নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মু, আমজাদ হোসেন

মানুষ পশুকে তখনই ছাড়িয়ে যায় যখন সে অন্য মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে ভাবে । আমি একজন মানুষ ।

মু, আমজাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাবলিক পরীক্ষায় হাইব্রিড পাশের হার—বিহাইন্ড দ্য সীন !

০২ রা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৪১

(১)
কয়েকদিন আগে দেখলাম জামালপুরে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন পরীক্ষা শুরুর অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই কেন্দ্রের বাইরে বের হয়ে এসেছে ।

এমন ঘটনা অধিকাংশ পাবলিক পরীক্ষার কেন্দ্রেই বহুদিন ধরে ঘটছে । ধরা পড়াটাই দুর্ঘটনা, ধরা না পড়াটা দক্ষ ম্যানেজমেন্টের উদাহরণ । ধরা পড়লেই চোর, নইলে সবাই সাধু ।

মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, পরীক্ষার হল থেকে প্রশ্ন বের হয়ে যায় কীভাবে, কেন ? কারা কেন্দ্রের বাইরে বসে সেগুলির সমাধান করে পরীক্ষার হলে সাপ্লাই দেয় ? কারা পরীক্ষা কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষে গোপনে ও নিঃশব্দে পৌঁছে দেয় সাময়িক উপকারি কিন্তু শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ধ্বংশকারি এই স্টেরয়েড ?

(২)
পাশের হার বাড়ানোতেই আজ যত কৃতিত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির, এ জাতির শিক্ষা ব্যবস্থার । সংগে যদি থাকে জিপিএ ফাইভের আধিক্য, তাহলেতো একাদশে বৃহস্পতি ।

শিক্ষায় কোয়ালিটি নয়, কোয়ানটিটিই যেন আজ পরম ঈপ্সিত বস্তু ।

এ কারণেই প্রকৃত শিক্ষাবিদরা যখন ক্রমাগত পড়ালেখার মান নিম্নমুখি বলে রায় দিচ্ছে, জাতি দেখছে ঊর্দ্ধমুখি পাশের হার ।

এ কথা আজ ওপেন সিক্রেট যে বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাশের হার বাড়িয়ে নিজেদের সুনামটিকে চকচকে রাখার জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অবৈধ কোঅপারেশনকে স্বেচ্ছায় প্রশ্রয় দেয়, কোথাওবা গোপন ব্যবস্থায় প্রশ্নের সমাধান পরীক্ষার হলে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করে ।

অতীতে পরীক্ষার হলে নকল চলতো সরবে ও স্থূলভাবে, এখন চলে নীরবে ও সূক্ষ্ণভাবে ।

পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে এসব দেখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বহু কর্মকর্তা লোভনীয় উৎকোচ হজম করে ক্যাবলাকান্ত বনে যায় । আদর্শ ও নীতিবর্জিত, শিক্ষার দুশমন, পদলেহী মানসিকতার কিছু শিক্ষক কর্তৃপক্ষকে প্রসন্ন রাখতে পর্দার আড়াল থেকে এসব অপকর্মকে সুপারভাইজ করে নির্লজ্জ দাপটে ।

সৎ ও নীতিবান শিক্ষকরা ঘৃণা ও ক্ষোভ হজম করে বোবা যন্ত্রণায় দীর্ঘশ্বাস ফেলেন । চাপের মুখে প্রশ্ন সমাধান ও সাপ্লাই দেয়ার নোংরা কাজে আত্মনিয়োগ করে চাকরি বাঁচানো শিক্ষকরা মনের গ্লানি লুকানোর চেষ্টায় থাকে ।

ওদিকে বিনা পড়াশুনায় পাশ করার অলিখিত নিশ্চয়তা পেয়ে শিক্ষার্থীরা গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ায়; পড়াশুনা থেকে দূরে সরে । উচ্ছন্নে যায় তাদের উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যত, জাতির সম্ভাবনা ।

প্রাইমারি স্কুল পার হওয়ার বিদ্যাও পেটে নেই, এমন অন্তঃসারশূন্য অযুত-নিযুত শিক্ষার্থী কলেজের চৌকাঠ পার হয়ে যায় হাসতে হাসতে; শিক্ষিতের আলখাল্লা গায়ে চড়ায়; তারপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেঝেতে পা দিয়ে আরও কিছুদূর আরোহনের চেষ্টা করে, বা বেকার ভুবনের বাসিন্দা হয় ।

এসব বিব্রতকর এবং একান্ত গোপনীয় সত্য বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একাডেমিক ট্যাবুতে পরিণত হয়েছে । এসব নিয়ে কথা বলা অস্বস্তিকর এবং ক্ষেত্রবিশেষে ঝুঁকিপূর্ণ । কিন্তু ভীরু এবং চাটুকারপরিবেষ্টিত নির্বোধ রাজার সামনে তার নগ্নতার কথা চীৎকার করে ফাঁস করে দেয়ার মতো সরল ও দুঃসাহসী কিছু শিশু এ সমাজে সবসময়ই ছিল এবং আছে । আমি তেমনই একজন শিক্ষক ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:৩০

ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন: অনেক গুরুত্ত্বপূর্ন একটা বিষয় তুলে ধরেছেন। গ্রামের দিকে বিষয় টা আরো বেশি প্রবল। এর কোনো সুরাহা নেই?

০২ রা মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:৫৭

মু, আমজাদ হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ । কে করবে সুরাহা ? সর্ষের ভেতরেইতো ভূত ।

২| ০২ রা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৩

ইএম সেলিম আহমেদ বলেছেন: তাহলে এই যে গ্রাজুয়েট গাছ দামড়া গুলো হারহামেশাই ইন্টারভিউ থেকে বাদ পড়ে বেকার সংঘে নাম লিখে এদের দল তো আস্তে আস্তে ভারী হচ্ছে। এরা না পারবে হাল চাষ করতে, না পারবে রিক্সা চালাতে, না পারবে ভাল চাকুরী জুটাতে(ঘুষ ছাড়া)।এদের আবার সেই পার্ট দেখা যায়। অথচ ভেতরে সব ফকফকা। ভবিষ্যতে কি হতে যাচ্ছে ভাবতেই মাথা আউলায়ে যাচ্ছে। কী সাংঘাতিক ব্যপার। :|

৩| ০২ রা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত দুঃখজনক।

৪| ০২ রা মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭

সোনাগাজী বলেছেন:


আপনি কোন কোন বিষয়ে পড়ান? কত বছর অভিজ্ঞতা?

পরীক্ষার হলে নকলের সাথে যুক্ত শিক্ষকদের ঘুষ কোথা থেকে আসে?
শতকরা হারে, কি পরিমাণ শিক্ষক এই ভয়ংকর কাজের বিরোধিতা করেন?

০২ রা মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩২

মু, আমজাদ হোসেন বলেছেন: ফেইসবুকে আগে পোস্ট করা লেখা । তাই চিন্তাকে অনেক ছেঁকে লিখতে হয়েছে ।

আমি ইংরেজি পড়াই । বেসরকারি কলেজে । ২৭ বছর ধরে । বিনাভোটে নির্বাচিত সরকারি দলের নেতারা পরিচালনা পর্ষদে । কলেজের অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ, যাদের চাকরি হয়েছে পরিচালনা পর্ষদের উৎকচ খাওয়া সম্মতিতে এবং যেতেও পারে একই পর্ষদের বিরাগভাজন হলে, পাশের হার বাড়ানোর জন্য কলকাঠি নাড়ায় পেছন থেকে । তাদের স্যাঙাৎ ৩০+ শিক্ষকদের মধ্যে মাত্র ২/৩ জন । বাকি সবাই স্রেফ অসহায় পুতুল ।

অল্প দু একটি ব্যতিক্রম ছাড়া, এই চিত্র সারা বাংলাদেশের মফস্বল পর্যায়ে । শহরগুলিতে চলে মৃদু চালে, সর্ব্বোচ্চ রাখ-ঢাক করে । আপনার পরিচিত কেউ শিক্ষকতা পেশায় জড়িত থাকলে সত্যতা যাচাই করে নেবেন তার কাছ থেকে ।

তিক্ত সত্য কথাটি হচ্ছে--গণতন্ত্র, শিক্ষা আর উন্নয়ন এখন একই সমান্তরালে চলছে এ দেশে ।

৫| ০২ রা মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২০

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: চাকুরী যখন নাই, যাও আছে তাও যকণ যোগ্যতার ভিত্তিতে হয় না। তখন পাসের হার বাড়লেইবা সমস্যা কি? তথাপি ছেলে-মেয়েরা বলতে পারবে তাদের বড় সার্টিফিকেট আছে।

০২ রা মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৪

মু, আমজাদ হোসেন বলেছেন: পাশ করে সাহেব হয়ে না পায় ভদ্র চাকরি, না পারে শ্রমজীবী মানুষদের কাতারে ভিড়ে খেটে খেতে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.