নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মু, আমজাদ হোসেন

মানুষ পশুকে তখনই ছাড়িয়ে যায় যখন সে অন্য মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে ভাবে । আমি একজন মানুষ ।

মু, আমজাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাণহীন নামাজ ।

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:২১

(১)

মসজিদের সৌন্দর্য্য বাড়ছে দিনদিন । নামাজের সৌন্দর্য্য কমছে তার সাথে সাথে ।



মসজিদগুলোর ভেতরে জমকালো ও চোখ ধাঁধানো সাজসজ্জা তৈরীতে আজ বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা চলে, ব্যয় করা হয় রাশি রাশি অর্থ । মুসল্লীদের যাবতীয় আরামআয়েশের ব্যবস্থায় রাখা হয় না কোন ত্রুটি ।



অথচ যে কারনে এই আয়োজন সেই নামাজই দিনদিন হয়ে যাচ্ছে নিস্প্রাণ, নীরস ও অকার্যকর । গভীর ধ্যানমগ্ন, আন্তরিক ও প্রশান্তচিত্ত নামাজ আজ হারিয়ে যাচ্ছে । সেজদাগুলি মুরগীর শস্যদানা খুঁটিয়ে খাওয়ার মতো দ্রুতগতির হয়ে যাচ্ছে ।



আধুনিক জীবনের যাবতীয় ব্যস্ততা, উদ্বেগ আর জাগতিক চিন্তা নামাজকে খেয়ে ফেলছে প্রতিনিয়ত । অপ্রতিরোধ্য জাগতিক আচ্ছন্নতা গ্রাস করছে আধুনিক মুসলিম মানসকে । মসজিদের আহ্বান মুসলমানকে আজ আর অতোটা উদ্বেলিত করে না । মসজিদে তাদের অবস্থান হয় অধৈর্য্য ও তাড়াহুড়োর ।



নামাজ মানুষকে যাবতীয় অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে । এদিক দিয়ে মসজিদ হলো এক সংশোধনী কেন্দ্রের মতো । অন্তরের ময়লা পরিস্কার করার স্থান । কিন্তু মসজিদের মুসল্লীর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সামাজিক অন্যায় ও অশ্লীলতা ।



মসজিদেও চুরীর মতো ঘৃণ্য কাজ হয় । কেউ চুরী করে জুতো, কেউ করে নামাজ ।



মুমিনের জন্য নামাজ তার মালিকের দরবারে হাজিরা দেয়ার মতো । দৈনিক পাঁচবার । মসজিদে গিয়ে আল্লাহ্‌কে দেখাতে হয় তার অনুগত গোলাম মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ আছে । তাদের মধ্যে কোন বিভেদ বৈষম্য নেই ।



কিন্তু তিক্ত সত্য হচ্ছে এই যে মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে শতধা’ বিভক্ত আজ । পৃথিবীতে একমাত্র মুসলমানরাই বোধ হয় নিজের ধর্মের নিন্দায় এবং অবমাননায় সবচে’ বেশী এগিয়ে আজ । স্বধর্মের মানুষদের রক্তপাতেই তারা সবচে’ বেশী উৎসাহী এবং সক্রিয় ।



একমাত্র সত্যিকারের নামাজই পারে মুসলমানকে তার রবের নিকটবর্তী করতে, তাঁর দয়া ও অনুগ্রহের যোগ্য করতে । কিন্তু নামাজ আজ কারো কাছে হয়ে গেছে লোক দেখানো সামাজিকতা, কারো কাছে এক প্রাণহীন দৈহিক ও শারীরিক অভ্যাস মাত্র ।



(২)

নামাজ, সৎ কাজ ও নানা ইবাদতে অর্জিত নেকী কাংখিত কল্যান বয়ে আনতে পারে না কেন মুসলমানের পার্থিব জীবনে ? এমনতো হওয়ার কথা নয় ।



কেন তাদের জাগতিক কামনার কিঞ্চিৎ অংশ মাত্র পূরন হয় প্রার্থনায়? আখিরাতের কথা না হয় পরেই এল ।



অথচ আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন কুরআন মজীদে বহু যায়গায় বলেছেন, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে তাদের জন্য দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় স্থানেই রয়েছে বিরাট কল্যান এবং পুরস্কার ।



ঘরের সবক’টি জানালা দরোজা খুলে এসি চালালে যেমন ঘর শীতল হয় না সহজে, কাংখিত আরাম ধরা দেয় না, তেমনিভাবে গুনাহের দরোজা জানালা বন্ধ না করে সৎ কাজ করে গেলেও মুমিনের জীবনে তার কোন প্রবল প্রভাব অনুভূত হয় না ।



অগুনিত ছিদ্রবিশিষ্ঠ পাত্রে যতো পানিই ঢালা হোক, পাত্র তা ধরে রাখতে পারে না ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৩৫

নাসীমুল বারী বলেছেন: অপ্রতিরোধ্য জাগতিক আচ্ছন্নতা গ্রাস করেছে আধুনিক মুসলিম মানসকে ।আধুনিক জীবনের যাবতীয় ব্যস্ততা, উদ্বেগ, জাগতিক চিন্তা আর নামাযের আপেক্ষিক গুরুত্বটা নামাযের বিপরীতে বেশি ঝুঁকে পড়েছে। সমাজে অসংগতিপূর্ণ কাজ করে তার দায় এড়াতে নামাযকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করি এখন আমরা। একজন নামাযী, নিশ্চয় সে ভালো- এমন ধারণা দিতেই নামায ধরি, মসিাজদে ঘোষণা দিয়ে দান করি। অথচ দানের জন্য বলা হয়েছে ডান হাতে দান করলে যেন বাম হাতও টের না পায়। এমন দান এখন! না, মানুষ না জানলে দান হবে কেন? এমন ক্ষুদ্র মানসিকতার জন্যই নামাজও আজ শুধু লোক দেখানো ইবাদতে রূপ নিয়েছে। আর লোক দেখানো বলেই মসজিদের অবয়বও আজ লোক দেখানো প্রতিযোগিতার সৌকর্য বাড়াচ্ছে। আন্তরিক ধ্যানমগ্ন নামাজের পরিবর্তে সৌকর্যময় লোক দেখানো নামা্য এখন সামাজিক পরিমণ্ডলে ভালো মানুষ সাজবার এক অশোভনীয় প্রতিযোগিতা। তাই নামায এখন আর 'মুসলিম ও কাফিরের' ববধান সৃষ্টি করা ইবাদত নয়। 'খুশূ'র সাথে নামায আদায় কি আর এখন হয়?
যদি নামাযই পড়তে হয়, তার জন্য সময়ও ব্যয় করি, তবে কেন তাড়াহুড়ো করা? নামাযে জাগতিক চিন্তা চেতনাকে জাগ্রত করা? এতে নামাযও যেমন হয় না, আবার সময়ও নষ্ট হয়। অলাভজনক এমন কাজটি কেন করব- একবার ভেবে দেখলে ভালো হয় না?

এটা আমার উপলব্ধি।

শুভেচ্ছা রইলো। আমার ব্লগে আমন্ত্রন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.