নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফকির আবদুল মালেক

ফকির আবদুল মালেক

আমি এক উদাস ফকির তারা দানা তসবী গুনিপ্রাণীসম দেহ মাঝে মানুষ নামে স্বপ্ন বুনি

ফকির আবদুল মালেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাঠগড়ায় একাকিত্ব

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:৫৪



সত্যি ভয়াবহ মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে আমি ছিলাম এবং আছি। কিন্তু কেন তুমি আমাকে বললে যে, আমি পাগল? এই পীড়াটি আমার জ্ঞানকে শানিত করে, ধ্বংস কিংবা নির্বোধ করে না। মুলত: সব ছিল একটি তীব্র শ্রবন ক্ষমতা। আমি সকল বিষয় শুনতে পাই বেহেশতের এবং পৃথিবীর। আমি দোজগের অনেক কিছু শুনতে পাই। তাহলে আমাকে পাগল বলা যায় কিভাবে? মনোযোগ দিয়ে শুন আর অবলোকন করো কত দৃঢ় আর শান্ত ভাবে আমি পুরো গল্পটি বর্ণনা করতে পারি।

বলা দু:সাধ্য, কিভাবে ধারণাটি আমার মাথায় ঢুকলো কিন্ত একদা ধারণাটি মস্তিষ্কে গর্ভধারণ করে আর দিন রাত সেখানে তা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে। কোন বাধা ছিল না। আমি বৃদ্ধ মানুষটির অর্থের প্রতি লোভী ছিলাম না। এটা ছিল তার চোখ! হ্যা, চোখই! ওই চোখের দৃষ্টি ছিল অদ্ভুত মায়াবী, আকুতিপূর্ণ এবং শকুন সাদৃশ্য। একটি ফ্যাকাসে নীল রঙের চোখ। যখন ওই চোখের দৃষ্টি আমার উপর আপতিত হতো, আমার রক্ত ক্রমাগত শীতল হতে থাকত। ক্রমে ক্রমে আমি নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌছি আমি এই বৃদ্ধ লোকটিকে খুন করব এবং এভাবেই আমি ঐ দৃষ্টি থেকে নিজেকে মুক্ত করব।

এখন এই ব্যাপারটি লক্ষ্যনীয়। তুমি আমাকে পাগল ভাবছ। একজন পাগল কিছুই বুঝতে পারে না। কিন্তু আমাকে লক্ষ্য কর, কতটা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন আমার পদক্ষেপ, কতটা কৌশল আর অভিনয় দক্ষতা আমি প্রয়োগ করেছি। আমি বৃদ্ধের প্রতি একটি সপ্তাহব্যাপী নির্দয় হয়ে উঠেছিলাম, তাকে খুন করার আগ পর্যন্ত। প্রতি দিন রাতে, একেবারে মধ্যরাতে, তার গেটের লকটি খুলে আমি ভিতরে প্রবেশ করতাম, খুব ধীরে আর শান্তভাবে। বাইরে থেকে সমস্ত আলো নিভিয়ে দিতাম তারপর সিধকাটা চোরের মতো প্রথমে মাথাটা ঢুকিয়ে দিয়ে সবকিছু অবলোকন করি। তুমি হেসেই উঠতে যদি তুমি দেখতে কতটা চতুরতার সাথে আমি ভিতরে প্রবেশ করতাম। খুব ধীরে ধীরে পদক্ষেপ দেই, যাতে বৃদ্ধের ঘুমের কোন ব্যাঘাত না ঘটে। প্রায় ঘন্টা খানেক লাগত আমার, বুঝে নিতে, ঘরে বৃদ্ধের অবস্থানটি। হ্যা, একটি পাগল কি এতটা জ্ঞানী হতে পারে, আমার মত? আমার মাথাটা যখন রুমের ভিতর স্থির হয়ে সব কিছু অবলোকন করতে পারে, অন্ধকারটা যখন আমি জয় করতে পারি, তখন খুব সাবধানে সরু, ছোট, মৃদু আলোকের টর্চ লাইটটি জ্বালি। খুব সাবধানে আমি কাজটি করি। একবরাই কেবল আলোটি জ্বালি, একেবারে লোকটির চোখ বরাবর। এভাবে সাতটি রাত্রি, পরপর। প্রতিবারই আমি চোখ দুটি বন্ধ পাই আর আমার পক্ষে আমার কাজটি করা অসাধ্য হয়ে পরে। কারণ বৃদ্ধ লোকটি আমাকে বিরক্ত করেনি, কিন্তু তার চোখ দুটি, শয়তান চোখ দুটি, যা বন্ধ দেখতে পাই। এবং প্রতিদিন সকালে আমি তার চেম্বারে যাই এবং তার সাথে মাধুর্য্যপূর্ণ ব্যবহার করি। এই বৃদ্ধ যতই চতুর আর সফল পুরুষ হোন না কেন, তার পক্ষে সন্দেহ করা একেবারেই অসম্ভব যে, প্রতি রাতে,যখন ঘুমে থাকে সে আমি তার কক্ষে প্রবেশ করি খুনের উদ্দেশ্যে।

অষ্টম দিনে অন্যান্য রাত্রির চেয়ে আমি বেশি সতর্ক থাকি। ঘড়ির মিনিটের কাটাটাও আমার চেয়ে দ্রুত নাড়াচাড়া করে, এতটা সতর্ক আর ধীর। ঐ রাত্রির আগে আমি টের পাইনি, আমার ক্ষমতা আর বিচক্ষনতা কতটা দৃঢ়। অনেক কষ্ট আমার সাফল্যের উচ্ছ্বাসটি আমি অবদমিত করে রাখি। এই ভবনটিই আমাকে বেশি সফলতার ইঙ্গিত করে যে, সে স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি আমার এই গোপন অভিপ্রায় আর পদক্ষেপের কথা। আমি আমার মস্তিষ্কে স্থিরকৃত ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি। দরজা খোলার সময় ইচ্ছাকৃত একটি শব্দ করি। হঠাৎ হুরমুর করে জেগে বিছানায় বসে পরে বৃদ্ধ। এখন তুমি ভাবছ আমি ফিরে যাব? কিন্তু না বাইরে থেকে সমস্ত আলো নিভিয়ে দেয়া আছে আর পিচের মতো অন্ধকার এখন তার ঘরটি। আমি জানি যে, আমি দরজাটা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলেও সে কিছুই দেখতে পাবে না। খুব ধীরে আমি দরজাটা ঠেলে ভেতরে ঢুকে যাই।

আমি পুরোটাই আমার মস্তিষ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সরু, মসৃন, চিকন চর্টটি বৃদ্ধ যে দিকটায় ফিরে বিছানায় বসে আছে তার উল্টোদিকে মাত্র একবার কয়েক সেকেন্ডের জন্য ফ্লাশ করি। বৃদ্ধ ভয়ে লাফিয়ে উঠল, আর চিৎকার করে উঠে “ কে ওখানে?”

আমি তখনও শান্ত থাকি, কিছু বলি না। পুরো একটি ঘন্টা আমি এক ইঞ্চি নড়িনি। এর মধ্যে বৃদ্ধকে শুয়ে পরতে শুনিনি। সে এখনও বিছানায় বসে আছে, শুনার চেষ্টা করছে, যেমন আমি রাতের পর রাত এই প্রাচীরের ভিতর মৃত্যুর দিকে কান পেতে থাকি।

এখন আমি একটি মৃদু আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি, আমি জানি এই আর্তনাদ মর্মভেদী প্রাণহরী ভয় থেকে উত্থিত। সেটা কোন ব্যথা বা মন:স্তাপের আর্তনাদ নয়। এটা সেই শ্বাসরোধকারী শব্দ যা হৃদয়ের একেবারে গহীন থেকে আগত। আমি এই শব্দের সাথে ব্যাপকভাবে পরিচিত। অনেক রাতে, একেবারে মধ্যরাতে, যখন সমস্ত চরাচর ঘুমে বিভোর, এই শব্দ আমার বক্ষস্থলে একেবারে গহীন থেকে উঠে আসে তার ভয়ংকর প্রতিধ্বনি। আমিতো বলছি, আমি এই ধ্বনিকে ভালভাবে জানি। আমি জানি বৃদ্ধ লোকটি কি অনুভব করছে। সেই অনুভব আমার ভিতর একটি দয়ার অনুভূতি তৈরী করল কিন্তু আমি মনে মনে হেসে উড়িয়ে দেই। আমি জানি, জেগেই বসে আছে বৃদ্ধ বিছানায়। ভয় তাকে গভীরভাবে পেয়ে বসেছে। বারবার যুক্তি দিয়ে সে ভয় তাড়াবার চেষ্টা করছে। একবার ভাবছে,‘‘হয়ত গ্যাসের চুলাটি জ্বালানো ছিল, আর নিভে যাওয়ার আগে ধপ করে জ্বলে উঠেছে।” আবার ভাবছে, “ইঁদুরের উৎপাত বেড়ে গেছে, নিশ্চয়ই শব্দটি ইঁদুরের চলাচল থেকে এসেছে।” এভাবে নিজেকে নিরাপদ ভাবতে চেষ্টা করছে। কিন্তু হায়! সব বৃথা ভাবনা। মৃত্যু কালো ছায়মূর্তি হয়ে তার পিছনে দাড়িয়ে আছে। সে এখন মৃত্যু দ্বারা পরিবেষ্টিত। এবং এই ছায়মূর্তিরূপী আমার আনন্দের বিষয় এই যে, আমার মাথার ভিতর ঘটে যাওয়া এসব চিন্তা চেতনা বৃদ্ধ ঘুর্ণক্ষরেও টের পায় পায়নি।

দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর যখন আমি বুঝতে পারি যে, আমার শিকার এখনো জেগে বসে আছে, আমি ধীরে ধীরে এগিয়ে যাই। তুমি ভাবতেও পারবে না কতটা হিসাব আমি করেছি। যখন সব হিসাব মিলে গেল, চিকন টর্চ লাইটটি আমি জ্বেলে দিলাম। একটি সরু আলোক রশ্মি একেবারে চোখের উপর গিয়ে পড়ল।

চোখ ছিল খোলা, বিস্ময়ে যতটুকু বড় হতে পারে ততটা বড় আকারে। আমি একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে সে চোখটি দেখতে পেলাম যার দৃষ্টি আমার উপর আপতিত হলে আমার সমস্ত হাড়গুলি শীতল হতে থাকে। বৃদ্ধের চেহারা দেখিনি আমি। টর্চের আলোটি আমি এতটা হিসাব কষে জ্বালি যে, জ্বল জ্বল জ্বলতে থাকা শকুনের চোখ আমি স্পষ্ট দেখতে পাই।

এখন কি আমি বলব না যে, তুমি আমাকে পাগল বলে ভূল করেছো? আমাকে অপ্রকৃতিস্থ বলো না , অতি প্রকৃতিস্থিত বলতে পারো। এখন নিচু লয়ে দ্রুত উচ্চারিত একটি শব্দ আমার কানে এসে বেজে উঠছে। একটু বুঝিয়ে বলি, তোমার হাত ঘড়িটা বালিশের নিচে রেখে বালিশে কান পেতে শুন। অন্য কোন শব্দ যদি তোমার কর্ণকুহুরেকে বিরক্ত না করে তবে একটি দৃঢ় টিক টিক শব্দ শুনতে পাবে তুমি। ঠিক এই ধরনের একটি ধ্বনি আমার কানে বাজতে লাগল। এই ধ্বনি আমার জানা। এটা এই বৃদ্ধের হৃৎপিন্ড থেকে আগত। এই ধ্বনিটি আমার উগ্রতাকে প্রচন্ডতা দান করেছে যেমন সৈনিকের গতিশীলতাকে বাড়িয়ে দেয় ড্রামের আওয়াজ।

কিন্তু আমি নিজেকে দমন করে রাখি, এমন কি খুব সাবধানে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে থাকি। টর্চটি স্থিরভাবে ধরে রাখি, একেবারে চোখ বরাবর। এর মধ্যে হৃৎপিন্ডের ধ্বনি ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অতি দ্রুত, উচ্চ শব্দ থেকে উচ্চতর শব্দে, প্রতিমূহুর্তে। ভীষন ভয় পেয়েছে বৃদ্ধ। ভয়টি চরম পর্যায়ে উন্নীত হলো। প্রতিমূহুর্তে তা বৃদ্ধি পেতে থাকল। এই বৃহৎ অট্টালিকার এই ফ্লাটের ভিতর, রজনী যখন প্রায় শেষ ঘন্টার দিকে ধাবমান, তখন এই শব্দগুলি অতি দানবীয় আওয়াজে রূপান্তরিত হতে থাকল। সমস্ত নিরবতাকে খান খান করে ভেঙ্গে দিয়ে এতো বিকট আকার ধারণ করতে থাকল যে, আমি বিচলিত হয়ে পরলাম। এর মধ্যে আরো একটি ভাবনা আমাকে কাবু করে ফেলল, কেউ যেন পাশের ফ্লাট থেকে শব্দগুলি অনুসরন করছে। কিন্তু সময় কম। বিদায় হে বৃদ্ধ, বিদায়। মাত্র একবার বৃদ্ধ প্রতিরোধ করতে পেরেছিল। আমি টর্চটি ছুড়ে ফেলে এক ঝটকায় মেঝেতে ফেলে দেই। তারপর মোট কম্বলটি চেপে ধরি। পা নাড়াচাড়া করছিল বেশ জোরে, আর হৃৎপিন্ড লাফচ্ছিল অতিদ্রুত। আস্তে আস্তে সব শান্ত হয়ে এলো। আমি কান পেতে শুনলাম, শান্ত সব। বৃদ্ধ এখন মৃত, তার চোখ এখন আর আমাকে বিরক্ত করতে পারবে না।

এখনও যদি আমাকে পাগল ভাব, কিছুক্ষণ পর আর ভাববে না, যখন আমি পরবর্তী ঘটনাগুলো বর্ণনা করব। পরবর্তী একঘন্টা আমি একটানা পরিশ্রম করি। লাশ মতো শান্ত হয়ে আছে। তাকে রুম থেকে নিয়ে টেনে চেম্বারে নিয়ে যাই। সেখানে আইনের অজস্র বইয়ের পাশের
আলমারিটার ভিতর তাকে ঢুকিয়ে রাখি। তারপর রুমে প্রবেশ করে সব গুছিয়ে নেই। ধুয়ে ফেলার মতো কিছু ছিল না, একফোঁটাও রক্তপাত ঘটেনি। আশংকা ছিল কিন্তু তেমন লড়তে পারেনি।

যখন আমি পরিশ্রম করে সব প্রায় গুছিয়ে এনেছি তখন কলিং বেল বেজে উঠল। আমি খুব শান্তভাবে, হাসি মুখে সদর দরজা খোলে দেই। বেশ কয়েকজন, যারা এই অট্টালিকার নানা ফ্লাটে থাকত তারা ভিতরে ঢুকল। আমি তাদের বলি যে, রাতে ঘুমের ব্যাঘাত হয় আমার, দু:স্বপ্ন ভর করেছিল, আর তা ভয়াবহ ছিল। ব্যারিস্টায় স্যার আজ রাতের ফ্লাইটে লেশের বাইরে গেছেন, যেমন প্রায়ই তিনি যান। আর এ কারণে
আমি নিজের ফ্লাটে না থেকে এখানে থেকেছি। আমাকে একটি কেসের নোট নেবার জন্য বলে গেছেন। তাই গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু এত বড় ফ্লাটে একা একা একটা ভয় আমাকে দু:স্বপ্নে আকারে হানা দেয়। তার থেকেই একটা আওয়াজ হয়ে থাকতে পারে।

আমার মাধুর্যপূর্ণ ব্যবহার, শান্ত আর বিশ্বাসযোগ্য বর্ণনায় সকলে আশ্বস্থ হয়ে পরস্পর নানা কথা বলতে লাগল। আমি তাদের খোঁজ নেবার জন্য ধন্যবাদ জানাই এবং চা করে দেই। কোন প্রকার ডাকাতির আলামত দেখা গেল না, যা তারা অশংকা করছিল। ফলে তারা শেষ রাতের আড্ডায় মেতে উঠল। আমিও তাতে অংশ নেই।

কিন্তু কিছুক্ষণ পর, আমার অসুস্থতাটি প্রকাশ পেতে থাকে। আমার মাথার ভিতর একটি ধ্বনি প্রতিধ্বনি তুলতে থাকে। প্রথমে অতি সূক্ষ্ম, ক্রমাগত তা বর্ধিত হয়ে স্থুল আকার ধারন করে। একটি শব্দ আমার দু’কানে ক্রমাগত বাজতে থাকে। আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে চেষ্টা করি এবং চাইছিলাম যে লোকগুলো চলে যাক। আমি লক্ষ্য করে দেখলাম, লোকগুলো স্বাভাবিক ভাবে কথা বলে যাচ্ছে। তারা কি শব্দগুলি শুনছে না? কিভাবে সম্ভব? এত কোলাহলে তারা পরস্পরে কথা বলে যাচ্ছে কিভাবে?

এক ভদ্রলোক একবার বললেন,‘ ম্যাডাম আপনার কি খারাপ লাগছে? তাহলে বরং আপনি বিশ্রাম করুন।’

কিন্তু শব্দটি আমাকে আর প্রকৃতিস্থ থাকতে দিচ্ছে না, এক অতি প্রাকৃতিক শব্দ সমষ্টিতে আমি কাবু হয়ে পড়লাম। আমি দ্রুত শব্দ উৎস খুজতে লাগলাম। উৎসকে লক্ষ্য করে আমি চেম্বারের দিকে এগিয়ে এলাম। আলমারি খোলে মৃতদেহ মেঝেতে নামিয়ে আনলাম। শব্দটি এক পাথর হয়ে যাওয়া লাশ থেকে আগত। আমি কান পেতে শুনলাম- শূন্য স্পন্দনে একটি শব্দ উচ্চারণ করে যাচ্ছে- আমি বড় একা!

সে শব্দ আমার একাকিত্বকে তোলপাড় করে সমস্ত চরাচরে ছড়িয়ে দিচ্ছে- মানুষ বড় একা!

মাননীয় আদালত! আমাকে পাগল বলো না। গোয়েন্দা পুলিশের মতো বলো না যে, স্বচক্ষে একটি খুনের দৃশ্য অবলোকন করে আমার মস্তিষ্ক বিকৃত হয়েছে। কিংবা মনো বিজ্ঞানীর মতো বলো না যে , একটি বৃদ্ধ যার অর্থ-বিত্ত-পুত্র-কন্যারা থাকা স্বত্ত্বেও নি:স্ব, একাকী জীবনে সাথী হিসাবে যাকে পেয়েছিল, যার সঙ্গ যিনি কামনা করতেন গভীর ভাবে, এমন একজন নারী আমি। তার মতো বলো না যে , তার এই একাকী নি:স্ব মৃত্যুতে গভীর বেদনাহত হয়ে আমি পাগল হয়ে গেছি। মাননীয় আদালত, আমিই স্যারকে খুন করেছি, আমাকে ফাঁসি দাও। আমাকে তার কাছে যেতে দাও।

( একটি বিম্বিত গল্প। কোন গল্প পড়ে মনের ভিতর যে রেখাপাত হয় তার প্রতিক্রিয়ায় লিখিত নিজস্ব গল্প)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৪১

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: দারুণ লিখেছেন। বেশ ভালো লাগলো।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:২৭

ফকির আবদুল মালেক বলেছেন: কষ্ট করে পড়েছেন আবার ভালোলাগাও পেয়েছেন। ডবল ধন্যবাদ।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: নিজস্ব গল্প বলে কিছু নেই।

সবই অনুগল্প।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৩

ফকির আবদুল মালেক বলেছেন: নিজস্ব গল্প বলাটা ঠিক হয়নি। কথা ঠিক। এটা আমার নিজের লেখা বুঝাতে চেয়েছিলাম।

গল্পটি কি আপনার ভালো লেগেছ? ও হা, গল্পটি পড়ছেন কি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.