ধ পায় । খুব রাগ হয় ! সে যখন অনেক লোকের ভিড়ে ওকে খুঁজে ! কিন্তু পায় না ! মেয়েটার সাথে আগে কখনো দেখাও হয় নি তার ! তাই দেখলেও চিনতে পারবে কিনা ? তা নিয়েও সন্দেহ ! পরে মেয়েটা বাসায় গিয়ে যখন ফোন দেয় ! ছেলেটার খুব রাগ হয় ! একটা সুযোগ ছিলো ! তাও হাতছাড়া ! যাইহোক একসময় মেয়েটাকে সে বলে আমি যেদিন কোন পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পাব সেদিন তোমার সাথে আমি দেখা করবো !হলোও তাই ! একদিন ছেলেটা এক মার্কেটে মেয়েটার সাথে দেখা করলো !! ছেলেটা তখন বেজায় খুশি । মেয়েটাও ! কিন্তু সমস্যা হলো মেয়েটার পরিবার তা জেনে গেছে ! মেয়েটা যখন আসছে তখন ওর এক cousin কে নিয়ে আসতে হয়েছে ! এছাড়া কোন উপায় ছিলো না! !যাহোক ছেলেটা নিজেকে খুব অপরাধী ভাবতে শুরু করে । এদিকে মেয়েটাও খুব কষ্টের মধ্যে পরে যায় ! কিন্তু ছেলেটাকে সে কখনোই তা বুঝতে দেয় নি ? কিন্তু ছেলেটা তো ঠিকই বুঝে ! যে একটা মেয়ের কি সমস্যা হতে পারে যদি তার পরিবার এই ধরনের কথা জানে ! কারণ কোন পরিবারই এটা মেনে নেন না!যাহোক এভাবেই লুকোচুরির মধ্য দিয়েই চলতে থাকে ! ছেলেটা মেয়েটাকে বুঝতে দেয় না যে সে ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে ! মেয়েটাও বলে না ! যে তার ভালবাসার মানুষটি যদি কষ্ট পায় এইভাবে কাটতে থাকে দিন !একদিন মেয়েটা কেদেঁ বলে আমার না তোমার সাথে কোনদিন বিয়ে হবে না! ছেলেটা বলল কেন হবে না? মেয়েটা তখন বলল যে দেখ আমি ৫ বছর পর বের হয়ে যাবে । আমার বাবা -মা আমায় তখন বিয়ে দিয়ে দিবে ! তোমার তো প্রতিষ্ঠিত হতে অনেক সময় লাগবে !বলে রাখা ভাল মেয়েটা একটা পাবলিক বিশ্ব্বিদ্যালয়ে পড়ে !ছেলেটাও তখন ভর্তি হয়ে গেছে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে !ছেলেটা মেয়েটাকে বুঝালো যে দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে ! সে কি করলো তার পরিবারকে বলল যে সে প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়বে ! সবার মাথায় একই প্রশ্ন কেন ? এতো ভাল একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পরেও কেন সে প্রাইভেটে পড়বে ?সে পাবলিক ভার্সিটির মায়া ত্যাগ করার পেছনের কথা কেউ জানে না! সে চায় যত কম সময় লাগে সে যেন বের হয়ে গিয়ে তার প্রিয় মানুষটিকে তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে পারে! অবশেষে ছেলেটা তার চাচাকে বলে রাজি করালো ! সে প্রাইভেটে ভর্তি হলো ! ভাল একটা সাবজেক্টে ! তারপরের কাহিনী এক রুপকথার গল্প !মেয়েটার সাথে তার সম্পর্ক এতোই বেশী যে সে যেমন ওকে ছাড়া কিছু চিন্তা করতে পারে না! মেয়েটাও ঠিক এমনিভাবে পারে না ! মাঝে মাঝে ভুল-বুঝাবুঝি হতো ! আবার ঠিক হয়ে যেত ! কারণ ওদের মধ্যে বিশ্বাসের কোন কমতি ছিলো না ! একদিন বাসায় আসলো ছেলেটি ! কয়েকদিন পর থেকে তার ক্লাস শুরু !হঠাৎ একদিন তার বোন তাকে বলল তুই কি কাউকে পছন্দ করিস ! সে বলল কেন আপু ? না তোর একটা sms আমি ভুলে ভুলে পড়ে ফেলেছিলাম ! মেয়েটার নাম কিরে ? কোথায় থাকে ? ছেলেটা সব খুলে বলল ! তার বোন তাকে বুঝালো যে এই মেয়েটা তার উপযুক্ত না!! তার সাথে কখনোই কেউ মেনে নিবে না! ছেলেটা তখন ঐ মেয়েটার কথা ভাবলো যে তাকে কত বিশ্বাস করে ! কত বেশী ভালবাসে ! যে তার দুঃখের সাথী হয়েছে ! যে তাকে বলেছে জানো মানুষ বলে নিজের থেকে নাকি ভালবাসা যায় না? আমি বলছি আমি তোমাকে আমার থেকেও বেশী ভালবাসি! তার ঐ মেয়েটা ছবি চোখের সামনে ভাসতে শুরু করলো!সে ভাবলো যে মেয়ে তাকে এতো ভালবাসে । যে মেয়ে তার পরিবারের এতো অত্যাচার সহ্য করেও তার সাথে আছে ! এই মেয়েকে সে কখনই ছেড়ে যাবে না! সেটা সম্ভব ও না ! সে বলল না আপু ! আমি পারবো না! আমি ও কে কথা দিয়েছি যে আমি ওকে ছেড়ে কখনই যাবো না! তুমি মারো আমায় যা খুসি করো ! আমি তাকে ভুলতে পারবো না! আমি তার হাত কখনই ছাড়তে পারবো না! তার বোন তাকে খুব মারলো !কিন্তু তাতেও সে পিছপা হলো না! তখন তাদের পরিবার জায়্গা সম্পত্তি নিয়ে খুব বিশাল একটা ঝামেলায় আছে ! তার মা তাকে বুঝালেন ! বাবা দেখ আমাদের এখন খুব বিপদ ! এই সময় তুই এইগুলো কিছু করিস না!তার বোন তাকে হাত জোড় করে অনুরোধ করলো । যে বোন তাকে বাচিয়ে ছে যে তাকে এতোদিন অনেক কষ্টে পড়িয়েছে আজ তার প্রতি সে কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না! এই প্রথম সে তার মা/বোনের কথার বিরুদ্ধে গেল ! সে বলল না আম্মু আমায় তুমি ক্ষমা করে দাও আমি এটা পারবো না! তখন তার বোন তাকে বলল যে শোন । তুই যদি ঐ মেয়েটাকে না ছাড়িস তাহলে তোকে আমরা যে টাকা দেই সেটা আর দিব না! সে খুব কষ্ট পেলো ! সে বলল লাগবে না তোদের টাকা আমি ঐ নিরপরাধ মেয়েটাকে ধোকা দিতে পারবো না! যে কিনা আমার জন্যে প্র্তিনিয়ত এতো কষ্ট করেছে! তাকে আর যাই হোক আমি ছেড়ে যেতে পারবো না! সে বেড়িয়ে পড়লো অজানা পথে !এর মধ্যে মেয়েটা ফোন করলো ! কোন কারণ ছাড়াই সে মেয়েটার উপর তার সব রাগ ঝাড়লো! এই প্রথম সে তার ভালবাসার মানুষকে এতো কঠোর ভাবে বকা দিলো ! তুই তুই করে তার সাথে কথা বলল ! সে জানে মেয়েটার এতে কোন দোষ নেই ! তারপরেও সে কেন রাগ করলো বুঝতে পারলো না! রাগ করলে তার মাথা ঠিক থাকে না তবে সে জানে তার ভালবাসার মানুষটা তাকে কখনোই ভুল বুঝতে পারে না! কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই মেয়েটা খুব কষ্ট পাবে সেটা সে জানে ! তাই সে নিজের বুলের প্রায়্শ্চিত্ত করতে নিজেকে নিজে মারে ! নিজের হাত রক্তে রন্জিত করে ! সে জানে তার ভালবাসার মানুষকে সে জে কষ্ট দিয়েছে এর চেয়ে কঠিন শাস্তি তার পাওয়া উচিৎ ! তারপর আবার সব কিছুই ঠিক হয় ! যাদের মধ্যে এতো মিল । যারা একজন আরেকজনকে ছাড়া থাকতেই পারে না! তারা তো আর আলাদা হবে না!ছেলেটা এখন সবাইকে ছেড়ে ঢাকায় থাকে ! কাজ ও জুটিয়ে নিয়েছে । যদিও চাহিদার তুলনায় খুব কম ! সমস্যা নেই আরেকটা কাজ নিয়ে নিলেই হবে!আরেকটা কাজ নেই । এখন আর তার কোন চিন্তা নেই ! সে সব কিছু ঠিক করে ফেলেছে ! তবে মেয়েটার পড়ার খুব চাপ ! সেটা ছেলেটা বুঝেও না বুঝার ভান করে ! ছেলেটা মেয়েটাকে সাহস দেয় ! বলে এ আর এমন কি ? কিছু সময় পড়লেই সব পাড়বে! মেয়েটা মনে করে ছেলেটা তার পড়াকে খাটো করে দেখে ! তার খুব অভিমান হয় ! সে খুব রাগ করে !মাঝে মধ্যে সে ঐ আগের মেয়েটাকে তুলে কথা বলে ! ছেলেটার তখন খুব কষ্ট হয় ! সে কেন এরকম কথা বলে? একদিন ছেলেটা মেয়ের সাথ্র দেখা করতে ঢাকা থেকে মেয়েটার বাসার কাছে যায় ! কিন্তু মেয়েটাও যে খুব বিপদে সে তার সাথে দেখা করতে পারে না! ছেলেটা বৃষ্টিতে ভিজে তার জন্য রাত পর্যন্ত অপেক্ষার শেষে বিষাদমাখা ক্লান্ত শরীরে আবার ঢাকা ফিরে ! কাল যে তাকে কাজে যেতে হবে ?সারাটা রাস্তা সে চিন্তা করে আর ভাবে ও একবার যদি আসতো ? তাহলেও তো তাকে দেখতাম ! ও আবার ভাবে না! ওর হয়তো খুব বিপদ ! ফোন দিবে !? সে সাহস ও হচ্ছে না! ভাবে যদি পারতো তাহলে তার প্রিয় মানুষটি নিশ্চয়ই তাকে ফোন দিতো ! সে ঢাকা যাওয়ার পর ফোন দিলো মেয়েটি ! যা শোনলো তাতে খুব কষ্ট পেল । মেয়েটি বলল আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম ! কি করবো বলো ??সারাদিন ক্লাস করার পর খুব tired ছিলাম ! ছেলেটা নিজেকে শান্তনা দিলো এই ভেবে যে সে তো ইচ্ছে করে এসব করে নি !আরেকদিন আসলো । সেদিন সন্ধায় এসেছিলো বলে ঐদিন ও মেয়েটা দেখা করতে পারলো না! হতাশ মনে যখন ফিরছে তখন তার খুব কষ্টে নিজেকে শান্তনা দিলো যে রাত হয়ে গেছে সত্যই তো দেখা করতে পারবে না! এসব ভাবতে ভাবতে যখন ঠিক রাস্তায় আসলো একটা ট্রাক তার রিক্সাকে পিছন থেকে ধাক্কা দিলো ! সে দুদিন হাসপাতালে ছিলো ! তাই মোবাইটাও বন্ধ ছিলো !মেয়েটা ভাবলো ছেলেটা এতো রাগ করেছে ! ও তো ইচ্ছে করে করে নি ? তাহলে এতো রাগের কি হলো ? মেয়েটা মনে মনে খুব কষ্ট পেল ! ভাবলো যে এত রাগ ! তাই দুদিন পর যখন ফোন দিলো ! সে কিছুই বলল না! সে চায় না ! তার প্রিয় মানুষটি তার ব্যাথায় ব্যাথিত হোক ! মেয়েটা ইচ্ছেমতো রাগ ঝাড়লো । তাতে সে কিছুই মনে করে নি এইভাবে চলতে থাকে তাদের অসম্ভব রকমের ভাল কিছুদিন ! ছেলেটা সকালে ক্লাস শেষে বিকালে কাজে যায় ! রাত পর্যন্ত কাজ করতে থাকে ! কিন্তু রাতে এসে যখন তার প্রিয় মানুষটির কন্ঠ শোনে তার সবকিছুই ভাল লাগে ! তার সারাদিনের কষ্টের কথা সে ভুলে যায় ! সে মেয়েটিকে সব খুলে বলতে চায় ! কিন্তু পারে না!তার ভয় হয় ! এমনিতেই সে খুব কষ্টে আছে ! তার উপর যদি তার এইসব কষ্টের কথা শোনে ?? তাহলে যদি ওর কষ্ট হয়? তাই ছেলেটা কিছুই বলে না!অপরদিকে মেয়েটাও খুব কষ্টে আছে ! সে বলে আমি রাত জাগতে পারবো না ! আমার সকালে ক্লাস থাকে ! তুমি তো পড় না ! আমাকে পড়তে দাও ! ছেলেটার তখন খুব কষ্ট হয় ! সারাদিনের ক্লান্তি সে এই কথা বলে ভুলতে চায় ! কিন্তু মেয়েটা যখন তাতে বাধা দেয় তার খুব খারাপ লাগে ! সে নিজেও বুঝে যে সকালে মেয়েটার ক্লাস আছে ! তাও সে পাগলামি করে!সে রাগে-ক্ষোভে মেয়েটাকে ইচ্ছামতো গালাগালি করে !মেয়েটা খুব কষ্ট পায় ! সে ভাবে যার জন্যে সে পরিবারের এতো অত্যাচার সহ্য করে ! সে কেন তাকে এতো কষ্ট দিবে !একদিন আবার ছেলেটা রমজান মাসে তার সাথে দেখা করতে যায় ! কিন্তু মেয়েটা আগের রাতের অভিমানের কারণে ঐদিন ও ছেলেটার সাথে দেখা করে নি ! ওর বন্ধুরা তখন ছেলেটাকে বলে যে এই মেয়ে ভাল না! তখন তার খুব রাগ হয় ! সে সবার সাথে রাগ-রাগি করে তার প্রিয় বন্ধুদের সাথে সকল সম্পর্কই ছিন্ন করে দেয় !সে ভাবে আমার সাথে এমন একজন আছে যে আমায় সারাক্ষণ দেখে রাখবে । তোদের কাউকেই আমার দরকার নেই !এমন সময় তার রেজাল্ট বের হয় সে ফেল করে ! এটা যে ঘটবে তা সে জানতো ! সেতো ঠিকমতো ক্লাস-ই করে নি !মেয়েটা তাকে বুঝায় সব ঠিক হয়ে যাবে ! ছেলেটাও সব মেনে নেয় ! একদিন রাতে কোন এক বিষয় নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে ছেলেটা মেয়েটাকে আবার গালা-গালি করে ! মেয়েটা আবার কষ্ট পায় ! সে কাদেঁ । এরই মধ্যে ৩ দিন পার হয়ে যায় ! ছেলেটাও ফোন দেয় না ! মেয়েটাও দেয় না! দুজনেই অভিমানই । এইবার ছেলেটা বেশী অভিমানি হয়ে মনে মনে বলে ! সব সময় কি আমি-ই দোষ করি । যদি করিও সবস্ময় কেনই বা আমি রাগ ভাঙাতে যাব ! মেয়েটার ও একই কথা দেখি কতদিন না বলে থাকতে পারে ! আর সহ্য হয় না ছেলেটার ! খুব কষ্ট হয় ! শুনেছে সিগারেট খেলে নাকি দুঃখ ভুলা যায় ! আর তাই সে এক প্যাকেট সিগারেট খায় ! আর ১০ টা ঘুমের ট্যাবলেট ! এরপর মেয়েটাকে ফোন দেয় ! গালাগালি করে ! যা খুশি তাই বলে!তারপর কখন যে ঘুম লেগে যায় সে বুঝতেও পারে না! সে যখন ঘুম থেকে উঠলো ! তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে !সে কাল রাতে কি ঘটে ছিলো মনে করার চেষ্টা করে !কিন্তু পারে না! সে জানে তার খুব ভর একটা অসুখ ! ডাক্তার বলেছেন ব্রেইন টিউমার জাতীয় কিছু !সে কথাও সে বলতে চেয়েছিলো কাল ! সে অনেক কথাই বলতে চেয়েছিলো ! কিন্তু মেয়েটার সাথে কখনই তার সে কথা বলার সুযোগটুকু হয় নি ! তারপরে ৫ দিন কেটে যায় ।কোন যোগাযোগ নাই !সে জানে সে কাল রাতে হয়তো তার ভালবাসার সবচাইতে কাছের মানুষটিকে কিছু বলেছে ! সে এই জন্যে ৫ দিন পর ফোন দিয়ে ক্ষমা চায় । মেয়েটা ক্ষমাও করে দেয় !এর কিছুদিন পর ছেলেটার জন্মদিন ! অনেকেই তাকে wish করছে ! কিন্তু যার wish এর জন্যে সে বসে আছে সে ৩০ মিনিট পরে করলো ! তার খুব অভিমান হয় কিন্তু তার প্রিয় মানুষটার wish ই তার সবচাইতে ভাল লাগে !তাই পরক্ষণেই সে তার দুঃখ ভুলে যায় !রাতে সে আবার ফোন দেয় ! কিন্তু মেয়েটার ফোন waiting পায় ! সে জানে তার প্রিয় মানুষটি তার কোন বন্ধুর সাথে কথা বলছে ! তাতে তার কোন সমস্যা নেই ! তাই বলে একবার তো ফোন ধরে বলবে ? তাই যখন ৪ ঘন্টা পর ফোন ধরলো ! সে মেয়েটা বলল ! আমি তো ঘুমে ছিলাম ! আমার বান্ধবী ফোনে কথা বলছিলো ! ছেলেটার খুব রাগ ! একটুতেই রেগে যায় ! এ কথা সে অনেকবার মেয়েটাকে বলেছে ! আজো রেগে গিয়ে বলল নিজের জিনিষ অন্যের কাছে দাও কেন ? এবং আরো অনেক কথা বলে ! তাকে তুই তুকারি করে! মেয়েটা এই কথাটায় অনেক কষ্ট পায় ! কিন্তু এটা ছেলেটার বদভ্যাসের একটি ! মেয়েটা আর কথা বলে না!আরো অনেকদিন কেটৈ গেল কথা বলে না!তারপর আবার ছেলেটা ক্ষমা চাইলে মেয়েটা ক্ষমা করে দিল । আবার আগের মতই কথা বলতে লাগলো ! কিন্তু একদিন ফেইসবুকে ছেলেটার সাথে chat করছে ! হঠাৎ মেয়েটা বলে বসলো দেখ আমি আর তোমাকে আর feel করি না! ছেলেটা বিশ্বাস করতে পারলো না! ছেলেটা বলল কি হয়েছে একটু বলবে ? মেয়েটা কিছুই বলল না ! এই প্রথম মেয়েটা কোন কারণ ছাড়াই তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিলো!!

ছেলেটা ভাবলো হয়তো সে কোন অপরাধ করেছে ? যা সে জানে না! তবে সে বিশ্বাস করে মেয়েটা আবার তাকে ঠিকই আগের মত ক্ষমা করে দিবে ? কিন্তু না ! ৫ দিন ,৬ দিন , ৭ দিন পেরিয়ে যায় মেয়েটা আর ফোন করে না! ফেইস্ ঢুকে দেখে মেয়েটা তাকে .… করে দিয়েছে ! সে খুব কষ্ট পায় ! ছেলেটা হাত জোর করে ক্ষমা চায় কিন্তু মেয়েটা আর ক্ষমা করে নি ! ঐ দিকে ছেলেটা না খেয়ে অসুস্থ হয়ে আবার হাসপাতালে যায় !কেউ জানে না ! ছেলেটা বুঝতে পারে না তার অপরাধ কি ছিলো? সে জানতে চায় !সে বুঝতে পারে না ! যার জন্যে সে তার ঘর ছেড়েছে ? যার জন্যে সে দিনের পর দিন বৃষ্টিতে ভিজে দৌড়ে গিয়েছে এক নজর দেখার আশায়! যাকে সে ভালবাসতো নিজের থেকেও বেশী ! যার জন্যে সে তার মায়ের কথার অবাধ্য হয়েছিলো ! তাঁকে নতুন জীবন দেয়া সেই বোনকে কষ্ট দিয়েছে ! যার জন্যে সামান্য এক হোটেল মালিকের কাছে কথা শুনেছে ! সেই মেয়ে কেমন করে তাকে ভুলতে পারে ? তার আজ দুঃচোখে শ্রাবণের সেই মেঘযুক্ত আকাশের ঝরে পড়া জল !যে মেয়ে তার জন্যে এতো কষ্ট করেছে ? যে মেয়ে তার জন্যে তার পরিবারের সকল অত্যাচার নীরবে সহ্য করেছে!সে কেমন করে ভুলতে পারে ? তা সে বুঝতে পারে নি! হঠাৎ একদিন মেয়েটা ছেলে কে বলল তুই জানিস আমায় তুই কি বলেছিস ঐ রাতে ? সে বলল আসলেই আমি জানি না ! কিন্তু সেদিন তো তুমি ক্ষমা করে দিলে ? তাহলে এই প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে ? মেয়েটা আর কিছুই বুঝে উঠতে চায় না ! তার এক কথা ! আমি সব ভেবে চিন্তে নিয়েছি ! ছেলেটা বলে তাহলে আমার কি হবে ? আমি কার কাছে যাব ? আমি যে সবছেড়ে তোমার কাছে এসেছি ! আমায় ফিরিয়ে দিয় না ! ছেলেটার কোন কথাই মেয়ের শোনা হলো না ছেলেটা মেয়েটাকে তার নিজের উপার্জনের টাকা দিয়ে কিছু দিতে চায় ! ঐটাই তার শেষ চাওয়া ! আর একবার দেখতে চায় ! ১ মিনিটের জন্যে হলেও ! কিন্তু মেয়েটা তাকে সে ১ মিনিট সময় দিতেও নারাজ !সে বলে তুই একটা অমানুষ তোকে আমি ঘৃণা করি ! ছেলেটার আরেকটা কথা আছে বলার ! যা এখানে বলা উচিৎ হবে না! কারণ সেটাই একমাত্র কথা যা শুধুই তার ভালবাসার মানুষকে বলবে ! আর কাউকেই সে কথা সে জানাতে চায় না! মেয়েটার অনেক ধৈর্য্য! অনেকবার ছেলেটাকে ক্ষমা করেছে ! আর যদি একবার করতো??তাহলে কি এমন ক্ষতি হতো ? মেয়েটার বুঝা কি উচিৎ ছিলো না ? যে সে অনেক কষ্ট করেছে ! কিন্তু তাকে কিছু হারাতে হয় নি ! ছেলেটা এখন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন , বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ! যার কোন দায় মেয়ের নয় এটা ঠিক ! কিন্তু ছেলেটা তো তার জন্যেই এতোকিছু করেছে !সবচাইতে বড় কথা !তার ভালবাসায় তো কোন ভুল ছিলো না?আশ্চর্যের কথা না তবু অবাক হল যখন মেয়েটি ছেলেটিকে বলল যে আমার জন্য তোমার পরিবার ছেড়ে দিয়েছ… আমাকে ছাড়তে কতক্ষণ ! তুমি নিশ্চয়ই পাগল হয়ে গেছ !!মেয়েটা এখন তাকে বলে মানসিক রোগী ! সে নাকি পাগল ! বদ্ধ উন্মাদ ! ছেলেটা প্রতি রাত কাদেঁ ! ছেলেটা মেয়ের পায়ে ধরে ক্ষমা চায় ! যা সে ১প্যাকেট সিগারেটের বিষ মাখানো ধোয়া আর ১০টি ঘুমের ওষুদের বিনিময়ে প্রাপ্ত সে বুদ্ধি দিয়ে অজানা কোন এক কথা !যা সে বলেছিলো ? যে ছেলে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে ! যে বন্ধুদেরকে উপদেশ দিত সিগ্যারেট কখনোই খাবি না দোস্ত ! সে এখন বিষ মাখানো সিগ্যারেটের মধ্যেই খুঁজতে চায় তার প্রিয়ার সেই আবেশ ! যার জন্যে সের ছুটে গেছে বহুবার ! পথভুলানো নদীর পানে! আজ সে বাবার কবরের পাশে গিয়ে অনেকদিন অপ্র কাদেঁ আর বলে আমায় ক্ষমা করো বাবা ! আমি আপুকে কষ্ট দিয়েছি ! আমায় মাফ করো বাবা আমি তোমায় দেয়া কথা রাখতে পারি নি ! মার কাছে গিয়ে বলে আম্মু আমায় তুমি একেবারে মেরে ফেলো! কোথাও যে আমি ঠাই পাই নি !মা তাকে হাত বুলিয়ে বলে দূর বোকা ! তুই আমার সেই ছেলে যাকে পাওয়ার জন্যে, যার সুস্থতার জন্যে আমি প্রতিদিন দু'হাত তুলি ! তখন সে ছেলের দু'ফোটাঁ অশ্রু দেখে সেই স্নেহময়ী মায়ের চোখে শ্রাবণের ঢল নামে অঝরে ! মা আর ছেলের সেই অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখে ঐ জানালার সব কার্নিশ ! আর যতসব রাত জাগানিয়া সে ঝিঁ ঝিঁ পোকা । যা উড়ে উড়ে আচ্ঁ করছে সেই ছেলেটার না বলা একটি উক্তি যা কখনোই জানতে পারবে না কেউই !! না ! না ! কেউ জানবে না! শুধু সে আর তার সৃষ্টিকর্তা ছাড়া !







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.