নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন নাস্তিক খুব কম ক্ষেত্রেই জীবনের শেষ পর্যন্ত নিখাদ নাস্তিক থাকতে পারে ।
ভয় যেমন মানুষের মজ্জাগত, স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাসও মানুষের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে লুকিয়ে থাকে । যতোই তাকে যুক্তির জোরে অস্বীকার করা হোক না কেন, সময়ে তা মাথা ঠিকই তুলে দাঁড়ায়।
ঘোরতর বিপদে বা নিশ্চিত মৃত্যুর সম্ভাবনা দেখলে মজ্জাগত বিশ্বাসটি অর্জিত বিশ্বাসের সাথে বেঈমানী করে বসে । তাসের ঘরের মতো ভেঙেচুরে যায় জীবনভর তিল তিল করে তৈরী করা কু-যুক্তির অটল প্রাসাদ । অসহায় আত্মসমর্পন করতে হয় তখন আদিম মানব প্রকৃতির কাছে, যেখানে লুকিয়ে থাকে বিশ্বজাহানের স্রষ্টার প্রতি সহজাত বিশ্বাস ।
বঙ্গোপসাগর ধেয়ে আসছে ‘মহাসেন’ নামে এক বিভীষীকা ।
গতিপথ তার পরিবর্তনশীল । যেতে পারে সে হিন্দুস্থান অভিমুখে, অথবা পূর্ণশক্তিতে আঘাত করতে পারে বাংলাদেশকে । অথবা দুর্বল হয়ে মাঝপথে বিলীন হয়ে যেতে পারে ।
মানুষের কী ক্ষমতা আছে তাকে থামিয়ে দেবার, তার গতিপথ পরিবর্তন করার, কিংবা তাকে দুর্বল করার ?
এ ধরনের প্রাকৃতিক শক্তি মোকাবেলায় নাস্তিক ব্যবহার করে জাগতিক ও মানসিক শক্তি ।
আস্তিক এগিয়ে থাকে একধাপ বেশী । জাগতিক ও মানসিক শক্তির সংগে সংগে সে আত্মিক শক্তিতেও বলীয়ান থাকে । আর এই আত্মিক শক্তির ভিত্তি হচ্ছে অদৃশ্য এক সৃষ্টিকর্তার উপর তার অগাধ বিশ্বাস ।
আস্তিক এসময় আত্মরক্ষার প্রস্তুতি গ্রহন করার পাশাপাশি এই বিপদ থেকে বাঁচার জন্য বিপদের প্রেরণকর্তার কাছে কাতর মিনতি পাঠায় তা থেকে রক্ষার পাওয়ার জন্য ।
তবুও যদি বিপদ এসে মাথার উপর ভেঙ্গে পড়ে, আস্তিক তার স্রষ্টার উপর আস্থা হারায়না, বরং বিপদকে কোন পরীক্ষা বা শাস্তি হিসাবে অম্লানবদনে মেনে নেয় ।
নাস্তিক তা পারে না ।
বিপদ বা মৃত্যুর খুব কাছাকাছি গিয়ে যখন তার জাগতিক ও মানসিক সকল প্রতিরোধ ব্যর্থ হয়, ঠিক সেই মুহূর্তে তার ভেতরের অবদমিত আস্তিক সত্ত্বাটি মাথা তোলে । জীবনভর সংশয়ী ও বিভ্রান্ত ঘোর নাস্তিকের প্রাণের গভীরেও তখন অদৃশ্য এক সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের ব্যাপারে প্রতীতি জন্মায় ।
তার জড় যুক্তি তখন সেই অপ্রিয় বিশ্বাসের গলা টিপে ধরার ক্ষমতাটি হারিয়ে ফেলে ।
©somewhere in net ltd.