নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশাল এক দরিয়ায় লঞ্চ চলছে । লঞ্চের ডেকে বসা মানুষগুলি রোদ পাচ্ছে, আরামদায়ক বাতাস পাচ্ছে । পানির প্রয়োজন পড়লে বালতিতে দড়ি লাগিয়ে নদী থেকে তুলে নিচ্ছে সুপেয় পানি ।
অন্যদিকে, লঞ্চের খোলে বসা মানুষগুলি পানি পাচ্ছে না । উপরের যাত্রীরা তাদেরকে পানি সরবরাহও করছে না, আবার পানির জন্য উপরে উঠতে গেলে নিজেদের নিরাপত্তা এবং শান্তি ব্যহত হয় বলে বিরক্তিও প্রকাশ করছে ।
নীচের নিরুপায় মানুষগুলি ভাবছে পানির জন্য উপরে যাওয়ার দরকার কি । পানিতো তাদের পায়ের নীচেই আছে । একটু কষ্ট করলেইতো পানি পাওয়া যায় ।
যেই ভাবা সেই কাজ । তারা কুড়াল দিয়ে লঞ্চের খোল কাটা শুরু করে । নদী থেকে পানি সংগ্রহ করবে ।
গল্প শেষ ।
পাঠক, নিশ্চয় অনুমান করতে পারছেন, নীচের অসহায় লোকগুলির নির্বুদ্ধিতা আর উপরের মানুষগুলির সুখ ও স্বার্থপরতায় কাহিনীটা এরপর কোন দিকে গড়াবে । হ্যাঁ, ডুবে মরবে লঞ্চের যাত্রীরা সবাই ।
এটি একটি রূপক গল্প । এই গল্পটি কার তা আপনারা অনেকেই জানেন । তবুও এ লেখার শেষে গল্পকারের নাম আমি উল্লেখ করে দিয়েছি ।
করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং নিয়ন্ত্রনের জন্য সরকার আরোপিত চলমান লক ডাউনকে অবহেলা করার সামাজিক প্রবণতাকে ব্যাখ্যা করার জন্য গল্পটি বলেছি আমি ।
লকডাউনে ঘরের ভেতর বসে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলা সচ্ছল মানুষরা লঞ্চের উপরে বসা মানুষদের মতোই নিরাপদ ।
আর সমাজে গরীব যে মানুষগুলি পেটের জ্বালায় লকডাউনকে উপেক্ষা করে উপার্জনের আশায় অপরিণামদর্শীর মতো ঘরের বাইরে যাচ্ছে, তারা হচ্ছে লঞ্চের খোলে বসা বেপরোয়া ও নির্বোধ মানুষের মতো ।
চলমান এই লকডাউনে সচ্ছল মানুষদের উচিৎ ছিল নিয়মিতভাবে সমাজের অসচ্ছল মানুষদের প্রয়োজন মেটানো । কিন্তু তারা তা করতে পারেনি । সরকার এ ব্যাপারে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হলেও সফল হতে পারেনি । কিছু মানুষের অসততা, আর জঘন্য স্বার্থপরতার কারনে নীচতলার মানুষদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছুতে পারেনি সরকারি সাহায্য ।
ফলে নীচতলার মানুষরা নিরুপায় হয়ে লকডাউনের পরোয়া না করে ঘরের বাইরে যাচ্ছে, ভিড় বাড়াচ্ছে । প্রয়োজনের তাগিদে চরম নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিচ্ছে তারা ।
এভাবে পেট বাঁচাতে লকডাউন ভেঙে তারা বাইরে গেলে সমাজে দাবানলের মতো ছড়াবে করোনা ভাইরাস । এবং ছড়ছেও দেখতে পাচ্ছি । সে ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাবে শুধু তারা নয়, ঘরের ভেতর নিরাপদে থাকা সচ্ছল ও সুখি মানুষরাও ।
ঠিক যেভাবে গল্পে লঞ্চের খোলের যাত্রীদের নির্বুদ্ধিতার কারনে প্রাণ হারাবে উপরে বসা সুখি যাত্রীরাও ।
এখন বাঁচার উপায় একটিই । অবিলম্বে সমাজের নীচতলার মানুষদের প্রয়োজন পূরণ করে তাদের নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ কাজকে বাধা দিতে হবে । হয় বুঝিয়ে, নয়তো জোর করে ।
পুনশ্চঃ
উপরের রূপক গল্পটি এমনই সামাজিক পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করার জন্য বলে গিয়েছেন মানবতার মহান শিক্ষক শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সা) ।
২| ২৩ শে মে, ২০২০ সকাল ১১:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: গল্প পড়লাম। শিক্ষনীয় গল্প।
৩| ২৩ শে মে, ২০২০ দুপুর ১:৩২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: খুব সুন্দর।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মে, ২০২০ সকাল ১০:১৯
শূন্য সারমর্ম বলেছেন: পুনশ্চ বিবেচনাযোগ্য এদেশে কিছুটা হবার সম্ভাবনা ছিল..কিন্তু তাও হলো না