![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা আমি নই, আমার ভেতর বসতকারী অন্য কেউ https://hasanferdous.wordpress.com/
মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী'র টেলিভিশন দেখতে মানুষের সারি দেখে আমার ফেলে আসা ১৪ ইঞ্চি সাদা কালো টিভির কথা মনে পরে গেল। তখন গ্রামে থাকি, আমার গ্রামে তখনো টমাস এডিসনের আবিষ্কারের ছোঁয়া পৌছেনি। তাই অন্ধকার তাড়ানোর একমাত্র ব্যবস্থা ছিল কেরোসিন চালিত হারিকেন। প্রতিদিন মা-চাচীরা হারিকেনের চিমনি পরিষ্কার করে রাখতেন আর সন্ধ্যা হলেই তাতে আগুন দিয়ে চারপাশ আলোকিত করা হতো। সেই সময় আমাদের গ্রামে বিনোদনের মাধ্যম ছিল নাটক বা পালা গানের আসর যা অনেকদিন পর পর বসত। দৈনিক বিনোদন বলতে ছিল কেচ্ছা কাহিনী বলা বা রেডিও শোনা। যারা বয়স্ক ছিল তারা ছোটদের নিয়ে কেচ্ছা শোনাত। সেই সময় আমাদের ঘরে আনা হয় ১৪ ইঞ্চি সাদাকালো টিভি। আমাদের গ্রামে তখন আর কোন টেলিভিশন ছিলো না। টেলিভিশন চালানো হত ব্যাটারি দিয়ে। ব্যাটারির চার্জ শেষ হলে তিন মাইল দুর থেকে চার্জ করিয়ে আনা হতো। কোন দিন চার্জ করতে না পারলে তাতে গরম পানি দিয়ে বা রোদে অনেকক্ষণ রেখে দিয়ে টিভি চালানো হতো।
দেশে তখন এত চ্যানেল ছিল না। স-বেধন নীলমণি হিসেবে শুধু বিটিভিই ছিল। বিটিভিতে তখন ধারাবাহিকভাবে প্রচারিত হতো বাংলা ডাবিং-কৃত সিরিয়াল "আকবর দা গ্রেট" "সোর্ড অফ টিপু সুলতান" "আলিফ লাইলা", নাটক বলতে ছিল হুমায়ুন আহমেদ এর "অয়োময়", বাকের ভাই খ্যাত "কোথাও কেউ নেই", তৈাকির আহমেদ অভিনীত "রূপনগর" আর এসব দেখার জন্য দুর দূরান্ত থেকে লোকজন আসত আমাদের বাড়িতে। তখন টিভি বাড়ির ভেতর না রেখে বাহিরে বের করে দেওয়া হতো যেন সবাই অনুষ্ঠান দেখতে পারেন।
বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হলে গ্রামে অন্য রকম উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হতো। আর আমাদের বাড়ির বাহিরের উঠান হয়ে উঠত মিনি গ্যালারি। সবাই রাত জেগে থাকত খেলা দেখার আসায় আবার কেউ কেউ খড় বিছিয়ে খেলা শুরুর আগ পর্যন্ত কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিত। খেলা শুরু হলেই মিনি গ্যালারিতে শুরু হতো উল্লাস ও বিষাদের আরেক খেলা। আর উল্লাসের উত্তেজনায় দাদার ঘুম ভেঙ্গে গেলে ঘুম ভাঙ্গা কণ্ঠে বলতেন "শয়তানের বাক্সের জন্য ঘুমানোও দায়।"
সেই শয়তানের বাক্সের মেজাজ মাঝে মাঝে বিগড়ে যেত, আর তখন সে কাঁপাকাঁপি করে বিগড়ে দিত আমাদের মেজাজ। তারপর ডাক্তার ডেকে ঠিক করা হতো। টিভির ডাক্তারের কাছে থেকে আমিও দেখে নিতাম কিভাবে টিভির রোগ সারানো হয়, তারপর আবার কখনো টিভির সমস্যা দেখা দিলে আমিই শুরু করতাম ডাক্তারি, কখনো সফলতা আসত কখনো আসতোনা। আর যখন আমি ব্যর্থ হয়ে যেতাম তখন আবার ডাক্তারের বাড়ি গিয়ে তাকে ডেকে নিয়ে আসতে হতো।
তারপর একসময় টমাস এডিসনের আবিষ্কারের ছোঁয়া আমাদের গ্রামকে ছুঁয়ে গেল। আমরা অন্ধকার থেকে মুক্তি পেলাম। মা-চাচীরা মুক্তি পেলো প্রতিদিন চিমনি মোছার যন্ত্রণা থেকে। ব্যাটারিও মুক্তি পেল গরম পানি খাওয়ার হাত থেকে। আর সেই ১৪ ইঞ্চি টিভিটি তড়িৎ পেয়েও চলল কিছুদিন। তারপর দেখা গেল সভ্যতার সাথে সে খাপ খায় না। এখন সাদাকালোর যুগ শেষ, সবাই রঙ্গিন হতে চায়। আশপাশের সবাই ইতিমধ্যে ঐ সভ্যতায় না লিখিয়েছে। সবার ঘরে ঘরে চলে আসছে রঙ্গিন টিভি। ১৪ ইঞ্চি সাদাকালো টিভিটিকে দেখতে আসার লোকও কমে যেতে লাগল। সেই মনোকষ্ঠেই কিনা টিভিটি কথা বলা বন্ধ করে দিল। সারাদিন শ্লেষ ঝরত ঝরতো তার কণ্ঠ থেকে। তারপর তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হলো আর হাসপাতাল থেকে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হলো এটি এখন কোমায় চলে গেছে, ওর চিন্তা ছেড়ে দিতে। হাসপাতালের এই ব্যবস্থাপত্র পেয়ে আমরাও তার কথা ছেড়ে দিলাম আর নাম লিখলাম সভ্যদের দলে। এখন রঙ্গিন টিভি ঝলমল করে সেই সাদাকালো টিভির স্থলে কিন্তু সেই আনন্দ সেই উৎসব আর আসেনা।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১১
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: আমাদেরটাও ছিল ১৯৮৮ সালে কেনা, ২০০৪ সালে এটি গত হয়। আপনারটির মনে হয় মাইন্ড খাওয়ার অভ্যাস নাই
২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৫
খেয়া ঘাট বলেছেন: বাহঃ খুব সুন্দর পুরানো স্মৃতি রোমন্থন করলেন।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৩
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: পুরানো স্মুতিরা বার বার কড়া নেড়ে যায়।
৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০০
নাজমুল হাসান ০০১ বলেছেন: ভাল বলেছেন ভাই।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৪
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য
৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৩
লিঙ্কনহুসাইন বলেছেন: খুবই চর্ম লাগলো লেখাটা +++++ তোমার বাই তোমার লেকা ফেইস বুকে কপি মারছে
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৪
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: দেখতে হবেনা ভাইটা কার
৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৭
মাক্স বলেছেন: আমাদেরও ছিল একটা ১৪ ইন্চি নিক্কন। কবে যে কথা বলা বন্ধ করছে সেটা ভুলে গেসি
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৬
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: আহারে!
৬| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৩
গুরুমিয়াঁ বলেছেন: পুরোনো কথা মনে পরে গেল, ১৭/১৮ বছর আগে আমরা একটা নিপ্পন লিমো কিনি,
সন্ধ্যার পরে বাহিরে এনে চালাতাম, অনেক পরে একুশে টিভি টেরিষ্টিয়ালে গেলে টিভি দেখার অন্য রকম মজা পেতে লাগলাম। ততদিনে কারেন্ট চলে এল, টিভি চেঞ্জ হলো,দর্শকও কমে গেল।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৪
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: আগের দিনগুলো অন্যরকম ছিলো
৭| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৪
মোমের মানুষ বলেছেন: ওরে আল্লাহ আমার জন্মেরও আগের কাহিনী.............
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩২
হাসান ফেরদৌস বলেছেন:
তাই নাকি??
৮| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৪
জাওয়াদ তাহমিদ বলেছেন: আমাদের বাসায় একটা ফিলি্পস ২১ ইঞ্চি আছে, ১৯৮৯ এর। এখনও আগের মতই চলে। পিকচার টিউব আর সাউন্ড তুলনাহীন।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: আমাদেরটাও ফিলিপস ছিল, তাহলে আমাদেরটা এভাবে মাইন্ড খাইল কেন?? ফেলুদাকে ডাকতে হবে মনে হচ্ছে।
৯| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৭
রীতিমত লিয়া বলেছেন: চমত্কার স্মৃতিচারণা পোস্টে অবশ্যই প্লাস
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৫
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
১০| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩০
খালি ব্যান খাই বলেছেন: চখামিস্টিক।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪০
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: কিচ্ছু বলার নাই
১১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৯
কামরুল ইসলাম (সুমন) বলেছেন: স্মৃতিচারণ পোস্টে অবশ্যই প্লাস
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪০
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: পঠন ও প্লাসের জন্য ধন্যবাদ
১২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৪৬
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৪
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ
১৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৪
চ।ন্দু বলেছেন: '৬৯ সালের প্রথম দিকে আমার টিভি দেখার অভিজ্ঞতা হয়।তখন আমার বয়স বছর চারেকের মত। আমাদের পাশের বাসার মেঝ মেয়ে জেসমিন ছিল আমার মেঝ বোনের বান্ধবী সেই সংবাদটা আমাকে দিল- 'জান, আজ না আমাদের একটা টিভি এসেছে; ওটার মধ্যে অনেক মানুষ; তারা কথা বলে, গান গায়।'
আমি বললাম, 'সেটা কত বড়? সে দু'হাত লম্বা করে দেখাল। আমি অবাক হয়ে ভাবতে লাগলাম কিভাবে ওটার মধ্যে মানুষ থাকে?
ওদের পরিবার থেকে আমাদেরকে টিভি দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সন্ধ্যায় আমি বাবা ও আমার মেঝ বোন গিয়েছিলাম। টিভিটা একটা উঁচু চার পা যুক্ত কাঠের টিভি বক্স এর মধ্যে রাখা ছিল। আমি আমার মেঝবোন ও জেসমিস বারান্দায় শীতল পাটিতে বসে টিভি দেখেছিলাম। বাবা, জেসমিনের আব্বু ও আম্মু বসেছিলেন চেয়ারে, একপাশে। কি দেখেছিলাম তা মনে নেই। তবে সেই দেখাটা ছিল দারুণ উত্তেজনাকর, এক অবাক বিষ্ময়।
রাড়ীতে ফিরে মা কে বলেছিলাম, 'আমাদের একটা টিভি নেই কেন মা?'
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৫
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ছোটবেলার স্মৃতি ভাবতেই অন্যরকম অনুভূতি হয়
১৪| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১২
এম . এম ওবায়দুর রহমান বলেছেন: ভালো লাগলো।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৯
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য
১৫| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:০৪
সায়েম মুন বলেছেন: পুরনো সেই দিনের কথা। টমাস এডিসনের আবিস্কার সুন্দর রচনা। লেখক খুব মজা করে লিখেছেন বিধায় অনেক ভাললাগা নিয়ে গেলাম। বিনিময়ে সামান্য একটা প্লাস প্রয়োগ করলাম।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:২৯
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ সায়েম ভাই
১৬| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫২
কালা মনের ধলা মানুষ বলেছেন: ++++++++++++++++++++
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৩১
হাসান ফেরদৌস বলেছেন:
১৭| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪২
হুমায়ুন তোরাব বলেছেন: respect boss
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৩
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: ধন্যবাদ
১৮| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪৯
মাহবু১৫৪ বলেছেন: নষ্টালজিক হয়ে গেলাম লেখাটা পড়ে
+++++
ভাল লাগলো
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৩
হাসান ফেরদৌস বলেছেন: কি অবস্থা ভাই আছেন কেমন?
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৪
জিললুর রহমান বলেছেন: ১৯৮৮ সালে প্রথম টিভি কেনা হয় আমাদের। সাদাকালো। ১৭ ইঞ্চি। প্যানাভিশন ব্র্যান্ড এর। শুক্রবার বিটিভিতে আশেপাশের সবাই সিনেমা দেখতে আসতো। অন্য রকম দিন ছিল তখন।
টেলিভিশন টা এখনও সুপার সার্ভিস দেয়। কেমনে দেয় আল্লাহ মালুম।