নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস

একজন শব্দ শিকারি

হাসান ফেরদৌস

এটা আমি নই, আমার ভেতর বসতকারী অন্য কেউ https://hasanferdous.wordpress.com/

হাসান ফেরদৌস › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্কুল জীবনে পড়া কিছু কবিতা যা আজো টানে তা শেয়ার করলাম আমার ৫০তম পোষ্ট উপলক্ষে

০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৪৬



১. হাসি

রোকনুজ্জামান খান



হাসতে নাকি জানেনা কেউ

কে বলেছে ভাই?

এই শোন না কত হাসির

খবর বলে যাই।



খোকন হাসে ফোঁকলা দাঁতে

চাঁদ হাসে তার সাথে সাথে



কাজল বিলে শাপলা হাসে

হাসে সবুজ ঘাস।

খলসে মাছের হাসি দেখে

হাসে পাতিহাঁস।



টিয়ে হাসে, রাঙ্গা ঠোঁটে,

ফিঙ্গের মুখেও হাসি ফোটে



দোয়েল কোয়েল ময়না শ্যামা

হাসতে সবাই চায়

বোয়াল মাছের দেখলে হাসি

পিলে চমকে যায়।



এত হাসি দেখেও যারা

গোমড়া মুখে চায়,

তাদের দেখে পেঁচার মুখেও

কেবল হাসি পায়।





২. জোনাকিরা

আহসান হাবীব



তারা- একটি দু’টি তিনটি করে এলো

তখন- বৃষ্টি-ভেজা শীতের হাওয়া

বইছে এলোমেলো,

তারা- একটি দু’টি তিনটি করে এলো।

থই থই থই অন্ধকারে

ঝাউয়ের শাখা দোলে

সেই- অন্ধকারে শন শন শন

আওয়াজ শুধু তোলে।

ভয়েতে বুক চেপে

ঝাউয়ের শাখা , পাখির পাখা

উঠছে কেঁপে কেঁপে ।

তখন- একটি দু’টি তিনটি করে এসে

এক শো দু শো তিন শো করে

ঝাঁক বেঁধে যায় শেষে!

তারা- বললে ও ভাই, ঝাউয়ের শাখা,

বললে ও ভাই পাখি,

অন্ধকারে ভয় পেয়েছো নাকি ?

যখন- বললে, তখন পাতার ফাঁকে

কী যেন চমকালো।

অবাক অবাক চোখের চাওয়ায়

একটুখানি আলো।

যখন- ছড়িয়ে গেলো ডালপালাতে

সবাই দলে দলে

তখন- ঝাউয়ের শাখায়- পাখির পাখায়

হীরে-মানিক জ্বলে।

যখন- হীরে-মানিক জ্বলে

তখন- থমকে দাঁড়াঁয় শীতের হাওয়া

চমকে গিয়ে বলে-

খুশি খুশি মুখটি নিয়ে

তোমরা এলে কারা?

তোমরা কি ভাই নীল আকাশের তারা ?

আলোর পাখি নাম জোনাকি

জাগি রাতের বেলা,

নিজকে জ্বেলে এই আমাদের

ভালোবাসার খেলা।

তারা নইকো- নইকো তারা

নই আকাশের চাঁদ

ছোট বুকে আছে শুধুই

ভালোবাসার সাধ।



৩. বঙ্গবাণী

আব্দুল হাকিম



কিতাব পড়িতে যার নাহিক অভ্যাস।

সে সবে কহিল মোতে মনে হাবিলাষ।।

তে কাজে নিবেদি বাংলা করিয়া রচন।

নিজ পরিশ্রম তোষি আমি সর্বজন।।

আরবি ফারসি শাস্ত্রে নাই কোন রাগ।

দেশী ভাষে বুঝিতে ললাটে পুরে ভাগ।।

আরবি ফারসি হিন্দে নাই দুই মত।

যদি বা লিখয়ে আল্লা নবীর ছিফত।।

যেই দেশে যেই বাক্য কহে নরগণ।

সেই বাক্য বুঝে প্রভু আপে নিরঞ্জন।।

সর্ববাক্য বুঝে প্রভু কিবা হিন্দুয়ানী।

বঙ্গদেশী বাক্য কিবা যত ইতি বাণী।।

মারফত ভেদে যার নাহিক গমন।

হিন্দুর অক্ষর হিংসে সে সবের গণ।।

যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।

সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে না জুয়ায়।

নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়।।

মাতা পিতামহ ক্রমে বঙ্গেত বসতি।

দেশী ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি।।



৪. কাজের ছেলে

যোগিন্দ্রনাথ সরকার



দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,

দু’টা পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিমভরা কৈ।

পথে হেঁটে চলি, মনে মনে বলি, পাছে হয় ভুল;

ভুল যদি হয়, মা তবে নিশ্চয়, ছিঁড়ে দেবে চুল।



দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,

দু’টা পাকা বেল, সরিষার তেল, ডিমভরা কৈ।



বাহবা বাহবা – ভোলা ভুতো হাবা খেলিছে তো বেশ!

দেখিব খেলাতে, কে হারে কে জেতে, কেনা হলে শেষ।

দাদখানি চাল, মুসুরির ডাল, চিনি-পাতা দৈ,

ডিম-ভরা বেল, দু’টা পাকা তেল, সরিষার কৈ।



ওই তো ওখানে ঘুরি ধরে টানে, ঘোষদের ননী;

আমি যদি পাই, তা হলে উড়াই আকাশে এখনি!

দাদখানি তেল, ডিম-ভরা বেল, দুটা পাকা দৈ,

সরিষার চাল, চিনি-পাতা ডাল, মুসুরির কৈ!



এসেছি দোকানে-কিনি এই খানে, যত কিছু পাই;

মা যাহা বলেছে, ঠিক মনে আছে, তাতে ভুল নাই!

দাদখানি বেল, মুসুরির তেল, সরিষার কৈ,

চিনি-পাতা চাল, দুটা পাকা ডাল, ডিম ভরা দৈ।





৫. হেমন্ত

সুফিয়া কামাল



সবুজ পাতার খামের ভেতর

হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে

কোন্ পাথারের ওপার থেকে

আনল ডেকে হেমন্তকে?

আনল ডেকে মটরশুঁটি,

খেসারি আর কলাই ফুলে

আনল ডেকে কুয়াশাকে

সাঁঝ সকালে নদীর কূলে।

সকাল বেলায় শিশির ভেজা

ঘাসের ওপর চলতে গিয়ে

হাল্কা মধুর শীতের ছোঁয়ায়

শরীর ওঠে শিরশিরিয়ে।

আরও এল সাথে সাথে

নুতন গাছের খেজুর রসে

লোভ দেখিয়ে মিষ্টি পিঠা

মিষ্টি রোদে খেতে বসে।

হেমন্ত তার শিশির ভেজা

আঁচল তলে শিউলি বোঁটায়

চুপে চুপে রং মাখাল

আকাশ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায়।



৬. আমি হব

কাজী নজরুল ইসলাম



আমি হব সকাল বেলার পাখি

সবার আগে কুসুম-বাগে

উঠব আমি ডাকি !

সুয্যি মামা জাগার আগে

উঠব আমি জেগে,

হয়নি সকাল, ঘুমো এখন,

মা বলবেন রেগে।

বলব আমি - আলসে মেয়ে

ঘুমিয়ে তুমি থাক,

হয়নি সকাল, তাই বলে কি

সকাল হবে না ক ?

আমরা যদি না জাগি মা

কেম্‌নে সকাল হবে ?

তোমার ছেলে উঠলে গো মা

রাত পোহাবে তবে।



৭. স্বাধীনতার সুখ

রজনীকান্ত সেন



বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,

"কুঁড়ে ঘরে থাকি কর শিল্পের বড়াই,

আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পড়ে

তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।"



বাবুই হাসিয়া কহে, "সন্দেহ কি তায়?

কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।

পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,

নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।"





৮. কবর

জসীমউদ্দিন



এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,

তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।

এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,

পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।

এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,

সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা!

সোনালি ঊষার সোনামুখ তার আমার নয়নে ভরি

লাঙল লইয়া খেতে ছুটিলাম গাঁয়ের ও-পথ ধরি।

যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত

এ কথা লইয়া ভাবি-সাব মোরে তামাশা করিত শত।

এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে

ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।



বাপের বাড়িতে যাইবার কাল কহিত ধরিয়া পা

আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গাঁ।

শাপলার হাটে তরমুজ বেচি পয়সা করি দেড়ী,

পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনও হত না দেরি।

দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,

সন্ধাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুরবাড়ির বাটে!

হেস না­ হেস না­ শোন দাদু, সেই তামাক মাজন পেয়ে,

দাদি যে তোমার কত খুশি হত দেখিতিস যদি চেয়ে!

নথ নেড়ে নেড়ে কহিত হাসিয়া, এতদিন পরে এলে,

পথ পানে চেয়ে আমি যে হেথায় কেঁদে মরি আঁখিজলে।

আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন করিয়া হায়,

কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝঝুম নিরালায়!

হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়,

আমার দাদীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।



তারপর এই শূন্য জীবনে যত কাটিয়াছি পাড়ি

যেখানে যাহারে জড়ায়ে ধরেছি সেই চলে গেছে ছাড়ি।

শত কাফনের, শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি,

গণিয়া গণিয়া ভুল করে গণি সারা দিনরাত জাগি।

এই মোর হাতে কোদাল ধরিয়া কঠিন মাটির তলে,

গাড়িয়া দিয়াছি কত সোনামুখ নাওয়ায়ে চোখের জলে।

মাটিরে আমি যে বড় ভালবাসি, মাটিতে মিশায়ে বুক,

আয়-আয় দাদু, গলাগলি ধরি কেঁদে যদি হয় সুখ।



এইখানে তোর বাপজি ঘুমায়, এইখানে তোর মা,

কাঁদছিস তুই? কী করিব দাদু! পরাণ যে মানে না।

সেই ফালগুনে বাপ তোর এসে কহিল আমারে ডাকি,

বা-জান, আমার শরীর আজিকে কী যে করে থাকি থাকি।

ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম বাছা শোও,

সেই শোওয়া তার শেষ শোওয়া হবে তাহা কী জানিত কেউ?

গোরের কাফনে সাজায়ে তাহারে চলিলাম যবে বয়ে,

তুমি যে কহিলা বা-জানরে মোর কোথা যাও দাদু লয়ে?

তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেল মুখে,

সারা দুনিয়ার যত ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে!



তোমার বাপের লাঙল-জোয়াল দুহাতে জঢ়ায়ে ধরি,

তোমার মায়ে যে কতই কাঁদিতে সারা দিনমান ভরি।

গাছের পাতার সেই বেদনায় বুনো পথে যেতো ঝরে,

ফালগুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত শুনো-মাঠখানি ভরে।

পথ দিয়া যেতে গেঁয়ো পথিকেরা মুছিয়া যাইত চোখ,

চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক।

আথালে দুইটি জোয়ান বলদ সারা মাঠ পানে চাহি,

হাম্বা রবেতে বুক ফাটাইত নয়নের জলে নাহি।

গলাটি তাদের জড়ায়ে ধরিয়া কাঁদিত তোমার মা,

চোখের জলের গহীন সায়রে ডুবায়ে সকল গাঁ।



ঊদাসিনী সেই পল্লী-বালার নয়নের জল বুঝি,

কবর দেশের আন্ধারে ঘরে পথ পেয়েছিল খুজি।

তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ,

হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বিষের তাজ।

মরিবার কালে তোরে কাছে ডেকে কহিল, বাছারে যাই,

বড় ব্যথা র’ল, দুনিয়াতে তোর মা বলিতে কেহ নাই;

দুলাল আমার, যাদুরে আমার, লক্ষী আমার ওরে,

কত ব্যথা মোর আমি জানি বাছা ছাড়িয়া যাইতে তোরে।

ফোঁটায় ফোঁটায় দুইটি গন্ড ভিজায়ে নয়ন­জলে,

কী জানি আশিস করে গেল তোরে মরণ­ব্যথার ছলে।



ক্ষণপরে মোরে ডাকিয়া কহিল­ আমার কবর গায়

স্বামীর মাথার মাথালখানিরে ঝুলাইয়া দিও বায়।

সেই যে মাথাল পচিয়া গলিয়া মিশেছে মাটির সনে,

পরাণের ব্যথা মরে নাকো সে যে কেঁদে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে।

জোড়মানিকেরা ঘুমায়ে রয়েছে এইখানে তরু­ছায়,

গাছের শাখারা স্নেহের মায়ায় লুটায়ে পড়েছে গায়।

জোনকি­মেয়েরা সারারাত জাগি জ্বালাইয়া দেয় আলো,

ঝিঁঝিরা বাজায় ঘুমের নূপুর কত যেন বেসে ভালো।

হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, রহমান খোদা! আয়;

ভেস্ত নসিব করিও আজিকে আমার বাপ ও মায়!



এখানে তোর বুজির কবর, পরীর মতন মেয়ে,

বিয়ে দিয়েছিনু কাজিদের বাড়ি বনিয়াদি ঘর পেয়ে।

এত আদরের বুজিরে তাহারা ভালবাসিত না মোটে,

হাতেতে যদিও না মারিত তারে শত যে মারিত ঠোঁটে।

খবরের পর খবর পাঠাত, দাদু যেন কাল এসে

দুদিনের তরে নিয়ে যায় মোরে বাপের বাড়ির দেশে।

শ্বশুর তাহার কশাই চামার, চাহে কি ছাড়িয়া দিতে

অনেক কহিয়া সেবার তাহারে আনিলাম এক শীতে।

সেই সোনামুখ মলিন হয়েছে ফোটে না সেথায় হাসি,

কালো দুটি চোখে রহিয়া রহিয়া অশ্রু উঠিছে ভাসি।

বাপের মায়ের কবরে বসিয়া কাঁদিয়া কাটাত দিন,

কে জানিত হায়, তাহারও পরাণে বাজিবে মরণ­বীণ!

কী জানি পচানো জ্বরেতে ধরিল আর উঠিল না ফিরে,

এইখানে তারে কবর দিয়েছি দেখে যাও দাদু! ধীরে।



ব্যথাতুরা সেই হতভাগিনীরে বাসে নাই কেহ ভালো,

কবরে তাহার জড়ায়ে রয়েছে বুনো ঘাসগুলি কালো।

বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন,

পাতায় পাতায় কেঁপে উঠে যেন তারি বেদনার বীণ।

হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়।

আমার বু­জীর তরেতে যেন গো বেস্ত নসিব হয়।



হেথায় ঘুমায় তোর ছোট ফুপু, সাত বছরের মেয়ে,

রামধনু বুঝি নেমে এসেছিল ভেস্তের দ্বার বেয়ে।

ছোট বয়সেই মায়েরে হারায়ে কী জানি ভাবিত সদা,

অতটুকু বুকে লুকাইয়াছিল কে জানিত কত ব্যথা!

ফুলের মতন মুখখানি তার দেখিতাম যবে চেয়ে,

তোমার দাদির ছবিখানি মোর হদয়ে উঠিত ছেয়ে।

বুকেতে তাহারে জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম সারা,

রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।



একদিন গেনু গজনার হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,

ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের পরে।

সেই সোনামুখ গোলগাল হাত সকলি তেমন আছে।

কী জানি সাপের দংশন পেয়ে মা আমার চলে গেছে।

আপন হস্তে সোনার প্রতিমা কবরে দিলাম গাড়ি,

দাদু! ধর­ধর­ বুক ফেটে যায়, আর বুঝি নাহি পারি।

এইখানে এই কবরের পাশে আরও কাছে আয় দাদু,

কথা কস নাকো, জাগিয়া উটিবে ঘুম­ভোলা মোর যাদু।

আস্তে আস্তে খুঁড়ে দেখ দেখি কঠিন মাটির তলে,



ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিয়ে ঘন আবিরের রাগে,

অমনি করিয়া লুটায়ে পড়িতে বড় সাধ আজ জাগে।

মজিদ হইতে আযান হাঁকিছে বড় সুকরুণ সুরে,

মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত দূরে।

জোড়হাত দাদু মোনাজাত কর, আয় খোদা! রহমান।

ভেস্ত নসিব করিও সকল মৃত্যু­ব্যথিত প্রাণ।





৯. পাছে লোকে কিছু বলে

কামিনী রায়



করিতে পারি না কাজ

সদা ভয় সদা লাজ

সংশয়ে সংকল্প সদা টলে -

পাছে লোকে কিছু বলে।

আড়ালে আড়ালে থাকি

নীরবে আপনা ঢাকি,

সম্মুখে চরণ নাহি চলে

পাছে লোকে কিছু বলে।

হৃদয়ে বুদবুদ মত

উঠে চিন্তা শুভ্র কত,

মিশে যায় হৃদয়ের তলে,

পাছে লোকে কিছু বলে।

কাঁদে প্রাণ যবে আঁখি

সযতনে শুকায়ে রাখি;-

নিরমল নয়নের জলে,

পাছে লোকে কিছু বলে।

একটি স্নেহের কথা

প্রশমিতে পারে ব্যথা -

চলে যাই উপেক্ষার ছলে,

পাছে লোকে কিছু বলে।

মহৎ উদ্দেশ্য যবে,

এক সাথে মিলে সবে,

পারি না মিলিতে সেই দলে,

পাছে লোকে কিছু বলে।

বিধাতা দেছেন প্রাণ

থাকি সদা ম্রিয়মাণ;

শক্তি মরে ভীতির কবলে,

পাছে লোকে কিছু বলে।



১০. ইচ্ছা

আহসান হাবীব



মনারে মনা কোথায় যাস?

বিলের ধারে কাটব ঘাস।



ঘাস কি হবে?



বেচব কাল,

চিকন সুতোর কিনব জাল।



জাল কি হবে?



নদীর বাঁকে

মাছ ধরব ঝাঁকে ঝাঁকে।



মাছ কি হবে?



বেচব হাটে,

কিনব শাড়ি পাটে পাটে।



বোনকে দেব পাটের শাড়ি,

মাকে দেব রঙ্গিন হাঁড়ি।



১১. আবার আসিব ফিরে

জীবনানন্দ দাশ



আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে - এই বাংলায়

হয়তো মানুষ নয় - হয়তো বা শাঁখচিল শালিকের বেশে,

হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিঁকের নবান্নের দেশে

কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়।

হয়তো বা হাঁস হবো - কিশোরীর - ঘুঙুর রহিবে লাল পায়

সারাদিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে।

আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে

জলঙ্গীর ঢেউ এ ভেজা বাংলারি সবুজ করুণ ডাঙ্গায়।



হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে।

হয়তো শুনিবে এক লক্ষীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে।

হয়তো খৈয়ের ধান সরাতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে।

রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদা ছেঁড়া পালে

ডিঙ্গা বায় - রাঙ্গা মেঘে সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে,

দেখিবে ধবল বক; আমারে পাবে তুমি ইহাদের ভীড়ে।



১২. রসাল ও স্বর্ণলতিকা

মাইকেল মধুসূদন দত্ত



রসাল কহিল উচ্চে স্বর্ণলতিকারে -

শুন মোর কথা, ধনি, নিন্দ বিধাতারে।

নিদারুণ তিনি অতি;

নাহি দয়া তব প্রতি;

তেঁই ক্ষুদ্র-কায়া করি সৃজিলা তোমারে।

মলয় বহিলে, হায়,

নতশিরা তুমি তায়,

মধুকর- ভরে তুমি পড় লো ঢলিয়া;

হিমাদ্রি সদৃশ আমি,

বন-বৃক্ষ-কুল-স্বামী,

মেঘলোকে উঠ শির আকাশ ভেদিয়া!

দূরে রাখি গাভী-দলে,

রাখাল আমার তলে

বিরাম লভয়ে অনুক্ষণ,-

শুন, ধনি, রাজ-কাজ দরিদ্র পালন!

আমার প্রসাদ ভুঞ্জে পথ-গামী জন।

কেহ অন্ন রাঁধি খায়

কেহ পড়ি নিদ্রা যায

এ রাজ চরণে।

মধু-মাখা ফল মোর বিখ্যাত ভূবনে!

তুমি কি তা জান না ললনে?

দেখ মোর ডাল-রাশি,

কত পাখি বাঁধে আসি

বাসা এ আগারে!

ধন্য মোর জনম সংসারে!

কিন্তু তব দুঃখ দেখি নিত্য আমি দুঃখী

নিন্দ বিধাতায় তুমি, নিন্দ, বিধুমুখী!

নীরবিলা তরুরাজ; উড়িল গগনে

যমদূতাকৃতি মেঘ গম্ভীর স্বননে;

মহাঘাতে মড়মড়ি

রসাল ভূতলে পড়ি

হায়, বায়ুবলে

হারাইল আয়ু-সহ দর্প বনস্থলে!

ঊর্ধ্বশির যদি তুমি কুল মান ধনে;

করিও না ঘৃণা তবু নিচ-শির জনে।



১৩. পাঞ্জেরি

ফররুখ আহমেদ



রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?

এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?

সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে?

তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;

অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?

দীঘল রাতের শ্রান্তসফর শেষে

কোন দরিয়ার কালো দিগন্তে আমরা পড়েছি এসে?

এ কী ঘন-সিয়া জিন্দেগানীর বা’ব

তোলে মর্সিয়া ব্যথিত দিলের তুফান-শ্রান্ত খা’ব

অস্ফুট হয়ে ক্রমে ডুবে যায় জীবনের জয়ভেরী।

তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;

সম্মুখে শুধু অসীম কুয়াশা হেরি।

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?

বন্দরে বসে যাত্রীরা দিন গোনে,

বুঝি মৌসুমী হাওয়ায় মোদের জাহাজের ধ্বনি শোনে,

বুঝি কুয়াশায়, জোছনা- মায়ায় জাহাজের পাল দেখে।

আহা, পেরেশান মুসাফির দল।

দরিয়া কিনারে জাগে তক্দিরে

নিরাশায় ছবি এঁকে!

পথহারা এই দরিয়া- সোঁতারা ঘুরে

চলেছি কোথায়? কোন সীমাহীন দূরে?

তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;

একাকী রাতের গান জুলমাত হেরি!

রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?

শুধু গাফলতে শুধু খেয়ালের ভুলে,

দরিয়া- অথই ভ্রান্তি- নিয়াছি ভুলে,

আমাদেরি ভুলে পানির কিনারে মুসাফির দল বসি

দেখেছে সভয়ে অস্ত গিয়াছে তাদের সেতারা, শশী।

মোদের খেলায় ধুলায় লুটায়ে পড়ি।

কেটেছে তাদের দুর্ভাগ্যের বিস্বাদ শর্বরী।

সওদাগরের দল মাঝে মোরা ওঠায়েছি আহাজারি,

ঘরে ঘরে ওঠে ক্রন্দনধ্বনি আওয়াজ শুনছি তারি।

ওকি বাতাসের হাহাকার,- ও কি

রোনাজারি ক্ষুধিতের!

ও কি দরিয়ার গর্জন,- ও কি বেদনা মজলুমের!

ও কি ধাতুর পাঁজরায় বাজে মৃত্যুর জয়ভেরী।

পাঞ্জেরি!

জাগো বন্দরে কৈফিয়তের তীব্র ভ্রুকুটি হেরি,

জাগো অগণন ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি হেরি!

দেখ চেয়ে দেখ সূর্য ওঠার কত দেরি, কত দেরি!!



১৪. মাগো, ওরা বলে

আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ



‘কুমড়ো ফুলে ফুলে

নুয়ে পড়েছে লতাটা,

সজনে ডাঁটায়

ভরে গেছে গাছটা,

আর, আমি ডালের বড়ি

শুকিয়ে রেখেছি—

খোকা তুই কবে আসবি!

কবে ছুটি?’



চিঠিটা তার পকেটে ছিল,

ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা।



‘মাগো, ওরা বলে,

সবার কথা কেড়ে নেবে

তোমার কোলে শুয়ে

গল্প শুনতে দেবে না।

বলো, মা, তাই কি হয়?

তাইতো আমার দেরী হচ্ছে।

তোমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে

তবেই না বাড়ী ফিরবো।

লক্ষ্মী মা রাগ ক’রো না,

মাত্রতো আর কটা দিন।’



‘পাগল ছেলে’ ,

মা পড়ে আর হাসে,

‘তোর ওপরে রাগ করতে পারি!’



নারকেলের চিঁড়ে কোটে,

উড়কি ধানের মুড়কি ভাজে

এটা সেটা আরো কত কি!

তার খোকা যে বাড়ী ফিরবে!

ক্লান্ত খোকা!



কুমড়ো ফুল

শুকিয়ে গেছে,

ঝ’রে প’ড়েছে ডাঁটা;

পুঁইলতাটা নেতানো,—

‘খোকা এলি?’



ঝাপসা চোখে মা তাকায়

উঠোনে, উঠোনে

যেখানে খোকার শব

শকুনিরা ব্যবচ্ছেদ করে।



এখন,

মা’র চোখে চৈত্রের রোদ

পুড়িয়ে দেয় শকুনিদের।

তারপর,

দাওয়ায় ব’সে

মা আবার ধান ভানে,

বিন্নি ধানের খই ভাজে,

খোকা তার

কখন আসে! কখন আসে!



এখন,

মা’র চোখে শিশির ভোর,

স্নেহের রোদে

ভিটে ভরেছে।





১৫. রানার

সুকান্ত ভট্টাচার্য



রানার ছুটেছে তাই ঝুম্‌ঝুম্ ঘণ্টা বাজছে রাতে

রানার চলেছে, খবরের বোঝা হাতে,

রানার চলেছে রানার!

রাত্রির পথে পথে চলে কোনো নিষেধ জানে না মানার।

দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছোটে রানার–

কাজ নিয়েছে সে নতুন খবর আনার।



রানার! রানার!

জানা-অজানার

বোঝা আজ তার কাঁধে,

বোঝাই জাহাজ রানার চলেছে চিঠি আর সংবাদে;

রানার চলেছে, বুঝি ভোর হয় হয়,

আরো জোরে,আরো জোরে, এ রানার দুর্বার দুর্জয়।

তার জীবনের স্বপ্নের মতো পিছে স’রে যায় বন,

আরো পথ, আরো পথ- বুঝি হয় লাল ও-পূর্বকোণ।

অবাক রাতের তারারা, আকাশে মিট্‌মিট্ ক’রে চায়!

কেমন ক’রে এ রানার সবেগে হরিণের মতো যায়!

কত গ্রাম, কত পথ যায় স’রে স’রে–

শহরে রানার যাবেই পৌঁছে ভোরে;

হাতে লণ্ঠন করে ঠন্‌ঠন্, জোনাকিরা দেয় আলো

মাভৈঃ, রানার! এখনো রাতের কালো।



এমনি ক’রেই জীবনের বহু বছরকে পিছু ফেলে,

পৃথিবীর বোঝা ক্ষুধিত রানার পৌঁছে দিয়েছে ‘মেলে’।

ক্লান্তশ্বাস ছুঁয়েছে আকাশ, মাটি ভিজে গেছে ঘামে

জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে।

অনেক দুঃখে, বহু বেদনায়, অভিমানে, অনুরাগে,

ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে।



রানার! রানার!

এ বোঝা টানার দিন কবে শেষ হবে?

রাত শেষ হয়ে সূর্য উঠবে কবে?

ঘরেতে অভাব; পৃথিবীটা তাই মনে হয় কালো দোঁয়া,

পিঠেতে টাকার বোঝা, তবু এই টাকাকে যাবে না ছোঁয়া,

রাত নির্জন, পথে কত ভয়, তবুও রানার ছোটে,

দস্যুর ভয়, তারো চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে।

কত চিঠি লেখে লোকে–

কত সুখে, প্রেমে, আবেগে, স্মৃতিতে, কত দুঃখে ও শোকে।

এর দুঃখের চিঠি পড়বে না জানি কেউ কোনো দিনও,

এর জীবনের দুঃখ কেবল জানবে পথের তৃণ,

এর দুঃখের কথা জানবে না কেউ শহরে ও গ্রামে,

এর কথা ঢাকা পড়ে থাকবেই কালো রাত্রির খামে।

দরদে তারার চোখ কাঁপে মিটিমিটি,–

এ-কে যে ভোরের আকাশ পাঠাবে সহানুভূতির চিঠি-

রানার! রানার! কি হবে এ বোঝা ব’য়ে?

কি হবে ক্ষুদার ক্লান্তিতে ক্ষয়ে ক্ষয়ে?

রানার!রানার ! ভোর তো হয়েছে–আকাশ হয়েছে লাল

আলোর স্পর্শে কবে কেটে যাবে এই দুঃখের কাল?



রানার! গ্রামের রানার!

সময় হয়েছে নতুন খবর আনার;

শপথের চিঠি নিয়ে চলো আজ

ভীরুতা পিছনে ফেলে–

পৌঁছে দাও এ নতুন খবর

অগ্রগতির ‘মেলে’,

দেখা দেবে বুঝি প্রভাত এখুনি–

নেই, দেরি নেই আর,

ছুটে চলো, ছুটে চলো আরো বেগে

দুর্দম, হে রানার।।

মন্তব্য ৪৮ টি রেটিং +২১/-০

মন্তব্য (৪৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:০০

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: ভাল পোষ্ট।

০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:০৫

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ

২| ০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:২০

লিঙ্কনহুসাইন বলেছেন: :-B মনে পরে গেলো কবিতা গুলার কথা । ধন্যবাদ

০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:২৭

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: :) :) :) :) :) :) :)

৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৩১

নীল অ্যাপাচী বলেছেন: খোকন হাসে ফোঁকলা দাঁতে
চাঁদ হাসে তার সাথে সাথে ।।

অনেক অনেক ভাল লাগা....

আরো কিছু ছড়া-কবিতা দিন।।

০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৪৮

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: নিশ্চয় দিবো। ভালো থাকুন

৪| ০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৩৫

মিঠেল রোদ বলেছেন: অনেক দিন পর পড়লাম।
ভাল লাগল।

০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৫০

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ

৫| ০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৫০

জাহাজী পোলা বলেছেন: বাহ পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল, প্লাস B-)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:২৭

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৬| ০৩ রা জুলাই, ২০১২ রাত ১১:৫৯

নিরপেক্ষ মানুষ বলেছেন: আনেকগুলো আগে পড়েছি বলে মনে হয় না। প্রিয়তে নিলাম

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:২৮

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: সবগুলোই স্কুলের বইতে ছিল। এখন আছে কিনা বলতে পারব না।

৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১২:২৪

~মাইনাচ~ বলেছেন: আহ, ছোট্ট বেলায় ফিরিয়ে নিলেন

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩০

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: তাইতো দেখি মাইয়া মানুষ সাইজ্যা বইসা রইছেন ;)

৮| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ১২:৪১

আর.হক বলেছেন: রাত বাজে ১২.৩৮......... এখন কি এতো কবিতা পড়ার টাইম আছে পন্ডিত সাব..............? ভাল হইছে

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩১

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: সময় পাইলে পইরেন

৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ২:২১

ভবোঘুরে বলেছেন:
আম্মা বলেন, পড়রে সোনা

আব্বা বলেন, মন দে;

পাঠে আমার মন বসে না

কাঁঠালচাঁপার গন্ধে।

আমার কেবল ইচ্ছে জাগে

নদীর কাছে থাকতে,

বকুল ডালে লুকিয়ে থেকে

পাখির মতো ডাকতে।

সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে

কর্ণফুলীর কূলটায়,

দুধভরা ঐ চাঁদের বাটি

ফেরেস্তারা উল্টায়।

তখন কেবল ভাবতে থাকি

কেমন করে উড়বো,

কেমন করে শহর ছেড়ে

সবুজ গাঁয়ে ঘুরবো !

তোমরা যখন শিখছো পড়া

মানুষ হওয়ার জন্য,

আমি না হয় পাখিই হবো,

পাখির মতো বন্য।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩২

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: এই কবিতার কথা ভুলেই গেছিলাম

১০| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৩:২৭

ইমরান০০৭ বলেছেন: তোমরা যখন শিখছো পড়া

মানুষ হওয়ার জন্য,

আমি না হয় পাখিই হবো,

পাখির মতো বন্য।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩৩

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: পাখি হলেই উপকার

১১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ সকাল ১০:২৭

পুচকে ফড়িং বলেছেন:
সবগুলো আগে পড়া না। অনেকদিন পর পড়তে ভালো লাগলো।

পোস্টে প্লাস্

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩৩

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

১২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ সকাল ১১:১৪

সায়েম মুন বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। প্রিয়তে নিলাম।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৩৪

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ

১৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১২ ভোর ৪:৩৪

নীল_সুপ্ত বলেছেন: অনেকদিন পর পড়তে ভালো লাগলো।

পোস্টে পূর্ণ প্লাস :)

০৫ ই জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৫

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

১৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:১৮

সোনালী ডানার চিল বলেছেন: চমৎকার সংগ্রহ।
ভাল লাগা জানালাম...........

০৬ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৩৭

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ

১৫| ০৬ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৪৮

ঘুমন্ত আমি বলেছেন: পুরোনো সেই দিনের কথা ...

০৬ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১১:২৮

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: মনে পরে যায়

১৬| ০৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১২:১৮

চাটিকিয়াং রুমান বলেছেন: সেই সমস্ত দিনে ফিরে যেতে বাধ্য হলাম!

প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম।

১০ম ভালো লাগা।।

০৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:১৯

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

১৭| ০৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৩:১১

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: পুরোনো দিনের কবিতারা

ভাল লাগল পোস্ট

০৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:১৯

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ

১৮| ০৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৪১

দীপান্বিতা বলেছেন:
জাগো অগণন ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি হেরি!
দেখ চেয়ে দেখ সূর্য ওঠার কত দেরি, কত দেরি!!


অনেকগুলি নতুন কবিতা পড়লাম......

+++

১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:৫১

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য

১৯| ১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৯:৫৯

জলন্ত-বিশ্ব বলেছেন: আমাদের দেশে সেই ছেলে কবে হবে কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে ?

এই কবিতাটা আমার বেশ প্রিয়।

আর বন্দে আলী মিয়া'র একটি কবিতা ছিলো সেটাও আমার খুব পছন্দের।

পোস্টে প্লাস।

১৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:১৫

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য

২০| ১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:২১

রাতুল_শাহ বলেছেন: প্রিয়তে রাখার মত।

১৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:১৫

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ

২১| ১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:২৯

শিপু ভাই বলেছেন:
সুন্দর পোষ্ট। প্রিয়তে নিলাম!!!

++++++++++++++++


অনেক অনেক ধন্যবাদ!!!

১৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:১৫

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ ভালো থাকুন

২২| ১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:৩৯

মামুinসামু বলেছেন: ভালো post

১৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:১৬

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ভালো থাকুন মামু

২৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১০:২৮

আসফি আজাদ বলেছেন: এসেছে শরৎ হিমের পরশ
লেগেছে হাওয়ার পরে
সকাল বেলার ঘাসের আগায়
শিশিরের রেখা ধরে...

আপনি দেখি ছেলে বেলাকেই ধরে দিলেন! খুবই ভালো লাগল।

৩১ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১০:০৭

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: হুম , ধন্যবাদ

২৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:১৩

অভি৯১৭৫ বলেছেন: ঐদেখা যায় তাল গাছ, ঐ আমদের গাঁ

এই কবিতার কবি কে ভাই বলতে পারেন??

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৪৪

হাসান ফেরদৌস বলেছেন: খান মুহাম্মদ মইনুদ্দীন

২৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

কুয়ালালামপুরে আসার পর মনে পড়ল চয়নিকা বইয়ের বিখ্যাত একটি ছড়া --


মালয় দ্বীপে
এক যে বোকা শেয়ালে
লাগলে খিদে
মুরগী একে দেয়ালে

আপন মনে
চাটতে থাকে খেয়ালে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.