নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মু, আমজাদ হোসেন

মানুষ পশুকে তখনই ছাড়িয়ে যায় যখন সে অন্য মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে ভাবে । আমি একজন মানুষ ।

মু, আমজাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

শবে বরাতের অন্য পিঠ ।

০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮

শবে বরাত নিয়ে থাকতে পারে, তবে হালুয়া রুটি নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই । আর কেউ না হোক, আমি অন্তত হালুয়া রুটির বড় সমর্থক ।

শবে বরাত বিদআতপূর্ণ নাকি সহীহ—সে বিতর্ক আজ একপাশে সরিয়ে রেখে শুধু হালুয়া রুটির গুরুত্ব নিয়েই না হয় একটু কথা হোক ।

একদা এই বাংলায় শবে বরাতের দিন ঘরে ঘরে নারীরা ব্যস্ত হয়ে পড়তো রকমারি ও সুস্বাদু হালুয়া, চালের রুটি, সেমাই, গরুর মাংশ ইত্যাদি আহার্য্য বস্তু তৈরীতে । শুধু যে পরিবারের সদস্যদের রসনাবিলাসের জন্য তা কিন্তু নয়, প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের বাড়িতেও পাঠানো হতো সে সব । আর বিকেল থেকে দরজার বাইরে তৈরী হওয়া হালুয়া-রুটি প্রত্যাশী ভিক্ষুকদের ভিড়কে সন্তুষ্ট করার ব্যাপারতো ছিলই ।

শবে বরাতের দিন দুপুর বেলায় শুরু হওয়া নারীদের ঘরোয়া ব্যস্ততা বিকেল বেলায়ে ট্রে হাতে এ বাড়ি ও বাড়ি ছুটতে থাকা ছেলে-মেয়েদের মাধ্যমে পরিণত হতো সৌজন্য রক্ষার সামাজিক ও আনন্দময় ব্যস্ততায় । সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যকে অক্ষুন্ন ও দৃঢ় রাখার দৃষ্টিনন্দন এই প্রচেষ্টা ছিল বাংলার শহর ও গ্রামগুলির বহু বছরের ঐতিহ্য ।

আজ সংকীর্ণ স্বার্থপরতা, হিংসা-বিদ্বেষ, দ্বন্দ্ব, ঈর্ষা, বিভেদ আর চরম আত্মকেন্দ্রিকতায় একই সমাজে বসবাস করেও মানুষে মানুষে, পরিবারে পরিবারে যখন তৈরী হচ্ছে সম্পর্কহীনতার শীতল ও অদৃশ্য এক প্রাচীর, শবে বরাতের মতো সামাজিক বন্ধন ও সখ্যতা তৈরীর পুরানো উপলক্ষকে নতুন করে সাধুবাদ জানিয়ে উৎসাহিত করার প্রয়োজন দেখা যাচ্ছে ।

শবে বরাত নিজের সমস্ত বিতর্ক, বিদআতি বৈশিষ্ঠ্য ও দোষত্রুটি ঝেড়ে ফেলে, প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং প্রতিবেশীর হক আদায়ের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতটি প্রতিষ্ঠা ও চর্চার এক নির্দোষ সামাজিক উৎসব হয়ে উঠতে পারে ।

আরব দেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম অধ্যূষিত অঞ্চলে জলবায়ু, কর্ম ও ভৌগলিক পরিবেশকে কেন্দ্র করে প্রাচীনকাল থেকে নিজস্ব কিছু উৎসব ও সংস্কৃতি তৈরী হয়েছে । তাদের মধ্যে যেগুলি ইসলামের মৌলিক আকিদার সাথে সাংঘর্ষিক নয়, সেসব এখনও অনুসরন করা হয় ।

বাংলার মানুষ ঐতিহাসিকভাবেই উৎসবপ্রিয় । ইসলামে দু’টি মাত্র ঈদ থাকায়, এবং এ দেশের আলেমগন পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসব ইত্যাদির প্রতি নাখোশ কিংবা উদাসীন থাকায়, উৎসবপ্রিয় সাধারন ও অজ্ঞ মুসলমানগন বিজাতীয় বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, বিধর্মীয় হোলি কিংবা দিপাবলী উৎসবসহ ঈমান আকিদা বিধ্বংশী বিভিন্ন উৎসবের সাথে আশংকাজনকভাবে একাত্ম হয়ে উঠছে ।

এই প্রেক্ষাপটে যদি শবে বরাত, ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী ইত্যাদির মতো নিজস্ব ধর্মীয় উপলক্ষগুলির বিদআতি ট্যাগ সরিয়ে, কিছুটা সংস্কারের মাধ্যমে গ্রহনযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে টিকিয়ে রাখা না হয়, তবে মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান সাংস্কৃতিক অবক্ষয় অসহায়ভাবে চেয়ে চেয়ে দেখা, অভিসম্পাত দেয়া, এবং সবশেষে নিরুপায় মুখ ঘুরিয়ে নেয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমরা অনেকেই এখনো বিতর্ক করতে শিখিনি। বিতর্ক গড়িয়ে যায় ব্যক্তিগত আক্রমণে। অবশেষে ঝগড়ায়।

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৯

মু, আমজাদ হোসেন বলেছেন: বিতর্কের পরিণতি এত খারাপ হয় না, কুতর্কের হয় । যুক্তি ও তথ্য যাদের নেই, অন্ধ আবেগে তারা গালি দেয়, ব্যক্তিগত আক্রমনে যায় । মুখোমুখি হলে পেশীশক্তির আশ্রয় নেয় ।

৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: কুতর্কের শেষ নাই। তাই দুরে থাকা ভালো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.