যে শহরগুলো নিজেই পরিণত হয়েছে ঐতিহ্যে (পর্ব-২)

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:১৮

প্রাচীন এই শহরগুলোর পর্যটক আকর্ষণ হওয়ার পেছনে একটাই কারণ- এদের প্রাচীনত্ব। হাজার বছরের পুরোনো সভ্যতা এদেরকে দিয়েছে অনন্য ঐতিহ্য। প্রতিটি স্থাপনা, পথ, দেয়াল পরিণত হয়েছে ইতিহাসের অংশে। আসুন জেনে নিই এমন কয়েকটি শহরের কথা-

কোস্কো,পেরু
আন্দিজ পর্বতমালার মালার উচ্চতায় অবস্থিত একটি শহর কোস্কো। কিংবদন্তী ইনকান সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল এটি। এর ভিত্তি সম্পর্কে খুব বেশী তথ্য পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয়, শহরটি পুমা নামে একটি প্রাণীর আদলে তৈরি করা হয়েছিল।

পুমা ইনকাদের কাছে পবিত্র একটি প্রাণী। শহরটি ছিল বেশ আধূনিক। অর্থনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক দিক থেকে বেশ অগ্রসরও ছিল। এখানকার নাগরিকেরা ট্যাক্স দিতেন, শহরের প্রশাসন সেই টাকায় শহরের উন্নয়ন করতেন। গণিত, জোতিষশাস্ত্রেও দারুণ দখল ছিল এখানকার মানুষের।

আলেকজান্দ্রিয়া, ইজিপ্ট
আলেকজান্ডার ৩৩১ খৃষ্টপূর্বে আলেকজান্দ্রিয়া স্থাপনার আগে থেকেই এই শহরটি বিখ্যাত ছিল। কারণ এর অবস্থানগত গুরুত্ব। প্রাচীন বিশ্বের জ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবেও বিবেচিত হত শহরটি। সেই সময়ের অন্যতম বিশাল এবং বৈচিত্রময় বই এর সংগ্রহশালা ছিল আলেকজান্দ্রিয়া। সংস্কৃতি এবং জ্ঞানচর্চার প্রতীক হয়ে উঠেছিল এটি।

শহরটি দার্শনিক Eratosthenes এর আবাসভূমি, যিনি আবিষ্কার করেছিলেন যে, পৃথিবী গোলাকৃতির। প্রাচীন এই শহরের পথ ধরে হেঁটে বেড়াতে পারেন, উপভোগ করতে পারেন সেই সভ্যতাকে যেখানে মিলেছে পশ্চিমের সাথে পূর্ব।

এথেন্স, গ্রীস
আজকের পশ্চিমা বিশ্বের ভিত্তি গড়ে উঠেছে এই এথেন্সেই, একথা সবারই জানা। ১৪০০ খৃষ্ট পূর্বাব্দ থেকে শহরটি বিশেষ ভাবে প্রসিদ্ধ। প্রকৃতপক্ষে এখানে মানুষের বসবাস শুরু হয় আজ থেকে ৭ হাজার বছর আগে। শহরটিতে ধীরে বিকাশ ঘটেছে দর্শনের, রাজনীতির, শিল্প-সংস্কৃতির। সাহিত্য, নাট্যচর্চা কোনকিছুতেই পিছিয়ে ছিল না এখানকার মানুষ। সক্রেটিস, এরিস্টটল, প্লেটোর জন্মস্থান এই গ্রিস তাই ঐতিহ্যে অনন্য। ইতিহাসের কাছে ফিরে যেতে হলে ঘুরে আসুন এথেন্সে।

যখন ছিল না বিজ্ঞান, দর্শনের হাত ধরে মানুষের পৃথিবীর সকল রহস্য ব্যাখ্যা করার অপূর্ব প্রয়াস ছিল মানুষের মাঝে। সেই দৃষ্টিভঙ্গী অবাক করে দেবে আপনাকে, মুগ্ধ করে দেবে। আর এখন এত সহস্র বছর পরও সেই দৃষ্টিভঙ্গীর চর্চায় কত সমস্যার সমাধান খুজি আমরা। সত্যিই বিস্ময়কর এবং অসাধারণ!

১ টি +১/-০