নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
۞ ১ ۞
উট প্রচুর পানি একসাথে পান করে নেয় যাতে সে পানিহীন মরুভূমিতে অনেক দিন পানি ছাড়া বাঁচতে পারে । মানুষের সেই ক্ষমতা নেই । তাই সেহরীর সময় একসাথে ঘটি ঘটি পানি পান করে শরীরের সারাদিনের চাহিদা পূরন করার সূযোগ নেই । উল্টো সেহরীতে বেশী পান করলে সে পানি দ্রুতই আপনার কাঁচা নিদ্রার ব্যাঘাত ঘটিয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে । বরং অল্প পানি পান করলে শরীর তা তুলনামূলকভাবে বেশী সময় ধরে রাখবে ।
গো মাংশ এবং অন্যান্য গুরুপাক খাদ্য সেহ্রীতে পরিহার করুন । কেননা এসব খাদ্য হজম হতে প্রচুর পানির প্রয়োজন পড়ে শরীরে । ফলে অতি দ্রুতই আপনি তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়বেন ।
তবে হ্যাঁ, সারা দিন রোজার শেষে ইফতারীতে পানি এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্যসম্মত পানীয় পানের বেলায় কোন রকম কার্পণ্য বা অবহেলা যেন না হয় । রাতে যতক্ষন সজাগ থাকবেন পানি পান করে যাবেন উদারচিত্তে ।
۞ ২ ۞
ঊনো ভাতে দুনোবল । অতি ভাতে রসাতল ।
সেহরীর সময় যদি আপনি সারা দিনের উপবাসের অগ্রিম আশংকায় অতি ভোজন করেন তাহলে আপনি দিনব্যাপী দুর্বল বোধ করবেন । কিন্তু পেট সামান্য খালি রেখে উঠুন । বেশ কয়েকটা খেজুর খান । দেখবেন সারাদিন আপনার শরীরে একটা চনমনে ভাব বিরাজ করছে । কাজ-কর্মে পাচ্ছেন প্রচুর এনার্জি ।
একইভাবে সারাদিন রোজার শেষে ইফতারের মুহূর্তে রকমারী খাবারের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়বেন না । তাহলে আপনার শরীর আলস্যে ভারী হয়ে উঠবে দ্রুত । তারাবীহ নামাজে ঝিমুনি আসবে । স্রেফ কয়েকটা খেজুর, পর্যাপ্ত পানীয়, দু’ এক টুকরো ফল, ছোলা ইত্যাদি দিয়ে ইফতার সারুন । কিছুক্ষন পর পেটে অনুভবযোগ্য ক্ষুধা লাগিয়ে রাতের প্রথম আহারটি সারুন ।
অর্থ্যাৎ পাকস্থলীকে একসাথে অনেকগুলি এসাইনমেন্ট না দিয়ে অল্প অল্প করে কয়েক ধাপে দিন । দেখবেন শরীর কেমন তরতাজা লাগছে । কেটে গেছে সমস্ত দুর্বলতা, পড়ালেখা বা ইবাদতে ক্লান্তিজনিত অনীহা আসছে না ।
আর লোভী রসনার দাবী পূরন করতে গিয়ে যদি তেলেভাজার কাছে আত্মসমর্পন করেন তবে তার জন্য চরম মূল্য দিতে হবে আখেরে । কিছুটা পাপের মতো । পাপ করতে খুবই মজা কিন্তু তার পরিনতি হয় খুবই দুঃখজনক ।
۞ ৩ ۞
রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহ্র কাছে মেশক আম্বরের চাইতে অধিক প্রিয় । তাই বলে কি মুখে দুর্গন্ধকে লালন করতে হবে ?
কয়েকটি কারণে মুখের ভেতরে দুর্গন্ধ হয় । প্রথমত দাঁত ও মাড়ি, দাঁতের ফাঁক, জিভ, তালু এবং আলজিভের গোড়ায় আটকে থাকা খাদ্যকনা পচে দুর্গন্ধ তৈরী হয় । দ্বিতীয়তঃ অতি ক্ষুধায় মানুষের পাকস্থলী থেকে বদবু উদগত হয় । এ ছাড়া মাড়ি ও পেটের রোগ থাকলেও মুখে দুর্গন্ধ তৈরী হতে পারে ।
প্রতিদিন দু’বার দাঁত মাজা মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক । রোজায়ও তার ব্যত্যয় হওয়া উচিৎ নয় । দাঁত মাজতে হয় আহারের পর, আগে নয় । রোজায় তাই দাঁত মাজার উপযুক্ত সময় রাতের প্রথম আহারের পর একবার এবং সেহরী খাওয়ার পর একবার । হোক সময়ের ব্যবধান কম তবুও ।
যারা মিসওয়াক করেন নিম বা জয়তুনের ডাল দিয়ে তাদেরও মাঝে মাঝে টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজা উচিৎ কেননা মিসওয়াক দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাদ্যকণাকে পুরোপুরি দূর করতে সক্ষম নয় ।
যারা মিসওয়াক ব্যবহারের পক্ষে অতিরিক্ত যুক্তি দেখাবেন তাদেরকে বলি, আল্লাহ্র রাসুলের (সা) যুগে টুথব্রাশ-পেস্ট ছিল না বলে তিনি মিসওয়াক ব্যবহার করেছেন । তিনি যদি এ যুগের আরবে জন্মাতেন তাহলে মিসওয়াকের পাশাপাশি তিনি হয়তো টুথব্রাশ-পেস্ট দিয়েও দাঁত মাজতেন । যেমনভাবে বলতে পারি ও এ যুগে জন্মালে রাসুল সা হয়তো উটের বদলে গাড়িতে চড়তেন, খেজুরের চটের বিছানায় ঘুমুনোর বদলে তোষকওয়ালা খাটে ঘুমুতেন, চামড়ার মশকের বদলে কাঁচের গ্লাসে পানি পান করতেন, তলোয়ারের বদলে রাইফেল দিয়ে জিহাদ করতেন ।
দাঁতের কোন রোগ না থাকলে রোজায় মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য দু’বার দাঁত মাজবার সময় জিভটাকেও হালকা করে ব্রাশ দিয়ে ঘষবেন । একটু বমি বমি লাগবে বটে, কিন্তু তাতে আপনার জিহ্বায় আটকে থাকা খাদ্যকণা এবং মুখের আঠালো শ্লেষ্মা দূর হয়ে যাবে । মুখের গভীর পানি পৌঁছিয়ে মুখকে উর্দ্ধমুখী করে বেশ কয়েকবার গার্গল করবেন । দেখবেন আপনার মুখের ভেতরে ফ্রেশ একটা অনুভূতি তৈরী হয়েছে ।
দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাদ্যকনা দূর করতে প্রতিদিন ফ্লসিং করবেন । ফ্লসিং মানে দাঁতের ফাঁকে সূতো প্রবেশ করিয়ে খাদ্যকনাকে দূর করা । ফ্লসিং এর জন্য বাজারে বিশেষ ধরনের সূতো পাওয়া যায় । না পেলেও কোন সমস্যা নেই । পিচ্ছিল ও চিকন রেশমী সূতো দিয়েও এ কাজ চালানো যায় ।
এ প্রক্রিয়ায় দু’হাতের তর্জনীতে সূতোর দু’মাথা পেঁচিয়ে সূতোটিকে দাঁতের ফাঁকে প্রবাশ করান । তারপর একটু সামনে পেছনে টানাটানি করুন । ব্যস্ , দাঁতের ফাঁকে কোন দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা থাকলে তা পরিস্কার হয়ে যেতে বাধ্য ।
মনে রাখবেন, দাঁত মাজার পর পানি ছাড়া অন্য কোন খাবার গ্রহন করা যাবে না ।
দাঁত ও মুখের এত যত্ন করার পরেও উপবাসের কারনে মুখের ভেতরে প্রকৃত রোজাদারের যে দুর্গন্ধ তৈরী হবে তা আল্লাহ্ সানন্দে কবুল করবেন ।
۞ সূত্র: স্বীয় অভিজ্ঞতা । ۞
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৫৩
রাহুল বলেছেন: গুরুত্তপূর্ন পুষ্ট।ভালো লাগলো, যা যানি তা আবার ঝালাই হলো।ধান্যবাদ।